সুদ-ঘুষের বিরুদ্ধে বয়ান করায় ইমামকে চাকরিচ্যুতির চেষ্টার অভিযোগ
- চাঁদপুর প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ০৫:০৬ পিএম, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪

জুমার নামাজের বয়ানে সুদ-ঘুষ ও বেপর্দার বিরুদ্ধে বয়ান করায় মাওলানা আব্দুল আওয়াল নামের এক ইমামকে চাকরি ছাড়তে বলার অভিযোগ উঠেছে এক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা মসজিদটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতিও।
ভুক্তভোগী ইমাম চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার চর দুঃখিয়া পূর্ব ইউনিয়নের আলোনিয়া গ্রামের বাইতুল মামুর জামে মসজিদে কর্মরত। অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা (এএসআই) ইমরান শাহীন চৌধুরী ওই গ্রামের বাসিন্দা ও চট্টগ্রাম জেলা পুলিশে দায়িত্বরত।
এ ঘটনায় ফরিদগঞ্জ থানায় গত ২৩ ডিসেম্বর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন শানে সাহাবা জাতীয় খতিব ফাউন্ডেশন সংগঠনের চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতি আনাছ আমিনী।
লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত আড়াই বছর ওই মসজিদে খতিব ও পেশ ইমাম হিসেবে দায়িত্বপালন করে আসছেন মাওলানা আব্দুল আউয়াল। সম্প্রতি তিনি শুক্রবার জুমার নামাজের আগে বয়ানে সুদ-ঘুষ বেপর্দা হারাম উপার্জনের বিরুদ্ধে আলোচনা করার পর থেকেই মসজিদ কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি পুলিশ কর্মকর্তা ইমরান শাহীন চৌধুরী, সদস্য ফিরোজসহ তাঁদের সমর্থকেরা ইমামকে মসজিদ থেকে চলে গিয়ে অন্য জায়গায় চাকরি খোঁজার কথা বলেন।
বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। পরে ভুক্তভোগী ইমাম শানে সাহাবা জাতীয় খতিব ফাউন্ডেশনকে বিষয়টি জানালে সংগঠনের পক্ষ থেকে ওই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিচার চেয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়।
বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে ওই মসজিদের মুসুল্লি মো. নিশান, রিপন চোধুরীসহ আরও অনেকেই বলেন, হুজুরের প্রকৃতপক্ষে কোনো দোষ নেই, হুজুর সুদ-ঘুষ ও হারামের বিরুদ্ধে কথা বলেছে এটাই দোষ।
আগেও কয়েকজন ইমামকে তারা মসজিদ থেকে চাকরিচ্যুত করেছেন বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।
ওই মসজিদ থেকে চাকুরিচ্যুত হওয়া সাবেক ইমাম হাফেজ মাওলানা মো. মনিরুল ইসলাম, মো. আইয়ুব আলী, মো. আব্দুস সাত্তার জানান, তারা যখন ওই মসজিদে অন্যায়ের প্রতিবাদ করেন তখনই তাদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
মসজিদ কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা ইমরান শাহীন চৌধুরী তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।’
এক প্রশ্নে তিনি আরও বলেন, ‘ইমাম আব্দুল আউয়ালের কোনো দোষ নেই, তবে ওনাকে চলে যেতে বলেছি কারণ, আমরা মসজিদে দুইজন নতুন হুজুর নিয়োগ দেব।’
থানায় লিখিত অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে ফরিদগঞ্জ থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘অভিযোগকারী ও অভিযুক্তের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’