বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগে বাতিল হচ্ছে ৩০% নারী কোটা

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগে নারীদের জন্য বিদ্যমান ৩০ শতাংশ কোটা বাতিল করতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। যদিও এখনো এ বিষয়ে কোনো প্রজ্ঞাপন জারি হয়নি, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগামী সপ্তাহের মধ্যেই এটি জারি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের যুগ্ম সচিব (বেসরকারি মাধ্যমিক) হেলালুজ্জামান সরকার জানিয়েছেন, নারী কোটা বাতিল সংক্রান্ত প্রস্তাব ইতোমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। তাঁর মতে, চলতি সপ্তাহেই প্রজ্ঞাপন জারি হতে পারে, তবে দেরি হলে তা আগামী সপ্তাহে জারি হবে। 

এর আগে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) নারী কোটার বিষয়ে মতামত চেয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠায়। পরে মন্ত্রণালয়ে এক বৈঠকে কর্মকর্তারা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ প্রজ্ঞাপন অনুসরণ করে শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনার পক্ষে মত দেন। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ নির্দেশনা অনুযায়ী, সব ধরনের কোটা বাতিল করে শুধু ৭ শতাংশ কোটা বহাল রাখা হয়েছে। সেই ৭ শতাংশ কোটার আওতায় এনটিআরসিএর মাধ্যমে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

১৯৯৯ সালে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগে ৩০ শতাংশ নারী কোটা চালু করা হয়। তবে পূর্ণমাত্রায় বাস্তবায়িত না হওয়ায় বিশ্বব্যাংকের সুপারিশে ২০০৪ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার এটি বাধ্যতামূলক করে। পরে অনগ্রসর অঞ্চলে নারী প্রার্থীর স্বল্পতা দেখা দিলে ২০১০ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গোপালগঞ্জসহ কিছু জেলা ও উপজেলায় নারী কোটা শিথিল করে।

এদিকে, কোটা সংস্কার আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ২৪ জুলাই সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের নির্দেশনার আলোকে সরকার নবম থেকে ২০তম গ্রেড পর্যন্ত সরকারি চাকরিতে ৭ শতাংশ কোটা রেখে বাকি পদে মেধাভিত্তিক নিয়োগের জন্য প্রজ্ঞাপন জারি করে। বর্তমানে ৭ শতাংশ কোটার মধ্যে রয়েছে বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তানদের জন্য ৫ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য ১ শতাংশ এবং শারীরিক প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের জন্য ১ শতাংশ।