সিলেটের রেলপথে অবস্থান নিয়েছেন অবরোধকারীরা, ট্রেন যাত্রায় বিলম্ব
- সিলেট প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ০২:৪৯ পিএম, ০১ নভেম্বর ২০২৫
সিলেট বিভাগের রেলসেবা উন্নয়ন ও সংস্কারের দাবিতে শুরু হয়েছে সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি। শনিবার (১ নভেম্বর) সকাল ১০টা থেকে সিলেট বিভাগের সব রেলপথে এই কর্মসূচি শুরু হলে বিভিন্ন স্টেশনে ট্রেন চলাচলে দেরি দেখা দেয়।
সকাল থেকেই মৌলভীবাজারের কুলাউড়া স্টেশনসহ কয়েকটি জায়গায় বিক্ষোভকারীরা রেললাইনে অবস্থান নিলে যাত্রীরা পড়েন চরম ভোগান্তিতে। কুলাউড়ায় ট্রেন বন্ধ থাকায় বহু যাত্রী স্টেশনে আটকা পড়েছেন। তবে সিলেট রেলস্টেশনে এর প্রভাব তুলনামূলক কম ছিল। সকাল ৬টা ১৫ মিনিটের কালনী এক্সপ্রেস নির্ধারিত সময়েই ছেড়ে যায়, যদিও সকাল সাড়ে ১০টার চট্টগ্রামগামী ট্রেনটি স্টেশনে দেরিতে পৌঁছে দুপুর ১২টায় ছেড়ে যায়।
আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেন, দীর্ঘদিন ধরে সিলেট অঞ্চলের রেলসেবা অবহেলিত অবস্থায় আছে। তারা জানান, রেললাইনগুলো নাজুক হয়ে পড়েছে, আর ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় প্রতিদিনের ঘটনা। বহুবার প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
তাদের আট দফা দাবির মধ্যে রয়েছে সিলেট-ঢাকা ও সিলেট-কক্সবাজার রুটে দুটি বিশেষ ট্রেন চালু, আখাউড়া-সিলেট রেলপথ সংস্কার ও ডাবল লাইন নির্মাণ, আখাউড়া-সিলেট সেকশনে অন্তত একটি লোকাল ট্রেন ও বন্ধ স্টেশনগুলো পুনরায় চালু করা, কুলাউড়া জংশনের বরাদ্দকৃত আসন সংখ্যা বৃদ্ধি, কালনী ও পারাবত ট্রেনের যাত্রাবিরতি প্রত্যাহার, ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় রোধে নির্ভরযোগ্য ইঞ্জিন ব্যবহার এবং যাত্রীসংখ্যা অনুযায়ী অতিরিক্ত বগি সংযোজন।
ঢাকাগামী যাত্রী মোহাম্মদ রাসেল আহমেদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমার দুপুর ১২টার ট্রেনে ঢাকায় যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সকাল থেকে সব ট্রেন বন্ধ। কেউ বলতে পারছে না কখন ছাড়বে। জরুরি কাজে যেতে না পেরে এখন বিপাকে পড়েছি।”
অন্য এক যাত্রী সুলতানা পারভীন বলেন, “প্রতিবারই দেখি এই রেলপথের সমস্যা। কখনো লাইন খারাপ, কখনো ট্রেন দেরি। এখন আবার অবরোধ। সাধারণ যাত্রীদের দুর্ভোগের যেন শেষ নেই।”
আন্দোলনকারীরা জানান, তাদের দাবিগুলো বাস্তবায়নের সুস্পষ্ট ঘোষণা না আসা পর্যন্ত তারা অবরোধ কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন।
এ বিষয়ে সিলেট রেলওয়ে স্টেশনের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম বলেন, “অবরোধের প্রভাব সিলেট রেলস্টেশনে পড়েনি। সকালের কালনী ট্রেন যথাসময়ে ছেড়ে গেছে। আবার চট্টগ্রামগামী পাহাড়িকা ট্রেন দেরিতে স্টেশনে আসায় দেড় ঘণ্টা দেরিতে ছেড়েছে। ১২টার জয়ন্তিকা ট্রেন একটু দেরিতে ছাড়বে।” তিনি আরও জানান, অন্য কোনো স্টেশনে ট্রেন আটকে গেলে সার্বিক শিডিউলে প্রভাব পড়তে পারে।