
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি পরিচালনা পরিষদের এক সভা সোমবার (৬ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত হয়েছে। ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ব্যাংকের চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ। সভায় এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান মো. আবদুল জলিল, রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান ড. এম মাসুদ রহমান, অডিট কমিটির চেয়ারম্যান মো. আবদুস সালাম, স্বতন্ত্র পরিচালক মোহাম্মদ খুরশীদ ওয়াহাব, ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা, শরী’আহ সুপারভাইজরি কমিটির সদস্য সচিব ড. মুহাম্মাদ আব্দুস সামাদ, অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মো. ওমর ফারুক খান, মো. আলতাফ হুসাইন ও মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন মজুমদার, কোম্পানি সেক্রেটারি (চলতি দায়িত্ব) মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম উপস্থিত ছিলেন।

যুক্তরাজ্যের ব্যবসায়ীদের জ্বালানি ও প্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগের আহ্বান এফবিসিসিআইয়ের
ব্রিটিশ-বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের জ্বালানি, প্রযুক্তি, শিক্ষা ও মানবসম্পদ উন্নয়ন, ব্লু-ইকোনমি, পর্যটনসহ অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছে দি ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিাসিআই)। সোমবার (৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ঢাকার হোটেল সোনারগাঁওয়ে এফবিসিসিআই এবং ইউকে বাংলাদেশ ক্যাটালিস্টস অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির (ইউকেবিসিসিআই) মধ্যে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় এই আহ্বান জানানো হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান। বাংলাদেশে ব্যবসায়-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং সম্ভাবনাময় খাতগুলো সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে ইউকেবিসিসিআইয়ের একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফরে এসেছে। প্রতিনিধি দলকে নেতৃত্ব দেন ইউকেবিসিসিআইয়ের চেয়ারম্যান ইকবাল আহমেদ। অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর যুক্তরাজ্যের কোন ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলের এটিই প্রথম বাংলাদেশ সফর। সভায় বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্প্রসারণের ওপর বিশেষ জোর দেন এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসক। তিনি বলেন, ‘দেশে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে বাংলাদেশ প্রয়োজনীয় সহায়তা অব্যাহত রেখেছে। বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে দ্বিপাক্ষীক সম্পর্ক শক্তিশালী হলে উভয় পক্ষই তার সুফল পাবে।’ ব্রিটিশ-বাংলাদেশী ব্যবসায়ীসহ যুক্তরাজ্যের সব উদ্যোক্তাকে বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় খাতগুলোতে বিনিয়োগ ও বাজার সুবিধা কাজে লাগানোর আহ্বান জানান হাফিজুর রহমান। আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সাপ্লাই-চেইনের সুফল কাজে লাগাতে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) এবং অগ্রধিকারভিত্তিক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ) প্রভৃতি বিষয়ে দুই দেশকে দ্রুত অগ্রসর হওয়ার পরামর্শ দেন এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসক। বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য উন্নয়নের লক্ষ্যে উভয় দেশের ব্যবসায়ীদের সাথে নিবিড়ভাবে কাজ করার আগ্রহ ব্যক্ত করেন বাংলাদেশী বংশদ্ভূত যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট মেম্বার রূপা হক। সভায় ইকবাল আহমেদ জানান, প্রবাসী ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী। সেই বিনিয়োগ আকর্ষণে দেশের অর্থিক খাতে শৃঙ্খলা ফেরানোর ওপর জোর দেন তিনি। সভায় উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক মো. আব্দুল হক, প্রবীর কুমার সাহা, সাফকাত হায়দার, ওবায়দুর রহমান, গিয়ারউদ্দিন চৌধুরী খোকন), উইমেন অন্ট্রাপ্রেনিউরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডব্লিউইএবি) সভাপতি নাসরিন ফাতেমা আউয়াল, এফবিসিসিআইয়ের মহাসচিব মো. আলমগীর, ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স উইংয়ের প্রধান মো. জাফর ইকবাল।

মেট্রোরেলের টিকিটের ওপর ভ্যাট অব্যাহতি আরও এক বছর
ঢাকা সিটির জনপ্রিয় বাহন মেট্রোরেলের সেবার ওপর মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) আরও এক বছরের জন্য অব্যাহতি দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। সোমবার (৬ জানুয়ারি) এনবিআরের ভ্যাট বিভাগের দ্বিতীয় সচিব মো. বদরুজ্জামান মুন্সী সই করা চিঠির সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘যেহেতু মেট্রোরেল বাংলাদেশের সর্বাধুনিক ও জনপ্রিয় গণপরিবহন; মেট্রোরেল যানজট নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার পাশাপাশি কর্মঘণ্টা সাশ্রয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে; মেট্রোরেলকে অধিক জনপ্রিয় করার লক্ষ্যে যাতায়াত ব্যয় সাশ্রয়ী করা প্রয়োজন। সেহেতু এনবিআর মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২’- (২০১২ সনের ৪৭ নম্বর আইন) এর ধারা ১২৬’-এর উপ-ধারা (৩)-এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে, দ্রুতগামী, নিরাপদ, সময় সাশ্রয়ী, পরিবেশবান্ধব ও দূর নিয়ন্ত্রিত অত্যাধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর পরিবহণ ব্যবস্থা মেট্রোরেল সেবার ওপর আরোপণীয় মূল্য সংযোজন কর অব্যাহতি দেওয়া হল। আর এই আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে এবং ২০২৫ সালে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।’ ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর দেশের প্রথম মেট্রোরেল উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত উদ্বোধন করা হয়। এরপর পর্যায়ক্রমে মেট্রোরেল চলাচল মতিঝিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়। মেট্রোরেলের যাত্রীদের কোন ক্লাস বা শ্রেণিবিন্যাস নেই। সব যাত্রী একই ভাড়ায় নির্ধারিত গন্তব্যে আসা-যাওয়া করতে পারেন।

সংকট নিরসনে ডিএসইতে স্টেকহোল্ডারদের সাথে বসবেন অর্থ উপদেষ্টা
দেশের পুঁজিবাজারে চলমান সংকট নিরসনে করণীয় নির্ধারণে সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সাথে আলোচনায় বসতে যাচ্ছেন অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। কাল মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) সকাল দশটায় ঢাকার নিকুঞ্জে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ভবনে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। ডিএসইর পরিচালক শাকিল রিজভী সংবাদ মাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদের উদ্যোগে এ আলোচনা সভায় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি), বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই), ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ), বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ), সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিডিবিএল), সেন্ট্রাল কাউন্টারপার্টি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিসিবিএল), ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি), ফাইনান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিলের (এফআরসি) প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন। সংশ্লিষ্টরা জানান, পুঁজিবাজারে এখন টালমাটাল পরিস্থিতি বিরাজ করছে। জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর অর্থনৈতিক সূচকগুলো ঘুরে দাঁড়ালেও পুঁজিবাজারে তার কোন প্রভাব পড়েনি। ফলে, বিনিয়োগকারী, স্টক ব্রোকার, মার্চেন্ট ব্যাংকারসহ সব স্টেকহোল্ডারের মধ্যে আস্থার সংকট আরো প্রবলভাবে দেখা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) সকালে ডিএসইতে যাবেন সালেহউদ্দিন আহমেদ। সেখানে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা শেষে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ডিএসইর পরিচালক শাকিল রিজভী সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘মঙ্গলবার সকালে ডিএসইতে আসবেন অর্থ উপদেষ্টা। পুঁজিবাজারের সব সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা হবে। আলোচনায় পুঁজিবাজারের উন্নয়নে স্টকহোল্ডারদের পক্ষ থেকে পরামর্শ ও সুপারিশ করা হতে পারে।’

দুদকের তিন মামলা: সেই মতিউরের আরো ১২৪ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ
১২৪ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক সদস্য মতিউর রহমান, তার প্রথম স্ত্রী (লায়লা কানিজ) ও ছেলে-মেয়ের বিরুদ্ধে পৃথক আরও তিনটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সোমবার (৬ জানুয়ারি) দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা তিনটি দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন। তিনি বলেন, ‘মতিউর রহমান সম্পদের হিসাব চেয়ে দুদক থেকে নোটিশ করা হয়েছিল। তার পরিপ্রেক্ষিতে দুদক থেকে অনুসন্ধান করে সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। মতিউর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তাদের সম্পদ বিবরণী দাখিল করার আদেশ করা হয়েছিল। ওই আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে মতিউর ও তার পরিবারের সদস্যরা সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন।’ প্রথম মামলার আসামি হয়েছেন লায়লা কনিজ ও মতিউর রহমান। মামলার এজাহারে বলা হয়, ‘আসামি লায়লা কানিজ ১৩ কোটি ১ লাখ ৫৮ হাজার টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। পাশাপাশি লায়লা কানিজের বিরুদ্ধে এক কোটি ৫৩ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদের তথ্য গোপন করার অভিযোগ আনা হয়েছে।’ অন্যদিকে, তার মেয়ে ফারজানা রহমানের নামে ২ কোটি ৪৫ লাখ গোপন ও ৫৩ কোটি ৪১ লাখ টাকার বেশি অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে দ্বিতীয় মামলায়। ওই মামলায় মতিউর রহমানকে সহযোগী আসামি করা হয়েছে। আর তৃতীয় মামলায় প্রথম ঘরের ছেলে আহমেদ তৌফিকুর রহমান অর্ণবের বিরুদ্ধে ১৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকা সম্পদের তথ্য গোপন ও ৪২ কোটি ২২ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। এই মামলায়ও মতিউরকে সহযোগী আসামি করা হয়েছে। এর আগে, গত ১৫ ডিসেম্বর মতিউর রহমান ও তার দ্বিতীয় স্ত্রীর (শাম্মী আখতার শিবলী) বিরুদ্ধে ১১ কোটি ১৮ লাখ ৮৬ হাজার ১২০ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে দুই মামলা দায়ের করা হয়। প্রথম মামলায় মতিউরের বিরুদ্ধে ৫ কোটি ২৮ লাখ ৭৫ হাজার ৯৩৯ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ ও ১ কোটি ২৭ লাখ ৬৬ হাজার ২১৬ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়েছে। আর দ্বিতীয় মামলায় মতিউরের সঙ্গে আসামি হয়েছেন তার দ্বিতীয় স্ত্রী শাম্মী আখতার শিবলী। শিবলীর বিরুদ্ধে এক কোটি ৮৭ লাখ ১৫ হাজার ৪৯০ টাকার অবৈধ সম্পদ ও দুই কোটি ৭৫ লাখ ২৮ হাজার ৪৭৫ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে দুদক আইন ২০০৪’-এর ২৭ (১) ও ২৬ (২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়। কোরবানির জন্য ১৫ লাখ টাকা দিয়ে একটি ছাগল কিনতে গিয়ে আলোচনায় আসেন মুশফিকুর রহমান ইফাত নামের এক যুবক। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুমুল আলোচনা শুরু হয়। বলা হয়, ‘তার বাবা এনবিআরের সদস্য এবং কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট আপিলাত ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট মতিউর রহমান।’ এরপর আলোচনা চলে মতিউর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের কোথায় কী পরিমাণ সম্পদ রয়েছে এসব নিয়ে। এসব আলোচনার মধ্যে একের পর এক বেরিয়ে আসতে থাকে মতিউর পরিবারের বিপুল বিত্তবৈভবের চাঞ্চল্যকর তথ্য। পরে গত বছরের ৪ জুন মতিউর ও তার পরিবারের সদস্যদের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের অনুসন্ধানের নামে দুদক। অনুসন্ধানে মতিউর ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে ৬৫ বিঘা জমি, আটটি ফ্ল্যাট, দুটি রিসোর্ট ও পিকনিক স্পট এবং তিনটি শিল্প প্রতিষ্ঠানের তথ্য পায় দুদক। মতিউর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা ব্যাংক হিসাব, মোবাইল ফোনে আর্থিক সেবার হিসাব ও শেয়ারবাজারের বিও হিসাব জব্দ করা হয়। পরে ২৪ জুন মতিউর ও তার প্রথম পক্ষের স্ত্রী এবং সন্তানের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত। এরপর গত ২ জুলাই মতিউর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের সম্পদ বিবরণী চেয়ে পৃথক নোটিশ পাঠায় দুদক। এসব নোটিশের পরিপ্রেক্ষিতে ২৯ আগস্ট মতিউর, তার দুই স্ত্রী ও ছেলে-মেয়েসহ পাঁচজনের সম্পদ বিবরণী দুদকে জমা দেন।

বাংলাদেশকে পৃথিবীর কাছে তুলে ধরতে বেপজাকে প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা (বেপজা) কর্তৃপক্ষকে পৃথিবীর কাছে বাংলাদেশকে তুলে ধরার আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে দেশের শিল্প খাতে আরও বিনিয়োগ আসতে পারে। সোমবার (৬ জানুয়ারি) ঢাকার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে বৈঠকে বেপজার ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দেন সংস্থাটির নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল আবুল কালাম মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান। এ সময় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘অর্থনৈতিক কূটনীতির জন্য একটি টিম তৈরি করুন এবং বিশ্বের কাছে বাংলাদেশকে তুলে ধরুন। এর জন্য প্রয়োজনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করুন।’ বিদেশে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থী, বিশেষ করে যারা চীন ও জাপানে আছেন, তাদেরকে যুক্ত করে সেসব দেশের বিনিয়োগ আনা যায় কি না, সে ব্যাপারে উদ্যোগ নিতে বলেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি আরো বলেন, ‘বিনিয়োগকারীরা যেন ভাষাগত সমস্যা অতিক্রম করে এ দেশে বিনিয়োগ করতে পারে, সে ব্যাপারে বিদেশে থাকা শিক্ষার্থীরা সহায়তা করতে পারে।’ আবুল কালাম জানান, বাংলাদেশে জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান এবং বৈশ্বিক রাজনৈতিক দৃশ্যপটের পরিবর্তনের মধ্যেই বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে তারা ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছেন। ‘গত তিন সপ্তাহে আমরা চীনা বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ১৩৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের প্রস্তাব পেয়েছি। আরও বিনিয়োগের জন্য আলোচনা চলছে।’ তিনি আরও জানান, বর্তমানে বাংলাদেশে আটটি রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল চালু রয়েছে, যেখানে ৪৫২টি ফ্যাক্টরি রয়েছে। এসব জোনে আরও ১৩৬টি কারখানা নির্মাণাধীন রয়েছে। চালু থাকা কারখানার মধ্যে ১০০টির বেশি স্থানীয় বিনিয়োগকারীদের মালিকানাধীন ও বাকি কারখানার মধ্যে বেশিরভাগই যৌথ উদ্যোগ। কারখানাগুলোর ৫২ শতাংশ তৈরি পোশাক সামগ্রী, টেক্সটাইল আইটেম ও গার্মেন্টস এক্সেসরিজ উৎপাদন করে। অবশিষ্ট কারখানাগুলো বহুমুখী উৎপাদন করে থাকে যেমন-কফিন ও খেলনা সামগ্রী। আবুল কালাম প্রধান উপদেষ্টাকে বলেন, ‘নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহ, বেপজা এলাকায় বন্ডেড ওয়্যারহাউজ সুবিধা, চট্টগ্রাম-সাংহাই সরাসরি ফ্লাইট চলাচল এবং চীনের সাংহাই শহরে ভিসা কাউন্সেলর সার্ভিসসহ বিনিয়োগকারীরা কয়েকটি বিষয়ে জানিয়েছেন।’ এসব সুবিধা পেলে বিনিয়োগ বাড়তে পারে বলেও জানান তিনি। মুহাম্মদ ইউনূস বেপজাকে রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখার এবং গ্যাস অনুসন্ধানে কাজ করার আহ্বান জানান। একইসঙ্গে, বিতরণ ব্যবস্থার উন্নয়ন কীভাবে করা যেতে পারে সে বিষয়েও বিশেষভাবে কাজ করতে বলেন। প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে জ্বালানি আমদানি করে বাংলাদেশ লাভবান হতে পারে কি না, সেটিও খতিয়ে দেখার জন্য নির্দেশ দেন তিনি। বৈঠকে উপস্থিত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক কূটনীতির ওপর জোর দেন। তিনি জানান, সরকার দেশে বিদ্যমান প্ল্যান্টগুলো থেকে শিল্প কারখানায় যেন আরো বেশি বিদ্যুৎ ও জ্বালানি পৌঁছাতে পারে, সেজন্য একটি সমন্বিত বিতরণ ব্যবস্থা তৈরিতে কাজ করবে। বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেন, ‘রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত করার জন্য আমাদের কাজ করতে হবে।’ ‘আমাদের উচিত বেপজার পাশাপাশি বেজাকেও আরও আকর্ষণীয় করে তোলা এবং আরও বিনিয়োগ আনার জন্য বিশ্বজুড়ে এসব অঞ্চলে থাকা সুযোগ-সুবিধা প্রচার করা।’ বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব মো. সিরাজ উদ্দিন মিয়া উপস্থিত ছিলেন।

বাণিজ্য উপদেষ্টার সঙ্গে বিমসটেকের সেক্রেটারি জেনারেলের সৌজন্য সাক্ষাৎ
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন বিমসটেকের সেক্রেটারি জেনারেল ইন্দ্রা মানি পান্ডে। সোমবার (৬ জানুয়ারি) বিকালে বাণিজ্য উপদেষ্টার সচিবালয়স্থ কার্যালয়ে এ সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।সাক্ষাৎকালে তারা বিমসটেককে আরো কার্যকর করতে করণীয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘বাণিজ্য,বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা নিয়ে কাজ করার লক্ষে গঠিত প্রতিষ্ঠানটি সহযোগী দেশের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করছে। বিগত ২৭ বছরে অর্জন আশানুরূপ হয়নি। তবে, সহযোগী দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্য বৃদ্ধি বিশেষ করে ব্যবসায়ীদের সাথে ব্যবসায়ীদের পারস্পরিক বোঝাপড়া প্রতিষ্ঠানকে অধিক কার্যকর করতে ভূমিকা রাখতে পারে।’ এ সময় বাণিজ্য উপদেষ্টা আঞ্চলিক বাণিজ্য দ্বিগুণ করতে বিমসটেককে একটি রোডম্যাপ তৈরির আহ্বান জানান। ইন্দ্রা মানি বলেন, ‘বিমসটেককে আরো কার্যকর করতে মিনিষ্ট্রিয়াল বৈঠকগুলো সাহায্য করবে।’ আঞ্চলিক পরিমন্ডলে এক্সপোর্ট, ইমপোর্ট ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য মিনিষ্ট্রিয়াল বৈঠকগুলো ফলপ্রসূ করতে তিনি বাংলাদেশের সহযোগিতা চান। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব (রুটিন দায়িত্ব) মো. আব্দুর রহিম বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

বিএসইসির চেয়ারম্যানকে সরিয়ে দেওয়া দরকার: অর্থ উপদেষ্টা
দেশের শেয়ারবাজারে ক্রমাগত দরপতনের ঘটনা ঘটছে। প্রায় প্রতিনিয়তই কোম্পানির শেয়ারের দর কমতে থাকায় প্রায় নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। বাজারে ক্রমাগত দরপতনের কারণে নতুন বিনিয়োগকারী বাজার আসছে না বরং উল্টো বাজার থেকে বের হয়ে গেছেন। এ অবস্থায় বাজার নিয়ে নিজের অসন্তুষ্টির কথা জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেছেন, ‘শেয়ারবাজারে অনেক কোম্পানি বিনিয়োগ করছে। কিন্তু অনেক কোম্পানি বন্ধ হয়ে গেছে, তারপরও তাদের দাম বাড়ছে। এগুলো বন্ধ করতে হবে। সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যানকে সরিয়ে দেওয়া দরকার।’ রোববার (৬ জানুয়ারি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সৌদি-বাংলাদেশের বিনিয়োগবিষয়ক একটি প্রতিবেদন প্রকাশনা অনুষ্ঠানে শেয়ারবাজার প্রসঙ্গে সালেহ উদ্দিন এসব কথা বলেন। এর আগেও বিভিন্ন সময়ে শেয়ারবাজারে দুর্বল কোম্পানির শেয়ারের দর বৃদ্ধির বিষয়ে মন্তব্য করেছিলেন অর্থ উপদেষ্টা। এর ফলে নিয়ন্ত্রক সংস্থায় পরিবর্তনের বড় ইঙ্গিত দিয়েছেন বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি সম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘শেয়ারবাজারে ক্রমাগত দরপতন চলছে। এ অবস্থায় যদি অর্থ উপদেষ্টা এ ধরনের কোন বক্তব্য দিয়ে থাকেন, সেটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’ নানা কারণেই বর্তমান কমিশনের উপর বিনিয়োগকারীরা আস্থা রাখতে পারছেন না বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যাচ্ছে, জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের পর দেশের শেয়ারবাজারে গতি ফিরতে শুরু করে। জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের পর ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হওয়ার পর দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন দুই হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। সূচকেও বড় ধরনের উল্লম্ফন ঘটে। কিন্তু, খন্দকার রাশেদ মাকসুদ চেয়ারম্যান পদে যোগদানের পর থেকে যেন উল্টো পথেই হাঁটতে শুরু করেছে বাজার। গত ১৯ আগস্ট তিনি চেয়ারম্যান পদে যোগ দেওয়ার দিন ডিএসইর প্রধান সূচক ছিল পাঁচ হাজার ৭৭৫ পয়েন্ট। গতকাল রোববার (৫ জানুয়ারি) সে সূচক কমে দাঁড়িয়েছে পাঁচ হাজার ১৬৫ পয়েন্টে। এ হিসাবে রাশেদ মাকসুদ চেয়ারম্যান পদে যোগদানের পর ডিএসই সূচকের পতন হয়েছে ৬১০ পয়েন্টের। ফলে, রাশেদ মাকসুদ কমিশন নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক ধরনের ক্ষোভ ও হতাশা কাজ করছে। ইতোমধ্যে শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীরা কয়েক দফা খন্দকার রাশেদ মাকসুদের পদত্যাগের দাবিতে মিছিল-সমাবেশ করেছেন। এমনকি ঢাকার আগারগাঁয়ে অবস্থিত নিয়ন্ত্রক সংস্থার গেটে তালাও ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন। অবশ্য চেয়ারম্যান হওয়ার পর পুঁজিবাজারে কারসাজির ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে বড় অংকের জরিমানা করেছে রাশেদ কমিশন। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক সাকিব আল হাসান, শেয়ারবাজারের আলোচিত চরিত্র আবুল খায়ের হিরুসহ কারসাজি চক্রের হোতাদের বিরুদ্ধে জরিমানা করার কারণে এক শ্রেণির অসাধু চক্র বাজারকে অস্থির করে তুলছে বলে অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু, তারপরও বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে রাশেদ মাকসুদ কমিশন ব্যর্থ হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নিয়োগকৃত শিবলী বুবাইয়াত উল ইসলাম গেল ১০ আগস্ট বিএসইসির চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করার পর সাবেক ব্যাংকার খন্দকার রাশেদ মাকসুদকে চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ দেয় সরকার। অবশ্য প্রথমে পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান মাশরুর রিয়াজকে চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ দেওয়া হলেও তিনি যোগ দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে খন্দকার রাশেদ মাকসুদকে চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ দেয় সরকার। তিনি স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন। সাবেক ব্যাংকারকে পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থার চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ দেওয়ার পর পুঁজিবাজার বিষয়ে তার ‘অনভিজ্ঞতা’ নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তোলেন।

জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমেছে ৪.২৩ শতাংশ
গত বছরের তুলনায় এ অর্থ বছরের প্রথম তিন মাসে মোট দেশজ উপাদানের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি কমেছে ৪.২৩ শতাংশ। সোমবার (৬ জানুয়ারি) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) এ তথ্য প্রকাশ করে। বিবিএস জানায়, চলতি অর্থ বছরের প্রথম তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) এ হার দাঁড়িয়েছে ১ দশমিক ৮১ শতাংশ, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৬ দশমিক ০৪ শতাংশ। এতে বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছরের ৩ মাসে কৃষি খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ০ দশমিক ১৬ শতাংশ, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ০ দশমিক ৩৫ শতাংশ। এছাড়া শিল্প খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২ দশমিক ১৩ শতাংশ, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৮ দশমিক ২২ শতাংশ। সেবা খাতে গত তিন মাসে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১ দশমিক ৫৪ শতাংশ, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ৫ দশমিক ০৭ শতাংশ।

বাংলাদেশের সেরা এজেন্সি ২০২৪’-এর স্বীকৃতি দিল মেটলাইফ
মেটলাইফ বাংলাদেশের ‘সেরা এজেন্সি ২০২৪’ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে নোয়াখালী জেলার ‘সুমন এজেন্সি’। জীবন বীমা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি, ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার, সন্তোষজনক গ্রাহকসেবা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি ২০২৪ সালে সারাদেশের সব এজেন্সির মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যবসায়িক সাফল্য অর্জনের জন্য সুমন এজেন্সিকে এই স্বীকৃতি দিয়েছে মেটলাইফ বাংলাদেশ। নোয়াখালীর মাইজদি কোর্ট মেইন রোডে অবস্থিত সুমন এজেন্সির ব্রাঞ্চ ম্যানেজার সফি উল্ল্যাহ সুমনের দক্ষ ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে তার এজেন্সির সব ইউনিট ম্যানেজার ও ফিনান্সিয়াল অ্যাসোসিয়েটের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই সফলতা অর্জন করা সম্ভব হয়েছে। প্রতি বছর শুধুমাত্র একটি এজেন্সিকেই এই সম্মানজনক স্বীকৃতি দেয়া হয়। সফি উল্ল্যাহ সুমন ২০০৮ সালে মেটলাইফে ফিনান্সিয়াল অ্যাসোসিয়েট হিসেবে যোগ দেন এবং ২০১০ সালে ইউনিট ম্যানেজার হিসেবে পদোন্নতি পান। ধারাবাহিক সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ২০১৮ সালে ব্রাঞ্চ ম্যানেজার হিসেবে পদোন্নতি পান। সুমন এজেন্সি অফিসে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ব্রাঞ্চ ম্যানেজার সফি উল্ল্যাহ সুমনের হাতে ‘সেরা এজেন্সি ২০২৪’ ট্রফি তুলে দেন মেটলাইফ বাংলাদেশের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা আলা আহমদ। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড চিফ ডিস্ট্রিবিউশন অফিসার জাফর সাদেক চৌধুরী; ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড চিফ অপারেশন্স অফিসার কামরুল আনাম; অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড চিফ এজেন্সি সেলস অফিসার মো. লুৎফর রহমান। এ নিয়ে আলা আহমদ বলেন, ‘বাংলাদেশের সেরা এজেন্সি হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় সুমন এজেন্সিকে অভিনন্দন। এই সাফল্য প্রমাণ করে যে, দেশের যে কোন জায়গা থেকেই বীমা খাতে সম্ভাবনাময় ক্যারিয়ার গড়ে তোলা সম্ভব এবং দেশের বেকারত্ব দূর করতে বীমা খাত একটি গুরুত্তপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।’ তিনি আরও বেশী মানুষকে বীমার আওতায় আনতে এবং গ্রাহক সেবার মান আরও বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধির জন্য সকলকে আহ্বান জানান।

বাণিজ্য উপদেষ্টার সঙ্গে আলজেরিয়ার রাষ্ট্রদূতের সৌজন্য সাক্ষাৎ
অন্তর্বর্তী সরকারের বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত আলজেরিয়ার রাষ্ট্রদূত আবদেলোহাব সাইদানি। রোববার (৫ জানুয়ারি) বিকালে বাণিজ্য উপদেষ্টার সচিবালয়স্থ কার্যালয়ে এ সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়। সাক্ষাৎকালে তারা দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য পরিস্থিতি ও বাণিজ্য সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন। শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘ভাতৃপ্রতিম দেশ আলজেরিয়ার সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক দীর্ঘ দিনের। ধর্মীয় মূল্যবোধ ও সাংস্কৃতিক যোগ এ সম্পর্ককে শক্তিশালী করেছে। দুই দেশের জনগণের সম্পর্ক আরো নিবিড় হবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের বাণিজ্যিক সহযোগিতার ক্ষেত্র বাড়াতে হবে।’ আলজেরিয়ার সাথে বাণিজ্য বৃদ্ধিকে সম্ভাবনার নতুন ক্ষেত্র বলে অবিহিত করেন তিনি। এ সময় উপদেষ্টা বাংলাদেশের জনশক্তিকে কাজে লাগিয়ে আলজেরিয়ার ভূমি ব্যবহার করে কৃষির বিকাশে (কন্ট্রাক্ট ফার্মিং) কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন। আবদেলোহাব সাইদানি বলেন, ‘আলজেরিয়ায় বাংলাদেশের গার্মেন্ট পণ্যসহ সব পণ্যের বাজার রয়েছে। বিদ্যমান সুযোগকে বাংলাদেশের কাজে লাগানো উচিত।’ আলজেরিয়ার ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী বলেও জানান তিনি। রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘রমজান উপলক্ষে আলজেরিয়া থেকে উন্নত মানের খেজুর আমদানি হয়। সার ও জ্বালানি বিষয়েও বাণিজ্য বাড়ানোর সুযোগ আছে।’ এ সময় রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশে টেক্সটাইল ও ফার্মাসিউটিক্যালস খাতে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেন।

‘টপ টেন রেমিটেন্স অ্যাওয়ার্ড’ পেল এনসিসি ব্যাংক
২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে রেমিট্যান্স সংগ্রহে বিশেষ অবদানের জন্য প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রদত্ত ‘টপ টেন রেমিটেন্স অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছে এনসিসি ব্যাংক। সম্প্রতি আর্ন্তজাতিক অভিবাসী ও জাতীয় প্রবাসী দিবস উপলক্ষ্যে ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিতঅনুষ্ঠানে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ নজরুল এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার কাছ থেকে এ পুরস্কার নেন এনসিসি ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মাহবুব আলম। অনুষ্ঠানে এনসিসি ব্যাংকের এসভিপি ও ট্রেজারী ফ্রন্ট অফিস প্রধান মো. জহুরুল করীম চৌধুরী এবং এসএভিপি ও রেমিট্যান্স এন্ড এনআরবি সার্ভিসেস প্রধান মো. ফরাদুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন। মো. মাহবুব আলম বলেন, ‘এই অর্জন বিশ্বব্যাপী রেমিট্যান্স সেবার মাধ্যমে প্রবাসীদের সহায়তা ও জাতীয় অর্থনীতিতেগুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনেরই স্বীকৃতি।’

আরও পাঁচ ব্যাংকের এমডিকে বাধ্যতামূলক ছুটি
বাংলাদেশ ব্যাংকের গঠিত টাস্কফোর্সের পরামর্শে আরও পাঁচ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে (এমডি) বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। এসব ব্যাংকের এমডিদের ছুটিতে পাঠানোর বিষয়টি স্ব স্ব ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে অনুমোদন হয়। ব্যাংকগুলো হলে এক্সিম ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক এবং আইসিবি ইসলামী ব্যাংক। রোববার (৫ জানুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। এর আগে গতকাল শনিবার (৪ জানুয়ারি) দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের এমডি সৈয়দ ওয়াসেক মো. আলীকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়। এস আলম গ্রুপকে অনিয়মের মাধ্যমে ঋণ ছাড়ে তার দায়িত্বে অবহেলা পায় কর্তৃপক্ষ। আজ রোববার থেকে আগামী ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটিতে থাকবেন তিনি। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, আন্তর্জাতিক নিরীক্ষার সুবিধার্থে আরও পাঁচ ব্যাংকের এমডি ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। আজ রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের সঙ্গে পাঁচ ব্যাংকের চেয়ারম্যানদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে এ ব্যাংকগুলোর এমডিদের সরানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ঋণ কেলেঙ্কারি ও নানা অনিয়ম: বেসরকারি পাঁচ ব্যাংকে হবে ‘ফরেনসিক অডিট’
ঋণ কেলেঙ্কারি ও নানা অনিয়মে তারল্য সংকটে পড়ে খাদের কিনারায় যাওয়া পাঁচ বেসরকারি ব্যাংকে ‘ফরেনসিক অডিট’ চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্যাংক খাত সংস্কারে গঠিত টাক্সফোর্স। অডিট চলাকালে এসব ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হবে। প্রথম ধাপে শরিয়াহভিত্তিক ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকে অডিট শুরু হবে। সে জন্য শনিবার (৪ জানুয়ারি) ব্যাংকটির পরিচালক পর্ষদের সভায় ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সৈয়দ ওয়াসেক মো. আলীকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। তার অবর্তমানে এমডির চলতি দায়িত্ব (সিসি) পালন করবেন ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু রেজা মো. ইয়াহিয়া। পর্ষদ পুনগর্ঠনের পর ব্যাংকের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পাওয়া আব্দুল মান্নান সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা অডিটকে স্বাগত জানাই। নতুন দিনের একটি অধ্যায় শুরু করতে যাচ্ছি, ব্যাংকটিকে জনগণের স্বার্থে ব্যবহার করা হবে। এ জন্য অডিট খুবই কাজে লাগবে।’ এমডিকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানোর কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘এমডি যেহেতু সে সময়ে (আগের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের সময়ে) ছিলেন, তাই তাকে দায়িত্বে রেখে অডিট প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে। কোন বির্তক যাতে না ওঠে, নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে তাকে তিন মাসের ছুটিতে পাঠানো হয়েছে।’ একটি নির্দিষ্ট সময়ে হওয়া সব ধরনের লেনদেন যাচাই-পর্যালোচনা ও কোন তথ্য মুছে ফেলা হয়েছি কি না, তা দেখতে এই ফরেনসিক অডিটের সিদ্ধান্ত নিয়েছে টাক্সফোর্স। সেই সিদ্ধান্তে একমত হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকও। সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক ও ইউনিয়ন ব্যাংককেও ফরেনসিক অডিটের আওতায় আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সবগুলো ব্যাংকই বিগত সরকারের আমলে এস আলম গ্রুপের সরাসরি নিয়ন্ত্রণে ছিল। বাংলাদেশ ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘ব্যাংকগুলোতে যদি এস আলমের সময়ের কর্মকর্তারা থাকেন, তাহলে অডিটে ম্যানুপুলেশন হওয়ার সম্ভবনা থাকতে পারে। তাই, বাংলাদেশ ব্যাংক ও ব্যাংকগুলোর সিদ্ধান্ত এমন যে এস আলমের সময়কার কর্মকর্তাদের প্রভাবমুক্ত রেখে সঠিকভাবে এসব ব্যাংকের নিরীক্ষা করা।’ এস আলমের নিয়ন্ত্রণমুক্ত হওয়া সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের পর্ষদ রোববার জরুরি সভা ডেকেছে। অন্য ব্যাংকগুলোর উচ্চ পদেও শিগগিরই পরিবর্তন আসতে পারে। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম ও তার পরিবারের সদস্যরা ব্যাংক কোম্পানি আইনে ভেঙে নজিরবিহীনভাবে সাতটি ব্যাংক ও দুইটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বড় অঙ্কের শেয়ার দখলে নেয়। সাইফুল আলম তার পরিবারের সদস্য ছাড়াও কিছু আত্মীয়কে একাধিক ব্যাংকের বোর্ডে বসান। সাইফুল আলম নিজে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। তার স্ত্রী ফারজানা পারভীনসহ চার ছিলেন বোর্ডে। তাদের ছেলে আহসানুল আলম, মেয়ে মাইমুনা খানম ও জামাতা বেলাল আহমেদ যথাক্রমে ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের বোর্ড নিয়ন্ত্রণ করতেন। সাইফুল আলমের ভাই, বোনসহ অন্যান্য আত্মীয়রাও বেশ কয়েকটি ব্যাংকের পর্ষদে ছিলেন। এস আলম গ্রুপ ও এর সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলো এসব ব্যাংক থেকে বিপুল অংকের ঋণ নিয়ে আত্মসাৎকরেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ক্ষমতায় পালাবদলের পর ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ ব্যাংক ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের ১১ সদস্যের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেয়। একইভাবে বেসরকারি খাতের ১১টি ব্যাংকের পর্ষদ পুনগর্ঠন করা হয়। এর মধ্যেই সরকার অনিয়মে জর্জরিত আর্থিক খাতের সংস্কারে শ্বেতপত্র প্রকাশের পাশাপাশি ব্যাংক খাতের সংস্কারে টাক্সফোর্স গঠন করে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল ব্যাংক খাতের সমস্যা সমাধানে কারিগরি ও অর্থ সহায়তা দেওয়ার প্রস্তাব দেয়। বিশ্ব ব্যাংকও ফরেনসিক অডিট করতে সহযোগিতার কথা বলে। এরপরই সবচেয়ে বেশি সমস্যাগ্রস্ত পাঁচটি ব্যাংকে ফরেনসিক অডিটের সিদ্ধান্ত হয়।

বাণিজ্য উপদেষ্টার সঙ্গে ইউকে বাংলাদেশ ক্যাটালিস্টস অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির নেতৃবৃন্দের বৈঠক
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ইউকে বাংলাদেশ ক্যাটালিস্টস অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির (ইউকেবিসিসিআই) নেতৃবৃন্দ। রোববার (৫ জানুয়ারি) সকালে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক ব্যবসায়-বাণিজ্য ও বাংলাদেশে বিনিয়োগ সম্ভাবনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। শেখ বশিরউদ্দীন যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের এ দেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশে বিনিয়োগ করুন, দেশের উন্নয়নে অবদান রাখুন। দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্কোন্নয়নে আপনাদের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’ উপদেষ্টা ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দকে পাটজাত দ্রব্য, পর্যটন, ফার্মাসিউটিক্যালস ও টেলিকম খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘বর্তমানে বাংলাদেশে বিনিয়োগ পরিবেশ ভাল। বিনিয়োগে কোন বাধা নেই। বিনিয়োগকারীদের সব সুবিধা নিশ্চিতে সরকার কাজ করছে।’ ইউকেবিসিসিআইয়ের নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশ ন্যাশনাল টি বোর্ড, সরকারি টেলিকম খাত ও শিক্ষা খাতে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের ব্যবহার বাড়াতে বিনিয়োগ করতে তাদের আগ্রহের কথা জানান। এছাড়াও নেতৃবৃন্দ সী ফুড এক্সপোর্ট, ফুড প্রসেসিং ও গ্রীন ফার্মিং সুবিধা বৃদ্ধির জন্য বিশেষ এগ্রিকালচারাল জোন (এগ্রিকালচারাল বেসড ইপিজেড) স্থাপনের দাবি জানান। বৈঠকে ইউকেবিসিসিআইয়ের চেয়ারম্যান ইকবাল আহমেদ, প্রেসিডেন্ট এমজি মওলা মিয়া, প্রতিষ্ঠাকালীন প্রেসিডেন্ট বজলুর রশিদ, যুক্তরাজ্যের হাউস অব কমন্সের এমপি রুপা হক বক্তব্য দেন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব (রুটিন দায়িত্ব) মো. আব্দুর রহিম বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

দায়িত্ব অবহেলা: ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংকের এমডিকে তিন মাসের বাধ্যতামূলক ছুটি
দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সৈয়দ ওয়াসেক মো. আলীকে বাধ্যতামূলক ছুটি দেওয়া হয়েছে। মূলত চট্টগ্রামভিত্তিক এস আলম গ্রুপকে অনিয়মের মাধ্যমে ঋণ ছাড়ে তার দায়িত্বে অবহেলা পায় কর্তৃপক্ষ। রোববার (৫ জানুয়ারি) থেকে আগামী ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটিতে থাকবেন তিনি। শনিবার (৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত ব্যাংকটির ২৮৩তম পর্ষদ সভায় তার ছুটি অনুমোদন করে বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ। আর পরবর্তী এমডি না আসা পর্যন্ত নতুন করে এমডির চলতি দায়িত্ব (সিসি) পালন করবেন অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু রেজা মো. ইয়াহিয়া। ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ও মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান মো. কাওসার উল আলম স্বাক্ষরিত অফিস আদেশ থেকে থেকে এসব তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। ব্যাংকটির সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চট্টগ্রামভিত্তিক আলোচিত এস আলমের গ্রুপকে অর্থ লোপাটে সহায়তা করার অভিযোগে বিশেষ নিরীক্ষা কমিটি গঠন করে ব্যাংক। সেখানে এমডিসহ আরও কয়েক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগ আনা হয়। তার বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে এমডি সৈয়দ ওয়াসেক মো. আলীকে তিন মাসে জন্য বাধ্যতামমূলক ছুটি দেওয়া হয়।

সার্ভার জটিলতার কারণে ডিএসইতে লেনদেন বন্ধ
সার্ভার জটিলতার কারণে সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রবিবার (৫ জানুয়ারি) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) লেনদেন বন্ধ রয়েছে। এদিন সকাল ১০টা থেকে লেনদেন শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে ডিএসই। জানা গেছে, রবিবার সকাল থেকে ডিএসইর আইটি টিম সমস্যার সমাধানের কাজ করে যাচ্ছে। ডিএসইর উপ-মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) মো. শফিকুর রহমান রাইজিংবিডি বলেন, “সকাল থেকেই ডিএসএতে সার্ভার জটিলতা দেখা দিয়েছে। ডিএসইর আইটি টিম কাজ করছে। সমস্যার সমাধান হওয়া মাত্রই লেনদেন শুরু করা হবে।” এদিকে, ডিএসই কর্তৃপক্ষ মোবাইল ফোনে পাঠানো এক বার্তায় জানিয়েছে, সার্ভার জটিলতার কারণে আমরা সকাল ১০টা থেকে লেনদেন শুরু করতে পারছি না। ট্রেড শুরুর সময় পরবর্তীতে জানিয়ে দেওয়া হবে। তবে এদিন স্বাভাবিক নিয়মে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) লেনদেন চলছে।

২০ শতাংশ অর্ডার বাতিল, বন্ধের ঝুঁকিতে ১০০ পোশাক কারখানা
২০২৪ সালের শেষ ছয় মাসে প্রায় ২০ শতাংশ তৈরি পোশাকের অর্ডার বাতিল করেছে বিদেশি ক্রেতারা। শ্রমিক অসন্তোষে এখনও আস্থা পাচ্ছেন না তারা। উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, আশুলিয়া এলাকার কারখানাগুলো নিয়ে আস্থা কম তাদের। বিজিএমইএ এবং বিকেএমইয়ের হিসাবে, পরিস্থিতির উন্নতি না হলে আগামী ছয় মাসে সারাদেশে প্রায় ১০০ কারখানা বন্ধ হবে। সাভার ও আশুলিয়ায় ছোট-বড় পোশাক কারখানার সংখ্যা ৪৫০টি। জুলাই অভ্যুত্থান পরবর্তী শ্রমিক অসন্তোষের কবলে এই এলাকার কারখানাগুলো। বন্ধ হয়েছে ‘বিজিএমইএ’ এবং ‘বিকেএমইএ’র তালিকাভুক্ত প্রায় ২০০ কারখানা। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, আশুলিয়া এলাকার শ্রমিক অসন্তোষ পর্যবেক্ষণ করছেন বিদেশি ক্রেতারা। এসব কারখানায় কাজ দিতে আস্থা পাচ্ছেন না তারা। বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘ব্র্যান্ড ও বায়াররা এখন আশুলিয়া বেল্টের যে কোন ফ্যাক্টরিতে কাজ দেওয়ার ক্ষেত্রে খুব সতর্ক, সচেতন। তারা অনেকটাই আস্থাহীনতায় ভুগছে। আমাদের অর্ডার যে অন্য জায়গায় যাচ্ছে তার প্রমাণটা সামনে পাওয়া যাবে।’ ব্যবসায়ীরা বলছেন, ‘ছয় মাসের অস্থিরতার ধকল আগামী বছরের জুন পর্যন্ত বইতে হবে। পরিস্থিতি সামাল দেওয়া না গেলে আগামী ৬ মাসে আরও ১০০ কারখানা বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’ মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘তারা হয়ত চেষ্টা করছে ব্যাংকের সাথে কোন নেগোসিয়েশন করে একটা পর্যায়ে গিয়ে আবার যদি পারে চালু করবে। না হলে তারা হয়ত পার্মানেন্টলি বন্ধ হয়ে যাবে। অর্থাৎ, আগামী এক বছরে আরও ১০০ ফ্যাক্টরি বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা আমরা করছি।’ শাশা ডেনিমসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শামস মাহমুদ বলেন, ‘শতভাগ ফ্যাক্টরি সচল রাখতে পারলেই কিন্তু আমরা ব্যাংকের ঋণ শোধ বা কর্মীদের বেতন চালু রাখতে পারব। কিন্তু এখন যদি আমার ২০ ভাগ ক্যাপাসিটিতে ফ্যাক্টরি চালাতে হয়, তাহলে যেটা হবে আমি তো আর্থিকভাবে সবল হব না।’ যদিও অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, ‘বহুজাতিক কোম্পানিগুলো বাংলাদেশ থেকে গড়পড়তা সস্তা পোশাক কিনছে। ফলে তারাও বাংলাদেশের ওপর নির্ভরশীল। তাই, সাময়িক অস্বস্তি থাকলেও বড় আকারে বাজার হারানোর আশঙ্কা নেই।’ সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ‘ভিয়েতনাম বলি কম্বোডিয়া বলি, কারও এত বড় সাপ্লাই বেজ নেই। সুতরাং, বড়ভাবে এখান থেকে মার্কেট শিফট হয়ে যাওয়ার কোন আশঙ্কা নেই। তবে সাময়িক কারণে কিছু সময়ের জন্য হয়ত কিছু অর্ডার এদিক সেদিক হতে পারে।’ তবে, ক্ষতি কাটাতে আগামী শীতের জন্য কাজ পেতে আগাম তৎপরতার কোন বিকল্প নেই বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।

রমজান ঘিরে ঢাকার ১০০ পয়েন্টে ন্যায্যমূল্যে ডিম-মুরগি বেচবে বিপিএ
সদ্য বিদায়ী বছরের বেশিরভাগ সময়েই অস্থিতিশীল ছিল ডিমের বাজার। ডজন প্রতি ডিমের দাম উঠে গিয়েছিল ১৮০ টাকায়। দাম বেঁধে দেয়ার পরও নিয়ন্ত্রণে আসেনি বাজার। তবে, নভেম্বরে ১৮ কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দেয়া হলে বাজার কিছুটা স্থিতিশীল হয়। তবে, নতুন বছরের শুরুতেই ফের ডজনে পাঁচ টাকা বেড়েছে ডিমের দাম। বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দামও। এ পরিস্থিতিতে রমজানকে সামনে রেখে ঢাকার ১০০টি পয়েন্টে ন্যায্যমূল্যে ডিম, মুরগি ও কৃষিজাত পণ্য বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ)।শনিবার (৪ জানুয়ারি) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরিউ) সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান বিপিএর সভাপতি সুমন হাওলাদার।সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আসন্ন রমজান উপলক্ষে স্মার্ট বাজার ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে আগামী ১২ জানুয়ারি থেকে ঢাকা শহরের ২০ পয়েন্টে এবং পরবর্তী পর্যায়ক্রমে ১০০ পয়েন্টে সীমিত লাভে ডিম, ফ্রোজেন মুরগি এবং অন্যান্য কৃষিজাত পণ্য ন্যায্যমূল্যে বিক্রির কার্যক্রম শুরু হতে যাচ্ছে। এছাড়া, বিপিএর সাপ্লাই চেইনে যুক্ত হবে দক্ষ ব্যক্তি ও উদ্যোক্তা। যেমন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া কিছু সংখ্যক স্মার্ট ছাত্র যারা কৃষি খাত এবং ভোক্তা-উৎপাদকের স্বার্থ নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী। তাদের দক্ষতা ও উদ্যমের মাধ্যমে এই উদ্যোগটি আরও কার্যকরী হবে, যা দেশের কৃষি খাতের উন্নতি এবং বাজার ব্যবস্থাপনার উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করবে।’অভিযোগ করে সুমন হাওলাদার বলেন, ‘বছরে করপোরেট কোম্পানিগুলো ফিড ও মুরগির বাচ্চা বিক্রি করে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত মুনাফা করছে। তাদের হাতে বাজারের নিয়ন্ত্রণ থাকায় কমছে না ডিম-মুরগির দাম। ভাঙ্গা যাচ্ছে না সিন্ডিকেট।’তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ববাজারে ফিডের দাম কমলেও দেশের বাজারে না কমায় মুরগির দামে প্রভাব পড়ছে।’ সরকারের নীতি নির্ধারণী বৈঠকে প্রান্তিক খামারিদের রাখার আহ্বান জানান বিপিএর সভাপতি।খামারিদের হাতে সাশ্রয়ী মূল্যে ফিড ও মুরগির বাচ্চার সরবরাহ নিশ্চিত করারও দাবি জানান সুমন হাওলাদার।এ দিকে, সংবাদ সম্মেলনে সিন্ডিকেটের হাত থেকে প্রান্তিক খামারিদের টিকিয়ে রাখতে সরকারের কাছে ১০টি দাবি জানানো হয়।

১৪ দিনের ব্যবধানে স্বর্ণের দামে সবচেয়ে বড় পরিবর্তন, জানা গেল কারণ
স্বর্ণের দাম দুই সপ্তাহের ব্যবধানে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) দেশটির স্পট গোল্ডের দাম ১ শতাংশ বেড়ে প্রতি আউন্স দুই হাজার ৬৪৯ দশমিক ৭৩ ডলার হয়েছে, যা ডিসেম্বর ১৮-এর পর সর্বোচ্চ। মার্কিন গোল্ড ফিউচারস শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ বেড়ে ২,৬৬৩ দশমিক ২০ ডলার হয়েছে। খবর খালিজ টাইমসের। বাজার বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে স্বর্ণের কেনা-বেচা বেড়ে যাওয়া এর দর বাড়ার পেছনে সরাসরি ভূমিকা রেখেছে। সেই সঙ্গে মার্কিন ট্রেজারি বন্ডের দর কমে যাওয়া এর প্রধান কারণ। একইসঙ্গে, ফেডারেল রিজার্ভের সুদের হার নিয়ে নেতিবাচক সিদ্ধান্ত এবং নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আসন্ন শুল্ক নীতি এই দর বাড়ার পেছনে ভূমিকা রাখছে। মার্কিন ১০ বছরের বন্ডের দর কমায় স্বর্ণের প্রতি ক্রেতার আকর্ষণ বাড়ছে, কারণ এটি মুনাফা দেয় না। বিশ্লেষকরা বলছেন, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উত্তেজনা এবং আর্থিক অনিশ্চয়তার কারণে বিনিয়োগকারীরা স্বর্ণের প্রতি ঝুঁকছেন। ২০২৪ সালে সুদের হার কমানো, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ক্রয় এবং ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা মূল্যবান এই ধাতুটির দরকে রেকর্ড উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিল, যা বছরে ২৭ শতাংশ বেড়ে যায়। বিশ্লেষকরা বলছেন, নতুন বছরের শুরুতে মুনাফা সমন্বয়ের পর স্বর্ণের দাম ফের বাড়তে থাকে। ২০২৫ সালে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ৩ হাজার ডলার পর্যন্ত হতে পারে বলে অনুমান করছেন। অন্যান্য ধাতুর মধ্যে রুপার দর ২ দশমিক ১ শতাংশ বেড়ে ২৯ দশমিক ৪৮ ডলার, প্লাটিনামের দর ২ দশমিক ১ শতাংশ বেড়ে ৯২২.৮৫ ডলার এবং প্যালাডিয়ামের দাম ১.৩ শতাংশ বেড়ে ৯২২.০৪ ডলার হয়েছে।
সাংবাদিক নাঈমুল ইসলাম ও তার পরিবারের ব্যাংক হিসাব ১৬৩টি, জমা ৩৮৬ কোটি
সাংবাদিক নাঈমুল ইসলাম খান ও তার স্ত্রী-সন্তানদের ব্যাংক হিসাব ১৬৩টি। তারা এসব হিসাবে ৩৮৬ কোটি টাকা জমা করেছেন। এর মধ্যে ৩৭৯ কোটি ৫২ লাখ টাকা উত্তোলন করে নিয়েছেন। বর্তমানে হিসাবগুলোতে ছয় কোটি ২৭ লাখ টাকা জমা রয়েছে। এ ছাড়া পরিবারের চার সদস্য ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করেন ১২টি। এই কার্ডগুলো দিয়ে ২৮ লাখ টাকার বেশি লেনদেন করেছেন। গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত ও পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রেস সচিব ছিলেন নাঈমুল ইসলাম খান। এ ছাড়া একাধিক প্রত্রিকার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, সাংবাদিক নাঈমুল ইসলাম খানের ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাবের সংখ্যা ৯১টি। এসব হিসাবে ২৪৯ কোটি টাকা জমা হয়। এর মধ্যে ২৩৮ কোটি ৩৪ লাখ টাকা তিনি উত্তোলন করেছেন। বর্তমানে তার ব্যাংক হিসাবে মাত্র ৬৪ লাখ টাকা জমা রয়েছে। তার স্ত্রী নাসিমা খান মন্টি ১৩টি ব্যাংক হিসাব পরিচালনা করেন। এসব হিসাবে ১৬ কোটি ৯৬ লাখ টাকা জমা হয়। এর মধ্যে তিনি ১৩ কোটি টাকা উত্তোলন করেছেন। তাদের তিন মেয়ের ব্যাংক হিসাবেও মোটা অঙ্কের অর্থ জমা হওয়ার তথ্য মিলেছে। আদিবা নাঈম খানের হিসাবে ৩৫ লাখ, লাবিবা নাঈম খানের অ্যাকাউন্টে ১ কোটি ২৫ লাখ এবং যূলিকা নাইম খানের অ্যাকাউন্টে ৬১ লাখ টাকা জমা হয়েছে। এসব অর্থের সিংহভাগই তারা উত্তোলন করে নিয়েছেন। এ ছাড়া নাঈমুল ইসলাম খানের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ৪৬টি হিসাবে জমা হয়েছে ১২৭ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। এর প্রায় পুরো টাকাই তিনি উত্তোলন করে ফেলেছেন। বর্তমানে মাত্র ২১ লাখ টাকা জমা আছে। গোয়েন্দা প্রতিবেদনে দেখা যায়, নাঈমুল ইসলাম খান এবং তার স্ত্রী-সন্তানরা মোট ১২টি ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করেন। এসব কার্ডের সর্বমোট সীমা ২৮ লাখ ৩৫ হাজার ৩৬৭ টাকা। কার্ডগুলোতে বর্তমানে বকেয়া পড়েছে ৪৮ হাজার ৪০৮ টাকা। এর মধ্যে নাঈমুল ইসলাম খান একাই ব্যবহার করেন ছয়টি ক্রেডিট কার্ড। এসব কার্ডের সীমা ১৫ লাখ টাকার বেশি। তার স্ত্রী নাসিমা খান মন্টির আছে চারটি ক্রেডিট কার্ড। এসব কার্ডের সীমা চার লাখ ১৯ হাজার টাকা। এ ছাড়া তার দুই মেয়ে সাড়ে ৪ লাখ টাকা সীমার দুটি ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করেন। হাসিনা সরকারের পতনের পর গত ২৫ আগস্ট নাঈমুল ইসলাম খান ও তার স্ত্রী-সন্তানদের ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। যদিও এর আগেই তারা প্রায় সব টাকা উত্তোলন করে নিয়েছেন। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী শাসনের অবসান হলে আত্মগোপনে চলে যান প্রেস সচিব নাঈমুল ইসলাম খান। এরপর তিনি তার পরিচালিত পত্রিকাগুলো বন্ধ ঘোষণা করেন।

চাকরিচ্যুতরা এস আলমের অবৈধ নিয়োগপ্রাপ্ত ছিল: এসআইবিএল
চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের (এসআইবিএল) চাকরিচ্যুত কর্মকর্তারা আমরণ অনশন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। অবস্থান নিয়েছেন ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয়ের সামনে। আন্দোলনকারীদের দাবি, বিনা কারণে বিনা নোটিশে আমাদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। কিন্তু ব্যাংক বলছে, ‘ব্যাংকের সার্ভিস রুলস মোতাবেক ও নিয়োগ পত্রের ধারা দশ অনুযায়ী অবৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্তদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।’ বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই তথ্য জানিয়েছে এসআইবিএল। ব্যাংকটি বলছে, ‘ব্যাংকিং খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এস আলম গ্রুপের অবৈধ নিয়োগ দেওয়া ৫৭৯ জন কর্মকর্তাকে গত ২৯ অক্টোবর চাকরিচ্যুত করে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক। ব্যাংকের সার্ভিস রুলস মোতাবেক ও নিয়োগ পত্রের ধারা দশ অনুযায়ী শিক্ষানবিশ সময়কালে ব্যাংক যে কোন সময় বিনা নোটিশে যে কোন কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করার অধিকার রাখে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে এসব অবৈধ নিয়োগপ্রাপ্তদের চাকরিচ্যুত করা হয়।’ পরবর্তী চাকরিচ্যুত কর্মকর্তাদের একটি সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ চাকরি পুনর্বহালের দাবি জানিয়ে ব্যাংকের নিকট আবেদন করে। তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রত্যেকের সঙ্গে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে শুনানির আয়োজন করা হয়। শুনানি পরবর্তী ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ তাদেরকে চাকরি পুনর্বহাল সম্ভব নয় উল্লেখ করে পত্র দেয়। এই চিঠি পাওয়ার পর গত রোববার (২৯ ডিসেম্বর) থেকে চাকরিচ্যুত কর্মকর্তারা ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা করছে এবং লাগাতার ব্যাংকের সামনে অবস্থান করছে। যার ফলে, ব্যাংকের গ্রাহকরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন এবং সাধারণ জনগণের স্বাভাবিক চলাফেরা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এমনকি ঢাকার মতিঝিলের সর্বোচ্চ স্থাপনা সিটি সেন্টারের সামনে এ ধরনের কার্যক্রম এই বিল্ডিংয়ে অবস্থিত অন্যান্য অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীদেরও স্বাভাবিক চলাফেরা বাধাগ্রস্ত করছে। এসআইবিএল আরও জানায়, পটিয়া এলাকার প্রায় দুই হাজার কর্মকর্তা নিয়মবহির্ভূত নিয়োগ পেয়ে এখনো এসআইবিএলে কর্মরত রয়েছে। এসব কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় এবং এস আলম গ্রুপের মদদে এই চাকরিচ্যুত কর্মকর্তারা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে। তাদের এই পদক্ষেপ ব্যাংকিং খাত তথা রাষ্ট্রের জন্য হুমকিস্বরূপ। প্রশাসন যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা হতে পারে। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে পত্রের মাধ্যমে অবহিত করা হয় এবং তাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, দ্রুত তারা এ বিষয়ে কার্যকর নেবেন। এসআইবিএলের চেয়ারম্যান এম সাদিকুল ইসলাম বলেন, ‘ব্যাংকিং খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নিয়োগপত্রের ধারা মেনেই অবৈধভাবে এস আলম গ্রুপের নিয়োগ দেওয়া কর্মকর্তাদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক যে, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর এস আলমের পৃষ্ঠপোষকতায় তারা এ ধরনের বিশৃঙ্খলা করে নৈরাজ্যের সৃষ্টি করছে; যা রাষ্ট্রের জন্য হুমকিস্বরূপ এবং সাধারণ জনগণ তথা ব্যাংকের গ্রাহকরা এর ফলে হয়রানির শিকার হচ্ছেন; যা মোটেই কাম্য নয়।’ ‘রাষ্ট্রীয় মদদে এস আলম গ্রুপ দেশের ব্যাংকিং খাতে ভয়াবহ দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে চরম অরাজকতার সৃষ্টি করেছিল। বাংলাদেশ ব্যাংক যখন ব্যাংকিং খাত সংস্কারে ইতিবাচক ও প্রশংসনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে, তখন এস আলমের মদদপুষ্ট এক গোষ্ঠী ফের অরাজকতা তৈরিতে সক্রিয় রয়েছে।’

জানুয়ারিতেও অপরিবর্তিত এলপি গ্যাসের দাম
ডিসেম্বরের মত জানুয়ারি মাসেও ভোক্তা পর্যায়ে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) দাম অপরিবর্তিত রাখার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)।বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ছয়টা থেকেই নতুন এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। যা বলবৎ থাকবে পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত।বিইআরসির চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ জানান, জানুয়ারি মাসে এলপিজির দাম অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। ১২ কেজি সিলিন্ডার বিক্রি হবে এক হাজার ৪৫৫ টাকায়।তবে, বৃহস্পতিবার অটোগ্যাসের দাম কমিয়েছে বিইআরসি। জানুয়ারি মাসে ভোক্তা পর্যায়ে অটোগ্যাসের মূসকসহ দাম তিন পয়সা কমিয়ে প্রতি লিটার ৬৬ টাকা ৭৮ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে।গণমাধ্যমে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বিইআরসি জানিয়েছে, জানুয়ারি মাসের জন্য সৌদি আরামকোর প্রোপেন এবং বিউটেনের ঘোষিত সৌদি সিপি প্রতি মেট্রিক টন যথাক্রমে ৬২৫ মার্কিন ডলার ও ৬১৫ মার্কিন ডলার এবং প্রোপেন ও বিউটেনের অনুপাত ৩৫:৬৫ অনুযায়ী প্রোপেন ও বিউটেনের গড় সৌদি সিপি প্রতি মেট্রিক টন ৬১৮ দশমিক ৫০ মার্কিন ডলার বিবেচনায় জানুয়ারি মাসের জন্য বেসরকারি এলপিজি ও অটোগ্যাসের দাম ভোক্তা পর্যায়ে সমন্বয় করা হলো।প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালে চার দফা কমেছিল এলপিজি ও অটোগ্যাসের দাম, আর বেড়েছে সাত দফা। এক দফা ছিল অপরিবর্তিত। গত বছরের জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি, মার্চ, জুলাই, আগস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর বাড়ানো হয়েছিল এলপিজি ও অটোগ্যাসের দাম। আর দাম কমেছিল এপ্রিল, মে, জুন ও নভেম্বরে। তবে দাম অপরিবর্তিত ছিল ডিসেম্বরে।

বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলে ৪০তম প্রতিষ্ঠান হিসেবে যুক্ত হল প্রাইম লিফ প্রসেসিং
বাংলাদেশ রপ্তানী প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষে (বেপজা) বিনিয়োগের ধারা অব্যাহত রয়েছে। এই ধারাবাহিকতায় বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলের ৪০তম প্রতিষ্ঠান হিসেবে শিল্প স্থাপনের লক্ষ্যে লিজ চুক্তি সই করেছে প্রাইম লিফ প্রসেসিং কোম্পানি লিমিটেড। এই মাইলফলক বিনিয়োগ গন্তব্য হিসেবে বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলের ক্রমবর্ধমান খ্যাতিকে আরো দৃঢ় করবে। সিঙ্গাপুর, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ভারতীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান প্রাইম লিফ প্রসেসিং বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলে ৮৮ লাখ ৪০ হাজার মার্কিন ডলার বিনিয়োগে তামাক প্রক্রিয়াকরণ কারখানা স্থাপন করতে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে বেপজার সদস্য (বিনিয়োগ উন্নয়ন) মো. আশরাফুল কবীর ও প্রাইম লিফ প্রসেসিংয়ের চেয়ারম্যান ম্যাং লি বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) ঢাকাস্থ বেপজা নির্বাহী দপ্তরে চুক্তিতে সই করেন। বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল আবুল কালাম মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। প্রাইম লিফ প্রসেসিং বছরে ৩৬ হাজার টন তামাক পাতা প্রক্রিয়াজাত করবে যেখানে ১০০ জন বাংলাদেশি নাগরিকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এই নতুন উদ্যোগটি শিল্পের বৈচিত্র্যায়ন ও বিনিয়োগকারীদের আদর্শ ব্যবসায়িক পরিবেশ প্রদানের ক্ষেত্রে বেপজার অব্যাহত প্রচেষ্টার প্রমাণ বহন করে। বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান বাংলাদেশে বিশেষত বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করায় প্রাইম লিফ প্রসেসিং-কে ধন্যবাদ জানান। তিনি বিনিয়োগকারীদের বিশ্বমানের সহায়তা প্রদান, ব্যবসায় পরিচালনায় অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিতে বেপজার প্রতিশ্রুতির উপর জোর দেন। আবুল কালাম বলেন, ‘ক্রমবর্ধমান বিদেশি বিনিয়োগকারীকে বেপজায় বিনিয়োগের সুযোগ করে দিতে পারায় বেপজা গর্বিত। বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলের সাফল্যে প্রাইম লিফ প্রসেসিংয়ের অবদান দেখতে আমরা আগ্রহী। বাংলাদেশের পর্যাপ্ত সুযোগ অনুসন্ধানে আমরা বৈশ্বিক বিনিয়োগকারীগণকে আহ্বান জানাচ্ছি।’ ম্যাং লি বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলে তাদের কারখানা স্থাপনের সুযোগ প্রদানের জন্য বেপজাকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, ‘২০২৫ সালের আগস্ট মাসের মধ্যে আমাদের কারখানার উৎপাদন শুরু করতে আগ্রহী।’ স্থানীয় অর্থনীতি ও কর্মসংস্থানে তাদের বিনিয়োগের একটি ইতিবাচক প্রভাব থাকবে মর্মে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। প্রাইম লিফ প্রসেসিংসহ মোট ৪০টি প্রতিষ্ঠান বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের লক্ষ্যে চুক্তি সই করল; যাদের মোট প্রস্তাবিত বিনিয়োগের পরিমাণ ৯২৬ দশমিক পাঁচ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।