
বহুল আলোচিত আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি) থেকে পদত্যাগ করেছেন দলের প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক ও সাবেক সচিব এ এফ এম সোলায়মান চৌধুরী। তিনি জানিয়েছেন, তিনি আবার জামায়াতে ইসলামীতে ফিরে যাচ্ছেন।
তার ভাষায়, “আমি আল্লাহকে সাক্ষী রেখে ঘোষণা দিয়েছি, আমি আবার জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান করব। এখন কেবল লিখিত আনুষ্ঠানিকতা বাকি আছে।”
বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পদত্যাগের কারণ ব্যাখ্যা করেন তিনি। সোলায়মান চৌধুরী বলেন, ২০২০ সালের ২ মে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার—এই তিনটি মূলনীতির ভিত্তিতে এবং সাত দফা কর্মসূচি সামনে রেখে এবি পার্টি আত্মপ্রকাশ করে। দেশের প্রায় ৫৩টি জেলায় ও ৩০০টি উপজেলায় কমিটি গঠন করা হয়। দল নিবন্ধনের জন্য আবেদন করা হলেও তৎকালীন সরকারের চাপের কারণে নির্বাচন কমিশন এবি পার্টিকে নিবন্ধন দেয়নি।
তিনি বলেন, “নিবন্ধন না দেওয়া সত্ত্বেও আমাদের কার্যক্রম থেমে ছিল না। ৫ আগস্ট-পরবর্তী পটপরিবর্তনের পর অবশেষে আমরা নিবন্ধন পেয়েছি। নির্বাচন কমিশন আমার নামে নিবন্ধন সার্টিফিকেট ও প্রতীক বরাদ্দ করেছে। এরপর দলের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয় এবং মজিবুর রহমান মঞ্জু চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।”
সাবেক সচিব অভিযোগ করেন, “সেই কমিটির মূল লক্ষ্য ছিল সংগঠনকে তৃণমূল পর্যায়ে পৌঁছে দেওয়া, সব জেলা ও উপজেলায় কমিটি গঠন করা, জনসাধারণকে দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত করা এবং মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া। কিন্তু আজকের দিনে এসব কার্যক্রম থেমে গেছে। এবি পার্টি এখন এক ঢাকার কেন্দ্রিক দল হিসেবে পরিণত হয়েছে। দেশের কোথাও দলের জনসম্পৃক্ততা নেই, বরং বিভিন্ন জেলার নেতারা পদত্যাগ করছেন।”
তিনি আরও বলেন, “আমাকে শুধুমাত্র নামের জন্য উপদেষ্টা রাখা হয়েছে। বাস্তবিকভাবে উপদেশ চাইলে দেওয়া যায়, না চাইলে দেওয়া যায় না। যেটুকু প্রতিশ্রুতি এই দল নতুনভাবে দিয়েছিল, তার আর কিছুই কার্যকর হচ্ছে না। এমন দলে থাকার চাইতে না থাকা শ্রেয় বলে আমি এবি পার্টির সব পদ থেকে পদত্যাগ করেছি। এ মর্মে চেয়ারম্যানকে লিখিতভাবে অবহিত করেছি।”
পুরোনো দলে ফিরে যাওয়ার বিষয়ে সোলায়মান চৌধুরী বলেন, “আমি নতুন কোনো দলে যাচ্ছি না, আমার পুরনো রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামীতে ফিরছি। ইতিমধ্যেই জামায়াতে ইসলামী আমির ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গে প্রাথমিক কথাবার্তা হয়েছে। তিনি স্বাগত জানিয়েছেন। আমি আল্লাহকে সাক্ষী রেখে ঘোষণা করেছি, লিখিত আনুষ্ঠানিকতা বাকি আছে।”
তিনি আরও বলেন, “জামায়াতে ইসলামের মাধ্যমে আমরা দেশের সাধারণ মানুষের সমস্যা সমাধান, অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া এবং দেশকে সুন্দর করার কাজে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করব।”
এছাড়া তিনি জানান, পদত্যাগের পরই জামায়াতে ইসলামী আমিরের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের জন্য বসুন্ধরার বাসায় গেছেন।