
দুর্নীতিমুক্ত ও জনগণমুখী সমাজ গড়ার অঙ্গীকার করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, দেশের সম্পদ ও নাগরিক সুযোগ-সুবিধা চোরদের হাতে তুলে দেওয়া যাবে না। তিনি বলেন, “দেশের চাবি জনগণের স্বার্থ রক্ষা করতে সৎ চৌকিদারদের হাতে তুলে দেওয়া হবে।”
শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর কাফরুল দক্ষিণ থানা আয়োজিত ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, “আমরা আপনাদেরকে কথা দিচ্ছি, এই সমাজ বদলানোর দায়িত্ব যদি জনগণ আমাদের হাতে তুলে দেন, আমরা খেটেখুটে চেষ্টা করব সমাজের সমস্যাগুলো দূর করার। আমরা ইনশাল্লাহ মাথায় তেল দেব না, তেলের উপরে যার চামড়া ফেটে গেছে তার গায়ে একটু তেল মালিশ করার চেষ্টা করব। আমাদের প্রাইম সাবজেক্ট হবে দেশের বঞ্চিত মানুষ। তারা হবে আমাদের অগ্রাধিকার।”
ডা. শফিকুর জানান, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসহ সব নাগরিক পরিষেবায় বঞ্চিতরা অগ্রাধিকার পাবে। তিনি বলেন, “বঞ্চিতদের অধিকার তাদের হাতে তুলে না দেওয়া পর্যন্ত ওই সেবা আমরা গ্রহণ করব না।” দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, “বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী থেকে যারা নির্বাচিত হবেন তারা সরকারের কোনো প্লট অল্প মূল্যেও গ্রহণ করবেন না, বিনা ট্যাক্সের গাড়িতে চড়বেন না। সরকারের দেওয়া ন্যায্য সুযোগ-সুবিধার মধ্যে কতটুকু গ্রহণ করা যায়, তা বিবেচনা করা হবে।”
তিনি চারদলীয় জোট সরকারের সময় দলের দুই নেতার সততার দৃষ্টান্ত টেনে বলেন, তারা শতভাগ সৎ ও দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। “তারা আল্লাহকে ভয় করে কাজ করেছেন। মহান আল্লাহ সব শুনেন, সব দেখেন। তাকে ফাঁকি দেওয়ার শক্তি কারো নেই,” বলেন তিনি। যারা আল্লাহকে ভয় করে, তারা জনগণের সম্পদ ও অধিকার রক্ষা করতে সক্ষম বলেও তিনি মত প্রকাশ করেন।
জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, “এই বাংলাদেশ কী আসলেই আমরা সবাই চাই? তাহলে একা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী পারবে না। প্রত্যেকটি ঘর থেকে, বাড়ি থেকে, সব পেশা ও শ্রেণি থেকে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। এগিয়ে এসে বলতে হবে, আমাদের সম্পদ যারা লুট করেছে তাদের হাতে দেশের চাবি আমরা দিতে চাই না। আমাদের সম্পদের যারা চৌকিদার-পাহারাদার হবে, আমরা সেই চাবি তাদের হাতে তুলে দিতে চাই। আপনারা কি সাহস করে ঘোষণা দিতে পারবেন?”
আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, “আমরা কথা দিচ্ছি, আল্লাহ যতদিন হায়াত দেবেন এবং তৌফিক দেবেন, আমরা ইনশাল্লাহ আপনাদের আমানতের খেয়ানত করব না। আপনারা দোয়া করবেন, এই ওয়াদা যেন পূরণ করার তৌফিক আল্লাহ আমাদেরকে দান করেন।”
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, দেশের নাগরিকদের জন্যই তারা কাজ করছেন। তিনি বলেন, “সেই নাগরিক সমাজকে বাংলাদেশে ফেলে বিদেশে যাওয়া আমার পক্ষে সম্ভব হয়নি। আমার পূর্ণ আস্থা আমার আল্লাহর ওপর আছে, দেশের চিকিৎসক সমাজের ওপর আছে। আমরা চাই জনগণের সম্পদ ও সুযোগ-সুবিধা চুরি করা না হোক, দেশের সৎ চৌকিদারদের হাতে জনগণের অধিকার নিরাপদ থাকবে।”