দেশি-বিদেশী বিনিয়োগ বাড়াতে হিটম্যাপ পরিকল্পনা চূড়ান্ত

‘দেশে বিনিয়োগের সম্ভাবনা যেমন রয়েছে, তেমনি চ্যালেঞ্জও রয়েছে। এই চ্যালেঞ্জগুলো ধীরে ধীরে মোকাবেলা করে দেশি-বিদেশী বিনিয়োগ বাড়াতে হিটম্যাপ নামে একটা পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হয়েছে। এতে ২০টি প্রতিষ্ঠানের মতামত নেয়া হয়েছে। এর ভিত্তিতে ১৯টি অগ্রাধিকার খাত নির্বাচন করা হয়েছে। হিটম্যাপ অনুযায়ী এসব খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে উদ্যোগ নেয়া হবে।’ ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) মঙ্গলবার (১৩ জানুয়ারি) ‘বিনিয়োগের সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক সেমিনার করে, সেখানে এসব বিষয় তুলে ধরে বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)। সেমানারে বাংলাদেশের বিনিয়োগ পরিবেশকে প্রভাবিতকারী গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি তুলে ধরা হয়। অনুষ্ঠানে বিডার পক্ষ থেকে আগামী ৭-১০ এপ্রিল বিনিয়োগ সম্মেলন করার ঘোষণা দেয়া হয়। সম্মেলনে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিভিন্ন ইকোনমিক জোনগুলো পরিদর্শনের ব্যবস্থা করা হবে বলেও জানান তারা। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন। সেমিনারটি ঢাকায় ইআরএপের অডিটোরিয়ামে আয়োজন করা হয়। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন ইআরএপের সভাপতি দৌলত আকতার মালা। বক্তব্য দেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি একে আজাদ, এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসক হাফিজুর রহমান, ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি আবুল কাশেম খান, লাফার্স হোলসিম বাংলাদেশের সিইও মোহাম্মদ ইকবাল চৌধুরি। সেমিনারে ভ্যাট পরিস্থিতি নিয়ে চৌধুরী আশিক বলেন, ‘ভ্যাটের বিষয়টি নিয়ে তারা এনবিআর চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলোচনা করবেন।’ গ্যাস পরিস্থিতির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘শিল্পে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ থাকা উচিৎ।’ মালেশিয়ার উদাহারণ দিয়ে চৌধুরী আশিক বলেন, ‘দেশটিতে উৎপাদিত গ্যাসের ৭০ শতাংশই শিল্পে ব্যবহার হয় এবং গ্যাসের বরাদ্দ শিল্প মন্ত্রণালয়ই করে থাকে।’ শিল্পে গ্যাস সরবরাহ সংকট নিয়ে উদ্যোক্তাদের উদ্বেগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা আপাতত রাষ্ট্রায়ত্ত বন্ধ শিল্প কারখানাগুলো বেসরকারী বিনিয়োগকারীদের কাছে ছেড়ে দেওয়া যায় কিনা তা চিন্তা করছি। কারণ, এখানে ইতিমধ্যে গ্যাস-বিদ্যুতেরে সরবরাহ সুবিধা রয়েছে। ফলে, কারখানাগুলো দ্রুত উৎপাদনে যাওয়া সম্ভব।’ একে আজাদ বলেন, ‘গ্যাস সরবরাহে সিস্টেম লসের নামে ১০ শতাংশ চুরি বন্ধ করা গেলে নতুন করে গ্যাসের দর বাড়ানোর প্রয়োজন হবে না। বর্তমান অর্ন্তবর্তী সরকারই পারে এ চুরি বন্ধ করতে। কারণ, তাদের ভোটের প্রয়োজন নেই।’ নতুন করে গ্যাসের দর বৃদ্ধি ও ভ্যাট-ট্যাক্স বাড়ানোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘সরকার যে নীতি নিচ্ছে, এগুলো বাস্তবায়ীত হলে আমরা কোথায় যাব? গ্যাস ও ভ্যাট বৃদ্ধির আগে অর্থনীতি এবং জনজীবনে এর কি প্রভাব পড়বে তা খতিয়ে দেখা হয়নি। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এ নিয়ে কোন আলোচনা করা হয়নি।’ একে আজাদ বলেন, ‘পণ্য আমদানি, রপ্তানি ও মূলধনী যন্ত্রের আমদানি কমেছে। এই চিত্র বলছে বিনিয়োগ কমেছে। অর্থনীতির এই পরিস্থিতে গ্যাস ও ভ্যাট বৃদ্ধির প্রভাব কোথায় গিয়ে দাঁড়াতে পারে, তা চিন্তা করা উচিৎ।’ তিনি বলেন, ‘ব্যবসায়ী মানেই যেন অপরাধী। সবাই চুষে খেতে চায়। অনিয়মে অন্তত ৪০ শতাংশের মত ব্যয় করতে হচ্ছে।’ এ প্রসঙ্গে একে আজাদ আরো বলেন, ‘আসলে সব সরকারের চরিত্রই এক। গত সরকার বলেছিল গ্যাসের দাম বাড়িয়ে সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন করবে। কিন্তু তারা সেই প্রতিশ্রুতি রাখেনি।’ গ্যাস ও ভ্যাট প্রসঙ্গে আবুল কাশেম খান বলেন, ‘নীতির ধারাবাহিকতার অভাব বিনিয়োগ বৃদ্ধির প্রধান প্রতিবন্ধকতা। এসআরও জারি করে সংশ্লিষ্ঠ গোষ্ঠীর সুবিধার জন্য ঘনঘন নীতির পরিবর্তন করা হয়। নীতি গ্রহণে বেসরকারি খাতকে সম্পৃক্ত করা হয় না। দুর্নীতির কারণে সব খাত নষ্ট হয়ে গেছে। এসব ভেঙে দিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্থার করতে হবে। দেশের জন্য কাজ করতে হবে। যাতে টেকসই বিনিয়োগ পরিবেশ তৈরি হয়।’ মোহাম্মদ ইকবাল চৌধুরি বলেন, ‘নতুন বিনিয়োগ আনতে দেশের বাইরে গিয়ে রোড শো করা হয়েছে। অথচ দেশেরে বিদ্যমান বিনিয়োগের পরিস্থিতি বুঝার প্রয়োজন ছিল। তাদের চ্যালেঞ্জগুলো সনাক্ত করার দরকার ছিল। বিনিয়োগকারীদের সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেই। অথচ এই বিনিয়োগকিারীরাই বৈদেশিক বিনিয়োগে দেশের পক্ষে কাজ করবে।’ তিনি বলেন, ‘নীতি ঠিক নেই, আইন শৃঙ্খলা ঠিক নেই, নতুন একটা উদ্যোগ নিতে গেলে ২৩-২৭টি প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স নিতে হয়। ট্রড লাইসেন্সের মত কাজগুলো করা সময় সাপেক্ষ। এসব অসুবিধা দূর করতে হবে।’ হাফিজুর রহমান বলেন, ‘স্টক মার্কেটে বিনিয়োগকরলে দস্যুরা নিয়ে যায়। দোকান দিলে চাঁদাবাজরা নিয়ে যাবে। এই অনিশ্চয়তা নিয়ে বিনিয়োগ বাড়ানো সম্ভব নয়।’ তিনি আরো বলেন, ‘দেশে বিনিয়োগের পথ সুগম করতে ট্যাক্স হ্যাভেন না হলেও একটু সুবিধা দিতে হবে। যাতে ব্যবসায় করতে গিয়ে কিছু পুঁজি নিয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরতে না হয়।’ সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাসেমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিডার হেড অব বিজনেস ডেভলপমেন্ট নাহিয়ান রহমান রচি।

পল্টনে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের এটিএম-সিআরএম বুথ উদ্বোধন

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির পল্টন শাখার অধীনে এটিএম-সিআরএম বুথ বায়তুল মোকাররম মসজিদ কমপ্লেক্স মার্কেটে উদ্বোধন করা হয়েছে। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) ব্যাংকের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা এ বুথের উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে ব্যাংকের ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর ও ঢাকা সেন্ট্রাল জোনপ্রধান মাহমুদুর রহমান, এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ও পল্টন শাখাপ্রধান মুহাম্মদ নুরুল করিম, বায়তুল মোকাররম মসজিদ কমপ্লেক্স মার্কেট ব্যবসায়ী গ্রুপের সভাপতি মোহাম্মদ ইয়াকুব আলীসহ ব্যাংকের নির্বাহী ও কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এ বুথে গ্রাহকরা ২৪/৭ নগদ টাকা জমা ও উত্তোলন করতে পারবেন। এছাড়া, ইসলামী ব্যাংকের এক অ্যাকাউন্ট থেকে অন্য অ্যাকাউন্টে ফান্ড ট্রান্সফার, অ্যাকাউন্ট, কার্ড কিংবা সেলফিনে তাৎক্ষণিক টাকা জমা, ব্যালেন্স অনুসন্ধান ও মিনি স্টেটমেন্ট গ্রহণ, সেলফিন ও এম-ক্যাশের মাধ্যমে ক্যাশ-আউট সুবিধা, ক্যাশ বাই কোডের মাধ্যমে নগদ টাকা উত্তোলন ও প্রেরণের সুবিধা, যে কোন অপারেটরে মোবাইলে রিচার্জ, খিদমাহ্ কার্ডের বিল পরিশোধ, চেক বই অনুরোধ, ও ইউটিলিটি বিল পেমেন্ট সুবিধাসহ বহুমুখী সেবা এ অত্যাধুনিক মেশিনে পাওয়া যাবে।

ন্যাশনাল ব্যাংকের কোর ব্যাংকিং সিস্টেম টেমেনোস আরটুটুর সফল আপগ্রেডেশন উদযাপন

ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড সম্প্রতি উন্নত কোর ব্যাংকিং সিস্টেম (সিবিএস) টেমেনোস ২২ সংস্করণে সফলভাবে মাইগ্রেশন সম্পন্ন করেছে। এই আধুনিক সিস্টেমটি উন্নত প্রযুক্তি, শক্তিশালী নিরাপত্তা ব্যবস্থা, উন্নত ব্যবসায়িক বিশ্লেষণ এবং গ্রাহক সম্পর্ক ব্যবস্থাপনার উন্নত বৈশিষ্ট্যগুলো এনেছে; যা গ্রাহকদের জন্য নিরবচ্ছিন্ন ও নির্ভরযোগ্য ব্যাংকিং সেবা নিশ্চিত করবে।এ উপলক্ষে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে কেক কাটার মাধ্যমে সফল আপগ্রেডেশন উদযাপন করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ন্যাশনাল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) শেখ আকতার উদ্দিন আহমেদ। উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ রইস উদ্দিন ও ইমরান আহমেদ, এসইভিপি ও আইটি বিভাগের প্রধান কাজী কামাল উদ্দিন আহমেদ, ব্যাংকের অন্যান্য বিভাগীয় প্রধানগণ এবং টেমেনোস, বিজিআই ও এফডিএসের প্রতিনিধিরা অনুষ্ঠানে অংশ নেন।

পূবালী ব্যাংকের ডিএমডি হিসেবে সুলতানা সরিফুন নাহারের নিয়োগ

পূবালী ব্যাংক পিএলসি পরিচালনা পর্ষদ সুলতানা সরিফুন নাহারকে উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। তিনি এই পদে নিয়োগপ্রাপ্ত প্রথম নারী, যা ব্যাংকের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। ডিএমডি পদে নিয়োগের পূর্বে সুলতানা সরিফুন নাহার ব্যাংকের প্রিন্সিপাল শাখায় মহাব্যবস্থাপক ও শাখা প্রধান হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ইডেন মহিলা কলেজ থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে অর্থনীতির প্রভাষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। একইসঙ্গে তিনি ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৭ সালে সুলতানা সরিফুন নাহার পূবালী ব্যাংকে প্রবেশনারি সিনিয়র অফিসার হিসেবে ব্যাংকিং ক্যারিয়ার শুরু করেন। ব্যাংকের বিভিন্ন বিভাগে সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে তিনি তার অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ করেছেন। তিনটি কর্পোরেট শাখাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শাখায় ব্যবস্থাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে তিনি পেশাগত দক্ষতা ও কর্মনিষ্ঠার পরিচয় দেন। এছাড়া, ঢাকা কেন্দ্রীয় অঞ্চলের অঞ্চল প্রধান হিসেবে শাখাগুলোর ব্যাংকিং সেবার মানোন্নয়নে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। সুদীর্ঘ পেশাগত জীবনে সুলতানা সরিফুন নাহার দেশে-বিদেশে অসংখ্য সেমিনার ও প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশ নিয়েছেন। মোহাম্মদ আব্দুল মজিদ ও আম্বিয়া খাতুনের সন্তান সুলতানা সরিফুন নাহার ব্যক্তিজীবনে দুই পুত্রের গর্বিত জননী। তিনি ‘ওল্ড স্কাইট ডিইউএ’র একজন সক্রিয় সদস্য ও বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির আজীবন সদস্য।

সালমানের ৬ হাজার ৮০০ কোটি টাকার শেয়ার জব্দ

ক্ষমাতচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি খাত ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের ৬ হাজার ৮০০ কোটি টাকার শেয়ার জব্দ করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) অনুরোধে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। বিএসইসি সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির সঙ্গে সালমান এফ রহমানের নাম ব্যাপকভাবে জড়িয়ে আছে। ১৫ বছরে পুঁজিবাজারে বেপরোয়া লুটপাট করা হয়েছে। ৫ আগস্টের পর বর্তমানে তিনি কারাগারে রয়েছেন। সম্প্রতি সালমান এফ রহমানের শেয়ার জব্দের জন্য বিএফআইইউ থেকে বিএসইসিকে অনুরোধ করা হয়। ফলে, সালমান এফ রহমানের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে থাকা ৬ হাজার ৮০০ কোটি টাকার শেয়ার ছাড়াও আরও কয়েকজন উদ্যোক্তার ৭০০ কোটি টাকার শেয়ার জব্দ করেছে বিএসইসি। অন্যদিকে, আগস্ট থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংক হিসাব ও পুঁজিবাজারের উদ্যোক্তাদের ২২ হাজার কোটি টাকার সম্পদ জব্দ করেছে বিএফআইইউ। এর মধ্যে ব্যাংক খাত থেকে সাড়ে ১৪ হাজার কোটি টাকার বেশি এবং পুঁজিবাজার থেকে সাড়ে ৭ হাজার কোটি টাকা জব্দ করা হয়েছে। এছাড়া, আলোচ্য সময়ে ১১২টি মামলায় ৩৬৬ ব্যক্তির ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে বিএফআইইউ। যেসব হিসাবে অনিয়ম পাওয়া গেছে, তাদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে। এর আগে গত বছরের সেপ্টেম্বরে সালমান এফ রহমান ও এস আলমের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করে বিএসইসি। সালমান এফ রহমান রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ব্যবহার করে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নিয়েছেন বলে ৫ আগস্টের পর বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত ওই তথ্যের ভিত্তিতে এস আলম ও সালমান এফ রহমানের পরিবার এবং তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে শেয়ারবাজারে অনিয়ম তদন্তের সিদ্ধান্ত নেয় বিএসইসি। ঋণখেলাপি, জমি জালিয়াতি, অর্থ পাচার ও শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারি বললেই সবার আগে আসে সালমানের নাম। তার হাত ধরেই দেশের ঋণখেলাপির সংস্কৃতির বিকাশ হয়। অর্থাৎ, এ জগতে তার একচ্ছত্র আধিপত্য। বিভিন্ন তথ্য বলছে, ‘নামে-বেনামে তার ঋণের পরিমাণ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। শুধু জনতা ব্যাংকেই বেক্সিমকোর ২৯ প্রতিষ্ঠানের ঋণ সাড়ে ২২ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু ব্যাংকটির পরিশোধিত মূলধন ২ হাজার ৩১৫ কোটি টাকা।’ এ হিসাবে পরিশোধিত মূলধনের ৯৩৪ শতাংশ ঋণ দেওয়া হয়েছে। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত দুই কোম্পানি বেক্সিমকো লিমিটেড ও বেক্সিমকো ফার্মার ঋণ ৬ হাজার ৭০৩ কোটি টাকা। কিন্তু, এ দুই কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ১ হাজার ১২৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ, পরিশোধিত মূলধনের ছয়গুণ ঋণ কোম্পানি দুটিতে। এর মধ্যে বেক্সিমকো লিমিটেড ৫ হাজার ৯৫৭ কোটি ও বেক্সিমকো ফার্মার ৭৪৬ কোটি টাকা।

পাকিস্তান থেকে চাল আমদানি করবে বাংলাদেশ

পাকিস্তান থেকে চাল আমদানি করতে দেশটির সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই করেছে বাংলাদেশ। সচিবালয়ের খাদ্য মন্ত্রণালয়ে এ সংক্রান্ত স্মারকে সই করেছেন দুই দেশের প্রতিনিধিরা। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার ইমদাদ ইসলাম পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, ট্রেডিং করপোরেশন অব পাকিস্তানের চেয়ারম্যান সৈয়দ রাফিও বশির শাহ এবং খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আব্দুল খালেক এ সমঝোতা স্মারকে সই করেন। পাকিস্তান থেকে জি-টু-জি ভিত্তিতে আতপ চাল আমদানির জন্য আজ মন্ত্রণালয়ে এ সমঝোতা স্মারক সম্পাদিত হয়েছে। দেশের চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে এবং অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সম্পর্ক বৃদ্ধি ও শক্তিশালী করতে এই সমঝোতা স্মারক এক নতুন দিগন্তের উন্মোচন করবে বলে আশা করছে খাদ্য মন্ত্রণালয়।

৩৬৬ জনের জব্দ করা ব্যাংক হিসাবে ১৫ হাজার কোটি টাকা

সন্দেহজনক লেনদেন, অর্থপাচার, অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠা আওয়ামী লীগ শাসনামলের প্রভাবশালীদের জব্দ করা ব্যাংক হিসাবে ১৫ হাজার কোটি টাকা রয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার দেশের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত সাড়ে তিন শতাধিক সাবেক মন্ত্রী-এমপি, বিতর্কিত ব্যবসায়ী ব্যক্তিদের জব্দ করা ব্যাংক হিসাবে আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা এই অর্থের সন্ধান পেয়েছে। সূত্র জানায়, জব্দ করা হিসাবের মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল ও শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকি ববির হিসাব রয়েছে। এ ছাড়া, আছে এস আলম, সামিট, বেক্সিমকো গ্রুপ, বসুন্ধরা, ওরিয়ন, নাসা, জেমকন, নাবিল গ্রুপ এবং সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদসহ সাবেক সরকারের মন্ত্রী-এমপি ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের হিসাব।হিসাবগুলো দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) নির্দেশে এখনো জব্দ রয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তাদের আমলের মন্ত্রী-সাংসদ, বিভিন্ন সহযোগীসহ গুরুত্বপূর্ণ সংস্থার শীর্ষ পদে থাকা ব্যক্তিদের দুর্নীতি, অর্থপাচার ও ঋণ কেলেঙ্কারির খবর বেড়িয়ে আসছে। অনেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে আটক ও গ্রেপ্তার হয়ে জেলে আছেন। এমন পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকার আর্থিক অনিয়মের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের ব্যাংক হিসাব তলব ও জব্দ করে আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বিএফআইইউ। একইসঙ্গে তাদের স্ত্রী, সন্তানসহ ব্যক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক ব্যাংক হিসাবের লেনদেন স্থগিত করা হয়। এখন এসব ব্যাংক হিসাবের চুলচেরা বিশ্লেষণ করছে আর্থিক খাতের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। বিএফআইইউর একাধিক কর্মকর্তা জানান, অর্থপাচার রোধ ও পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার বিষয়ে আপসহীন সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। প্রথমত পাচারের সঠিক তথ্য উদ্ধার, পরিমাণ নির্ণয় ও পরে শাস্তিমূলক ব্যবস্থার দিকে আগানো হবে। এক্ষেত্রে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। যদি কোনো প্রভাবশালী ব্যবসায়ী গ্রুপের বিরুদ্ধে পাচারের তথ্য প্রমাণিত হয়, তাহলে জড়িতদের বিরুদ্ধে নেওয়া হবে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা। কিন্তু তাদের ব্যবসায় ক্ষত সৃষ্টি হতে দেওয়া হবে না। বিএফআইইউর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানায়, অন্তর্বর্তী সরকার দেশের দায়িত্ব নেওয়ার পর সন্দেহজনক লেনদেন ও বিদেশে অর্থপাচারের অভিযোগে দেড় হাজারের বেশি ব্যাংক হিসাব তলব ও জব্দ করছে বিএফআইইউ। তবে ৮ আগস্ট থেকে অক্টোবর পর্যন্ত বিএফআইইউ, এনবিআর এবং দুদক যৌথ প্রচেষ্টায় ৩৬৬ জন প্রভাবশালী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে। তাদের অ্যাকাউন্টে ১৫ হাজার কোটি টাকা পাওয়া গেছে। এখন পর্যন্ত ১১২টি মামলার কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

শিল্পের সাথে আবাসিকেও গ্যাসের দাম বাড়াতে চায় তিতাস

মিটারবিহীন আবাসিক গ্রাহকদের গ্যাসের বিল বাড়াতে চায় তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি। নতুন শিল্প ও ক্যাপটিভে গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাবের সঙ্গে এই বিষয়টি থাকছে বলে জানিয়েছে কোম্পানিটি। কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহনেওয়াজ পারভেজ বলেন, ‘মিটারবিহীন আবাসিক গ্রাহকরা অনেক বেশি গ্যাস ব্যবহার করছে। এক চুলা ৫৫ ঘনমিটারের বিল ও দুই চুলা ৬০ ঘনমিটারের বিল আদায় করা হচ্ছে। কিন্তু, ক্ষেত্র বিশেষে ১০০ ঘনমিটার পর্যন্ত গ্যাস ব্যবহারের রেকর্ড রয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘প্রিপেইড মিটার ব্যবহারকারী ও নন মিটার গ্রাহকের ব্যবহারের মধ্যে অনেক তারতম্য রয়েছে। প্রিপেইড মিটার ব্যবহারকারী গ্রাহক অনেকটা মিতব্যয়ী হন। তাই, তাদের ব্যবহারের পরিমাণ অনেক কম হয়ে থাকে। প্রিপেইড মিটার রয়েছে অভিজাত এলাকায় তারা অনেক সময় হোটেল-রেস্তোরাঁয় গিয়ে খেয়ে আসেন। তাদের সঙ্গে তুলনা করলে চলে না।’ গত ৬ জানুয়ারি বিদ্যমান গ্রাহকদের দর অপরিবর্তিত রেখে নতুন শিল্প কারখানার বয়লার ও শিল্প কারখানার জেনারেটরে (ক্যাপটিভ) সরবরাহ গ্যাসের দাম যথাক্রমে ৩০ ও ৩১ দশমিক ৭৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭৫ দশমকি ৭২ টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছে পেট্রোবাংলা। আইনগতভাবে পেট্রোবাংলার দাম বাড়ানোর প্রস্তাব বিবেচনায় নেওয়ার সুযোগ নেই। কেবল মাত্র লাইসেন্সের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিতে পারেন। সে কারণে বিতরণ কোম্পানিগুলোর কাছে মূল্য সমন্বয়ের প্রস্তাব চেয়েছে বিইআরসি (বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন)। গেল ৭ জানুয়ারি ইস্যু করা পত্রে বিতরণ কোম্পানিগুলোকে ৩ কর্মদিবসের মধ্যে ট্যারিফ পরিবর্তনের প্রস্তাব কমিশনে দাখিলের জন্য বলা হয়েছে। মিটারবিহীন আবাসিক গ্রাহকের নির্ধারিত পরিমাণ গ্যাসের বিল আদায় করা হয়। গ্রাহক ব্যবহার করুক, না করুক অথবা বেশি ব্যবহার করলেও নির্ধারিত বিলেই তাকে দিতে হয়। বিইআরসি সর্বশেষ গ্যাসের দাম বৃদ্ধির আদেশ দেয় ২০২২ সালের ৫ জুন। ওই আদেশের পূর্বে গণশুনানি গ্রহণ করে। তখন বিতরণ কোম্পানিগুলোর প্রিপেইড মিটার ব্যবহারকারী গ্রাহকদের পরিসংখ্যানে দেখা যায় গড়ে এক চুলা ৪০ এবং দুই চুলা সর্বোচ্চ ৫০ ঘনমিটার ব্যবহার করছে। প্রিপেইড গ্রাহকের ব্যবহারের পরিসংখ্যানের ওপর ভিত্তি করে এক চুলা ৭৩.৪১ ঘনমিটার ও দুই চুলা ৭৭.৪১ ঘনমিটার থেকে কমিয়ে যথাক্রমে ৫৫ ও ৬০ ঘনমিটার করা হয়। বিইআরসির আদেশের ১০ মাস পর তিতাস গ্যাস বিদ্যমান এক চুলা ৫৫ ঘনমিটার (৯৯০ টাকা) থেকে বাড়িয়ে ৭৬ দশমিক ৬৫ ঘনমিটার দুই চুলা ৬০ ঘনমিটার (১ হাজার ৮০ টাকা) থেকে বাড়িয়ে ৮৮ দশমিক ৪৪ ঘনমিটার করার আবেদন দিয়েছে। আর পরিমাণ বেড়ে গেলে স্বাভাবিকভাবেই দামও বেড়ে যাবে। তিতাস তার আবেদনে বলেছে, ‘মিটারবিহীন কমবেশি ২৫ লাখ গ্রাহকের বিপরীতে কোন সমীক্ষা বা তথ্য বিশ্লেষণ না করেই ঘনমিটারের পরিমাণ নির্ধারণ করেছে বিইআরসি। এতে কারিগরি ক্ষতি বেড়েছে এবং সরকারি লাভজনক প্রতিষ্ঠান তিতাস আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।’

শিক্ষার্থীদের টিফিনেও ভ্যাটের ‘বাগড়া’

সময় বদলেছে। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের টিফিনের তালিকায় যুক্ত হয়েছে নতুন নতুন খাবার। অনেক অভিভাবকের পছন্দের তালিকায় রয়েছে বেকারিপণ্য বিস্কুট ও কেক। এছাড়া, সকাল-সন্ধ্যা চায়ের সঙ্গে বিস্কুটের জুড়ি নেই। এবার এসব পণ্য কিনতেও গুনতে হবে বাড়তি টাকা। সম্প্রতি হাতে ও মেশিনে তৈরি বিস্কুট-কেকসহ বেকারিপণ্যে ভ্যাট বাড়িয়েছে সরকার। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মাঝপথে এসে সম্প্রতি শতাধিক পণ্য ও সেবার ওপর মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়েছে সরকার। এ তালিকায় রয়েছে বেকারিপণ্যে বিস্কুট ও কেকও। এসব পণ্যে ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ‘এর ফলে ২-১০ টাকা পর্যন্ত বাড়তে পারে বিস্কুটের দাম। বাজারে ৫ টাকা থেকে শুরু করে ২০০ টাকা পর্যন্ত দেশীয় ব্র্যান্ডের বিভিন্ন বিস্কুট পাওয়া যায়।’ দোকানিরা জানিয়েছেন, এখনো বিস্কুটের দাম বাড়ানো হয়নি। এ দিকে, বিস্কুটের ওপর ভ্যাট বাড়ানো ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা। এ নিয়ে মিরপুরের পল্লবীতে আলীম ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের কয়েকজন অভিভাবকের সঙ্গে কথা হয়। জাহাঙ্গীর আলম নামের একজন অভিভাবক বলেন, ‘নিত্যপণ্যের দাম এমনিতেই চড়া। শিশুদের ভালো টিফিন দেবো সেই জো নেই। বিস্কুটের দাম বাড়লে মধ্যবিত্ত পরিবার আরও বেশি বিপদে পড়ে যাবে।’ পলাশ তালুকদার নামের আরেকজন অভিভাবক বলেন, ‘এ মুহূর্তে বিস্কুট, কেক বা শিশু খাদ্যে ভ্যাট বাড়ানোর প্রয়োজন ছিল না। নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায় মানুষের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। এখন বিস্কুটের দাম বাড়াবে, দেখা যাবে অনেক অভিভাবক টিফিন দেবে না। কিংবা সন্ধ্যার নাস্তা বন্ধ করে দেবে।’ বিভিন্ন এলাকার মুদি দোকান ঘুরে জানা যায়, এখনো বাড়ানো হয়নি। পণ্যটির সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে। মিরপুরে এশিয়া বেকারির ম্যানেজার সালমান আহমেদ বলেন, ‘ভ্যাট বাড়ানোর ফলে বেকারির সব ধরনের বিস্কুটের দাম বাড়বে। আমরা এখনো বাড়াইনি, অ্যাসোসিয়েশনের সিদ্ধান্ত মোতাবেক হয়তো আগামী সপ্তাহে মূল্য বাড়ানো হতে পারে।’ বাংলাদেশ অটো বিস্কুটস অ্যান্ড ব্রেড ম্যানুফ্যাকচারের সভাপতি ও অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজের শীর্ষ কর্মকর্তা শফিকুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে খুব অস্বস্তিবোধ করছি। করণীয় নিয়ে আমরা আলাপ-আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।’ পণ্যটির দাম ক্রেতার নাগালের বাইরে চলে যেতে পারে ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেন, ‘১০ শতাংশ ভ্যাট বাড়ল। কাঁচামালের দামও বাড়ছে, আবার শুনছি গ্যাসের দামও বাড়াবে। কোম্পানিগুলো কী করবে, কীভাবে দাম বাড়াবে বা সমন্বয় করবে এটা নিয়ে পর্যালোচনা হচ্ছে।’

দাম বাড়ল এলপিজির

দেশে ভোক্তা পর্যায়ে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম ১২ কেজিতে চার টাকা বাড়িয়ে এক হাজার ৪৫৯ টাকা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) বিজ্ঞপ্তিতে দাম বাড়ানোর নতুন ঘোষণা দেয় বিইআরসি, যা এ দিন থেকেই কার্যকর হবে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ এবং সংশ্লিষ্ট প্রজ্ঞাপন ও আদেশ অনুযায়ী এলপিজির ওপর আরোপিত মূল্য সংযোজন করের (মূসক) হার পরিবর্তনের ফলে জানুয়ারি মাসের জন্য এলপিজির নতুন দাম ঘোষণা করা হয়েছে।’ নির্দেশনা অনুযায়ী, গ্রাহক পর্যায়ে প্রতি ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে এক হাজার ৪৫৯ টাকা। এর আগে, জানুয়ারি মাসের শুরুতে নির্ধারণ করা হয়েছিল এক হাজার ৪৫৫ টাকা। গত ডিসেম্বরেও অপরিবর্তিত ছিল এ দাম। এ ছাড়া, বেসরকারি এলপিজির রিটেইলার পয়েন্টে ভোক্তা পর্যায়ে মূসকসহ প্রতি কেজি গ্যাসের দাম ১২১ টাকা ৫৬ পয়সা ও রেটিকুলেটেড পদ্ধতিতে তরল অবস্থায় সরবরাহ করা গ্যাসের দাম ১১৭ টাকা ৮১ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে।

রেমিট্যান্স পাঠানো দেশের তালিকায় যুক্তরাষ্ট্র এখন শীর্ষে

রেমিট্যান্স পাঠানো দেশের তালিকায় যুক্তরাষ্ট্র এখন শীর্ষে। সংযুক্ত আরব আমিরাতকে (ইউএই) পেছনে ফেলে সবচেয়ে বেশি প্রবাসী আয় পাঠানো দেশের তালিকায় উঠে এসেছে দেশটি। গত ৫ আগস্ট দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর পরই যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রবাসী আয় আসা বেড়ে গেছে, সেই ধারা অব্যাহত রয়েছে। সম্প্রতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর- এই তিন মাসের প্রবাসী আয়সংক্রান্ত বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২৪ সালে সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর এই তিন মাসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রায় ১৪০ কোটি মার্কিন ডলার প্রবাসী আয় এসেছে। এই তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা সংযুক্ত আরব আমিরাত বা ইউএই থেকে এই সময়ে প্রবাসী আয় এসেছে ৯৯ কোটি ডলার। প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘প্রবাসী আয় প্রেরণের দিক থেকে শীর্ষ দশ দেশের তালিকায় এরপরে রয়েছে যথাক্রমে সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, যুক্তরাজ্য, কুয়েত, ইতালি, ওমান, কাতার ও সিঙ্গাপুর।’ বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ‘গত আগস্টে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২৯ কোটি ৩৪ লাখ ডলার প্রবাসী আয় এসেছিল। এরপর সেপ্টেম্বরে তা বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ৩৯ কোটি ডলারে। এক মাসের ব্যবধানে দেশটি থেকে প্রবাসী আয়ে ৩৪ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি হয়। অক্টোবরে তা আরও বেড়ে দাঁড়ায় ৫০ কোটি ডলারে। সেপ্টেম্বরের তুলনায় অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রবাসী আয়ে প্রবৃদ্ধি হয় ২৮ শতাংশের বেশি। নভেম্বরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৫১ কোটি ১৯ লাখ ডলারে।’ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, ‘গত আগস্টেও দেশে সর্বোচ্চ প্রবাসী আয় প্রেরণকারী দেশ ছিল সংযুক্ত আরব আমিরাত। ওই মাসে দেশটি থেকে প্রবাসী আয় এসেছিল ৩৪ কোটি ডলার, যা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে ৫ কোটি ডলার বেশি। সেপ্টেম্বরে এসে প্রবাসী আয়ে ইউএইকে পেছনে ফেলে দেয় যুক্তরাষ্ট্র। সেপ্টেম্বরে ইউএই থেকে প্রবাসী আয় এসেছিল ৩৬ কোটি ডলার। একই মাসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসে ৩৯ কোটি ডলার। এরপর অক্টোবর ও নভেম্বরে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে প্রবাসী আয় কমে যায়। অক্টোবরে দেশটি থেকে আসে ৩৩ কোটি ডলার। নভেম্বরে যা আরও কমে ২৯ কোটি ডলারে নেমে আসে।’

অবৈধ সম্পদের মামলায় বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর জেলে

জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার সুর (এসকে সুর) চৌধুরীকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) বিকালে ঢাকার মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিব তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।এর আগে মঙ্গলবার বিকালে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গোয়েন্দা পুলিশের সহায়তায় তাকে গ্রেপ্তার করে দুদক। এরপর তাকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুুদকের উপ-পরিচালক নাজমুল হোসাইন। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেওয়া হয়। এসকে সুর চৌধুরী ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে ডেপুটি গভর্নরের পদ থেকে অবসরে যান। অভিযোগ আছে, তিনি ডেপুটি গভর্নর থাকাকালে আলোচিত এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদারের (পিকে হালদার) ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনায় সহযোগিতা করেছেন ও সুবিধা নিয়েছেন। পিকে হালদারের আর্থিক কেলেঙ্কারিতে নাম আসায় ২০২২ সালে এসকে সুরসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। ওই বছরের ২৯ মার্চ ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড (আইএলএফএসএল) থেকে আড়াই হাজার কোটি টাকার বেশি অর্থ লুটপাটের ঘটনায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এরপর তার সম্পদ বিবরণী চাওয়া হয়। কিন্তু গত ২৩ ডিসেম্বর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তা দাখিল না করায় এসকে সুর চৌধুরী, তার স্ত্রী সুপর্ণা সুর চৌধুরী ও কন্যা নন্দিতা সুর চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। তাদের বিরুদ্ধে দুদক আইন ২০০৪ এর ২৬ (২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে নিউইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে রক্ষিত বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরির সময় ডেপুটি গভর্নর ছিলেন এসকে সুর চৌধুরী।

মাসরুর আরেফিন পুনরায় সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক

মাসরুর আরেফিন সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) পদে পুনর্নিয়োগ পেয়েছেন। সম্প্রতি ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদনের পরে বাংলাদেশ ব্যাংক পরবর্তী তিন বছরের জন্য তার পুনর্নিয়োগে অনুমতি দিয়েছে। মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) সিটি ব্যাংকের চেয়ারম্যান আজিজ আল কায়সারের বরাত দিয়ে ব্যাংকের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘মাসরুর আরেফিন ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে সিটি ব্যাংকের এমডি ও সিইও হিসেবে প্রথম বারের মত দায়িত্ব পান। দুই মেয়াদে গত ছয় বছরে তিনি ব্যাংকটিকে ভিন্নতর উচ্চতায় নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন। এ সময়কালে ব্যাংকটির বার্ষিক আয় ১ হাজার ৫৯৫ কোটি টাকা থেকে বেড়ে ৪ হাজার কোটি টাকার কাছে পৌঁছায় এবং পরিচালন মুনাফা ৬৬৮ কোটি টাকা থেকে বেড়ে ২০২৪ সালে ব্যাংকের অনীরিক্ষিত প্রতিবেদন অনুযায়ী ২ হাজার ২৮৭ কোটি টাকায় দাঁড়ায়, অর্থাৎ অতি অল্প সংখ্যক দেশী ব্যাংকের একটি হিসাবে সিটি ব্যাংক ২ হাজার কোটি টাকা মুনাফার ক্লাবে ঢোকে।’ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘একইসঙ্গে গত ছয় বছরে ব্যাংকের আয়-ব্যয়ের অনুপাত ৫৮ দশমিক ১ শতাংশ থেকে ৪২ দশমিক ১ শতাংশে নামে এবং বৈদেশিক বাণিজ্য বার্ষিক ৩ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার থেকে ৭ দশমিক ০২ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়। এই সময়কালে ব্যাংকটির আমানত ২১ হাজার কোটি টাকা থেকে ৫২ হাজার কোটিতে এবং ঋণ পোর্টফলিও ২৩ হাজার কোটি থেকে ৪৫ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছায়। এছাড়া, ব্যাংকটির মন্দঋণ অনুপাত ৫ দশমিক ৩ শতাংশ থেকে ৩ দশমিক ৬ শতাংশে নেমে আসে (২০২৩) এবং শ্রেণীকৃত ঋণের বিপরীতে প্রভিশন সংরক্ষণ অনুপাত ৭২ দশমিক ৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ১২২ শতাংশে দাঁড়ায়।’ এতে বলা হয়, ‘তার সময়কালে সিটি ব্যাংক আর্থিক অন্তর্ভুক্তির এজেন্ডা নিয়ে মূলত একটি শহরভিত্তিক ব্যাংক থেকে দেশের আপামর জনমানুষের ব্যাংক হওয়ার পথে এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি ব্যাংকে ডিজিটাল ন্যানো লোন, এজেন্ট ব্যাংকিং এবং ক্ষুদ্র ও মাইক্রো ফাইন্যান্স বিভাগ চালু করার পাশাপাশি সিটিটাচ ডিজিটাল ব্যাংকিংকে আরও জনপ্রিয় করায় মনোনিবেশ করেন। ২০২৪ সালে সিটিটাচ-এ ১ লক্ষ কোটি টাকার বেশি লেনদেন সম্পন্ন হয়।’ মাসরুর আরেফিন এএনজেড গ্রিন্ডলেজ ব্যাংকে ১৯৯৫ সালে ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনি হিসেবে যোগ দেন। ৩০ বছরের কর্মজীবনে তিনি এএনজেড ব্যাংক মেলবোর্ন, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক কাতার, সিটি ব্যাংক এনএ, আমেরিকান এক্সপ্রেস ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক ও ইস্টার্ন ব্যাংকে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করেন। তিনি বরিশাল ক্যাডেট কলেজের প্রাক্তন ক্যাডেট; আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে মাস্টার্স; মেলবোর্নের ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটি থেকে এমবিএ এবং পরে ফ্রান্সের ইনসিয়াড বিজনেস স্কুল থেকে উচ্চতর আর্থিক ব্যবস্থাপনার ওপরে কোর্স শেষ করেন। মাসরুর আরেফিন তার ব্যাংকার পরিচয়ের পাশাপাশি একজন স্বনামধন্য ঔপন্যাসিক, কবি ও অনুবাদক হিসেবেও পরিচিত।

সঞ্চয়পত্র বিক্রি বন্ধে গ্রাহকের ভোগান্তি চরমে

জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের সার্ভার আপগ্রেডেশনের কাজ চলছে। এতে বন্ধ আছে সব ধরনের সঞ্চয়পত্র বিক্রি। তবে, গ্রাহকের কাছে কোন তথ্য না থাকায় সঞ্চয়পত্র কিনতে ব্যাংকে ভিড় করছেন গ্রাহকরা। প্রায় পাঁচ দিন ধরে তারা ঘুরছেন, পাচ্ছেন না কোনো তথ্য। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে তাদের। অধিদপ্তর বলছে, ‘সার্ভার আপগ্রেডেশনের কাজ চলমান থাকায় সাময়িক বন্ধ রয়েছে বিক্রি। মন্ত্রণালয় থেকে কাজ হচ্ছে, যে কোনো সময় সার্ভার চালু হবে, আগের মতোই কিনতে পারবেন গ্রাহকরা।’ এ দিকে, বিগত চার দিনের মতো আজ মঙ্গলবারও (১৪ জানুয়ারি) সকাল থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিসে দেখা যায় নারীসহ একাধিক গ্রাহককে। তাদের সবাই এসেছেন সঞ্চয়পত্র কেনার জন্য, কেউ এসেছেন ভাঙানোর জন্য। আবার কেউ এসেছেন তথ্য (কবে ঠিক হবে সার্ভার) জানার জন্য। তাদের অনেকেই বিরক্তি প্রকাশ করছেন। কারণ হেল্পডেস্ক থেকে ফর্ম পূরণে সহায়তা করা হলেও সার্ভার চালুর বিষয়ে কোনো তথ্য নেই কর্মকর্তাদের কাছে। তারা বলছেন, সঞ্চয় অধিদপ্তর সার্ভার চালু করলে আমরা ফরম জমা নিতে পারবো। বাংলাদেশ ব্যাংক মতিঝিল অফিসের এক অতিরিক্ত পরিচালক জানান, গত বুধবার (৮ জানুয়ারি) থেকে সার্ভার ডাউন। কবে ঠিক হবে, আমরা এ বিষয়ে কোনো কিছু জানি না। সার্ভার ঠিক হলে সবাই সেবা পাবেন। তবে সার্ভার ঠিক না হওয়া পর্যন্ত ফর্ম নিতে পারছেন, জমা হচ্ছে না। কেউ চাইলে কাউন্টারে রেখে দিতে পারেন, সার্ভার ঠিক হলে আমরা জমা করে নেবো। সার্ভার ঠিক হওয়া অধিদপ্তরের কাজ। আতিকুল ইসলাম এসেছেন পুরান ঢাকা থেকে। স্ত্রীর নামে সঞ্চয়পত্র কিনেছেন, এখন জমা দিতে পারছেন না। তিনি বলেন, ‘আমি বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) এসেছিলাম কিন্তু জমা দিতে পারিনি। আজ আবার এসেছি, কিন্তু জমা নিচ্ছে না। অফিস থেকে বলা হচ্ছে কাউন্টারে রেখে দিতে পারেন। কিন্তু কার কাছে রাখবো, এখানে তো চেক আছে, আবার কোনো টোকেনও দেওয়া হবে না। আবার কবে সার্ভার ঠিক হবে সেটাও জানাতে পারছে না। এভাবে সময় অপচয়ের মানে হয় না।’ শিমুল খান নামে একজন গ্রাহক বলেন, ‘আমি আগে থেকে কোন বার্তা পাইনি। এর আগেও আমার সঞ্চয়পত্র কেনা রয়েছে। নতুন করে পাঁচ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র কিনেছি কিন্তু জমার দেওয়ার জন্য দুই দিন ধরে ঘুরছি। কোনো তথ্যও পাচ্ছি না কবে নাগাদ সার্ভার ঠিক হবে। ব্যাংকের গ্রাহককে মোবাইলে এসএমএস করে জানিয়ে দেওয়া হয় কিন্তু অধিদপ্তর আমাদের জানায়নি। এ কারণে গতকালের মতো আজও ঘুরছি।’ আইরিণ মেহজাবিন এসেছেন ফর্ম নিতে। তিনি বলেন, ‘মেয়ে ও ছেলের বউয়ের নামে কিছু সঞ্চয়পত্র কিনবো। গত বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) এসেছিলাম বলেছিল সার্ভার ডাউন, আসলাম বলে সার্ভার ডাউন। কবে সার্ভার ঠিক হবে এটা জানাতে পারছেন না কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা, আমরাও আশা নিয়ে আসছি সার্ভার ঠিক হবে বলে।’ এ ব্যাপারে জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (প্রশাসন ও জনসংযোগ) মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সার্ভারের পুরো কাজটা অর্থমন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের একটা প্রজেক্ট। এটা অর্থ বিভাগের ওই প্রজেক্টের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। সেখান থেকে কাজ চলছে।’ সোমবার (১৩ জানুয়ারি) জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন ও জনসংযোগ) মোহাম্মদ শরীফুল ইসলাম বলেছিলেন, ‘সার্ভার আপগ্রেডেশনের কাজ চলছে। বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) থেকে কাজ চলছে। কাজ সম্পন্ন হয়েছে, সোমবার দুপুরের পর থেকে চালু হবে। সবাই সেবা নিতে পারবেন বলে আশা করছি।’ এদিকে, চলতি মাস থেকে সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার বাড়ছে। জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের আওতায় পরিচালিত সঞ্চয় কর্মসূচিগুলোর (স্কিমের ধরন অনুযায়ী) মুনাফার হার বেড়ে হতে যাচ্ছে ১২ দশমিক ২৫ শতাংশ থেকে ১২ দশমিক ৫৫ শতাংশ পর্যন্ত। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ গত মঙ্গলবার বর্ধিত হার নির্ধারণের আদেশ জারি করতে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগকে (আইআরডি) অনুরোধ করেছে। অর্থ বিভাগের তৈরি এ বিষয়ে প্রস্তাব অনুমোদন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সুপারিশটি এসেছে অর্থসচিবের নেতৃত্বাধীন নগদ ও ঋণ ব্যবস্থাপনা কমিটি (সিডিএমসি) থেকে। যাকে সহায়তা করেছে অর্থ বিভাগের ট্রেজারি ও ঋণ ব্যবস্থাপনা অণুবিভাগ। মুনাফার এ হার ১২ দশমিক ২৫ থেকে ১২ দশমিক ৩৭ শতাংশ পর্যন্ত। অর্থাৎ বর্ধিত হারের কারণে কোনো সঞ্চয়পত্রের মুনাফা ১২ শতাংশের কম হবে না। সবচেয়ে কম মুনাফা (১২.২৫ শতাংশ) পাওয়া যাবে ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংকের বিপরীতে। সবচেয়ে বেশি মুনাফা (১২.৫৫ শতাংশ) পাওয়া যাবে পেনশনার সঞ্চয়পত্রে। সুদহার পরিবর্তনের সঙ্গে বিনিয়োগকারীদের ধাপেও পরিবর্তন আনার কথা বলা হয়েছে পাঠানো চিঠিতে। বর্তমানে ১৫ লাখ টাকা; ১৫ লাখ ১ টাকা থেকে ৩০ লাখ টাকা এবং ৩০ লাখ ১ টাকার বেশি, এই তিন ধাপ রয়েছে। প্রতিটি ধাপে আলাদা মুনাফার হার রয়েছে। তবে নতুন নিয়মে দুটি ধাপের কথা বলা হয়েছে। একটি ধাপে ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকার নিচের বিনিয়োগকারীরা। আর অপর ধাপে ধাপে এর ওপরের বিনিয়োগকারীরা থাকবেন।

বাংলাদেশকে হালাল ফুডের বাজার ধরার প্রস্তুতি নিতে বলল মালয়েশিয়া

বাংলাদেশ মালয়েশিয়ার সাথে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্পর্ক বাড়াতে চায় এবং একই সাথে ভারসাম্যপূর্ণ বাণিজ্য নিশ্চিত করতে চায় বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।সোমবার (১৩ জানুয়ারি) বিকালে সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার মোহাম্মদ শোহাদা অথমানের সাথে সাক্ষাৎকালে তিনি এ কথা জানান।সাক্ষাৎকালে তারা দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও ভবিষ্যৎ বিনিয়োগ সম্ভাবনা নিয়ে কথা বলেন।বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ ইতোমধ্যে কোরিয়া, জাপান ও সিঙ্গাপুরের সাথে মুক্তি বাণিজ্য চুক্তির লক্ষে আলোচনা শুরু করেছে। মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশের বাণিজ্য বৃদ্ধির জন্য দ্রতই আলোচনা শুরু করা দরকার, এতে দুই দেশই উপকৃত হবে।’ বতর্মান প্রেক্ষাপটে মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে বহুবিধ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করার উপযুক্ত পরিবেশ বিরাজ করছে উল্লেখ করে শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের রিজার্ভের একটি বড় অংশ আসে মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স থেকে। দক্ষ জনশক্তির রপ্তাণির মাধ্যমে আমরা সেখানে শক্ত অবস্থান তৈরি করতে চাই।’ তিনি বাংলাদেশে স্পেশাল ইকনোমিক জোনে আরো বেশি মালয়েশিয়ান বিনিয়োগের আহ্বান জানান। পামওয়েল রপ্তানী বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘রমজান মাসে বাংলাদেশে ভোজ্যতেলের চাহিদা বেড়ে যায়। দেশে পামওয়েলর চাহিদাও রয়েছে।’ শোহাদা অথমানে বলেন, ‘মালয়েশিয়া ইলেকট্রিক চিপস ও সেমিকন্ডাক্টর খাতে বিপুল বিনিয়োগ করেছে। এখাতে সেমি কন্ডাক্টর ডিজাইনারসহ প্রচুর দক্ষ জনবল প্রয়োজন। বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের তাদের দেশে প্রশিক্ষণ ও শিক্ষাদানের মাধ্যমে দক্ষ করে সেখানে কাজের সুযোগ করে দিতে চায়।’ তিনি দক্ষ মানব সম্পদ তৈরিতে সহযোগিতা বাড়ানোরও প্রতিশ্রতি দেন। শোহাদা অথমান আরো বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী হালাল ফুডের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। মালয়েশিয়ায় হালাল ফুডের বাজার ১১৩ বিলয়ন ডলার। ২০৩১ সালে বিশ্বে এ বাজারের আকার দাড়াবে ৬ ট্রিলিয়ন ডলারে। মুসলিম দেশ হিসেবে বাংলাদেশের উচিত হালাল ফুডের বাজার লক্ষ্য করে প্রস্তুতি নেওয়া।’ এ সময় হাইকমিশনার হালাল ফুড প্রস্তুত ও সার্টিফিকেশনে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন। প্রসঙ্গত, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ছিল ২ হাজার ৮৭৮ দশমিক ২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। যার মধ্য বাংলাদেশ মালয়েশিয়া হতে ২ হাজার ৫৮৩ দশমিক ৭০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য আমদানি করে এবং ২৯৪ দশমিক ৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি করে।

এনসিসি ব্যাংকে নতুন নিয়োগ প্রাপ্ত অ্যাসিস্ট্যান্ট অফিসারদের ওরিয়েন্টেশন

এনসিসি ব্যাংকে নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত ৫৩ জন অ্যাসিস্ট্যান্ট অফিসারের দিনব্যাপী “ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম” অনুষ্ঠিত হয়েছে। সম্প্রতি ব্যাংকের ট্রেনিং ইন্সিটিটিউটে এ প্রোগ্রামের আয়োজন করা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম.শামসুল আরেফিন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মাহবুব আলম, মো. জাকির আনাম, মো. মনিরুল আলম ও মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, এসভিপি ও হেড অব হিউম্যান রিসোর্সেস ডিভিশন এএইচএম আবদুস সাদিক খান। উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের হিউম্যান রিসোর্সেস ডিভিশনের এফএভিপি ফরহাদ হোসেন পাটোয়ারী ও ট্রেনিং ইন্সিটিটিউটের এফএভিপি ড. সৈয়দ জাভেদ মো. সালেহ্উদ্দিন। বক্তব্যে এম. শামসুল আরেফিন নবাগত অ্যাসিস্ট্যান্ট অফিসারদের কঠোর পরিশ্রম ও উত্তম সেবার মাধ্যমে ব্যাংকের স্বার্থ, সুনাম ও মর্যাদা সমুন্নত রাখার পরামর্শ দেন। তিনি সততা, পরিশ্রম, ত্যাগ ও নৈতিকতা চর্চার মাধ্যমে আগামী দিনে ব্যাংকিং শিল্পের নেতৃত্ব কাঁধে নেয়ার উপযুক্তকরে নিজেকে গড়ে তোলার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান।

জানুয়ারির ১১ দিনে এলো ৮৮৩৯ কোটি টাকার রেমিট্যান্স

দেশে চলতি জানুয়ারি মাসের প্রথম ১১ দিনে বৈধপথে ৭৩ কোটি ৬৬ লাখ ১০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ৮ হাজার ৮৩৯ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২০ টাকা হিসাবে)। দৈনিক গড়ে রেমিট্যান্স এসেছে ৬ কোটি ৬৯ লাখ ডলার। রোববার (১২ জানুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, চলতি জানুয়ারি মাসের প্রথম ১১ দিনে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ২০ কোটি ১৯ লাখ ৩০ হাজার ডলার, বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ২ কোটি ৪৮ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৫০ কোটি ৭৩ লাখ ৩০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ২৫ লাখ ১০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬ মাসে দেশে এক হাজার ৩৭৭ কোটি ৭০ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। আগের বছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল এক হাজার ৮০ কোটি মার্কিন ডলার। আলোচ্য সময়ের ব্যবধানে রেমিট্যান্স বৃদ্ধি পেয়েছে ২৯৭ কোটি ৭০ লাখ ডলার। চলতি অর্থবছরের জুলাইয়ে রেমিট্যান্স এসেছে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার, আগস্টে এসেছে ২২২ কোটি ৪১ লাখ মার্কিন ডলার, সেপ্টেম্বরে এসেছে ২৪০ কোটি ৪৭ লাখ মার্কিন ডলার, অক্টোবরে এসেছে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ ডলার, নভেম্বরে এসেছে ১৯৩ কোটি মার্কিন ডলার এবং ডিসেম্বর মাসে এসেছে ২৬৩ কোটি ৮৭ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স। আগের অর্থবছর ২০২৩-২৪’-এর জুলাইয়ে দেশে রেমিট্যান্স আসে ১৯৭ কোটি ৩১ লাখ ডলার, আগস্টে আসে ১৫৯ কোটি ৯৪ লাখ ডলার, সেপ্টেম্বর মাসে আসে ১৩৩ কোটি ৪৩ লাখ, অক্টোবরে আসে ১৯৭ কোটি ১৪ লাখ ডলার, নভেম্বর মাসে আসে ১৯৩ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে আসে ১৯৯ কোটি ১২ লাখ ডলার, জানুয়ারিতে আসে ২১১ কোটি ৩১ লাখ ডলার, ফেব্রুয়ারিতে আসে ২১৬ কোটি ৪৫ লাখ ডলার, মার্চ মাসে আসে ১৯৯ কোটি ৭০ লাখ ডলার, এপ্রিলে আসে ২০৪ কোটি ৪২ লাখ ডলার, মে মাসে আসে ২২৫ কোটি ৩৮ লাখ ডলার এবং জুন মাসে এসেছিল ২৫৪ কোটি ১৬ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স।

বিদেশে টাকা পাঠানো সহজ করল বাংলাদেশ ব্যাংক

বাংলাদেশ থেকে সেবার বিপরীতে প্রাপ্ত অর্থ বিদেশে পাঠানো সহজ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন থেকে সেবার অর্থ বিদেশে পাঠাতে নিয়ন্ত্রণ সংস্থার অনুমোদন লাগবে না। ব্যাংকগুলো তাদের নিজস্ব সিদ্ধান্তে নিয়মিত বৈদেশিক ব্যয় বাবদ অর্থ বিদেশে পাঠাতে পারবে। রোববার (১২ জানুয়ারি) এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই সার্কুলারের ফলে বিদেশে রেমিট্যান্স পাঠানোর প্রক্রিয়া সহজ হল। সার্কুলারে বলা হয়েছে, ‘সেবা খাতের ব্যয়ের মধ্যে রয়েছে রয়টার্স মনিটর, ব্লুমবার্গ ফি, ব্যাংকার্স আলমনার্ক, ডিউ ডিলিজেন্স রেপোজিটরি ব্যয়, ক্রেডিট রেটিং সার্ভিস ফি, মূল্য যাচাই ফি, প্রভৃতি।’ এছাড়া, ব্যাংকগুলোকে বিদেশ ভ্রমণকারীদের লাউঞ্জ সুবিধার সঙ্গে সম্পর্কিত খরচ পরিশোধের অনুমতি দেওয়া হয়েছে সার্কুলারে। সার্কুলারে আরও বলা হয়েছে, ‘পুঁজিবাজারের মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠান যেমন ব্রোকারেজ ফার্ম, মার্চেন্ট ব্যাংক, অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি ইত্যাদি আর্থিক ইনফরমেশন ও কমিউনিকেশন সংক্রান্ত সেবার জন্য বিদেশে ফি পাঠাতে অনুমতির প্রয়োজন হবে না। তবে, বছরে একজন কার্ড হোল্ডার ৫০০ মার্কিন ডলারের বেশি খরচ করতে পারবে না।’

আইএমএফের চাপে নয়, ট্যাক্স-জিডিপি অনুপাত বাড়াতে ভ্যাটবৃদ্ধি: প্রেস উইং

আইএমএফের চাপে নয়, ট্যাক্স-জিডিপি অনুপাত বাড়াতে সরকার কিছু পণ্যের ওপর ভ্যাট বাড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন। রোববার (১২ জানুয়ারি) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান। সংবাদ সম্মেলনে শফিকুল আলম বলেন, ‘দেশের মানুষের ভালোর জন্য এবং প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর জন্য ট্যাক্স-জিডিপি অনুপাত বাড়াতে হবে। এর পরিপ্রেক্ষিতেই কিছু পণ্যের ওপর ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘সত্যিকার অর্থে আমরা চাচ্ছি যে ট্যাক্স এমন একটা জায়গায় যাক যেন আমাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হয়। ট্যাক্স-জিডিপি অনুপাত কমে যাওয়া মানে যে ঋণ করা হচ্ছে, তা পরিশোধ করা সম্ভব নাও হতে পারে।’ ‘আমরা বলছি না যে ট্যাক্স বাড়ালে মানুষের ওপর প্রভাব পড়বে না। তবে আমরা মনে করছি সেটা খুবই মিনিমাম হবে।’ আইএমএফের চাপে ভ্যাট বাড়ানো হচ্ছে কিনা, সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব বলেন, ‘আইএমএফের কথা আমরা কেন নেব। আমাদের এখানে অর্থনীতিবিদেরা আছেন। আমাদের ম্যাক্রো ইকোনমিক স্ট্যাবিলিটি দরকার। স্ট্যাবিলিটি না থাকলে টাকার মান কমে যায়।’ ‘স্ট্যাবিলিটি বাড়ানোর জন্য আমাদের ট্যাক্স-জিডিপি অনুপাত বাড়াতে হবে। গত ৫ মাসে আমাদের রাজস্ব ঘাটতি ৪২ হাজার কোটি টাকা। এ ঘাটতি আমাদের মেটাতে হবে।’ শফিকুল আলম আরও বলেন, ‘দেশের ফিন্যান্সিয়াল হেলথ ভাল হলে মূল্যস্ফীতি কমে আসে। আইএমএফের ঋণটাই মুখ্য নয়। আইএমএফের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হলে ম্যাক্রো ইকোনমিক স্ট্যাবিলিটির জন্য তারা বেস্ট সাজেশন দেয়। তারা যেখানে ঋণ দেয়, সেখানে বিশ্বব্যাংকসহ বাইরের বিভিন্ন বিনিয়োগ আসা সহজ হয়।’

ব্যবসায় গুটিয়ে নিতে এক্সিট পলিসি চান ব্যবসায়ীরা

চড়া সুদহার, জ্বালানি সংকট, সেই সাথে গ্যাস-বিদ্যুতের দাম ফের বৃদ্ধির পাঁয়তারার খবরে কপালে দুঃশ্চিন্তার ভাজ পড়েছে ব্যবসায়ীদের। তাদের দাবি, দেশে এখন ব্যবসায়ের পরিবেশ নেই। ফলে, গভর্নরের সঙ্গে দেখা করে ব্যবসায় গুটিয়ে নিতে এক্সিট পলিসি চাইলেন তারা। ব্যবসায়ী নেতারা বলেছেন, ‘এপ্রিলে খেলাপি ঋণের নতুন নিয়ম চালু হলে অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাবে। তার উপর নতুন করে ভ্যাট আরোপ, শ্রমিকের বেতন ভাতা বৃদ্ধিকে ব্যবসায়ের অন্তরায় হিসেবে দেখছেন তারা।’ স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও বিনিয়োগবান্ধব হতে পারেনি বাংলাদেশ। এখনও এ দেশে বিনিয়োগ করতে হলে ২৯টি প্রতিষ্ঠান থেকে ১৪১টি ছাড়পত্র নিতে হয় একজন উদ্যোক্তাকে। অন্যদিকে গত ৩ বছরে গ্যাসের দাম বেড়েছে ২৫০ শতাংশ থেকে প্রায় সাড়ে ৪০০ শতাংশ।যদিও ফের দাম বাড়ানোর পাঁয়তারা চলছে। সঙ্গে উচ্চ সুদের হার, এলসি জটিলতা, বেতন-বোনাস, উৎপাদন খরচ ও ডলার রেট বৃদ্ধিতে এখন নাজেহাল অবস্থা তাদের।ব্যবসায়ীদের দাবি বর্তমান পরিস্থিতিতে, দেউলিয়া আইনের পরিবর্তন চান তারা। ব্যবসায়ীরা বলেন, ‘খেলাপি হয়ে জেলে যাওয়ার পরিবর্তে এক্সিট পলিসি অর্থাৎ ব্যবসায় থেকে সম্মান নিয়ে বেরিয়ে যেতে চান তারা।’রোববার (১২ জানুয়ারি) বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) নেতৃত্বে বেশ কয়েকটি সংগঠনের ১৩ সদস্যের প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের সঙ্গে দেখা করে এমন দবি করেন।বিসিআইয়ের সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজ বলেন, ‘ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপির দায় অন্য ব্যবসায়ীদের না। বাংলাদেশ ব্যাংকসহ অন্য ব্যাংকগুলোরও এই দায় এড়ানোর সুযোগ নেই। ক্যাশ ইনসেনটিভ না পেলে ইন্ডাস্ট্রিগুলো মরে যাবে।’বিজিএমইএর প্রশাসক আনোয়ার হোসাইন বলেন, ‘এলসি জটিলতা দূর করতে হবে। পাশাপাশি কমাতে হবে সুদের হারও।’ব্যাংক রিফর্ম কমিটিতে ব্যবসায়ীদের অন্তর্ভুক্তি এবং অ্যাগ্রো প্রসেসিং ইন্ডাস্ট্রিকে গুরুত্ব দিয়ে সাপ্লাই চেইন ঠিক করার দাবিও করেন ব্যবসায়ী নেতারা।

‘ব্রান্ডিং অ্যাওয়ার্ড ২০২৫’ পেল পূবালী ব্যাংক

ব্রান্ডিং বাংলাদেশ কার্যক্রমে বিশেষ অবদান রাখায় পূবালী ব্যাংক পিএলসিকে ‘ব্রান্ডিং অ্যাওয়ার্ড ২০২৫’ দিয়েছে সেন্টার ফর নন রেসিডেন্ট বাংলাদেশি (এনআরবি)। শনিবার (১১ জানুয়ারি) “ব্রান্ডিং বাংলাদেশ” শীর্ষক ওয়ার্ল্ড কনফারেন্স সিরিজ ২০২৫’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এইঅ্যাওয়ার্ড দেয়া হয়। সেন্টার ফর এনআরবি এ কনফারেন্সের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের নিকট থেকে অ্যাওয়ার্ড নেন পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ আলী। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণর আহসান এইচ মনসুর, যুক্তরাজ্যের (টাওয়ার হ্যামলেট) স্পীকার সাইফুদ্দিন খালেদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সেন্টার ফর এনআরবির চেয়ারপারসন এমএস সেকিল চৌধুরী।

পাকিস্তানের সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্ক টেকসই করতে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে

বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সাথে বৈঠক করেছে ফেডারেশন অব পাকিস্তান চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফপিসিসিআই) সভাপতি আতিফ ইকরাম শেখের নেতৃত্বে এক প্রতিনিধিদল। রোববার (১২ জানুয়ারি) বিকালে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে তারা দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, ভিসা সহজীকরণ,পাকিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা এবং ভবিষ্যৎ বিনিয়োগ সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন। বৈঠকে শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘পাকিস্তানের সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্ক টেকসই করতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দুই দেদেশের জনসংখ্যার ভলিউম বিবেচনায় বাণিজ্যের পরিমাণ খুব কম। উভয় দেশেরই সুযোগ রয়েছে বাণিজ্যকে বাড়িয়ে নেওয়ার।’ বাণিজ্য উপদেষ্টা আরো বলেন, ‘বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের সাথে পাকিস্তানের ব্যবসায়ীদের আরো বেশি ডায়ালগ হওয়া দরকার।’ নিজেদের মধ্য সম্ভাব্য সহযোগিতা উন্মোচন দুই দেশকেই লাভবান হতে সাহায্য করবে বলে উল্লেখ করেন তিনি। আতিফ ইকরাম শেখে বলেন, ‘পাকিস্তানের ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে তাদের ব্যবসায়-বাণিজ্য বাড়াতে চায়। ভিসা জটিলতা ও সরাসরি ফ্লাইট না থাকায় সে দেশের ব্যবসায়ীরা কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় তাদের ব্যবসায়-বাণিজ্য বাড়াতে সক্ষম হচ্ছেন না।’ এ সময় তিনি এক্ষেত্রে বিরাজমান জটিলতা নিরসনে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান। প্রতিনিধিদল বাংলাদেশে কৃষিজাত দ্রব্য উৎপাদন ও বিপনন, শিক্ষা, পর্যটন ও সিরামিক খাতে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেন। পাকিস্তান সরকার এক্সপোর্ট ফ্যাসিলিটেশন স্কীম চালু করেছে। এ স্কীমের আওতায় বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা পাকিস্তানে বিনিয়োগ করতে পারে বলেও উল্লেখ করেন তারা। তারা বাংলাদেশে ট্রেড এক্সপো আয়োজনের আগ্রহ প্রকাশ করেন। ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার সৈয়দ আহমদ মারুফ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বারস অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) আমন্ত্রণে ঢাকা সফরে এসেছেন পাকিস্তানের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল।

ভারত থেকে এলো ২৭ হাজার টন চাল

ভারত থেকে আমদানি করা ২৬ হাজার ৯৩৫ মেট্রিক টন চাল বাংলাদেশে এসেছে। দেশটির অন্ধ্রপ্রদেশের কাকিনাড়া বন্দর থেকে চাল নিয়ে ছেড়ে আসা একটি জাহাজ শনিবার (১১ জানুয়ারি) রাত সোয়া ৭টায় চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে। শনিবার খাদ্য মন্ত্রণালয়ের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উন্মুক্ত দরপত্র চুক্তির আওতায় ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের কাকিনাড়া বন্দর থেকে ২৬ হাজার ৯৩৫ মেট্রিক টন চালের একটি চালান এসেছে। চালবাহী জাহাজটি শনিবার রাত সোয়া ৭টায় চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে। এটি বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে ভারত থেকে আমদানি করা চালের দ্বিতীয় চালান। জাহাজে রক্ষিত চালের নমুনা সংগ্রহ করে ভৌত পরীক্ষা শেষে দ্রুত খালাসের কাজ শুরু হবে। এজন্য এরই মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

বিশ্ববাজারে বেড়েছে স্বর্ণের দাম, বাড়তে পারে দেশেও

বিশ্ববাজারে আচানক স্বর্ণের দাম বেড়েছে। গত এক সপ্তাহে প্রতি আউন্স সোনার দামে ৪৫ ডলারের ওপরে বেড়েছে। বিশ্ববাজারে সোনার এমন দাম বাড়ায় দেশের বাজারেও যে কোন সময় দামি এই ধাতুটির দাম বাড়তে পারে। এখন বিশ্ববাজারে সোনার দাম বাড়লেও কিছু দিন আগে বড় দরপতন হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে দেশের বাজারেও সোনার দাম কমানো হয়। সর্বশেষ গত ৩০ ডিসেম্বর সোনার দাম কমানো হয়। তার আগে ২৪ ডিসেম্বর সোনার দাম আরেক দফা কমানো হয়। দেশের বাজারে টানা দুই দফা সোনার দাম কমানোর পর বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স সোনার দাম প্রায় ১০০ ডলার বেড়েছে। দেশের বাজারে যখন সোনার দাম কমানো হয়, সে সময় বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স সোনার দাম ছিল ২ হাজার ৫৯৯ টাকা। এখান থেকেই সোনার দাম বাড়ার প্রবণতা শুরু হয়। তবে গত সপ্তাহে দাম বাড়ার প্রবণতা ছিল সব থেকে বেশি। ৩০ ডিসেম্বর যে সোনার আউন্স ২ হাজার ৫৯৯ টাকা ছিল তা গত সপ্তাহের লেনদেন শেষে ২ হাজার ৬৮৫ দশমিক ৬০ ডলারে দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ, প্রতি আউন্স সোনার দাম বেড়েছে ৮৬ ডলার। এর মধ্যে গত সপ্তাহেই বেড়েছে ৪৫ ডলার। দেশের বাজারে সোনার দাম নির্ধারণের দায়িত্ব পালন করে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। এই বাজুসের দায়িত্বশীল এক সদস্য বলেন, ‘বিশ্ববাজারে যে হারে সোনার দাম বেড়েছে, তাতে দেশের বাজারেও সোনার দাম বাড়ানো হবে। বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৈঠক করে দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেবে। যে কোন সময় দেশের বাজারে সোনার দাম বাড়ার ঘোষণা আসতে পারে।’ এ দিকে, বিশ্ববাজারের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, বিশ্ববাজারে দফায় দফায় দাম বেড়ে গত ৩০ অক্টোবর প্রতি আউন্স সোনার দাম রেকর্ড ২ হাজার ৭৮৯ ডলারে উঠে। বিশ্ববাজারে লাফিয়ে লাফিয়ে দাম বাড়ায় বাংলাদেশে ২০, ২৩ ও ৩১ অক্টোবর টানা তিন দফা সোনার দাম বাড়ানো হয়। ৩১ অক্টোবর সব থেকে ভালো মানের এক ভরি সোনার দাম বাড়ানো হয় ১ হাজার ৫৭৫ টাকা। এতে ভাল মানের এক ভরি সোনার দাম দাঁড়ায় ১ লাখ ৪৩ হাজার ৫২৬ টাকা। দেশের বাজারে এটিই সোনার সর্বোচ্চ দাম।’ বিশ্ববাজারে রেকর্ড দাম হওয়ার পরের দিন থেকেই অর্থাৎ ৩১ অক্টোবর থেকে পতনের মধ্যে পড়ে সোনা। কয়েক দফায় দাম কমে ১৪ নভেম্বর প্রতি আউন্স সোনার দাম ২ হাজার ৫৪৭ দশমিক ১০ ডলারে নেমে যায়। বিশ্ববাজারে দাম বাড়ার প্রেক্ষিতে দেশের বাজারে যেমন সোনার দাম বাড়ানো হয়েছে, তেমনি বিশ্ববাজারে দরপতন দেখা দিলে দেশের বাজারেও সোনার দাম কমানো হয়। ৫ থেকে ১৫ নভেম্বরের মধ্যে চার দফায় দেশের বাজারে ভালো মানের প্রতি ভরি সোনার দাম ৯ হাজার ১৭ টাকা কমানো হয়। এরপর ডিসেম্বরেও কয়েক দফায় দেশের বাজারে সোনার দাম বাড়ানো বা কমানোর ঘটনা ঘটে। বর্তমানে দেশের বাজারে গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর সোনার যে দাম নির্ধারণ করা হয় সেই দামেই সোনা বিক্রি হচ্ছে। ৩০ ডিসেম্বর সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ১ হাজার ৫০ টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ৩৮ হাজার ২৮৮ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ১ হাজার ৪ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ৩২ হাজার ১ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ৮৬৩ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ১৩ হাজার ১৪১ টাকা নির্ধারণ করা হয়। আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনার দাম ৭৩৫ টাকা কমিয়ে ৯২ হাজার ৮৬৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়।