
৮৫৭ কোটি টাকার আত্মসাৎ ও পাচার মামলার অন্যতম আসামি এক্সিম ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও সিইও মোহাম্মদ ফিরোজ হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচা এলাকা থেকে দুদকের সহকারী পরিচালক শাহজাহান মিরাজের নেতৃত্বে একটি দল তাকে আটক করে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। জানা গেছে, গ্রেপ্তারের পর ফিরোজ হোসেনকে আজই আদালতে হাজির করা হবে।
এর আগে, চলতি বছরের ১৭ আগস্ট এক্সিম ব্যাংকের ৮৫৭ কোটি ৯৩ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারসহ ২১ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে দুদক। মামলায় তাদের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অনিয়মের মাধ্যমে ঋণ অনুমোদন ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়।
উল্লেখযোগ্য যে, মামলার প্রধান আসামি নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারকে গত ১ অক্টোবর গুলশান এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছিল ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। আজ গ্রেপ্তার হওয়া ফিরোজ হোসেন এই মামলার দ্বিতীয় উচ্চপর্যায়ের আসামি।
দুদকের মামলায় আরও যাদের নাম রয়েছে তারা হলেন— মদিনা ডেটস অ্যান্ড নাটসের মালিক মোজাম্মেল হোসাইন, এক্সিম ব্যাংকের সাবেক সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও শাখা ব্যবস্থাপক মো. আসাদ মালেক, সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ও দ্বিতীয় কর্মকর্তা মোসা. জেবুন্নেসা বেগম, ইনভেস্টমেন্ট রিস্ক ম্যানেজমেন্ট অফিসার কাওসার আহমেদ, ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আরমান হোসেন, সাবেক এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. আনিছুল আলম, অ্যাডিশনাল ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. ইছরাইল খান ও মো. মঈদুল ইসলাম, ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর মাকসুদা খানম ও মো. জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া।
এছাড়া তালিকায় আছেন সাবেক অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর শাহ মো. আব্দুল বারি, সাবেক অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও সিএফও মো. হুমায়ুন কবীর, সাবেক পরিচালক ও বর্তমান চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম স্বপন, সাবেক পরিচালক মো. আব্দুল্লাহ, পরিচালক মো. নুরুল আমিন, পরিচালক অঞ্জন কুমার সাহা, সাবেক স্বতন্ত্র পরিচালক মো. নাজমুস ছালেহিন ও মিয়া মোহাম্মদ কাওছার আলম।
দুদকের মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, মদিনা ডেটস অ্যান্ড নাটসের অসম্পূর্ণ ঋণ প্রস্তাবের বিষয়ে কোনো যাচাই, সম্ভাব্যতা যাচাই বা স্টক রিপোর্ট ছাড়াই আসামিরা যোগসাজশে ঋণ অনুমোদনের সুপারিশ করেন। ক্ষমতার অপব্যবহার, অসদাচরণ ও বিশ্বাসভঙ্গের মাধ্যমে ইনভেস্টমেন্ট রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্য ও সভাপতি হিসেবে তারা ঋণ অনুমোদনের প্রস্তাব দেন, বোর্ডে মেমো পাঠান এবং বোর্ডের অনুমোদন করিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেন।
তাদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯ ধারা, ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ৫(২) ধারা এবং ২০১২ সালের মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।