
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় পুলিশ সন্দেহভাজন হিসেবে শনাক্ত করেছে ফয়সাল করিম মাসুদকে, যাকে দাউদ ও রাহুল নামেও পরিচিত। তার বাড়ি পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কেশবপুর ইউনিয়নের কেশবপুর গ্রামে, উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে।
ফয়সাল করিম ওই এলাকার মো. হুমায়ুন কবির (অন্য নামে আব্দুল মালেক মুন্সি)-এর ছেলে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, যদিও ফয়সালের পৈত্রিক বাড়ি বাউফলে, দীর্ঘদিন ধরে তাকে সেখানে কেউ দেখেনি। তার পরিবারও এলাকায় আসে না। শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুর সোয়া ১টার দিকে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলার পর জানা গেছে, ফয়সাল করিমের জন্ম ঢাকায়। স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, তিনি কখনো গ্রামের বাড়িতে যাননি।
ফয়সালের বাবা মো. হুমায়ুন কবির দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। পাঁচ ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি সেজো। প্রায় ৩৫ বছর আগে ঢাকায় চলে যান। তার বাবা-মা মারা যাওয়ার পরও ফয়সালের পরিবার বাড়িতে আসেনি। হুমায়ুন কবির একবার মাত্র বাউফলে এসেছিলেন, তখন তার চার ভাইয়ের কাছে পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত সাড়ে ছয় শতাংশ জমি বিক্রি করে চলে যান।
কেশবপুর ইউনিয়নের দুই নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, “হুমায়ুন কবির বা আব্দুল মালেক নামে কাউকে কেউ চিনবে না। মালেকের ছেলে ঢাকার কোনো নেতাকে গুলি করছে—এ খবর আমরা শুক্রবার রাতে মিডিয়া থেকে শুনেছি। তবে এলাকা ও সম্পদের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই।”
বাউফল থানার পরিদর্শক মো. আতিকুল ইসলাম জানান, “ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সন্দেহভাজন শনাক্ত একজন হলেন বাউফল উপজেলার। আমরা তার বাড়িতে গিয়েছিলাম, কিন্তু ওই ব্যক্তি ও তার পরিবার এলাকায় আসে না। তারা ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ঢাকায় বসবাস করছে।”
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার আদাবর এলাকার বাইতুল আমান হাউজিং সোসাইটিতে ব্রিটিশ কলাম্বিয়া স্কুলের চতুর্থ তলায় এক অফিসে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুট করা হয়। এ ঘটনায় আদাবর থানায় মামলা দায়ের করা হয়। ফয়সাল করিম মাসুদকে প্রধান আসামি করা হয়। ৭ নভেম্বর র্যাব তাকে গ্রেপ্তার করে এবং তার কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন, পাঁচটি গুলি, তিনটি মোবাইল ফোন এবং পাঁচ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।