
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার কেন্দ্রীয় শহর গাজা সিটিতে হামাস ও ইসরায়েলি বাহিনীর মধ্যে নতুন করে তীব্র সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। শনিবার স্থানীয় সময় সকালে শুরু হওয়া এই সংঘাতে এ পর্যন্ত একজন ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন অন্তত ১১ জন এবং আরও চার সেনা নিখোঁজ রয়েছেন।
তুরস্কভিত্তিক সংবাদ সংস্থা আনাদোলু এজেন্সি জানিয়েছে, তথ্যটি নিশ্চিত করেছে ইসরায়েলি সম্প্রচার মাধ্যম চ্যানেল আই২৪ এবং জর্ডানভিত্তিক রোয়া নিউজ। চ্যানেল আই২৪ এর প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সেনারা গাজা সিটির দিকে অগ্রসর হচ্ছিলেন। সে সময় হামাসের সামরিক শাখা আল-কাসাম ব্রিগেডের তীব্র প্রতিরোধের মুখে পড়ে ইসরায়েলি বাহিনী।
চ্যানেল আই২৪সহ একাধিক ইসরায়েলি গণমাধ্যম জানিয়েছে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান শুরুর পর এটি আইডিএফ ও আল-কাসাম ব্রিগেডের মধ্যে অন্যতম ভয়াবহ সংঘাত হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে।
তবে সংঘাতের সর্বশেষ তথ্য প্রকাশে সংবাদমাধ্যমকে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। এক বিজ্ঞপ্তিতে আইডিএফ জানিয়েছে, “পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে।”
এদিকে নিখোঁজ চার সেনা হামাসের হাতে বন্দি হয়েছেন কি না তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। কারণ, শনিবার দুপুরে টেলিগ্রামে দেওয়া এক পোস্টে আল-কাসাম ব্রিগেডের শীর্ষ কমান্ডার আবু উবেইদা বলেন, “যারা ভুলে যায় তাদের আমরা স্মরণ করিয়ে দিই, মৃত্যু অথবা বন্দিদশা।”
তার পোস্টে গাজা সিটিতে সংঘাতের বেশ কিছু ছবিও প্রকাশ করা হয়। উবেইদা সতর্ক করে বলেন, ইসরায়েল যদি গাজা দখলের পরিকল্পনা থেকে সরে না আসে, তাহলে এর পরিণতি হবে ইসরায়েলি সরকার ও সামরিক নেতৃত্ব উভয়ের জন্যই ভয়াবহ।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, বর্তমানে যেসব এলাকায় আল-কাসাম ব্রিগেডের যোদ্ধা ও ইসরায়েলি সেনাদের মধ্যে সংঘর্ষ চলছে, সেখানে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামলার সময় বন্দি করা ইসরায়েলি জিম্মিরাও অবস্থান করছে।
উবেইদা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “যদি এই সংঘাতে কোনো ইসরায়েলি জিম্মি নিহত হয়, তাহলে আমরা তার নাম ও পরিচয় প্রকাশ করবো, এবং হত্যার দায় সম্পূর্ণ ইসরায়েলি বাহিনীর ওপরই বর্তাবে।”
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার থেকে গাজা দখলের পূর্ণাঙ্গ অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েলি সেনারা। এর আগে আইডিএফ গাজাকে ‘বিপজ্জনক সংঘাতপূর্ণ এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করেছিল।