সাবেক ডিসি সুলতানা পারভীন চাকরি থেকে বরখাস্ত


সাবেক ডিসি সুলতানা পারভীন চাকরি থেকে বরখাস্ত

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি আরিফুল ইসলাম রিগানকে মধ্যরাতে তুলে নিয়ে নির্যাতন ও হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া কুড়িগ্রামের সাবেক জেলা প্রশাসক (ডিসি) সুলতানা পারভীনকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে সরকার। সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোখলেস উর রহমান স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়। একই দিনে প্রজ্ঞাপনটি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটেও প্রকাশ করা হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, গত ২ সেপ্টেম্বর সিনিয়র দায়রা জজ আদালত, কুড়িগ্রামে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে আদালত তা নামঞ্জুর করে সুলতানা পারভীনকে কারাগারে পাঠান। সরকারি চাকরি আইন ২০১৮ এর ৩৯ (২) ধারা অনুযায়ী তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হলো। বরখাস্তকালীন সময়ে তিনি বিধি অনুযায়ী খোরপোষ ভাতা পাবেন। জনস্বার্থে জারিকৃত এ আদেশ তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হবে।

এর আগে, মামলায় আগাম জামিন চেয়ে গত ৩ আগস্ট হাইকোর্টে আবেদন করেন সুলতানা পারভীন। হাইকোর্ট আবেদন খারিজ করে চার সপ্তাহের মধ্যে জেলা জজ আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে তিনি ২১ আগস্ট কুড়িগ্রাম জেলা জজ আদালতে জামিন চান। আদালত ২ সেপ্টেম্বর শুনানির দিন নির্ধারণ করেন এবং সেদিন জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

পরে আসামিপক্ষ হাইকোর্টে জামিন আবেদন করলে মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) আদালত ছয় মাসের জামিন মঞ্জুর করে। তবে বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) রাত পর্যন্ত কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে তিনি বন্দি ছিলেন। কারাগারের জেলার এ জি মাহমুদ জানান, সাবেক ডিসি সুলতানা পারভীন এখনও কারাগারে বন্দি রয়েছেন। তার জামিন আদেশ সংক্রান্ত কাগজপত্র বুধবার রাত পর্যন্ত কারাগারে পৌঁছায়নি।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ১৩ মার্চ রাতে কুড়িগ্রাম শহরের একটি সরকারি পুকুর সংস্কার করে সুলতানা সরোবর নামকরণ সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশের পর সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রিগানকে তার বাড়ি থেকে তুলে নেয় জেলা প্রশাসনের তিন ম্যাজিস্ট্রেট ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তাকে ধরলা নদীর তীরে নিয়ে গিয়ে ‘ক্রসফায়ারে’ দেওয়ার চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। পরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এনে তাকে বিবস্ত্র করে মারধর করা হয় এবং মাদক রাখার অভিযোগে ভ্রাম্যমাণ আদালত সাজিয়ে এক বছরের কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা (অপরিশোধে আরও ১৫ দিন কারাদণ্ড) দেন। দেশজুড়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পরদিন তাকে জামিন দেওয়া হয়।

মুক্তি পেয়ে আরিফুল কুড়িগ্রাম সদর থানায় সুলতানা পারভীনসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। হাইকোর্টের নির্দেশে ২০২০ সালের ৩১ মার্চ এ মামলা রেকর্ড করে পুলিশ। দীর্ঘ তদন্ত শেষে পিবিআই সম্প্রতি আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। এতে সাবেক ডিসি সুলতানা পারভীনসহ চারজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। পরে আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন তিনি।

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×