
রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকের শীর্ষ ২০ খেলাপির কাছে আটকে আছে ৬ হাজার ৭৪৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা, যা ব্যাংকের মোট খেলাপি ঋণের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ বা ৩৪ দশমিক ২ শতাংশ। আগস্ট পর্যন্ত ব্যাংকটির মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৯ হাজার ৮২০ কোটি টাকা।
ব্যাংক সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত এক বছরে দেশের অর্থনীতিতে কিছুটা স্থিতিশীলতা ফিরলেও ব্যাংক খাতে অস্থিরতা এখনো কাটেনি। অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছর পূর্ণ হলেও ব্যাংক থেকে সাধারণ গ্রাহকের টাকা ফেরত পাওয়ার ভোগান্তি কমেনি। খেলাপি ঋণের চাপের কারণে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো বড় ঋণ বিতরণে পিছিয়ে পড়ছে। ফলে এসএমই ঋণের ওপর ভর করে এগোতে হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এভাবে চলতে থাকলে সব ব্যাংক লোকসানে চলে যেতে পারে। তাই খেলাপি ঋণ আদায় বাড়ানো এখন জরুরি।
সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, আওয়ামী লীগের সময় অনেক ব্যাংক থেকেই নামে-বেনামে ঋণ দেওয়া হলেও সোনালী ব্যাংকে তেমনটি হয়নি। বরং রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মধ্যে তুলনামূলক ভালো অবস্থানে রয়েছে ব্যাংকটি।
তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের জুন শেষে সোনালী ব্যাংকের মোট ঋণের ২০ শতাংশ খেলাপি হয়ে যায়, যেখানে গত ডিসেম্বরে এ হার ছিল ১৮ দশমিক ২ শতাংশ। মূলধন পর্যাপ্ততার হার দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক ১০ শতাংশ, যা ন্যূনতম ১০ শতাংশ শর্ত পূরণ করছে। একই সময়ে ব্যাংকটি ৫৯১ কোটি টাকা নেট মুনাফা করেছে।
শীর্ষ খেলাপিদের তালিকায় প্রথমে রয়েছে টি অ্যান্ড ব্রাদার্স গ্রুপ। দ্বিতীয় অবস্থানে হলমার্ক গ্রুপ। তৃতীয় স্থানে রয়েছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত রতনপুর গ্রুপের প্রতিষ্ঠান মডার্ন স্টিল মিলস। এরপর রয়েছে তাইপে বাংলা ফেব্রিক্স, ফেয়ার ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল। এছাড়া তালিকায় আছে রহমান গ্রুপ, অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ, লিনা পেপার মিলস, রতনপুর স্টিল রি-রোলিং মিলস, এপেক্স ওয়েভিং অ্যান্ড ফিনিশিং মিলস, বিশ্বাস গার্মেন্টস, রেজা জুট ট্রেডিং, মেঘনা কনডেন্সড মিল্ক, সোনালী জুট মিলস, থার্মেক্স গ্রুপ, ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড এবং সুপ্রিম জুট অ্যান্ড নিটিং।
খেলাপি ঋণ আদায়ের বিষয়ে সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শওকত আলী খান ঢাকাওয়াচকে বলেন, “সামনে আমাদের টার্গেট খেলাপি ঋণ আদায়।” তিনি আরও জানান, বড় খেলাপিদের কাছ থেকে ঋণ আদায়ে ইতিবাচক অগ্রগতি হচ্ছে এবং বছরের শেষ দিকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমে আসবে।