
ঝিনাইদহের সদর উপজেলার সুরাট ইউনিয়নে জামায়াতে ইসলামী কার্যালয় থেকে সরকারি প্রণোদনার বীজ ও সার উদ্ধারের ঘটনা জেলাজুড়ে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। তবে জামায়াতের নেতারা ঘটনাটিকে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছেন।
ইউনিয়ন জামায়াতের আমির মাওলানা ইকবাল হোসেন জানান, জেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগের উদ্যোগে তৃণমূল পর্যায়ের কৃষকদের জন্য বিশেষ সরকারি প্রণোদনার বীজ ও সার বিতরণের জন্য বিএনপি ও জামায়াত থেকে কৃষকের তালিকা সংগ্রহ করা হয়েছিল। সেই তালিকার ভিত্তিতে গত শুক্রবার সুরাট ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীকে ৩০ জন কৃষকের জন্য ২২ কেজি সরিষা বীজ, ৩৫ কেজি মুসুর বীজ এবং ৮ বস্তা পটাশ ও ফসফেট সার দেওয়া হয়। ওইদিন ইউনিয়ন জামায়াত ১৫ কেজি সরিষা বীজ, ১৫ কেজি মুসুর বীজ এবং ৪ বস্তা সার বিতরণ করে। রাত হয়ে যাওয়ায় বাকি ৭ কেজি সরিষা বীজ, ২০ কেজি মুসুর বীজ ও ৪ বস্তা সার কার্যালয়ে রাখা হয়, যা শনিবার সকালে কৃষকদের দেওয়া হওয়ার কথা ছিল।
জামায়াতের অভিযোগ, থানা বিএনপির সহ-সভাপতি ও জেলা বিএনপির স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক এবং সুরাট ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান বিল্লাল হোসেনসহ তার অনুসারীরা রাতের অন্ধকারে ইউনিয়ন জামায়াত অফিসের তালা ভেঙে বীজ ও সার উদ্ধারের নাটক সাজিয়েছে।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলা জামায়াত কমিটির সেক্রেটারি জেনারেল আলমগীর হুসাইন স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করেন, জামায়াতের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং আগামী নির্বাচনে রাষ্ট্রক্ষমতায় আসার সম্ভাবনার কারণে স্থানীয় বিএনপি তাদের ভাবমর্যাদা ক্ষুণ্ণ করার চেষ্টা চালিয়েছে।
সদর উপজেলা জামায়াতের আমির ড. হাবিবুর রহমানও বলেন, “জামায়াতকে ফাঁসানোর জন্য একটি রাজনৈতিক দল এই ঘটনা সাজিয়েছে। আমরা এটাকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করব।”
অন্যদিকে, বিএনপি নেতা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান বিল্লাল হোসেন বলেন, “শত শত মানুষের সামনে বীজ ও সার উদ্ধারের ঘটনা ঘটেছে। গ্রামবাসী, সাংবাদিক, পুলিশ ও কৃষি কর্মকর্তারা এটি প্রত্যক্ষ করেছেন। জামায়াত যে অভিযোগ করছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা।”
ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ কামরুজ্জামান জানান, উপজেলা থেকে মাস্টার রোলের মাধ্যমে সার ও বীজ বিতরণ করা হয়ে থাকে। পাঁচজনের গ্রুপ করে বীজ ও সার দেওয়া হয়। রাতে কৃষকরা সম্ভাব্য কারণে বাকি জিনিসগুলো সেখানে রেখেছিলেন।
এদিকে, শনিবার বিকেলে উপজেলা জামায়াতে ইসলামী সুরাট বাজারে ঘটনার প্রতিবাদে জনসভা আয়োজন করে। সভায় একদল লোক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চেষ্টা করলে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মোতায়েন করা হয়।