যমুনা রেলসেতু নির্মাণ প্রকল্প ও চট্টগ্রাম পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নয়ন প্রকল্পে জাইকার ঋণচুক্তি সই
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০২:৫৬ পিএম, ২৭ নভেম্বর ২০২৪
বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে দুইটি ঋণচুক্তি সই করেছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)। যমুনা রেলসেতু নির্মাণ (তৃতীয়) ও চট্টগ্রাম পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নয়ন প্রকল্পে (প্রকৌশল সেবা) জাপানি অফিসিয়াল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসিসট্যান্সের (ওডিএ) আওতায় সর্বমোট ৩৯ হাজার ৯০২ মিলিয়ন ইয়েন (তিন হাজার ১৪৭ কোটি টাকা সমমূল্য) পর্যন্ত ঋণ দিবে জাইকা।
সোমাবর (২৫ নভেম্বর) ঢাকার আগারগাঁওয়ের শেরেবাংলা নগরে অবস্থিত অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের এনইসি-২ সম্মেলন কক্ষে এ চুক্তি সই অনুষ্ঠিত হয়।
চুক্তিতে সই করেন জাইকা বাংলাদেশ অফিসের চিফ রিপ্রেজেন্টেটিভ ইচিগুচি তোমোহিদে ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকী। উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি।
দুই ঋণচুক্তির আওতায় এই ৩৯ হাজার ৯০২ মিলিয়ন ইয়েন দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়। এর মধ্যে যমুনা রেলসেতু নির্মাণ প্রকল্পে (তৃতীয়) ৩৮ হাজার ২০৬ মিলিয়ন ইয়েন এবং চট্টগ্রাম পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নয়ন প্রকল্পে (প্রকৌশল সেবা) এক হাজার ৬৯৬ মিলিয়ন ইয়েন বরাদ্দ দেয়া হয়।
ঋণের তৃতীয় ধাপ হিসেবে এই যমুনা রেলসেতু (তৃতীয়) চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়। যমুনা বহুমুখী সেতুর পাশাপাশি, যমুনা নদীর ওপরে চার দশমিক আট কিলোমিটার জুড়ে এই দৃষ্টিনন্দন রেলসেতুটি রয়েছে। সেতুটি ২০২৫ সালের শুরুতে এর কার্যক্রম শুরু করবে এবং দেশের পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলের মধ্যে রেল যোগাযোগ বৃদ্ধি করবে বলে আশা করা যাচ্ছে। দীর্ঘ মেয়াদী স্থায়িত্ব নিশ্চিত করতে এবং নিয়মিত অপারেশন ও রক্ষণাবেক্ষণ খরচ কমিয়ে আনতে প্রকল্পে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি নেয়া হয়। ঋণে নির্মাণ অংশের জন্য ১.৭ শতাংশ ও পরামর্শ সেবার জন্য ০.৪০ শতাংশ বার্ষিক সুদহার নির্ধারণ করা হয়। দশ বছরের গ্রেস পিরিয়ড সহ ঋণ পরিশোধের সময়কাল নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ বছর।
চট্টগ্রাম পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নয়ন প্রকল্পে সর্বমোট ছয়টি ক্যাচমেন্টের (বৃষ্টির পানির প্রাকৃতিক জলাধার) মধ্যে ক্যাচমেন্ট ২ ও ক্যাচমেন্ট ৪ (কালুরঘাট ও পূর্ব বাকলিয়া), এই দুটির ওপর গুরুত্ব দেয়া হবে। এটি প্রকল্পের প্রথম পর্যায় এবং এতে পুরো পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থার বিস্তারিত ডিজাইন প্রণয়নে কাজ করা হবে। পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন চট্টগ্রামের জনস্বাস্থ্য, পরিবেশগত স্থায়িত্ব ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করার মাধ্যমে বেশকিছু টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) পূরণে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। প্রকল্পটি বর্জ্য পানি শোধন করতে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করবে, যেন বর্জ্য পানি থেকে কার্যকরভাবে নাইট্রোজেন ও ফসফরাস অপসারণ এবং পানির দূষণ রোধ করা যায়। পরামর্শ সেবার ক্ষেত্রে ঋণের বার্ষিক সুদহার ০.২০ শতাংশ; যেখানে দশ বছর গ্রেস পিরিয়ডসহ ঋণ পরিশোধের সময়কাল নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ বছর।
অনুষ্ঠানে ইচিগুচি তোমোহিদে বলেন, ‘আমরা দুটি ভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নে সম্মত হয়েছি। তবে, এই দুটি প্রকল্পের লক্ষ্য একটিই, আর তা হচ্ছে বাংলাদেশের জনগণকে সমৃদ্ধ, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিতে সহায়তা করা। আশা করি, আমাদের অংশগ্রহণ বাংলাদেশের সরকারের পরিশ্রমী কর্মীদের জন্য সহায়ক হবে, যারা একটি উন্নত বাংলাদেশ গড়তে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন।’
মো. শাহ্রিয়ার কাদের ছিদ্দিকী বাংলাদেশের মানুষের জন্য অব্যাহত সহায়তা বজায় রাখায় জাপানের জনগণের প্রতি ধন্যবাদ জানান।