তিস্তায় মওলানা ভাসানী সেতুর স্বপ্নযাত্রা শুরু, উত্তরাঞ্চলের ৩ জেলায় উৎসব


তিস্তায় মওলানা ভাসানী সেতুর স্বপ্নযাত্রা শুরু, উত্তরাঞ্চলের ৩ জেলায় উৎসব

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুরে তিস্তা নদীতে মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী সেতুর উদ্বোধন ও চলমান কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বুধবার (২০ আগস্ট) দুপুরে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া আনুষ্ঠানিকভাবে সেতুর উদ্বোধন করেন।

উদ্বোধনের পর তিনি সেতু পার হয়ে চিলমারী প্রান্তে ফিতা কেটে সেতু কার্যত ব্যবহারযোগ্য ঘোষণা করেন।

তিস্তা নদীর তীরবর্তী কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট ও গাইবান্ধার মানুষের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশার ফসল হিসেবে মওলানা ভাসানী সেতু চালু হওয়ায় ওই তিন জেলার মানুষের মধ্যে দিনটি উৎসবে পরিণত হয়েছে। নদীর দুই পারের হাজার হাজার মানুষ, বিশেষ করে চরাঞ্চলের বাসিন্দারা ভাঙনের ঝুঁকি কমায় আনন্দ প্রকাশ করেছেন। সেতু নির্মাণের ফলে চরাঞ্চল নতুন জনপদে রূপান্তরিত হয়েছে, এবং স্থানীয়রা নতুন স্বপ্নে উদ্বুদ্ধ।

সেতুটি উদ্বোধনের সঙ্গে সঙ্গে যানবাহন ও সাধারণ মানুষের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। বিভিন্ন স্থান থেকে হাজার হাজার নারী-পুরুষ সেতু পার হয়ে আসেন।

উদ্বোধনের মাধ্যমে কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট ও গাইবান্ধা জেলার প্রায় ৩৫ লাখ মানুষের যোগাযোগ সহজ হবে। স্থানীয়রা মনে করছেন, এটি তিন জেলার আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বিশেষ করে চিকিৎসা সুবিধা গ্রহণ, দ্রুত কৃষিপণ্য আনা-নেওয়া এবং ঢাকা পৌঁছে দেওয়া অনেক সহজ হবে।

প্রকল্পটি ২০১৪ সালে অনুমোদিত হয়, একই বছরের ২৫ জানুয়ারি ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। ২০১৮ সালের ৫ নভেম্বর দরপত্র আহ্বান করা হয়, এবং চীনের ‘চায়না স্টেট কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন (সিএসসিইসি)’ নির্মাণ কাজের দায়িত্ব পান। ২০২১ সালে প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শুরু হয়ে চলতি বছরের জুলাই মাসে সমাপ্ত হয়।

প্রায় ১,৪৯০ মিটার দীর্ঘ এবং ৯.৬ মিটার প্রস্থের পিসি গার্ডার, ৩১টি স্প্যান ও নদী শাসনের ৩.৫ কিলোমিটার অংশসহ সেতু নির্মাণে মোট খরচ হয়েছে ৯২৫ কোটি টাকা।

সেতুটি গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর ঘাট থেকে কুড়িগ্রামের চিলমারী ঘাট পর্যন্ত সংযোগ স্থাপন করেছে। চালু হওয়ার ফলে ঢাকা থেকে কুড়িগ্রামের দূরত্ব প্রায় ১৩৫ কিলোমিটার কমে আসবে, যা সময় সাশ্রয় করবে ৩ থেকে সাড়ে ৩ ঘণ্টা। স্থানীয়রা আশা করছেন, কেবল কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা নয়, উত্তরাঞ্চলের অন্যান্য তিস্তা তীরবর্তী জেলার সঙ্গে ঢাকার যোগাযোগও সহজ হবে।

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×