
শপথ নিলেন আপিল বিভাগের ৪ বিচারপতি
প্রধান বিচারপতির কাছে শপথ নিলেন আপিল বিভাগে নিয়োগ পাওয়া ৪ বিচারপতি। মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) সকালে সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে হয় এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান। সেখানে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের নবনিযুক্ত চার বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী, সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল করিম, মো. রেজাউল হক ও এস এম এমদাদুল হক শপথ নেন। এর আগে, সোমবার রাতে বিচারপতিদের নিয়োগ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে আইন মন্ত্রণালয়। আজ শপথ গ্রহণের তারিখ থেকে তাদের নিয়োগ কার্যকর হবে। এর আগে গত ১০ আগস্ট শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে পদত্যাগ করেন ২৪তম প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান এবং আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারপতি। পরবর্তীতে, ঐদিন রাতেই প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান হাইকোর্ট বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। পরদিন ১১ আগস্ট প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন তিনি।

আজ থেকে হাইকোর্টের বিচারকাজ শুরু
সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারকাজ সীমিত আকারে পরিচালনার জন্য ৮টি বেঞ্চ গঠন করেছেন নবনিযুক্ত প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। আজ সোমবার (১২ আগস্ট) থেকে এসব আদালতে বিচারকাজ চলবে। দায়িত্ব নেয়ার প্রথম দিনে এই ঘোষণা দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি। রোববার (১১ আগস্ট) সন্ধ্যায় সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রধান বিচারপতির নির্দেশনা অনুসারে একটি নোটিশ প্রকাশ করা হয়। প্রধান বিচারপতির নির্দেশনায় বলা হয়, ‘আমি এতদ্বারা নির্দেশ করছি যে, সোমবার (১২ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারকার্য সীমিত আকারে পরিচালনার জন্য নিম্নে উল্লিখিত বেঞ্চসমূহ গঠন করা হইলো। বেঞ্চগুলোর মধ্যে পাঁচটি দ্বৈত বেঞ্চ এবং তিনটি একক বেঞ্চ।’ প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের গঠিত বেঞ্চগুলো হলো- বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো. বজলুর রহমান (রিট), বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহ (দেওয়ানি), বিচারপতি খিজির আহমেদ চৌধুরী (কোম্পানি বেঞ্চ), বিচারপতি মো. ইকবাল কবির ও বিচারপতি মো. রিয়াজ উদ্দিন খান (রিট), বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লা (দেওয়ানি ও ফৌজদারি), বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান ও বিচারপতি এ কে এম রবিউল হাসান (ফৌজদারি), বিচারপতি মো. আতোয়ার রহমান ও বিচারপতি মো. আলী রেজা (ফৌজদারি) এবং বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথ (দেওয়ানি)। উল্লেখ্য, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট পতন হয় শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের। তিন দিন পর, অর্থাৎ ৮ আগস্ট নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। এ দিন থেকে আদালতের কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়।

ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি আশফাকুল ইসলাম
ঢাকা: প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের পদত্যাগের পর ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি হচ্ছেন আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম। সুপ্রিম কোর্টের একটি সূত্র জানান, বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম দায়িত্ব পাচ্ছেন। এদিকে আপিল বিভাগের আরও পাঁচ বিচারপতি পদত্যাগ করবেন বলে জানা গেছে। এর আগে প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির পদত্যাগ দাবিতে আজ সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বর্ধিত ভবনের সামনে বিক্ষোভ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। বিক্ষোভ চলাকালে এক পর্যায়ে শনিবার সন্ধ্যার মধ্যেই পদত্যাগ করবেন বলে জানিয়েছিলেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। পরে প্রধান বিচারপতি পদত্যাগের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানান। এ খবরে বেলা ২টার দিকে আন্দোলনকারীরা হাইকোর্ট এলাকা ছেড়ে চলে যান। প্রধান বিচারপতির পদত্যাগ প্রসঙ্গে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, প্রধান বিচারপতি কিছুক্ষণ আগে পদত্যাগপত্র আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দিয়েছেন। পদত্যাগপত্র গৃহীত হওয়ার পরবর্তী প্রক্রিয়া নিয়ে তিনি বলেন, আইন উপদেষ্টা হিসেবে এটা আমার স্বাক্ষরের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টার অফিসে যাবে। উনি এখন রংপুরে আছেন। উনি সম্ভবত প্লেনে আছেন। উনি নেমে আসার পর ওনার সম্মতি সাপেক্ষে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। তারপর উনি এটা গ্রহণ করলে কার্যকর হয়ে যাবে। আমরা আশা করছি এটা আজকের মধ্যেই হবে। এরপর নতুন নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে। নতুন প্রধান বিচারপতি কে হচ্ছেন, জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, এটা অবশ্যই আমাদের প্রধান উপদেষ্টার মতামত গ্রহণ করব। সবার বিবেচনা সাপেক্ষে আমরা চেষ্টা করব সবচেয়ে যোগ্য, নিরপেক্ষ, সৎ একজন যেন নিয়োগ পান। আপিল বিভাগের আরও কয়েকজন বিচারপতির পদত্যাগ নিয়ে উপদেষ্টা বলেন, আপিল বিভাগের অন্যান্য যারা বিচারপতি আছেন তাদের পদত্যাগের বিষয়ে ছাত্র জনতার পক্ষ থেকে পদত্যাগের দাবি আছে বলে আমি শুনেছি। আমি শুনেছি, টেলিভিশন দেখেছি যে অন্যরাও পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। মন্ত্রণালয়ে আসেনি। আমরা অপেক্ষা করছি।

প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের পদত্যাগ
ঢাকা: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দাবির মুখে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান পদত্যাগ করেছেন। শনিবার (১০ আগস্ট) বেলা ৩টার দিকে সচিবালয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। আইন উপদেষ্টা বলেন, প্রধান বিচারপতি কিছুক্ষণ আগে পদত্যাগ পত্র আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দিয়েছেন। পদত্যাগপত্র গৃহীত হওয়ার পরবর্তী প্রক্রিয়া নিয়ে তিনি বলেন, আইন উপদেষ্টা হিসেবে এটা আমার স্বাক্ষরের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টার অফিসে যাবে। উনি এখন রংপুরে আছেন। উনি সম্ভবত প্লেনে আছেন। উনি নেমে আসার পর ওনার সম্মতি সাপেক্ষে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। তারপর উনি এটা গ্রহণ করলে কার্যকর হয়ে যাবে। আমরা আশা করছি এটা আজকের মধ্যেই হবে। এরপর নতুন নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে। নতুন প্রধান বিচারপতি কে হচ্ছেন- জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, এটা অবশ্যই আমাদের প্রধান উপদেষ্টার মতামত গ্রহণ করব। সবার বিবেচনা সাপেক্ষে আমরা চেষ্টা করব সবচেয়ে যোগ্য, নিরপেক্ষ, সৎ একজন যেন নিয়োগ পান। আপিল বিভাগের আরো কয়েকজন বিচারপতির পদত্যাগ নিয়ে উপদেষ্টা বলেন, আপিল বিভাগের অন্যান্য যারা বিচারপতি আছেন তাদের পদত্যাগের বিষয়ে ছাত্র জনতার পক্ষ থেকে পদত্যাগের দাবি আছে বলে আমি শুনেছি। আমি শুনেছি, টেলিভিশন দেখেছি যে অন্যরাও পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। মন্ত্রণালয়ে আসেনি। আমরা অপেক্ষা করছি। এর আগে প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির পদত্যাগ দাবিতে আজ সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বর্ধিত ভবনের সামনে বিক্ষোভ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। বিক্ষোভ চলাকালে এক পর্যায়ে শনিবার সন্ধ্যার মধ্যেই পদত্যাগ করবেন বলে জানিয়েছিলেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। পরে প্রধান বিচারপতি পদত্যাগের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানান। এ খবরে বেলা ২টার দিকে আন্দোলনকারীরা হাইকোর্ট এলাকা ছেড়ে চলে যান। এ খবরে বেলা ২টার দিকে আন্দোলনকারীরা হাইকোর্ট এলাকা ছেড়ে চলে যান।

পদত্যাগের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রধান বিচারপতি
অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের সঙ্গে কথা বলে পদত্যাগের বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। তবে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে কথা বলে আনুষ্ঠানিক পদক্ষেপ নিবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। শনিবার (১০ আগস্ট) দুপুরে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন প্রধান বিচারপতি। এর আগে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানসহ আপিল বিভাগের বিচারপতিদের দুপুর ১টার মধ্যে পদত্যাগের আল্টিমেটাম দেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। বেলা ১১টায় হাইকোর্ট চত্বরে সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ এ আল্টিমেটাম দেন। এছাড়া বেলা ১১টার দিকে প্রধান বিচারপতির পদত্যাগের দাবিতে হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে ঢল নেমে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের। এ সময় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে হাইকোর্টে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করে। বিক্ষোভে শতাধিক আইনজীবী অংশগ্রহণ করেন। বিক্ষোভ মিছিলটি সুপ্রিম কোর্টের মূলভবনসহ আপিল বিভাগের এলাকা প্রদক্ষিণ করেন। মিছিলে নেতৃত্ব দেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল, বাংলাদেশ লইয়ার্স কাউন্সিলের নেতা অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন সরকার প্রমুখ। এর আগে প্রধান বিচারপতিকে ফ্যাসিবাদের দোসর আখ্যায়িত করে ফুলকোর্ট সভা বন্ধ করে পদত্যাগের দাবিতে আল্টিমেটাম দেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ।

অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পক্ষে মত দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ
ঢাকা: প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর সাংবিধানিক শূন্যতার পরিপ্রেক্ষিতে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন ও উপদেষ্টাদের শপথের পক্ষে মত দিয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুসারে মত চাইলে বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) এ মত দেন আপিল বিভাগ। এরপর উপদেষ্টাদের শপথ পড়ানো হয়। সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদে বলা হয়, যদি কোনো সময়ে রাষ্ট্রপতির নিকট প্রতীয়মান হয় যে, আইনের এইরূপ কোনো প্রশ্ন উত্থাপিত হইয়াছে বা উত্থাপনের সম্ভাবনা দেখা দিয়াছে, যাহা এমন ধরনের ও এমন জনগুরুত্বসম্পন্ন যে, সেই সম্পর্কে সুপ্রিম কোর্টের মতামত গ্রহণ করা প্রয়োজন, তাহা হইলে তিনি প্রশ্নটি আপিল বিভাগের বিবেচনার জন্য প্রেরণ করিতে পারিবেন এবং উক্ত বিভাগ স্বীয় বিবেচনায় উপযুক্ত শুনানির পর প্রশ্নটি সম্পর্কে রাষ্ট্রপতিকে স্বীয় মতামত জ্ঞাপন করিতে পারিবেন। স্পেশাল রেফারেন্স ১/২০২৪ এ সুপ্রিম কোর্ট বলেন, দেশের বর্তমান উদ্ভূত পরিস্থিতিতে যেহেতু প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন এবং রাষ্ট্রপতি বিগত ৬ আগস্ট দ্বাদশ জাতীয় সংসদ ভেঙে দিয়েছেন, সেহেতু গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৪৮ (৩) অনুসারে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ গ্রহণ করা সম্ভবপর নয়। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে সাংবিধানিক শূন্যতা পূরণে অন্তর্বতীকালীন সরকার গঠন করার বিষয়ে সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগ হতে ৮ আগস্ট প্রেরিত পত্রে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদে বর্ণিত জনগুরুত্বপূ্ণ প্রশ্নে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের মতামত যাচনা করা হয়েছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামানের বক্তব্য শোনা হলো। এমতাবস্থায়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের কোনো বিধান না থাকায় উল্লিখিত প্রশ্নের বিষয়ে সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদে প্রদত্ত উপদেষ্টামূলক এখতিয়ার প্রয়োগ করে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ এই মতামত প্রদান করছে যে, রাষ্ট্রের সাংবিধানিক শূন্যতা পূরণে জরুরি প্রয়োজনে রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রের নির্বাহী কার্য পরিচালনার নিমিত্ত অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা হিসেবে প্রধান উপদেষ্টা এবং অন্যান্য উপদেষ্টা নিযুক্ত করতে পারবেন। রাষ্ট্রপতি উক্তরূপে নিযুক্ত প্রধান উপদেষ্টা এবং অন্যান্য উপদেষ্টাগদের শপথ পাঠ করাতে পারবেন। এদিকে আজ এক বার্তায় সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন জানায়, সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি সুপ্রিম কোর্টের মতামত চাইতে পারেন। সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে গতকাল এ সংক্রান্ত একটি চিঠি আসে যেখানে রাষ্ট্রপতি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের মতামত যাচনা করেন। সেই আলোকে স্পেশাল রেফারেন্স ১/২০২৪ এর মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ যেহেতু প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন এবং রাষ্ট্রপতি জাতীয় সংসদ ভেঙে দিয়েছেন, এরকম পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রের নির্বাহী কার্য পরিচালনার নিমিত্তে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা যেতে পারে এবং রাষ্ট্রপতি প্রধান উপদেষ্টাসহ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অন্যান্য উপদেষ্টাদের নিযুক্ত করতে পারেন ও প্রধান উপদেষ্টাসহ অন্যান্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করাতে পারেন মর্মে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ মতামত দিয়েছেন।

পদত্যাগ করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন
আওয়ামী লীগ সরকারের শীর্ষ আইন কর্মকর্তা (অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল) এ এম আমিন উদ্দিন পদত্যাগ করেছেন। বুধবার রাষ্ট্রপতি বরাবার তিনি তার পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন। পদত্যাগের কারণ ‘ব্যক্তিগত’ বলে উল্লেখ করেছেন। এর আগে ২০২১ সালের ২৪ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের আওয়ামীলীগপন্থি আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিনকে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল পদে নিয়োগ দেন তৎকালিন রাষ্ট্রপতি। এদিকে আওয়ামীলীগ সরকারের পক্ষ নিয়ে উচ্চ আদালতেক আইনি লড়াই পরিচালনাকারী প্রধান আইন কর্মকর্তাসহ বেশ ক’জন আইন কর্মকর্তা পদত্যাগ করছেন মর্মে গুঞ্জণ ছড়িয়ে পড়েছে মঙ্গলবার। আজ-কালের মধ্যেই তারা প্রেসিডেন্ট বরাবর পদত্যাগপত্র পাঠাবেন। এর মধ্যে অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিনউদ্দিন, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এসএম মুনীর, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মেহেদী হাছান চৌধুরীসহ অন্তত ১৩ ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এবং ৯ সহকারি অ্যাটর্নি জেনারেল রয়েছেন। অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ আমিন উদ্দিন ২০২০ সালের ৮ অক্টোবর দেশের ১৬তম অ্যাটর্নি জেনারেল নিযুক্ত হন। দুই সরকার মিলিয়ে চার বছরেরও বেশি সময় ধরে তিনি অকুন্ঠচিত্তে আওয়ামী লীগ সরকারকে আইনি সেবা দিয়ে গেছেন।

শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি না করার নির্দেশনা চেয়ে রিটের আদেশ আজ
আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের ওপর সরাসরি লাইভ রাউন্ড (তাজা গুলি) না করার নির্দেশনা চেয়ে করা রিট আবেদনের ওপর আদেশের জন্য সংশ্লিষ্ট হাইকোর্ট বেঞ্চের কার্যতালিকায় তোলা হয়েছে। গুলি না করার নির্দেশনা চেয়ে রিটের আদেশ হতে পারে আজ। রোববার (৪ আগস্ট) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসাইন দোলনের দ্বৈত হাইকোর্ট বেঞ্চের কার্যতালিকার ১০ নম্বর ক্রমিকে রাখা হয়েছে আবেদনটি। দেশের বিভিন্ন জায়গায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর সরাসরি লাইভ রাউন্ড (তাজা গুলি) ব্যবহার না করার নির্দেশনা চেয়ে গত ২৯ জুলাই রিট আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী। সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী মানজুর-আল-মতিন ও আইনুন্নাহার সিদ্দিকা এই রিট করেন। রিটে আইনসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান, পুলিশের মহাপরিচালক, সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর প্রধানকে বিবাদী করা হয়। একই সঙ্গে রিটে ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের দ্রুত মুক্তি দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, সে মর্মেও রুল চাওয়া হয়। এরপর রিটের ওপর গত ২৯ ও ৩০ জুলাই শুনানি হয়। এরপর ৩১ জুলাই রিটটি আদেশের জন্য হাইকোর্টের ওই বেঞ্চ কার্যতালিকায় ওঠে। কিন্তু সেদিন দ্বৈত বেঞ্চ বসেননি। জানা যায়, অসুস্থতার কারণে বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসাইন দোলন ৩১ জুলাই ও ১ আগস্ট ছুটি নেন। এ কারণে ওই দুদিন দ্বৈত বেঞ্চ বসেননি। এর মধ্যে ১ আগস্ট আটক ছয় সমন্বয়ককে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। উল্লেখ্য, কোটা সংস্কারের দাবিতে গত ১ জুলাই শিক্ষার্থীদের লাগাতার আন্দোলন শুরু হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ১৫ জুলাইয়ের আন্দোলন ঘিরে সংঘর্ষের পর ঢাকাসহ সারাদেশে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এরপর আন্দোলন চলাকালে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় হামলা, সংঘর্ষ, সহিংসতা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও হতাহতের ঘটনা ঘটে।

রোববার সাক্ষ্য নিতে রংপুর যাচ্ছে তদন্ত কমিশন
ঢাকা: কোটা সংস্কার আন্দোলনে সহিংসতায় আবু সাঈদসহ ৫ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় সাক্ষ্য নিতে তিন সদস্যের বিশিষ্ট বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন আগামী রোববার (৪ আগস্ট) রংপুর যাচ্ছে। তদন্ত কমিশনের সদস্যরা হলেন, বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার ও বিচারপতি মোহাম্মদ শওকত আলী চৌধুরী। শনিবার (৩ আগস্ট) এ তথ্য জানিয়েছেন কমিশনকে সাচিবিক সহায়তাদানকারী কর্মকর্তা আপিল বিভাগের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার শেখ মোহা. আমিনুল ইসলাম। সোমবার (৫ আগস্ট) সকাল নয়টা থেকে রংপুর সার্কিট হাউজে নিহত আবু সাঈদের বিষয়ে, ৬ তারিখ সাজ্জাদ হোসেন, মোসলেম উদ্দিন ও মানিক মিয়ার বিষয়ে, ৭ তারিখ মেরাজুল ইসলাম ও আব্দুল্লাহ আল তাহেরের বিষয়ে সাক্ষ্য নেবে তদন্ত কমিশন। এর আগে বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) কমিশনের সভাপতি বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামান জানিয়েছিলেন, ১৮ জুলাই এক গেজেট এক সদস্য বিশিষ্ট কমিশন করা হয়েছিল। নতুন গেজেটে তিন সদস্যের কমিশন করা হয়েছে। এতে আগের গেজেট বাতিল করা হয়েছে। কাজের পরিধি ও সময় বেড়েছে। এখন ১৬ জুলাই থেকে ২১ জুলাই পর্যন্ত সহিংসতা ও সংঘর্ষে নিহতদের মৃত্যুর কারণ ও দায়ী ব্যক্তিদের শনাক্ত এবং ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণ করবে। ৪৫ কর্ম দিবসের মধ্যে এ প্রতিবেদন দিতে হবে। এর অংশ হিসেবে আগামী ৪ তারিখ কমিশন রংপুর যাবে। সোমবার সকাল নয়টা থেকে রংপুর সার্কিট হাউজে নিহত আবু সাঈদের বিষয়ে, ৬ তারিখ সাজ্জাদ হোসেন, মোসলেম উদ্দিন ও মানিক মিয়ার বিষয়ে, ৭ তারিখ মেরাজুল ইসলাম ও আব্দুল্লাহ আল তাহেরের বিষয়ে সাক্ষ্য নেবে তদন্ত কমিশন। জনসাধারণ সার্কিট হাউজে এসে এ বিষয়ে তথ্য দিতে পারবে। আর একটি ই-মেইল অ্যাড্রেস চালু করা হয়েছে। সেখানেও বক্তব্য পাঠাতে পারবে। রংপুর থেকে শুরু করে ক্রমান্বয়ে সব জায়গায় যাবো বলে জানান হাইকোর্ট বিভাগের এই বিচারপতি।

জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে নয় বিচারপতির শ্রদ্ধা
ঢাকা: ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে অবস্থিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন হাইকোর্ট বিভাগে স্থানী নিয়োগ পাওয়া নয় বিচারপতি। শনিবার (৩ আগস্ট) সকাল ৯টায় তারা এ শ্রদ্ধা জানান। এসময় বিচারপতিরা জাতির পিতার পরিবারের সব শহীদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধার কথা গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনাসহ পরিবার-পরিজনের মঙ্গল কামনায় মোনাজাত করেন। এর আগে, মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে তিনটায় সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে তাদের শপথ বাক্য পাঠ করান প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন রেজিস্ট্রার জেনারেল আজিজ আহমদ ভূঞা। ২০২২ সালের ৩০ জুলাই অতিরিক্ত বিচারপতি তারা হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন। সুপ্রিম কোর্ট জাজেস লাউঞ্জে তাদের শপথ পড়িয়েছিলেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। ৯ বিচারপতি হলেন মোহাম্মদ শওকত আলী চৌধুরী, মো. আতাবুল্লাহ, বিশ্বজিৎ দেবনাথ, মো. আলী রেজা, মো. বজলুর রহমান, কে এম ইমরুল কায়েশ, ফাহমিদা কাদের, মো. বশির উল্লাহ, এবং এ কে এম রবিউল হাসান। দুই বছর পর ৩০ জুলাই নয়জনকে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতিমঙ্গলবার (৩০ জুলাই) এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে আইন মন্ত্রণালয়। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, রাষ্ট্রপতি সংবিধানের ৯৫ অনুচ্ছেদের ক্ষমতাবলে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে পরামর্শক্রমে হাইকোর্ট বিভাগের নয়জন অতিরিক্ত বিচারপতিকে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। এ নিয়োগ শপথ গ্রহণের তারিখ হতে কার্যকর হবে।

কারাগারে থাকা ৪২ এইচএসসি পরীক্ষার্থীর জামিন
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সহিংসতার ঘটনায় ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন থানার মামলায় গ্রেপ্তার ৪২ জন এইচএসসি পরীক্ষার্থীকে জামিন দিয়েছেন আদালত।শুক্রবার (২ আগস্ট) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ রশিদুল আলমের আদালত এ আদেশ দেন। আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. সাইদুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। জামিন প্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন- আলী হোসেন, ইসমাইল তালুকদার, ইমরান হোসেন, আব্দুল কাদের, নাফিজ, ইয়ামিন শেখ, আসিফ খান, আব্দুস সামাদ, এলাহি বক্স, সামির হোসেন, তানজিল হাসান, আলাউদ্দিন, অপু, ফয়সাল আহমেদ সামিউল আলম, শাখাওয়াত হোসেন, রনি শেখ, ইমরান আহম্মেদ আফসার, সম্রাট খলিফা, রাশিদুল ইসলাম তুহা, মাসুদ পারভেজ, আসিফ, আল আমিন, রায়হান ইসলাম, শাকিল আহম্মেদ, জাবের হোসেন, রুহুল আমিন, রাহাত উবায়দুল্লাহ, জাকি, তুহিন, নাহিদ আহম্মেদ, মাসুদ রানা, শরিফুল ইসলাম, শিহাব হোসেন, তাসরিফ স্বপ্ন, ছোয়াদ উর রহমান। বিস্তারিত আসছে...

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এখন এক বিপদের কারবার: প্রধান বিচারপতি
ঢাকা: ‘সোশ্যাল মিডিয়া এখন এক বিপদের কারবার’ বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। আপিল বিভাগে এক মামলার শুনানিতে বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি এই মন্তব্য করেন। প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেন, সোশ্যাল মিডিয়া এখন এক বিপদের কারবার। ঘরের ভেতরের বিষয়গুলো এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় চলে আসে। সোশ্যাল মিডিয়া নিয়ে কিছু বললে আবার রাইট টু ফ্রিডম নিয়ে প্রশ্ন উঠে। বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের আদালত অবমাননা নিয়ে ওই মামলায় আইনজীবী ছিলেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন। আদালত ২২ আগস্ট পর্যন্ত মুলতবি করে ওইদিন আইনজীবীদের হাজির থাকতে বলেছেন। সাত আইনজীবীর মধ্যে আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী প্রয়াত হওয়ায় তার নাম বাদ দেওয়া হয়। শোক দিবসের অনুষ্ঠানে ‘আমরা বাংলাদেশের বিচারপতিরা আমরা হলাম শপথবদ্ধ রাজনীতিবিদ’- আপিল বিভাগের এক বিচারপতির এমন বক্তব্যকে কেন্দ্র করে মিছিল-স্লোগান-সভা অব্যাহত রাখায় বিএনপিপন্থী কয়েকজন আইনজীবীর বিরুদ্ধে গত বছরের ২৯ আগস্ট আদালত অবমাননার আবেদন করেন আইনজীবী মোহাম্মদ নাজমুল হুদা। পরে ১৫ নভেম্বর এক আদেশে আপিল বিভাগ সশরীরে হাজির হয়ে আদালত অবমাননার অভিযোগের ব্যাখ্যা দিতে ১৫ জানুয়ারি বিএনপিপন্থী সাত আইনজীবীকে তলব করেন। সে অনুযায়ী ১৫ জানুয়ারি সাত আইনজীবী আপিল বিভাগে হাজির হন। পরে শুনানি মুলতবি করা হয়। আইনজীবীরা হলেন, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের ফোরামের মহাসচিব ও বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট ফাহিমা নাসরিন মুন্নি, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম সুপ্রিম কোর্ট শাখার সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল জব্বার ভূঁইয়া ও সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সহ-সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান খান এবং জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সুপ্রিম কোর্ট শাখার সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল।

বিচারপতি ছুটিতে, গুলি না চালানোর রিটের শুনানি আজও হচ্ছে না
ঢাকা: দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনরত বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি না চালাতে এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘কথিত আটক’ ছয় সমন্বয়ককে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের ওপর বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) শুনানি হচ্ছে না। এক বিচারপতি ছুটিতে থাকায় এ শুনানি হচ্ছে না। এর আগে গত বুধবার (৩১ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টার পর বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসাইন দোলনের হাইকোর্ট বেঞ্চের এক কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিনকে এক বিচারপতির অসুস্থতার কথা জানান। তাই দ্বৈত বেঞ্চ বসবেন না। এরপর অ্যাটর্নি জেনারেল ওই বিচারকক্ষ থেকে বেরিয়ে যান। এর আগে সোমবার সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী এ রিট করেন। তারা হলেন- আইনজীবী মনজুর-আল-মতিন ও আইনুন্নাহার সিদ্দিকা। রিটে আইন সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান, পুলিশের মহাপরিদর্শকসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে। রুলে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে সরাসরি তাজা গুলির ব্যবহার কেন আইনগত কর্তৃত্ব-বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না এবং তাজা গুলি ব্যবহার না করার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে তথাকথিত নিরাপত্তার নামে হেফাজতে নেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের দ্রুত মুক্তি দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, রিটে সে মর্মেও রুল চাওয়া হয়েছে।

কোটা নিয়ে আপিল বিভাগের শুনানি রবিবার
সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে আপিল বিভাগের শুনানি আগামী রবিবার (২১ জুলাই)। আজ বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) বিশেষ চেম্বার আদালতের এক আদেশে এ তথ্য জানানো হয়। এর আগে এক সংসাদ সম্মেলনে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেছেন, কোটা বাতিল চেয়ে লিভ টু আপিল দ্রুত শুনানি করতে সরকারের পক্ষ থেকে আমাকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। “আমরা রবিবার সকালেই আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল দ্রুত শুনানির জন্য মেনশন করব। আশা করছি, জনগুরুত্ব বিবেচনায় আদালত আমাদের আবেদন গ্রহণ করবেন। শুনানিতে আমরা হাইকোর্টের রায় বাতিল চাইব।” এদিকে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানিয়েছেন, কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি সরকার। জাতীয় সংসদ ভবনে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান। আইনমন্ত্রী বলেন, হাইকোর্টের পরিপত্র বাতিল নিয়ে হাইকোর্টের শুনানি এগিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনার জন্য আমাকে ও শিক্ষামন্ত্রীকে দায়িত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

মিল্টন সমাদ্দারের জামিন
ঢাকা: প্রতারণার মাধ্যমে মৃত্যুসনদ জালজালিয়াতির মামলায় চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার আশ্রমের চেয়ারম্যান মিল্টন সমাদ্দারকে জামিন দিয়েছেন আদালত। সোমবার (১৫ জুলাই) ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আসসামস জগলুল হোসেন তার জামিন মঞ্জুর করেন। ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। গত ১ মে রাতে রাজধানীর মিরপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে মিল্টন সমাদ্দারকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। তার বিরুদ্ধে মিরপুর মডেল থানায় প্রতারণার মাধ্যমে জালিয়াতি, মানবপাচার এবং মারধর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে তিনটি মামলা দায়ের করে পুলিশ।

কোটা নিয়ে হাইকোর্টের ২৭ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ
ঢাকা: সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা বহাল রেখে হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়েছে। রোববার (১৪ জুলাই) ২৭ পৃষ্ঠার এ পূর্ণাঙ্গ রায় সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। এর আগে গত ১১ জুলাই রায়ের মূল অংশ প্রকাশ করা হয়। সেখানে সব কোটা বজায় রেখে সরকারি নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রয়োজন মনে করলে সরকার কোটার হার পরিবর্তন বা বাড়াতে-কমাতে পারে বলে রায় দেন হাইকোর্ট। আদালত ২০১৮ সালের পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে বলেন, ২০১২ সালে করা এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে দেওয়া রায় ও আদেশ, যেটি ২০১৩ সালের লিভ টু আপিলের পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগের বহাল ও সংশোধিত আদেশ এবং ২০১১ সালের ১৬ জানুয়ারির অফিস আদেশের আলোকে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান/নাতি–নাতনিদের জন্য কোটা পুনর্বহাল করতে বিবাদীদের নির্দেশ দেওয়া হলো। এছাড়া জেলা, নারী, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, উপজাতি–ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর জন্য কোটাসহ, যদি অন্যান্য থাকে, তাদের ক্ষেত্রে কোটা বজায় রাখতে নির্দেশ দেওয়া হলো। এ বিষয়ে যত দ্রুত সম্ভব, আদেশ পাওয়ার তিন মাসের মধ্যে পরিপত্র জারি করতে নির্দেশ দেওয়া হলো। রায়ে হাইকোর্ট আরও বলেন, প্রয়োজনে উল্লিখিত শ্রেণির ক্ষেত্রে কোটা পরিবর্তন, অনুপাত বা শতাংশ কমানো বা বাড়ানোর বিষয়ে এই রায় বিবাদীদের জন্য কোনো বাধা তৈরি করবে না। যেকোনো পাবলিক পরীক্ষায় কোটা পূরণ না হলে সাধারণ মেধাতালিকা থেকে শূন্য পদ পূরণ করায় বিবাদীদের স্বাধীনতা রয়েছে। নবম গ্রেড (পূর্বতন প্রথম শ্রেণি) ও ১০ম থেকে ১৩তম গ্রেডের (পূর্বতন দ্বিতীয় শ্রেণি) পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি বাতিল করে ২০১৮ সালে সরকার পরিপত্র জারি করে। ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর জারি করা এ পরিপত্র চ্যালেঞ্জ করে ২০২১ সালে রিট দায়ের করেন অহিদুল ইসলামসহ সাত শিক্ষার্থী। একই বছরের ৭ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রুল জারি করেন। ওই রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে চলতি বছরের ৫ জুন রায় দেন হাইকোর্ট। এরপর ওই রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে। এর প্রতিবাদে দেশব্যাপী শিক্ষার্থীদের আন্দোলন শুরু হয়। পরে গত ৯ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতির সভাপতি আল সাদী ভূঁইয়া এবং উর্দু বিভাগের শিক্ষার্থী আহনাফ সাঈদ খান চেম্বার কোর্টের অনুমতি নিয়ে একটি সিএমপি (হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে) আবেদন করেন। ওইদিনই আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে সেই আবেনের শুনানির জন্য ১০ জুলাই দিন ধার্য করেন চেম্বার আদালত। সেদিন মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে জারি করা পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিষয়ে চার সপ্তাহের স্থিতাবস্থা দেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ সদস্যের আপিল বেঞ্চ। আগামী ৭ আগস্ট এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানি হবে। শুনানির সময় প্রধান বিচারপতি আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে বলেন, সব প্রতিবাদী কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের স্ব স্ব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরে গিয়ে নিজ নিজ কাজে অর্থাৎ পড়াশোনায় মনোনিবেশ করতে বলা হয়েছে। দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রক্টর এবং অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানরা তাদের ছাত্র-ছাত্রীদের স্ব স্ব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরিয়ে নিয়ে শিক্ষার উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করবেন বলে এ আদালত আশা করে। আদালত আরও বলেন, স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদকারী ছাত্র-ছাত্রীরা চাইলে আইনজীবীর মাধ্যমে তাদের বক্তব্য এ আদালতের সামনে তুলে ধরতে পারে। আদালত মূল আবেদন নিষ্পত্তির সময় তাদের বক্তব্য বিবেচনায় নেবেন। কিন্তু শিক্ষার্থীরা বিষয়টি নির্বাহী বিভাগের সঙ্গে সম্পর্কিত বলে আন্দোলন চলমান রাখার ঘোষণা দেন। এর ধারাবাহিকতায় রোববার তারা রাষ্ট্রপতির বাসভবন বঙ্গভবন অভিমুখে পদযাত্রা করেন। পরে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদল রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিবের কাছে স্মারকলিপি জমা দেয়।

ভিকারুননিসায় ১৬৯ জনের ভর্তি বাতিলই থাকবে
ঢাকা: বয়সের নিয়ম না মানার অভিযোগে রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের স্কুল শাখায় ভর্তিকৃত প্রথম শ্রেণির ১৬৯ শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল থাকবে বলে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল খারিজ করে দিয়েছেন। ভর্তি বাতিল হওয়া শিক্ষার্থীদের পক্ষে পৃথক লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমিত চেয়ে আবেদন) রোববার (১৪ জুলাই) খারিজ করে দেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চ। আদালতে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ রাফিউল ইসলাম। রিট আবেদনকারী দুজন অভিভাবকের পক্ষে আইনজীবী শামীম সরদার। লিভ টু আপিল আবেদনের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক ও মুস্তাফিজুর রহমান খান। আইনজীবী মোহাম্মদ রাফিউল ইসলাম জানান, ১৬৯ জন শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল সংক্রান্ত হাইকোর্ট বিভাগ যে রায় দিয়েছিলেন, সেই রায়ের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকের করা পৃথক লিভ টু আপিল করেছিলেন। দুটি আবেদনই শুনানি শেষে আজ আপিল বিভাগ খারিজ করে দিয়েছেন। ফলে স্কুল কর্তৃপক্ষ যে ১৬৯ জনের ভর্তি বাতিল করেছিল সেটা বাতিলই থেকে যাবে। আর অপেক্ষমাণ তালিকায় যারা রয়েছেন তারা ১৬৯ আসনে ভর্তির সুযোগ পাবেন। তিনি বলেন, যাদের ভর্তি বাতিল করেছেন তারা স্কুলে অধ্যয়নরত না। আর আসনগুলো খালি আছে। এখন সিরিয়াল অনুসারে ভর্তি করা হবে। গত ২১ মে হাইকোর্ট রায় দেন। ওই রায়ের ২৯ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি সম্প্রতি প্রকাশ করা হয়েছে। এরপর ভর্তি বাতিল হওয়া শিক্ষার্থীদের পক্ষে লিভ টু আপিল করা হয়। বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক-আল-জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চের দেওয়া রায়ে বলা হয়, ১৫ দিনের মধ্যে ১৬৯ শিক্ষার্থীর শূন্য আসনে অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে সিরিয়াল অনুযায়ী শিক্ষার্থী ভর্তি করতে ভিকারুননিসা নূন স্কুল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আরও ভালো ভর্তি প্রক্রিয়া, জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনি ব্যবস্থা নিতে একটি অনুসন্ধান কমিটি করতে বলা হয়েছে। ভিকারুননিসায় ভর্তি নিয়ে বয়সের নিয়ম না মানার অভিযোগ এনে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি ইচ্ছুক দুই শিক্ষার্থীর মা গত ১৪ জানুয়ারি রিট করেন। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২৩ জানুয়ারি হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেন। তার ধারাবাহিকতায় ২৮ ফেব্রুয়ারি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) একটি স্মারক হাইকোর্টে উপস্থাপন করে। মাউশির ওই আদেশ মতে, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে বয়সের ঊর্ধ্বসীমা অনুসরণ করেনি। ১ জানুয়ারি ২০১৭ সালের আগে জন্মগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের ভর্তি করার প্রক্রিয়া ছিল বিধিবহির্ভূত। এসব ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে ২০১৫ সালে জন্মগ্রহণকারী ১০ জন ও ২০১৬ সালে জন্মগ্রহণকারী শিক্ষার্থী সংখ্যা ১৫৯ জন। এসব শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল করে শিগগিরই মাউশিকে অবহিত করার অনুরোধ করা হলো। এরপর স্কুল কর্তৃপক্ষ ১৬৯ জনের ভর্তি বাতিল করে। ১৬৯ শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিলের পর এখন অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে এক সপ্তাহের মধ্যে শূন্য আসনে ভর্তি নিতে গত ৬ মার্চ নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। ওই আদেশের বিরুদ্ধে বাতিলকৃত শিক্ষার্থীর অভিভাবক আপিল বিভাগে আবেদন করেন। আপিল বিভাগ ২০ মার্চ হাইকোর্টে জারি করা রুল দুই মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে বলেন। এ সময় পর্যন্ত ওই শিক্ষার্থীদের ভর্তি বাতিল ও অপেক্ষমাণদের ভর্তির ওপর স্থিতাবস্থা দেওয়া হয়। এর মধ্যে ভর্তি বাতিল হওয়া ১২০ শিক্ষার্থীর পক্ষে আরেকটি রিট করা হয়। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ২৫ মার্চ হাইকোর্ট রুল দেন। পৃথক রুলের ওপর একসঙ্গে শুনানি শেষে ২১ মে রায় ঘোষণা করা হয়।

রিমান্ড শেষে মেয়র আক্কাস কারাগারে
রাজশাহী: রাজশাহীর বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুল হত্যা মামলার প্রধান আসামি পৌর মেয়র আক্কাস আলীকে তিন দিনের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) বিকেলে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এই হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও বাঘা থানার পুলুশ পরিদর্শক (তদন্ত) সোয়েব খান জানান, ৫ জুলাই আক্কাসকে রাজধানী ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। পরদিন রাজশাহীতে আনার পর পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল। এরপর ৮ জুলাই শুনানি শেষে রাজশাহীর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১ এর বিচারক হাদিউজ্জামান এই আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এরপর আসামিকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। রিমান্ড শেষে আজ তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে কী তথ্য পাওয়া গেছে সেই সম্পর্কে কিছু জানাননি তদন্ত কর্মকর্তা। গত ২২ জুন বাঘা পৌর মেয়র আক্কাস আলীর দুর্নীতি অনিয়মের প্রতিবাদে চলা মানববন্ধন কর্মসূচি চলাকালে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপে ব্যাপক হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। মেয়রের দুর্নীতি ছাড়াও এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও উপজেলা দলিল লেখক সমিতির বাড়তি টাকা আদায়কে সমর্থন দেওয়া বা না দেওয়া নিয়ে ওই সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটেছিল। এ ঘটনায় থানা ও আদালতে এখন পর্যন্ত পাল্টাপাল্টি দুইটি মামলা হয়েছে। ঘটনার দিন প্রতিপক্ষের হামলায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুল গুরুতর আহত হন। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ। জরুরি অস্ত্রোপচারের পর তাকে রামেক হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়েছিল। কিন্তু চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৬ জুন বিকেলে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় বাঘা উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহিনুর রহমান পিন্টু বাদী হয়ে মেয়র আক্কাসকে প্রধান করে ৩২ জন নামীয়সহ শতাধিক ব্যক্তিকে আসামি করে বাঘা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এছাড়া এ ঘটনায় আদালতেও মামলা হয়েছে। স্থানীয় আবুল কালাম (৩৫) নামের এক ব্যক্তি বাদী হয়ে ২৭ জুন রাজশাহীর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-১ ও দ্রুত বিচার আদালতে মামলাটি দায়ের করেছেন। ওই মামলায় আসামি হিসেবে বাঘা উপজেলা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি শাহিনুর রহমানসহ ৩২ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া আরও ১০০ থেকে ১৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
.jpg)
চাকরিতে সরকার কোটা বাড়াতে-কমাতে পারে: হাইকোর্ট
সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রয়োজন মনে করলে সরকার কোটার হার পরিবর্তন বা বাড়াতে-কমাতে পারে বলে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট।মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে জারি করা রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে গত ৫ জুন প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহাল করে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দিয়েছেন। রায়ের আদেশের অংশ বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) প্রকাশ করা হয়েছে। সাংবাদিকদের এ কথা নিশ্চিত করেছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ সাইফুজ্জামান (জামান)। আদালত বলেছেন, বিবাদীরা (সরকার) যদি প্রয়োজন মনে করে তাহলে কোটা রিডিউস (হ্রাস), ইনক্রিজ (বাড়ানো), দ্য রেশিও অব দ্য পার্সেন্টেজ (শতকরা হার) পরিবর্তন করতে পারে। কোনো সরকারি নিয়োগ পরীক্ষায় যদি কোটা থেকে চাকরিপ্রার্থী না পাওয়া যায়, তাহলে সাধারণ মেধা তালিকা থেকে প্রার্থীর মাধ্যমে তা পূরণ করতে বিবাদীদের স্বাধীনতা থাকবে। এ রায় (মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহালের রায়) সরকারের পরিবর্তন-পরিবর্ধনে কোনো বাধা হবে না। নবম গ্রেড (পূর্বতন প্রথম শ্রেণি) ও ১০ম থেকে ১৩তম গ্রেডের (পূর্বতন দ্বিতীয় শ্রেণি) পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি বাতিল করে ২০১৮ সালে সরকার পরিপত্র জারি করে। ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর জারি করা এ পরিপত্র চ্যালেঞ্জ করে ২০২১ সালে রিট দায়ের করেন অহিদুল ইসলামসহ সাত শিক্ষার্থী। একই বছরের ৭ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রুল জারি করেন। ওই রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে চলতি বছরের ৫ জুন রায় দেন হাইকোর্ট। এরপর ওই রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে। এর প্রতিবাদে দেশব্যাপী শিক্ষার্থীদের আন্দোলন শুরু হয়। পরে গত মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতির সভাপতি আল সাদী ভূঁইয়া এবং উর্দু বিভাগের শিক্ষার্থী আহনাফ সাঈদ খান চেম্বার কোর্টের অনুমতি নিয়ে একটি সিএমপি (হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে) আবেদন করেন। ওইদিনই আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে সেই আবেনের শুনানির জন্য বুধবার দিন ধার্য করেন চেম্বার আদালত। এদিন (বুধবার) মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে জারি করা পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিষয়ে চার সপ্তাহের স্থিতাবস্থা দেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ সদস্যের আপিল বেঞ্চ। আগামী ৭ আগস্ট এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানি হবে। শুনানির সময় প্রধান বিচারপতি আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে বলেন, সব প্রতিবাদী কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের স্ব স্ব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরে গিয়ে নিজ নিজ কাজে অর্থাৎ পড়াশোনায় মনোনিবেশ করতে বলা হয়েছে। দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রক্টর এবং অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানরা তাদের ছাত্র-ছাত্রীদের স্ব স্ব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরিয়ে নিয়ে শিক্ষার উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করবেন বলে এ আদালত আশা করে। আদালত আরও বলেন, স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদকারী ছাত্র-ছাত্রীরা চাইলে আইনজীবীর মাধ্যমে তাদের বক্তব্য এ আদালতের সামনে তুলে ধরতে পারে। আদালত মূল আবেদন নিষ্পত্তির সময় তাদের বক্তব্য বিবেচনায় নেবেন। কিন্তু আন্দোলনকারী বিষয়টি নির্বাহী বিভাগের সঙ্গে সম্পর্কিত বলে আন্দোলন চলমান রাখার ঘোষণা দেন। এ অবস্থায় আজ বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের রায়ের আদেশ অংশ প্রকাশ করা হলো।
.jpg)
হরিজন কলোনিতে উচ্ছেদের ওপর স্থিতাবস্থা থাকবে, রুল নিষ্পত্তির নির্দেশ
ঢাকা: রাজধানীর বংশালের মিরনজিল্লা হরিজন কলোনিতে উচ্ছেদ অভিযানের ওপর স্থিতাবস্থা বজায় রাখার আদেশ চলমান রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে দুই মাসের মধ্যে হাইকোর্টে বিভাগের জারি করা রুল নিষ্পত্তি করতে বলেছেন। হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) করা আবেদন নিষ্পত্তি করে বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন। আদালতে হরিজনদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সারা হোসেন। সিটি করপোরেশনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মুরাদ রেজা। বুধবার (১০ জুলাই) হরিজনদের উচ্ছেদের বিরুদ্ধে তাদের পক্ষের আইনজীবী অনীক আর হক সাংবাদিকদের বলেন, বংশালের মিরনজিল্লা হরিজন কলোনিতে ডিএসসিসি নতুন করে উচ্ছেদ অভিযান চালানোর উদ্যোগ নেয়। এজন্য হরিজন কলোনিতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ মোতায়েন করতে সংশ্লিষ্টদের চিঠি দেয়। মঙ্গলবার (৯ জুলাই) সিটি করপোরেশনের এ চিঠিতে স্থানীয় কাউন্সিলরকে সহায়তা করতেও বলা হয়। এরপর বুধবার হরিজন কলোনিতে আবার অভিযান শুরুর উদ্যোগ নিলে সেখানে বসবাসরত হরিজনদের পক্ষে আপিল বিভাগে আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে আপিল বিভাগ সিটি করপোরেশনের অভিযানের ওপর স্থিতাবস্থা দিয়েছেন। একই সঙ্গে বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগে এ বিষয়ে শুনানির জন্য দিন ধার্য করেছেন। সে অনুসারে বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগে শুনানি শেষে আদেশ দেন। এর আগে পুরান ঢাকার আগাসাদেক সড়কের পাশে থাকা মিরনজিল্লা সুইপার কলোনিতে হরিজন সম্প্রদায়ের বাসিন্দাদের উচ্ছেদ প্রক্রিয়ার ওপর ৩০ দিনের স্থিতাবস্থা বজায় রাখার আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। জনস্বার্থে সুপ্রিম কোর্টের তিন আইনজীবীর করা এক রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে গত ১৩ জুন বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর অবকাশকালীন হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে ওই তিন আইনজীবী শুনানি করেন। তিন আইনজীবী হলেন- মনোজ কুমার ভৌমিক, উৎপল বিশ্বাস ও আইনুন্নাহার সিদ্দিকা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আবুল কালাম খান। ওই আদেশের বিরুদ্ধে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন আপিল বিভাগে আবেদন করে। হাইকোর্টের আদেশের দিন ১৩ জুন আইনজীবী আইনুন্নাহার সিদ্দিকা বলেন, মিরনজিল্লা সুইপার কলোনিতে থাকা হরিজন সম্প্রদায়ের বাসিন্দাদের উচ্ছেদ প্রক্রিয়ার ওপর ৩০ দিনের স্থিতাবস্থা দিয়েছেন হাইকোর্ট। ফলে এ সময়ে তাদের সেখান থেকে উচ্ছেদ করা যাবে না। এ সময়ে তাদের জন্য বিকল্প জায়গার ব্যবস্থা করা হলে তারা সেখান থেকে চলে যাবেন। গত ১২ জুন একটি জাতীয় দৈনিকে ‘প্রতিবাদ করে উচ্ছেদ ঠেকাল শিক্ষার্থীরা, আতঙ্কে বাসিন্দারা’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়। ওই প্রতিবেদন যুক্ত করে তিন আইনজীবী ওই রিট করেন। পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, আধুনিক কাঁচাবাজার নির্মাণের জন্য জায়গা খালি করতে গত ১১ জুন বেলা ১১টার দিকে শতাধিক পুলিশ ও উচ্ছেদ পরিচালনার জন্য যানযন্ত্র (এক্সকেভেটর ও পেলোডার) নিয়ে কলোনিতে গিয়েছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা। কিন্তু হরিজন সম্প্রদায়ের বাসিন্দা ও তাদের স্কুলপড়ুয়া সন্তানদের তীব্র প্রতিবাদের মুখে সেদিন রাত ৯টা পর্যন্ত উচ্ছেদ অভিযান চালাতে পারেননি তারা। পরে হরিজন সম্প্রদায়ের সঙ্গে সমঝোতা হয় দক্ষিণ সিটির। ঢাকা দক্ষিণ সিটির সম্পত্তি বিভাগের কর্মকর্তারা বলেন, মিরনজিল্লা সুইপার কলোনিতে করপোরেশনের প্রায় ৩ দশমিক ২৭ একর জমি আছে। সেখানে দীর্ঘদিন ধরে হরিজন সম্প্রদায়ের লোকজন বসবাস করে আসছেন। কলোনির এক পাশে ২৭ শতাংশ জমিতে আধুনিক কাঁচাবাজার নির্মাণ করতে হলে সেখানকার কিছু বাসাবাড়ি ভেঙে দিতে হবে। আগে বিদ্যমান কাঁচাবাজারটি ১৭ শতাংশ জমিতে ছিল। বাকি জমি থেকে স্থাপনা সরাতে এ অভিযানের উদ্যোগ নেওয়া হয়।

‘আপাতত কোটা বাতিলের পরিপত্র বহাল থাকবে’
ঢাকা: সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে জারি করা পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের ওপর স্থিতাবস্থার (স্ট্যাটাসকো) ফলে আপাতত কোটা বাতিল করে দেওয়া পরিপত্র বহাল থাকবে। বুধবার (১০ জুলাই) এ বিষয়ে আপিল বিভাগের আদেশের পর একথা জানিয়েছেন দুই শিক্ষার্থীর আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক। তিনি বলেন, হাইকোর্টের রায়ের ওপর স্থিতাবস্থা থাকছে। এর ফলে নিয়োগ পদ্ধতিতে আপাতত কোটা পদ্ধতি প্রয়োগ হবে না। ২০১৮ সালের পর যেভাবে নিয়োগ হয়ে আসছিল, সেই পদ্ধতিই বহাল থাকবে। এর আগে রাষ্ট্র ও শিক্ষার্থীদের করা পৃথক আবেদনের শুনানি নিয়ে বুধবার (১০ জুলাই) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ সদস্যের আপিল বেঞ্চ চার সপ্তাহের জন্য এই আদেশ দেন। আগামী ৭ আগস্ট এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানি হবে। আজ সকাল ১০টার দিকে আবেদনটি শুনানির জন্য উপস্থাপিত হয়। তখন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন জানান, এ বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন শুনানির জন্য সাড়ে ১১টায় সময় দেওয়া হয়েছে। দুটি আবেদন একসঙ্গে শুনানি হোক। এ জন্য সময় চান। তবে আদালত সময় নামঞ্জুর করে আজ বেলা সাড়ে ১১টায় রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের আবেদন শুনানির জন্য সময় নির্ধারণ করেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, শিক্ষার্থীদের পক্ষে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক শাহ মঞ্জুরুল হক শুনানি করেন। আর রিট আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবী মুনসুরুল হক চৌধুরী শুনানি করেন। এর আগে মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতির সভাপতি আল সাদী ভুইয়া এবং উর্দু বিভাগের শিক্ষার্থী আহনাফ সাঈদ খান চেম্বার কোর্টের অনুমতি নিয়ে একটি সিএমপি (হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে) আবেদন করেন। ওইদিনই আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে সেই আবেনের শুনানির জন্য আজকের দিন ধার্য করেন চেম্বার আদালত। মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের এক রিটে জারি করা রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে গত ৫ জুন কোটা পুনর্বহাল করে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ রায় দেন। পরে রাষ্ট্রপক্ষ রায়টি স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করেন। আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত গত ৯ জুন আবেদনটি শুনানির জন্য ৪ জুলাই নিয়মিত বেঞ্চে পাঠান। ৪ জুলাই হাইকোর্টের রায় স্থগিত করা হয়নি। তবে রায়ের অনুলিপি পাওয়ার পর রাষ্ট্রপক্ষকে নিয়মিত লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করতে বলা হয়েছে। হাইকোর্টের রায় স্থগিতে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের ওপর ৪ জুলাই প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চ ‘নট টু ডে’ (আজ শুনানি নয়) আদেশ দেন। রিট আবেদনকারী পক্ষের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন সর্বোচ্চ আদালত। নবম গ্রেড (পূর্বতন প্রথম শ্রেণি) ও ১০ম থেকে ১৩তম গ্রেডের (পূর্বতন দ্বিতীয় শ্রেণি) পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি বাতিল করে ২০১৮ সালে সরকার পরিপত্র জারি করে। ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর জারি করা এমন পরিপত্র চ্যালেঞ্জ করে ২০২১ সালে রিট দায়ের করেন অহিদুল ইসলামসহ সাত শিক্ষার্থী। একই বছরের ৭ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রুল জারি করেন। ওই রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে চলতি বছরের ৫ জুন রায় দেন হাইকোর্ট। রায়ের পর জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. মুনসুরুল হক চৌধুরী জানান, পুরো কোটা বাতিল না করে কেবল নবম থেকে ১৩তম গ্রেডের কোটা বাতিল করা হয়েছিল। এটি অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। এখন থেকে এসব গ্রেডে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় তাদের সন্তানদের নিয়োগে আর কোনো বাধা নেই। এরপর ওই রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে।
.jpg)
কোটা নিয়ে এবার সুপ্রিম কোর্টে শিক্ষার্থীরা
ঢাকা: সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে জারি করা পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ে শামিল হচ্ছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে আল সাদী ভুইয়াসহ দুইজন এ আবেদন করার জন্য মঙ্গলবার আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের আদালত থেকে অনুমতি নিয়েছেন। তাদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক। সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষের আইনজীবীদের একজন ব্যারিস্টার হারুনুর রশীদ জানিয়েছেন, হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে যে আবেদন করেছে, তা বিচারাধীন। এটি থাকা অবস্থায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতির সভাপতি আল সাদী ভুইয়া এবং উর্দু বিভাগের শিক্ষার্থী আহনাফ সাঈদ খান দুজন মিলে চেম্বার কোর্টের অনুমতি নিয়ে একটি সিএমপি (হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে) ফাইল করছেন। এটি আজ চেম্বার আদালতে শুনানি হবে। মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের এক রিটে জারি করা রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে গত ৫ জুন কোটা পুনর্বহাল করে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ রায় দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. মুনসুরুল হক চৌধুরী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ সাইফুজ্জামান জামান। পরে রাষ্ট্রপক্ষ রায়টি স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করেন। আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত গত ৯ জুন আবেদনটি শুনানির জন্য ৪ জুলাই নিয়মিত বেঞ্চে পাঠান। ৪ জুলাই হাইকোর্টের রায় স্থগিত করা হয়নি। তবে রায়ের অনুলিপি পাওয়ার পর রাষ্ট্রপক্ষকে নিয়মিত লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করতে বলা হয়েছে। হাইকোর্টের রায় স্থগিতে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের ওপর ৪ জুলাই প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চ ‘নট টু ডে’ (আজ শুনানি নয়) আদেশ দেন। রিট আবেদনকারী পক্ষের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন সর্বোচ্চ আদালত। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। রিট আবেদনকারী পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড মো. জহিরুল ইসলাম। নবম গ্রেড (পূর্বতন প্রথম শ্রেণি) ও ১০ম থেকে ১৩তম গ্রেডের (পূর্বতন দ্বিতীয় শ্রেণি) পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি বাতিল করে ২০১৮ সালে সরকার পরিপত্র জারি করে। ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর জারি করা এমন পরিপত্র চ্যালেঞ্জ করে ২০২১ সালে রিট দায়ের করেন অহিদুল ইসলামসহ সাত শিক্ষার্থী। একই বছরের ৭ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রুল জারি করেন। ওই রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে চলতি বছরের ৫ জুন রায় দেন হাইকোর্ট। রায়ের পর জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. মুনসুরুল হক চৌধুরী জানান, পুরো কোটা বাতিল না করে কেবল নবম থেকে ১৩তম গ্রেডের কোটা বাতিল করা হয়েছিল। এটি অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। এখন থেকে এসব গ্রেডে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় তাদের সন্তানদের নিয়োগে আর কোনো বাধা নেই।

মুক্তিযোদ্ধা কোটা স্থগিতে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের শুনানি বৃহস্পতিবার
ঢাকা: সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে জারি করা পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আবেদনের ওপর বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) শুনানি হতে পারে। হাইকোর্টের রায় স্থগিতে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনটি প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় ৮ নম্বর ক্রমিকে রয়েছে। এর আগে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত গত ৯ জুন এ আবেদনটি শুনানির জন্য নিয়মিত বেঞ্চে পাঠান।মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের এক রিটে জারি করা রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে গত ৫ জুন কোটা পুনর্বহাল করে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ রায় দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. মুনসুরুল হক চৌধুরী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ সাইফুজ্জামান জামান। নবম গ্রেড (পূর্বতন প্রথম শ্রেণি) ও ১০ম থেকে ১৩তম গ্রেডের (পূর্বতন দ্বিতীয় শ্রেণি) পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি বাতিল করে ২০১৮ সালে সরকার পরিপত্র জারি করে। ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর জারি করা এমন পরিপত্র চ্যালেঞ্জ করে ২০২১ সালে রিট দায়ের করেন অহিদুল ইসলামসহ সাত শিক্ষার্থী। একই বছরের ৭ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রুল জারি করেন। ওই রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে চলতি বছরের ৫ জুন রায় দেন হাইকোর্ট। রায়ের পর জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. মুনসুরুল হক চৌধুরী জানান, পুরো কোটা বাতিল না করে কেবল নবম থেকে ১৩তম গ্রেডের কোটা বাতিল করেছিল। এটা অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। এখন থেকে এসব গ্রেডে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় তাদের সন্তানদের নিয়োগে আর কোনো বাধা নেই। এরপর ওই রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে।
.jpg)
আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ইউনূসের দণ্ড কার্যকর থাকবে: হাইকোর্ট
ঢাকা: আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনের দণ্ড (কনভিকশন) কার্যকর থাকবে, কারণ আপিল বিচারাধীন থাকা অবস্থায় দণ্ড স্থগিতের কোনো বিধান নেই। এটা কেবল আপিল নিষ্পত্তি করে বাতিল, বহাল বা সংশোধন হতে পারে। শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড পাওয়া নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনের দণ্ড ও সাজার রায় স্থগিত করে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের আদেশ বাতিলের রায়ে নির্দেশনা দিয়েছেন হাইকোর্ট। ১৮ মার্চ বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চের দেওয়া রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি সম্প্রতি প্রকাশ করা হয়েছে। ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান বাদী হয়ে ড. ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে এ মামলা করেন। মামলায় শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনে নির্দিষ্ট লভ্যাংশ জমা না দেওয়া, শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী না করা, গণছুটি নগদায়ন না করায় শ্রম আইনের ৪-এর ৭, ৮, ১১৭ শ্রম বিধিমালা ১০৭ বিধি ও ২৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়। এ মামলায় চলতি বছরের ১ জানুয়ারি ঢাকার শ্রম আদালত-৩ এর বিচারক শেখ মেরিনা সুলতানা তাদের বিরুদ্ধে সাজার রায় দেন। তাদের শ্রম আইনের ৩০৩ (ঙ) ধারায় সর্বোচ্চ ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ১০ দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। অপরদিকে ৩০৭ ধারায় ২৫ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ১৫ দিনের কারাদণ্ড দেন আদালত। এরপর আসামিপক্ষ আপিলের শর্তে জামিন আবেদন করেন। আদালত সে আবেদন মঞ্জুর করে পাঁচ হাজার টাকা বন্ডে এক মাসের জন্য জামিন দেন। সেই সময়সীমার মধ্যেই আপিল করেন দণ্ডপ্রাপ্তরা। ড. ইউনূস ছাড়া অন্য তিন বিবাদী হলেন—গ্রামীণ টেলিকমের এমডি মো. আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুরজাহান বেগম ও মো. শাহজাহান। গত ২৮ জানুয়ারি শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনকে জামিন দেন। আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে নথি তলব করেন। এছাড়া গত ১ জানুয়ারি দেওয়া দণ্ডের রায়ের কার্যক্রম স্থগিত করেন। এ স্থগিতের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করে কলকারখানা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর। গত ৫ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট এ বিষয়ে রুল জারি করেন। এছাড়া দণ্ডিতদের বিদেশ যেতে হলে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালকে অবহিত করে যেতে হবে বলে আদেশ দেন। ওই রুলের শুনানি শেষে ১৮ মার্চ রায় দেন হাইকোর্ট। ৫০ পৃষ্ঠার রায়ে হাইকোর্ট তার নির্দেশনায় বলেন, আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনের দণ্ড (কনভিকশন) কার্যকর থাকবে, কারণ আপিল বিচারাধীন থাকা অবস্থায় দণ্ড স্থগিতের কোনো বিধান নেই। এটা কেবল আপিল নিষ্পত্তি করে বাতিল, বহাল বা সংশোধন করতে পারে। ‘যেহেতু শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল থেকে ড. ইউনূসসহ চারজন জামিন পেয়েছেন সেহেতু দণ্ড স্থগিত বা সাসপেন্ড আদেশের কোনো দরকার নেই। জামিন পাওয়ার পর সাজা সংক্রান্ত আদেশ ও রায় সয়ংক্রিয়ভাবে এবং অন্তর্নিহিতভাবে সাসপেন্ড হয়ে যায়। যতদিন পর্যন্ত ড. ইউনূসসহ চারজন জামিনে থাকবেন ততদিন পর্যন্ত সাজা স্থগিত থাকবে। জরিমানাও আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত স্থগিত থাকবে। এছাড়া ১ জানুয়ারি ছয় মাসের দণ্ড দিয়ে শ্রম আদালতের দেওয়া আদেশ ও রায় স্থগিত করে ২৮ জানুয়ারি শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের স্থগিতাদেশ বাতিল করা হলো। এছাড়া আদালত দণ্ডের বিরুদ্ধে ড. ইউনূসসহ চারজনের আপিল যত দ্রুত সম্ভব মেরিটে নিষ্পত্তি করতে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দিয়েছেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান ও টাইটাস হিল্লোল রেমা। ড. ইউনূসসহ চারজনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল মামুন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুদ্দিন খালেদ।