
চকরিয়া থানার হাজতে দুর্জয় চৌধুরী (২৭) নামে এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় থানার ওসি শফিকুল ইসলামকে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। একই সঙ্গে এএসআই হানিফ মিয়া ও দুই কনস্টেবলকে জেলা পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে।
শনিবার রাতে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এসপি মো. সাইফউদ্দীন শাহীন এই নির্দেশনা দেন।
ঘটনার তদন্তে অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার মো. জসিম উদ্দিনকে প্রধান করে তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন—চকরিয়া সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার অভিজিৎ দাশ ও কোর্ট ইন্সপেক্টর আনোয়ার উল ইসলাম।
অন্যদিকে, রোববার দুপুরে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক–১ স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে চকরিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রাবেয়া খানমকে ওএসডি করা হয়। পাশাপাশি মাউশি চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালককে প্রধান করে আরেকটি তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটিকে তিন দিনের মধ্যে সরেজমিন তদন্ত করে প্রমাণসহ প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে দুর্জয়ের প্যান্টের পকেটে দুটি চিরকুট পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন এএসপি অভিজিৎ দাশ। তবে কর্তৃপক্ষ চিরকুটের বিষয়বস্তু প্রকাশ করেনি।
জানা গেছে, চকরিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী দুর্জয়ের বিরুদ্ধে সরকারি ২ লাখ ৮৩ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছিল। ২১ আগস্ট রাতে প্রধান শিক্ষকের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তাকে আটক করে থানার আলাদা কক্ষে রাখে। ওই রাতেই তার মৃত্যু হয়। পুলিশ দাবি করেছে, তিনি আত্মহত্যা করেছেন।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, রাত ১২টা ৪২ মিনিট থেকে ১টা ২২ মিনিট পর্যন্ত দুর্জয় অন্তত চারবার গলায় বেল্ট পেঁচিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। এরপর তিনি ক্যামেরার আওতার বাইরে চলে যান।
তবে পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেছেন, দুর্জয়কে রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতনের মাধ্যমে হত্যা করা হয়েছে। এ অভিযোগের প্রতিবাদে শুক্রবার বিকেলে চকরিয়া কেন্দ্রীয় কালীমন্দির দুর্গাপূজা কমিটির ব্যানারে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মহাসড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালিত হয়।