
চট্টগ্রামের লালদীঘি ময়দানের বিশাল সমাবেশে দেশের সুশাসন ও সাধারণ মানুষের মুক্তির দাবি তুলেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি নির্বাচনের উল্লেখ করে বলেন, আমরা নির্বাচনে কোনো বিশেষ দলের বিজয় চাই না। দেশের ১৮ কোটি মানুষের বিজয় চাই।
শুক্রবার (০৫ ডিসেম্বর) বাদ জুমা জামায়াতসহ আট দলের আয়োজনে অনুষ্ঠিত বিভাগীয় সমাবেশে তিনি অভিযোগ করে বলেন, ৫ আগস্টের বিপ্লবের পরদিন থেকেই এক শ্রেণির মানুষ ক্ষমতার প্রভাব দেখাতে শুরু করেছে। চাঁদাবাজি ও দুর্নীতি অব্যাহত রেখেছে, অথচ তারা আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমতায় নেই।
তিনি আরও বলেন, “আমরা নির্বাচনে কোনো বিশেষ দলের বিজয় চাই না। দেশের ১৮ কোটি মানুষের বিজয় চাই। জনগণের বিজয়ের বাঁশিটা ইসলামের প্রবেশদ্বার চট্টগ্রাম দিয়েই বাজবে।”
দুপুর গড়াতেই লালদীঘির মাঠ জনসমুদ্রে পরিণত হয়। বিভিন্ন দল ও সংগঠনের হাজারো নেতাকর্মী মিছিল নিয়ে যোগ দেন। বিশেষ করে জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।
বিকেল ৩টার দিকে সমাবেশস্থলে পৌঁছে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “ফ্যাসিবাদ এখনও বিদায় নেয়নি। কেউ নতুন করে ফ্যাসিবাদ কায়েম করলে এ দেশের মেহনতি মানুষ তা বরদাস্ত করবে না। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, “আওয়ামী লীগ পিলখানায় চৌকশ সামরিক কর্মকর্তাদের ও শাপলা চত্বরে অসংখ্য আলেম-ওলামাকে হত্যা করেছিল। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন তারা নাকি শরীরে রং দিয়ে শুয়ে ছিল। আওয়ামী লীগ রক্তাক্ত হাতে ক্ষমতায় এসেছিল, রক্তাক্ত হাতেই বিদায় নিয়েছে।”
ইসলামী আন্দোলনের নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম সমাবেশে বলেন, “আগামী নির্বাচন সামনে রেখে দুটি পক্ষ রয়েছে। কেউ দেশের পক্ষে, কেউ ভারতের পক্ষে। জনগণ ঐক্যবদ্ধ থাকলে ইসলামের বিজয় হবে এবং ইসলামই ক্ষমতায় যাবে।”
ড. ইউনূসকে উদ্দেশ করে তিনি আরও বলেন, “নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। যথাসময়ে নির্বাচন দিতে হবে। না হলে বাংলাদেশের মানুষ ক্ষমা করবে না।”
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক বলেন, ইসলামী দলগুলো বিজয়ী হলে ইসলামী অর্থব্যবস্থা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিতে হবে। তিনি জাতীয় নির্বাচন ও গণভোটে জয়ী হওয়ার জন্য ঐক্যবদ্ধ প্রস্তুতির আহ্বান জানান।
সংগঠনটির মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের বলেন, “ফ্যাসিস্ট ও তাদের দোসরদের আর মানুষ গ্রহণ করবে না। ইসলামের বাক্সে ভোট দিয়ে দেশকে উন্নয়ন, সাম্য ও প্রগতির পথে এগিয়ে নিতে হবে।”
জামায়াতের নায়েবে আমির এটিএম আজহারুল ইসলাম ঘোষণা দেন, “আট দলের ঐক্যবদ্ধ শক্তিকে এবার কেউ দমাতে পারবে না।”
এ ছাড়া সমাবেশে বক্তব্য দেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির নায়েবে আমির আব্দুর রহমান চৌধুরী, খেলাফত আন্দোলনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান মুন্সি, খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব আলাউল্লাহ আমিন, নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব আল্লামা মুফতি মুসা বিন ইজহারসহ অন্যান্য নেতারা।