
জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান ঘিরে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আলোচিত দুই প্রভাবশালী ব্যক্তির বিরুদ্ধে আজ গুরুত্বপূর্ণ শুনানিতে বসছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের বিষয়ে আজ শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচারিক বেঞ্চে এ শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
আনুষ্ঠানিক অভিযোগ বা ফরমাল চার্জ গঠনের বিষয়ে প্রথমে প্রসিকিউশন তাদের যুক্তি উপস্থাপন করবে। এরপর আসামিপক্ষের আইনজীবীরা বক্তব্য রাখবেন। এ মামলায় সালমান এফ রহমান ও আনিসুল হকের পক্ষে বিদেশি আইনজীবী নিয়োগের আবেদন করা হয়েছে। গত ১০ ডিসেম্বর জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী এ আবেদন জমা দেন।
শুনানির সময় চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, “বিদেশি আইনজীবী নিয়োগ দিতে হলে প্রথমে বার কাউন্সিলের অনুমতি নিতে হয়। এরপর নিতে হবে ট্রাইব্যুনালের অনুমতি।” তার এই বক্তব্যের বিরোধিতা করেন মনসুরুল হক চৌধুরী। তার দাবি, আইন অনুযায়ী আগে ট্রাইব্যুনালের অনুমতি নিয়ে পরে বার কাউন্সিলের অনুমোদন নেওয়ার বিধান রয়েছে। উভয় পক্ষের বক্তব্য শোনার পর আদালত বিষয়টি আদেশের জন্য রেখে দেন। তবে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য আজকের দিন নির্ধারণ করা হয়।
এর আগে গত ৪ ডিসেম্বর প্রসিকিউশন সালমান এফ রহমান ও আনিসুল হকের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে। পরে ট্রাইব্যুনাল-১ সেই অভিযোগ আমলে নেয়।
প্রসিকিউশনের অভিযোগ অনুযায়ী, জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের সময় আনিসুল হক ও সালমান এফ রহমানের মধ্যে একাধিক ফোনালাপ হয়। সেই আলাপে এক পর্যায়ে কারফিউ চলাকালে আন্দোলনকারীদের শেষ করে দেওয়ার কথা বলা হয়। এই বক্তব্যের পর ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচারে গুলি চালিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে। প্রসিকিউশনের ভাষ্য, তাদের কথাবার্তাই এসব হত্যাকাণ্ডে উসকানি হিসেবে ভূমিকা রেখেছে।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ১৩ আগস্ট পালানোর সময় সালমান এফ রহমান ও আনিসুল হক গ্রেপ্তার হন। এরপর থেকে হত্যাসহ একাধিক মামলায় তারা কারাগারে রয়েছেন।