প্রেমিকাকে নিয়ে পালানোর সময় ধরা, অতঃপর যা ঘটলো
- নিউজ ডেস্ক
- প্রকাশঃ ১০:৩০ পিএম, ১১ জানুয়ারী ২০২৫

দুই দিন আগে প্রেমিকা উর্মির সঙ্গে দেখা করতে কক্সবাজারের চকরিয়া থেকে চুয়াডাঙ্গা শহরে আসেন শরিফুল ইসলাম শান্ত (২৩) নামের এক যুবক। প্রেমিকাকে নিয়ে দুই দিন ঘোরাঘুরির পর গতকাল শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) রাতে একসঙ্গে পালানোর কথা ছিল। তবে রাতে পালানোর সময় প্রেমিকার পরিবারের সদস্যদের হাতে ধরা পড়ে যান তারা। পরে প্রেমিকা উর্মির পরিবারের সদস্যরা প্রেমিক শান্তকে বেধড়ক পিটিয়ে হাত-পা বেঁধে জান্নাতুল মওলা নামক একটি কবরস্থানে ফেলে রাখেন।
আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে স্থানীয় বাসিন্দারা শান্তকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় কবরস্থানের মধ্যে পড়ে থাকতে দেখে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল দিয়ে পুলিশকে জানায়। পরে সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।
শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে চুয়াডাঙ্গা আর্মি ক্যাম্প থেকে একজন কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আর্মি ক্যাম্প সূত্রে জানা যায়, গত দুই দিন আগে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার শরিফুল ইসলাম শান্ত চুয়াডাঙ্গা শহরের গোরস্থানপাড়ার ওমর আলীর মেয়ে প্রেমিকা উর্মির সঙ্গে দেখা করতে আসেন। দুই দিন ঘোরাঘুরি শেষে শুক্রবার রাতে উর্মিকে নিয়ে পালানোর কথা ছিল। তবে পালানোর সময় প্রেমিকার পরিবারের সদস্যদের হাতে ধরা পড়লে তারা শান্তকে পিটিয়ে রাস্তায় ফেলে রাখেন।
আর্মি ক্যাম্প সূত্রে আরও জানা গেছে, শরিফুল ইসলাম শান্ত বাংলাদেশ আর্মির সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই। তার নিকট থেকে পাওয়া আইটেমগুলো চট্টগ্রাম আর্মি স্টোর থেকে কেনা হয়েছে।
এর আগে, শনিবার সকালে চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার জান্নাতুল মাওলা কবরস্থান থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া শীতের পোশাক দেখে পুলিশের প্রাথমিক ধারণা ছিল তিনি সেনাসদস্য হতে পারেন।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালেদুর রহমান জানিয়েছিলেন, শনিবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এর মাধ্যমে জানতে পারি, জান্নাতুল মাওলা কবরস্থানের বাগানের মধ্যে হাত-পা বাঁধা ও অচেতন অবস্থায় এক ব্যক্তি পড়ে আছেন। পরে আমিসহ পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে যুবককে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
তিনি আরও বলেন, হাসপাতালে ভর্তির কিছুক্ষণ পর একটু সুস্থতাবোধ করলে নিজের নাম শরিফুল ইসলাম শান্ত বলে জানান তিনি। নিজেকে একজন সেনাবাহিনীর সৈনিক বলে দাবি করেন। তার কর্মস্থল খুলনায় ও বাড়ি চট্রগ্রামে বলে জানিয়েছেন তিনি।
ওসি খালেদুর রহমান বলেন, ঘটনাস্থল থেকে সেনাবাহিনীর মনোগ্রামযুক্ত শীতের পোশাক (ট্রাকস্যুট) ও জ্যাকেটের একটা পাট (গলায় মাফলার হিসেবে ব্যবহার করা হয়) পাওয়া গেছে। হাতে থাকা ঘড়িটিও সেনাবাহিনীর মনোগ্রামের রঙের সঙ্গে মিল রয়েছে। এ ছাড়া প্রাথমিক আলামত ও চুলের কাটিং দেখে ধারণা হচ্ছে সেনাসদস্য হতে পারেন। যাচাই করার জন্য বিজিবি ও সেনাসদস্যদের জানানো হয়েছে। বিজিবি যাচাই করে জানিয়েছেন, এই যুবকের সঙ্গে বিজিবির কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।
সন্ধ্যায় চুয়াডাঙ্গা আর্মি ক্যাম্প থেকেও জানানো হয়, বাংলাদেশ আর্মির সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই। প্রেমিকাকে নিয়ে পালানোর সময় ধরা পড়ে। পরে প্রেমিকার পরিবারের সদস্যরা তাকে পিটিয়ে হাত-পা বেধে ফেলে চলে যায়।