
পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে মাদক পাচারের অভিযোগে দুটি জাহাজ লক্ষ্য করে সামরিক অভিযান চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এই হামলায় অন্তত পাঁচজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) রাতে মার্কিন দক্ষিণাঞ্চলীয় কমান্ড (সাউথকম) জানায়, যুদ্ধমন্ত্রী পিট হেগসেথের নির্দেশে আন্তর্জাতিক জলসীমায় অভিযানটি পরিচালিত হয়।
সাউথকমের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘গোয়েন্দা সংস্থা নিশ্চিত করেছে যে, জাহাজগুলো পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে পরিচিত মাদক-পাচারের রুট ধরে যাতায়াত করছিল এবং মাদক-পাচারের কাজে নিয়োজিত ছিল।’
বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, অভিযানের সময় মোট পাঁচজন পুরুষ মাদক-সন্ত্রাসী নিহত হয়েছেন—প্রথম জাহাজে তিনজন এবং দ্বিতীয় জাহাজে দুজন। অভিযানে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
দীর্ঘদিন ধরেই ট্রাম্প প্রশাসন ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সরকারের বিরুদ্ধে মাদক চোরাচালান রোধে ‘যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়ার’ অভিযোগ করে আসছে।
নিউ ইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভেনেজুয়েলায় সিআইএর গোপন অভিযান পরিচালনার অনুমোদন ইতোমধ্যে দিয়েছেন ট্রাম্প।
একাধিক মার্কিন গণমাধ্যমের তথ্যে জানা গেছে, খুব শিগগিরই ওয়াশিংটন ভেনেজুয়েলায় ‘মাদক কার্টেলের বিরুদ্ধে’ সরাসরি হামলা শুরু করতে পারে।
এর আগে গত আগস্টে দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস জানায়, লাতিন আমেরিকার মাদক চোরাচালানকারীদের বিরুদ্ধে সামরিক শক্তি ব্যবহারের লক্ষ্যে ট্রাম্প একটি গোপন নির্দেশনায় স্বাক্ষর করেন। এর পরপরই ক্যারিবীয় সাগর অঞ্চলে অতিরিক্ত মার্কিন সামরিক ইউনিট মোতায়েন করা হয়। এরপর থেকেই ক্যারিবীয় সাগর ও পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে মাদক পরিবহনের অভিযোগে নৌযান লক্ষ্য করে বিমান ও ড্রোন হামলা চালানো হচ্ছে।
তবে এসব অভিযানের বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘ। সংস্থাটি সতর্ক করে বলেছে, ক্যারিবীয় ও পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে তথাকথিত মাদক পাচারকারীদের জাহাজে হামলা বন্ধ করা এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড প্রতিরোধ করা জরুরি।
অক্টোবরের শেষ দিকে জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার তুর্ক বলেন, তথাকথিত মাদকবাহী ব্যক্তিদের ‘এমন পরিস্থিতিতে হত্যা করা হয়েছে, যার কোনো যুক্তি আন্তর্জাতিক আইনে পাওয়া যায় না।’
ভলকার তুর্ক বলেন, ‘এই আক্রমণগুলো অগ্রহণযোগ্য। যুক্তরাষ্ট্রকে অবশ্যই এই ধরনের আক্রমণ বন্ধ করতে হবে এবং এই নৌকাগুলোতে থাকা মানুষদের বিচারবহির্ভূত হত্যা রোধে প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা নিতে হবে - তাদের বিরুদ্ধে যে অপরাধমূলক কাজের অভিযোগই থাকুক না কেন।’