
খুলনার রূপসায় কৃষি ব্যাংকের ভল্ট ভেঙে ১৬ লাখ ১৬ হাজার টাকা চুরির রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী ইউনূস শেখকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি ব্যাংক ভবনের চারতলায় ভাড়া বাসায় থাকতেন এবং ঋণের দায় শোধ করতে গিয়ে ব্যাংক লুটের পথ বেছে নেন।
রূপসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান জানান, রবিবার (১৭ আগস্ট) ব্যাংক ভবন থেকেই ইউনূসকে আটক করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি চাঞ্চল্যকর তথ্য দেন। সোমবার (১৮ আগস্ট) আদালতে হাজির করার পর তিনি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। গ্রেপ্তার ইউনূস উপজেলার নিকলাপুর গ্রামের বাসিন্দা ইনছান শেখের ছেলে। ব্যাংক ভবনের নিচতলায় তার একটি ওয়ার্কশপও রয়েছে।
খুলনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম জানান, তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অভিযান চালিয়ে ইউনূসকে ধরা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদেই তিনি টাকা চুরির বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তবে পুরো টাকা এখনো উদ্ধার সম্ভব হয়নি। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশের একটি দল ইতোমধ্যে কিছু টাকা উদ্ধার করেছে।
পুলিশ জানায়, ইউনূস পেশায় লেদ মিস্ত্রি এবং ট্রাকের যন্ত্রাংশ মেরামতের কাজ করতেন। লোহা কাটার দক্ষতা ব্যবহার করে তিনি ব্যাংকের ভল্ট ও তালা ভাঙতে সক্ষম হন। ভোরে ব্যাংকে নিরাপত্তারক্ষী না থাকার সুযোগ কাজে লাগিয়ে তিনি টাকা নিয়ে পালিয়ে যান। তবে এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ব্যাংকের তিনজন নিরাপত্তাকর্মীকে এখনও হেফাজতে রেখেছে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ইউনূস জানিয়েছেন, তিনি ঋণের চাপে পড়েছিলেন এবং লুটের টাকার একটি অংশ দিয়ে ইতোমধ্যে কিছু ঋণ শোধ করেছেন।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের খুলনা উপমহাব্যবস্থাপক মো. রিয়াজুল ইসলাম বলেন, ব্যাংক লুটের ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলা ছিল কি না তা খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সদস্যরা হলেন বিভাগীয় অফিসের ডিজিএম আসলাম হোসেন, এজিএম মশিউর রহমান ও এজিএম হামিম শেখ।
উল্লেখ্য, গত ১৫ আগস্ট (শুক্রবার) রাত ১০টার দিকে ব্যাংক নিরাপত্তাপ্রহরী এসে দেখেন মেইন গেটের তালা ভাঙা। পরে বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানান। পুলিশের উপস্থিতিতে লেজার ও ক্যাশ মিলিয়ে দেখা যায়, ভল্ট থেকে ১৬ লাখ ১৬ হাজার টাকা উধাও। এ ঘটনায় শাখা ব্যবস্থাপক মো. কামরুল ইসলাম বাদী হয়ে ১৬ আগস্ট (শনিবার) বিকেলে রূপসা থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।