
রাজনীতির মাঠে নারীর অংশগ্রহণ বাড়লেও তাদের উপস্থিতি এখনও অনেক ক্ষেত্রেই অদৃশ্য রয়ে গেছে, বিশেষ করে ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মধ্যে ৪৩ শতাংশ নারী সদস্য থাকার তথ্যকে ইতিবাচক হিসেবে স্বাগত জানিয়েছেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক উপদেষ্টা শারমিন মুরশিদ, তবে একইসঙ্গে তিনি তাদের রাজনৈতিক দৃশ্যমানতার ঘাটতি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে ‘নারীর রাজনৈতিক অধিকার ফোরাম’-এর আয়োজিত এক সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। সেখানে জাতীয় রাজনীতিতে নারীর অর্থবহ প্রতিনিধিত্বের দাবি তুলে ধরেন তিনি। সম্মেলনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠনের নারী নেত্রীরা উপস্থিত ছিলেন।
শারমিন মুরশিদ বলেন, “বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীতে ৪৩ শতাংশ নারী থাকার বিষয়টি খুশির খবর। তবে তাদের আরও দৃশ্যমান হওয়া উচিত। কারণ আমরা তাদের দেখতে পাই না। তাদের দলীয় সর্বোচ্চ ফোরামের বৈঠকেও নারীদের উপস্থিতি দেখা যায় না। আগামীতে আমরা তাদের সরাসরি সব জায়গায় দেখতে চাই।”
তিনি আরও বলেন, দেশে গণতান্ত্রিক পরিবর্তনের পরেও রাজনৈতিক পরিসরে নারীদের যথাযথ মূল্যায়ন এখনো হয়নি। অধিকাংশ দল নারী প্রার্থীদের ৫ থেকে ১০ শতাংশ কোটা দিয়ে মূল্যায়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখছে। এটি হতাশাজনক বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
তার মতে, আগামী জাতীয় নির্বাচনে শুধু রাজনৈতিক দলের প্রার্থী হিসেবে নয়, নারীদের স্বতন্ত্রভাবেও নির্বাচনে অংশ নেওয়া উচিত। তিনি বলেন, “আমি বলবো আগামী নির্বাচনে দলের বাইরেও নারীদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে কমপক্ষে ১০ জন নারীকে বাছাই করতে হবে।”
নারী উপদেষ্টা মনে করেন, রাজনীতিতে পুরুষতান্ত্রিক কাঠামো এখনো বিরাজ করছে এবং এটিকে ভাঙা প্রয়োজন। তিনি বলেন, “রাজনীতি হচ্ছে ও পুরুষ ও পিতৃতন্ত্রের শেষ বলয়। সেটা অবশ্যই ভেঙে দিতে হবে।”
তিনি উদাহরণ টেনে বলেন, কম্বোডিয়ার মতো দেশে নারী অধিকার সাংবিধানিকভাবে সুরক্ষিত এবং বাংলাদেশেও এমন কাঠামো গড়ে তোলার প্রয়োজন রয়েছে।
নারী প্রার্থীদের প্রচারণার জন্য তহবিল সংগ্রহ প্রসঙ্গে শারমিন মুরশিদ বলেন, জনসাধারণের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করাই উত্তম, কারণ বেসরকারি খাতের অনুদান কখনও কখনও নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
আসন্ন নির্বাচনে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে ব্যয় হ্রাসের প্রস্তাব দিয়ে তিনি বলেন, “আগামী নির্বাচনে খরচ কমিয়ে নারীদের ভোট করার খরচ রাষ্ট্র দিতে পারে। আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনৈতিক দলগুলোও এ বিষয়ে ইতিবাচক। তবে এ বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।”