
নিখোঁজ সাংবাদিক ও লেখক বিভুরঞ্জন সরকারের মরদেহ মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় মেঘনা নদীতে উদ্ধার করেছে পুলিশ। মরদেহের খবর পেয়ে ইতোমধ্যে পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. মাসুদ আলম শুক্রবার (২২ আগস্ট) বিকাল ৫টা ৪৪ মিনিটে বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মেঘনা নদীতে মরদেহ পাওয়া গেছে।
বিভুরঞ্জন সরকারের ছোট ভাই চিররঞ্জন সরকার বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে যাচ্ছি। পুলিশ যে ছবি দেখিয়েছে, আমি নিশ্চিত সেটি দাদারই। এখন কেবল কিছু আনুষ্ঠানিকতার জন্য যেতে হচ্ছে।
এর আগে ২১ আগস্ট সকাল সোয়া ৯টার দিকে বিভুরঞ্জন সরকার একটি লেখা পাঠান। সেই লেখার ফুটনোটে তিনি উল্লেখ করেন, “জীবনের শেষ লেখা হিসেবে এটা ছাপতে পারেন।” এরপর সকাল ১০টার দিকে অফিসে যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বের হলেও তিনি আর ফেরেননি। পরিবারের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) রাতে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়।
দীর্ঘ সাংবাদিকতা জীবনে বিভুরঞ্জন সরকার ছিলেন একাধারে কলাম লেখক, সম্পাদক ও বামপন্থী রাজনীতির সক্রিয় কর্মী। স্কুলজীবনেই সাংবাদিকতার সঙ্গে যুক্ত হন তিনি। পঞ্চগড়ে থাকা অবস্থায় দৈনিক আজাদের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ শুরু করেন। পরবর্তীতে ঢাকায় সাপ্তাহিক একতা, দৈনিক রূপালীসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। নিজেই সম্পাদনা করেছেন সাপ্তাহিক চলতিপত্র এবং নির্বাহী সম্পাদক ছিলেন মৃদুভাষণ-এর। পাশাপাশি দৈনিক মাতৃভূমির সম্পাদনার দায়িত্বও পালন করেন তিনি। দেশের প্রায় সব প্রধান দৈনিক ও অনলাইন মাধ্যমে নিয়মিত কলাম লিখতেন বিভুরঞ্জন সরকার।
আশির দশকে সাপ্তাহিক যায়যায়দিন-এর সহকারী সম্পাদক থাকা অবস্থায় “তারিখ ইব্রাহিম” ছদ্মনামে লেখা শুরু করে তিনি ব্যাপক পরিচিতি পান। সর্বশেষ তিনি দৈনিক আজকের পত্রিকা-এর জ্যেষ্ঠ সহকারী সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় তিনি ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন এবং পরবর্তীতে বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন।