
বরগুনার আমতলীতে এক নাটকীয় ঘটনায় এতিমখানায় বিতরণের আগেই থানা প্রাঙ্গণ থেকে ১,৫০০ কেজি জাটকা ইলিশ লুট হয়ে গেছে।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে আমতলী থানার ভেতরে এই ঘটনাটি ঘটে, যা স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
এ দিন সকালে নৌবাহিনী ও উপজেলা মৎস্য বিভাগের যৌথ অভিযানে আমতলী উপজেলার একটি চেকপোস্ট থেকে চারটি গাড়িতে করে পাচার হওয়া প্রায় ১,৫০০ কেজি জাটকা ইলিশ জব্দ করা হয়। পরে মাছগুলো থানার চত্বরে নিয়ে আসা হয় স্থানীয় ৫০টি এতিমখানায় বিতরণের উদ্দেশ্যে।
আমতলী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দেওয়ান জগলুল হাসান বলেন, ‘সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী ১ নভেম্বর থেকে সাগর ও নদীতে জাটকা ইলিশ ধরা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কিন্তু বরগুনা, তালতলী ও কলাপাড়ার কিছু অসাধু জেলে নিয়ম অমান্য করে অবাধে মাছ শিকার চালিয়ে যাচ্ছিল। বৃহস্পতিবার দুপুরে নৌবাহিনী ও উপজেলা মৎস্য বিভাগ যৌথ অভিযান চালিয়ে চারটি গাড়িতে করে পাচারকৃত ১,৫০০ কেজি জাটকা জব্দ করে থানায় নিয়ে আসে। দুপুরের দিকে ওই মাছ স্থানীয় ৫০টি এতিমখানায় বিতরণের প্রস্তুতিকালে হঠাৎ প্রায় শতাধিক লোক থানা ভেতর ঢুকে সব মাছ ভাগাভাগি করে নিয়ে যায়।’
প্রত্যক্ষদর্শীরা অভিযোগ করে বলেন, পুলিশের উপস্থিতিতেই মাছ লুটের ঘটনা ঘটে, কিন্তু কোনো ধরনের বাধা দেওয়া হয়নি। তাদের দাবি, উপজেলা প্রশাসন যদি সময়মতো ও সুষ্ঠুভাবে বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করত, তাহলে এমন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতো না।
আমতলী উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা তন্ময় কুমার জানান, ‘আমি প্রশিক্ষণে ছিলাম। ১,৫০০ কেজি জাটকা ৫০টি এতিমখানায় বিতরণের সময় শতাধিক অজ্ঞাত ব্যক্তি এসে মাছ লুট করে নেয়।’
এ বিষয়ে আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রোকনুজ্জামান খাঁন বলেন, ‘বিষয়টি আমি জেনেছি। যখন ঘটনা ঘটে তখন গ্রাম আদালতের ট্রেনিং প্রোগ্রামে ছিলাম। তবে, এমন কিছু ঘটে থাকলে তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসনের অদক্ষতা ও শৃঙ্খলার অভাবেই জব্দকৃত মাছ এতিমদের হাতে পৌঁছানোর আগেই লুট হয়ে গেছে। ঘটনাটি তদন্তে নামার দাবি উঠেছে স্থানীয়ভাবে।