বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে দল। জুলাই ও আগস্ট মাসের গণঅভ্যুত্থান নিয়ে তার ধারাবাহিক বিতর্কিত ও বিভ্রান্তিকর মন্তব্যের জন্য এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে। তাকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান বলেন, তিনি এখনো শোকজের চিঠি হাতে পাননি। সাংবাদিকদের মাধ্যমেই তিনি এ তথ্য জেনেছেন। চিঠি হাতে পাওয়ার পরই এ বিষয়ে মন্তব্য করবেন বলে জানান।
আওয়ামী লীগ থেকে বিএনপিতে যোগদানকারী ফজলুর রহমান গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকেই বিভিন্ন বিতর্কিত বক্তব্য দিয়ে আসছেন। সর্বশেষ তিনি জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে ওইদিনের ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে অভিযোগ তোলেন।
তার ভাষায়, “এটি কোনো সাধারণ রাজনৈতিক ঘটনা নয়, বরং একটি সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র; যার মূল পরিকল্পনাকারী ‘কালো শক্তি’ জামায়াত।”
সম্প্রতি এক টেলিভিশন টকশোতে তিনি বলেন, ৫ আগস্টের আন্দোলনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা ছিল বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের। তার দাবি, এই সংগঠন দীর্ঘদিন ধরে দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে ষড়যন্ত্র করে আসছে।
তিনি আরও বলেন, “যারা ৫ আগস্ট ঘটাইছে, কালো শক্তি, সেই কালো শক্তির নাম হলো জামায়াতে ইসলামী, তাদের যে অগ্রগামী শক্তি তার নাম হলো ইসলামী ছাত্রশিবির। সারজিস আলমরা, যারা ওই এইটার (অভ্যুত্থানের) অভিনয় করছে, ৫ আগস্টের অভিনেতা যারা, আমি তাদের নেতা বলতে আর চাই না, তাদের আমি অভিনেতা বলব। আমরা মনে করেছিলাম সেই আলবদর, আল শামস, জামায়াতে ইসলামী ৫৪ বছর পর পূর্বপুরুষের পরাজয়ের গ্লানি তারা ভুলে গেছে। কিন্তু না, সেই পরাজয়ের গ্লানি দ্বিগুণ আকারে তাদের মধ্যে এসেছে।”
তিনি আরও দাবি করেন, জামায়াত ‘চক্রান্ত করে’ দেশে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং তাদের পেছনে রয়েছে ‘আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র’। তার মতে, “তারা চক্রান্ত করে নিজেদের এই দেশে প্রতিষ্ঠিত করেছে, সেই প্রতিষ্ঠার পেছনে জাতীয়-আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র আছে। সে ষড়যন্ত্রের বহিঃপ্রকাশে তারা এমন একটা শক্তি হয়ে দাঁড়াইছে যে, তাদের এখন অর্থবিত্ত সবকিছু আছে।”
ফজলুর রহমান মনে করেন, অনানুষ্ঠানিকভাবে জামায়াত এখন বাংলাদেশের ক্ষমতায় রয়েছে, যদিও নির্বাচনের মাধ্যমে তারা ক্ষমতায় যেতে পারবে না। তার ভাষ্য, বিএনপি-ই জামায়াতের প্রধান প্রতিবন্ধক।
তিনি বলেন, “যদি একটি সুষ্ঠু নির্বাচন হয়, তবে বিএনপি দুই-তৃতীয়াংশ আসন নিয়ে ক্ষমতায় ফিরবে, এটাই দেশের জনগণের ইচ্ছা।”