অ্যাসিডদগ্ধ গৃহবধূ মিলির ১০ মাস পর মৃত্যু
- চাঁদপুর প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ১২:০২ এম, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় দুর্বৃত্তদের ছোড়া অ্যাসিডে দগ্ধ হওয়া মিলি আক্তার (২০) নামে গৃহবধূ ১০ মাস ৫ দিন পর মৃত্যু বরণ করেছেন।
সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) বিকেলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (পিজি) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। সন্ধ্যায় মতলব উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল হক তার মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মারা যাওয়া মিলি আক্তার মতলব উত্তরের ইসলামাবাদ ইউনিয়নের পশ্চিম সুজাতপুর গ্রামের আয়ুব আলীর মেয়ে। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি রাতে তার ওপর অ্যাসিড নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। সে সময় তিনি সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি সন্তানের জন্ম দেন।
মিলি আক্তারের মা রাশেদা বেগম জানান, মিলিকে পাশবর্তী মমরুজকান্দি গ্রামের সফিকুল ইসলাম ওরফে মানিক প্রায়ই উত্ত্যক্ত করতেন। পরে মিলির অন্যত্র বিয়ে হয়ে গেলে সফিকুল ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। বিয়ের পর স্বামী বিদেশ থাকায় মিলি বাবার বাড়িতে বসবাস করছিলেন। ২৫ ফেব্রুয়ারি রাত ১১টায় সফিকুল ইসলাম তার আরেক বন্ধু মমরুজকান্দি গ্রামের জাহিদকে সঙ্গে নিয়ে মিলিকে অ্যাসিড নিক্ষেপ করেন। এতে মিলির মুখ, বুক, পিঠ ও হাত ঝলসে যায়। এ সময় মিলির মা রাশেদা বেগম (৫৫)ও আহত হন এবং তার হাত ও ঊরু ঝলসে যায়।
রাশেদা বেগম আরও জানান, পরে তাদের মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে মিলিকে ঢাকায় জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে মিলিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে এনে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। ১০ মাস ৫ দিন পর সেখানেই তার মৃত্যু হয়।
ওই সময় এ ঘটনায় মিলির বাবা আয়ুব আলী বাদী হয়ে সফিকুল ইসলাম ও জাহিদকে আসামি করে মতলব উত্তর থানায় মামলা করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মিজানুর রহমান বলেন, অ্যাসিড নিক্ষেপের ঘটনায় মূল পরিকল্পনাকারী সফিকুল ইসলাম এবং তার সহযোগী জাহিদকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়। পরে দুজনই চাঁদপুরের ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি দেন। মামলার অভিযোগপত্রও আদালতে দাখিল করা হয়েছে।
মিলি আক্তারের বাবা আয়ুব আলী জানান, ‘শেষমেশ আমার মেয়েটাকে বাঁচানো গেল না। আমাদের সকলকে ফাঁকি দিয়ে সে পরপারে চলে গেল। তাকে বাঁচানোর জন্য অনেক চেষ্টা করেছিলাম। অনেক টাকাও খরচ করেছি। কোনো লাভ হলো না। মেয়েকে হারিয়ে আমি এখন সর্বস্বান্ত। আমার সব শেষ হয়ে গেছে। যারা তাকে অ্যাসিড মেরেছে, তাদের ফাঁসি দাবি করছি।’