
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন ঘিরে আবারও সরব হয়েছে ক্যাম্পাস। প্রার্থীদের পদচারণায় মুখর মধুর ক্যান্টিন, আর আলোচনায় উঠে এসেছে ২০১৯ সালের সেই বহুল আলোচিত নির্বাচন ও তার পরবর্তী নানা ঘটনা।
সেবার ডাকসুর ভাইস প্রেসিডেন্ট (ভিপি) নির্বাচিত হয়েছিলেন ছাত্র অধিকার পরিষদের তৎকালীন নেতা নুরুল হক নুর। বেশিরভাগ পদে জয় পেয়েছিল ছাত্রলীগ। ওই সংসদেই আলোচনায় আসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আজীবন ডাকসু সদস্য করার প্রস্তাব। এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে ভেটো দেন নুরুল হক নুর ও আখতার হোসেন। তবে প্রস্তাবটি উত্থাপন করেছিলেন শামসুন্নাহার হলের ভিপি শেখ তাসনিম আফরোজ ইমি, যিনি এবারের নির্বাচনে ভিপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
ইমির এই ভূমিকা নিয়ে ইতোমধ্যেই ছাত্ররাজনীতিতে নতুন বিতর্ক শুরু হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্টে লিখেছেন, ডাকসুতে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিলো শেখ হাসিনাকে আজীবন সদস্য করতে হবে। কিন্তু নুরুল হক নুর ও আখতার হোসেন ভেটো দিলো। শেখ হাসিনার এই ‘অসম্মান’ ছাত্রলীগ মেনে নেয়নি, আর প্রতিশোধ নিতে একের পর এক হামলা চালিয়েছে।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, ২০১৯ সালের ডাকসু মূলত ছাত্রলীগের দখলে ছিল। যদিও আমাদের প্যানেল থেকে ভিপি, জিএসসহ ১১টি পদে জয়ী হয়েছিলাম, তবুও ছাত্রলীগ ফলাফল ছিনতাই করে। তারপরও ঘোষিত দুটি পদ ব্যবহার করে আমরা শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করেছি।
রাশেদ খান মনে করেন, সেই নির্বাচনই ছিল শেখ হাসিনার পতনের বীজ রোপণ এবং নতুন প্রজন্মের আন্দোলনের সূচনা।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ডাকসু নির্বাচনে শামসুন্নাহার হলের ভিপি নির্বাচিত হয়েছিলেন শেখ তাসনিম আফরোজ ইমি। সেবার তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জয়ী হয়েছিলেন। এবার তিনি বাম গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট থেকে ভিপি পদে লড়ছেন।
তবে তার পুরোনো বক্তব্য আবারও আলোচনায় এসেছে। নির্বাচিত হওয়ার পর এক টেলিভিশন টকশোতে ইমি বলেছিলেন, যেহেতু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী এবং আন্তরিকভাবে ডাকসু নির্বাচনের প্রতি সহযোগিতা দেখিয়েছেন, অন্তত কৃতজ্ঞতাবশত হলেও তাকে আজীবন সদস্য ঘোষণা করা উচিত।
পরে ২০১৯ সালের ৩০ মে ডাকসুর দ্বিতীয় কার্যনির্বাহী সভায় শেখ হাসিনাকে আজীবন সদস্য ঘোষণা করা হয়। যদিও এই সিদ্ধান্তে ভিপি নুরুল হক নুর ও সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেনের সমর্থন ছিল না।