
রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে ইউক্রেনের লাগাতার ড্রোন হামলার জেরে অস্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যায় শহরের প্রধান বিমানবন্দরগুলো। এর ফলে অন্তত ১৪০টি ফ্লাইট বাতিল হয় বলে জানায় রুশ কর্তৃপক্ষ। রবিবার, ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশিত হয়।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, শনিবার ১৯ জুলাই সকাল থেকে শুরু করে একটানা হামলার মধ্যে ২৩০টিরও বেশি ইউক্রেনীয় ড্রোন প্রতিহত করা হয়েছে। এর মধ্যে অন্তত ২৭টি ড্রোন মস্কো শহরের আকাশসীমা অতিক্রম করছিল।
বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রক সংস্থা আরও জানায়, রাজধানীর চারটি প্রধান বিমানবন্দর—শেরেমেতিয়েভো, ভনুকোভো, দোমোদেদোভো এবং ঝুকোভস্কি—ড্রোন হুমকির কারণে কিছু সময়ের জন্য কার্যক্রম বন্ধ রাখে। নিরাপত্তাজনিত কারণে ১৩০টিরও বেশি ফ্লাইট অন্য গন্তব্যে সরিয়ে নেওয়া হয়। পরে সব বিমানবন্দরেই স্বাভাবিক কার্যক্রম পুনরায় শুরু হয়।
তবে গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ১০ বার এসব বিমানবন্দরে কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত করতে হয়েছে ইউক্রেনীয় ড্রোনের কারণে। একই সময়ে কালুগা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরেও সাময়িক বাধা সৃষ্টি হয়।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভাষ্য, “আমরা ৪৫টি ড্রোন প্রতিহত করেছি এবং আরও কয়েকটি ড্রোন ইউক্রেন সীমান্তবর্তী অঞ্চল ও কৃষ্ণসাগরের ওপরে গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে।” তবে রাশিয়ার অভ্যন্তরে এই হামলাগুলোতে কোনো প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে, ইউক্রেনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাশিয়ার পাল্টা বিমান হামলায় তাদের অন্তত তিনজন নাগরিক নিহত হয়েছেন। ইউক্রেনের দাবি অনুযায়ী, দোনেৎস্ক অঞ্চলে দুজন এবং সুমি অঞ্চলে ৭৮ বছর বয়সী এক নারী প্রাণ হারান।
ইউক্রেনের বিমান বাহিনী জানায়, “রাশিয়ার ছোড়া ৫৭টি ড্রোনের মধ্যে ১৮টি ভূপাতিত করা হয়েছে এবং ৭টি ড্রোন রাডার জ্যামিংয়ের ফলে লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।” একইসঙ্গে খারকিভ, দ্নিপ্রোপেত্রোভস্ক ও জাপোরিঝিয়া অঞ্চলেও হামলা হয়েছে বলে জানানো হয়।
সাম্প্রতিক এই পাল্টাপাল্টি ড্রোন হামলা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের নতুন এক উত্তেজনাকর মাত্রা নির্দেশ করছে, যেখানে আকাশপথই হয়ে উঠেছে সংঘাতের কেন্দ্রবিন্দু।