
যদি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ বাঁধে, তবে তাতে সৌদি আরবের জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা একেবারেই উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফের সাম্প্রতিক বক্তব্যে উঠে এসেছে এমনই এক গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত।
শুক্রবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে খাজা আসিফ জানান, পাকিস্তান ও সৌদি আরবের মধ্যে বিদ্যমান প্রতিরক্ষা চুক্তি অনুযায়ী, ভারতের সঙ্গে যুদ্ধ শুরু হলে সৌদি আরব ইসলামাবাদের পাশে দাঁড়াবে। জিও টিভিকে তিনি স্পষ্ট বলেন, ‘হ্যাঁ, অবশ্যই, এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।’
আসিফ জানান, এই দ্বিপাক্ষিক চুক্তিটি ন্যাটো জোটের ‘ধারা ৫’-এর মতোই, যেখানে একটি দেশের উপর হামলাকে পুরো জোটের ওপর হামলা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তবে তিনি পরিষ্কার করে দেন, এই চুক্তি আগ্রাসী নয় বরং প্রতিরক্ষামূলক। তাঁর ভাষায়, ‘যদি সৌদি আরব কিংবা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আগ্রাসন হয়, আমরা একসঙ্গে এর মোকাবেলা করব।’
রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আসিফ আরও বলেন, ‘কোনো আগ্রাসনের জন্য এই চুক্তিকে ব্যবহারের ইচ্ছা আমাদের নেই। তবে দুই পক্ষের কেউ যদি হুমকির মুখে পড়ে, তাহলে ব্যবস্থাগুলো স্পষ্টভাবে কার্যকর হবে।’
তবে চুক্তির আওতায় সৌদি আরব পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্রের আওতায় আসবে কিনা, তা নিয়ে রয়েছে ধোঁয়াশা। বৃহস্পতিবার এক টেলিভিশন টক শোতে আসিফ বলেন, ‘চুক্তি অনুযায়ী আমাদের সব ধরনের সক্ষমতা তাদেরও পাওয়ার সুযোগ থাকবে।’
কিন্তু পরে রয়টার্সকে দেওয়া বক্তব্যে তিনি তার অবস্থান খানিকটা পাল্টে বলেন, ‘পরমাণু অস্ত্রের কথা বিবেচনাতেই নেই।’ পাকিস্তানের পারমাণবিক নীতিতেও স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে যে, দেশটি শুধুমাত্র ভারতের বিরুদ্ধে প্রয়োজনে এই অস্ত্র ব্যবহার করবে।
অন্যদিকে, চুক্তি অনুযায়ী পাকিস্তান এখন সৌদি আরবকে পারমাণবিক সুরক্ষা দিতে বাধ্য কি না - এমন প্রশ্নে এক জ্যেষ্ঠ সৌদি কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, ‘এটি একটি সর্বাত্মক প্রতিরক্ষামূলক চুক্তি, যা সব ধরনের সামরিক ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করে।’
বিশ্লেষকদের মতে, এই চুক্তি পাকিস্তানের জন্য অর্থনৈতিক সহায়তা ও একটি সম্ভাব্য আরব সামরিক জোটের দিক উন্মোচন করতে পারে। অন্যদিকে সৌদি আরবের জন্য এটি হতে পারে একটি কার্যকর ‘পারমাণবিক ঢাল’।