
গত কয়েক সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চারবার ফোন করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে। তবে সব ফোনই মোদি ধরেননি। জার্মান সংবাদমাধ্যম ফ্রাঙ্কফ্রুটার অলজেমাইন এক প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশ করেছে।
মাইন্টসভিত্তিক সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, ট্রাম্পের মন্তব্য ও চাপের কারণে মোদি ফোন ধরতে অনীহা প্রকাশ করতে পারেন। এছাড়া সতর্কতার অংশ হিসেবেও তিনি ফোন না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
যুক্তরাষ্ট্র ভারতের পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে, যা ব্রাজিলের পর অন্য কোনো দেশের তুলনায় সর্বোচ্চ। জবাবে ট্রাম্প প্রথমে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন ভারতের পণ্যের ওপর। পরে রাশিয়া থেকে তেল কেনার ক্ষেত্রে আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক যুক্ত হয়, যা ২৭ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে।
জার্মানির বার্লিনভিত্তিক গ্লোবাল পাবলিক পলিসি ইনস্টিটিউটের সহ-প্রতিষ্ঠাতা থোরস্টেন বেনার এক্সে পোস্টে জানিয়েছেন, “পত্রিকাটি দাবি করেছে, ট্রাম্প সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে মোদিকে চারবার ফোন করার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু মোদি সেগুলো প্রত্যাখ্যান করেছেন।”
ট্রাম্প ৩১ আগস্ট মন্তব্য করেন, ভারতের অর্থনীতি হলো “মৃত অর্থনীতি”। তিনি বলেন, “ভারত রাশিয়ার সঙ্গে কি করছে তা আমি পরোয়া করি না। উভয়ই তাদের অর্থনীতিকে নিচের দিকে নিয়ে যেতে পারে।”
এরপর ১০ আগস্ট মোদি মন্তব্য করেন, ভারতের অর্থনীতি সমৃদ্ধ এবং বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হিসেবে পরিণত হবে। জার্মান পত্রিকা উল্লেখ করেছে, ট্রাম্পের “মৃত অর্থনীতি” মন্তব্যে মোদি অপমানিত বোধ করেছেন।
সংবাদমাধ্যমের মতে, ট্রাম্প ভারতের ওপর চাপ দিয়ে বাণিজ্য চুক্তি করতে চাইছেন। কিন্তু মোদি এখনো এসব চাপে নতি স্বীকার করেননি। মোদি ফোন না নেওয়ার ঘটনা ট্রাম্পের ওপর তার ক্ষোভের পাশাপাশি সতর্কতার ইঙ্গিতও প্রকাশ করছে।
ফ্রাঙ্কফ্রুটার অলজেমাইন আরও জানিয়েছে, ট্রাম্প সম্প্রতি ভিয়েতনামের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তির আলোচনা করেছিলেন, যেখানে ফোন কলের পরে হঠাৎ আয়োজন করা হয়েছিল। মোদি ভিয়েতনামের নেতার মতো ফাঁদে পড়তে চাননি—এটিকেও তার ফোন না নেওয়ার কারণ হিসেবে ধরা হচ্ছে।
পত্রিকা আরও জানিয়েছে, ট্রাম্প পাকিস্তানে তেলক্ষেত্র বানানোর পরিকল্পনা করেছেন এবং সেখানে ভারত তেল কিনবে। এছাড়া হোয়াইট হাউজে পাকিস্তানের সেনাপ্রধানকে নৈশভোজে ডাকা ভারতের কাছে উস্কানিমূলক হিসেবে ধরা হয়েছে। ভারতের জন্য একপক্ষীয়ভাবে দ্বন্দ্ব সমাধানের দাবি ট্রাম্প করলে তা নাখোশভাব সৃষ্টি করেছে।
সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে