নুর আ.লীগকে পুনর্বাসনের ইঙ্গিত দিচ্ছেন, অভিযোগ তুলে যশোরে দুই নেতার পদত্যাগ


নুর আ.লীগকে পুনর্বাসনের ইঙ্গিত দিচ্ছেন, অভিযোগ তুলে যশোরে দুই নেতার পদত্যাগ

গণঅধিকার পরিষদ যশোর সদর উপজেলা কমিটির দুই নেতা পদত্যাগ করেছেন। শনিবার রাতে সংগঠনটির জেলা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বরাবর পৃথক দুটি লিখিত পত্রে তারা পদত্যাগপত্র জমা দেন।

পদত্যাগকারী দুই নেতা হলেন, সদর উপজেলা কমিটির সহ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবু বক্কার ছিদ্দিক এবং অর্থ সম্পাদক রাফাত রহমান দ্বীপ। জেলার সমাবেশের পরদিনই এই পদত্যাগের খবরে স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে।

পদত্যাগপত্রে উভয় নেতা অভিযোগ করেন, গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি নুরুল হক নুর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের পুনর্বাসনের ইঙ্গিত দিচ্ছেন। তারা জানান, শুক্রবার যশোরের গণসমাবেশে তার বক্তব্যে এই বার্তা পাওয়া গেছে। আদর্শ থেকে আপস করে রাজনীতি করা তাদের পক্ষে সম্ভব নয় বলেই তারা সরে দাঁড়িয়েছেন।

তারা পদত্যাগপত্রে উল্লেখ করেন, গণঅধিকার পরিষদ স্বাধীনতাবিরোধীদের সঙ্গে একাত্ম হয়ে বিভাজনের রাজনীতির দিকে এগোচ্ছে। যদিও তারা জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী, তবুও গতানুগতিক ধারার বাইরে একটি বাংলাদেশপন্থী রাজনীতির আকাঙ্ক্ষা থেকেই গণঅধিকার পরিষদে যুক্ত হয়েছিলেন। কিন্তু বর্তমানে দলটির কার্যক্রম তাদের মূলনীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়ায় পদত্যাগ করেছেন।

শুক্রবার যশোরের টাউন হল মাঠে আয়োজিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন নুরুল হক নুর। এ আয়োজনে ১৮ সালের কোটা সংস্কার থেকে শুরু করে ২৪ সালের রাষ্ট্র সংস্কার প্রক্রিয়ার স্মৃতিচারণ এবং নতুন বাংলাদেশ গঠনের ডাক দেওয়া হয়। সমাবেশে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মাফ করে দেওয়ার বিষয়ে নুরের বক্তব্য নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। এই বক্তব্যের পর থেকে নেতাকর্মীদের একাংশ ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন এবং দুজন নেতা দল ত্যাগ করেন।

পদত্যাগকারী অর্থ সম্পাদক রাফাত রহমান দ্বীপ বলেন, “গণঅধিকার পরিষদ এখন ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের করার প্রক্রিয়া করছে। আর্দশের নৈতিকতার জায়গা থেকে আমি পদত্যাগ করেছি। গতকাল সমাবেশেও সেটি ফুটে উঠেছে দলীয় প্রধানের বক্তব্য মাধ্যমে। আমার পদত্যাগপত্র জেলার সভাপতির হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো হয়েছে। সদর উপজেলার সাধারণ সম্পাদককেও পাঠানো হয়েছে।”

সংগঠনটির সদর উপজেলার সাধারণ সম্পাদক শাকিল মল্লিক টিপু বলেন, “আমাকে মৌখিক জানানো হয়েছিল, তারা পদত্যাগ করবে। কিন্তু লিখিত কোনো পত্র পাইনি। এমনকি কি কারণে তারা পদত্যাগ করবেন সেটাও জানি না।”

এ বিষয়ে গণঅধিকার পরিষদের খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আশিক ইকবাল বলেন, “শুনেছি, তারা পদত্যাগ করেছেন। খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি, তারা আগে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল। রাজনীতিক পটপরিবর্তনের পর বিএনপির নেতারা তাদের বলেছেন, গণঅধিকার পরিষদ করার দরকার নেই। তাদের কথা শুনে এখন দল থেকে পদত্যাগ করেছেন। এমনকি তাদের পদত্যাগপত্রে স্বীকার করেছে আগে জাতীয়তাবাদী মতাদর্শের মানুষ ছিলেন। দল সম্পর্কে তারা যে অভিযোগ তুলছে, তাদের অভিযোগ মিথ্যা।”

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×