
সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসায় চাঁদাবাজির ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া বহিষ্কৃত ছাত্রনেতা জানে আলম অপু আদালতে নিজের সম্পৃক্ততা স্বীকার করেছেন। বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক অপু, যিনি চাঁদাবাজির মামলার অন্যতম আসামি, জবানবন্দিতে অপরাধে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন।
বুধবার (৬ আগস্ট) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জামসেদ আলমের আদালতে তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।
চার দিনের রিমান্ড শেষে গুলশান থানা পুলিশের তদন্ত কর্মকর্তা, পরিদর্শক মোখলেছুর রহমান, আদালতে অপুর জবানবন্দি রেকর্ডের জন্য আবেদন করলে তা অনুমোদন দেওয়া হয়। এরপর আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। অপুর চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছিল গত ২ আগস্ট।
ঘটনার সূত্রপাত ২৬ জুলাই গভীর রাতে, যখন শাম্মী আহমেদের স্বামী সিদ্দিক আবু জাফর গুলশান থানায় একটি চাঁদাবাজির মামলা করেন। তিনি অভিযোগে মোট ছয়জনকে আসামি করেন। আসামিদের মধ্যে রয়েছেন— বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদ, জানে আলম অপু, সাকাদাউন সিয়াম, সাদমান সাদাব, মো. ইব্রাহিম হোসেন এবং একজন কিশোর, মো. আমিনুল ইসলাম, যিনি আইনের দৃষ্টিতে শিশু হিসেবে চিহ্নিত।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গত ১৭ জুলাই সকাল ১০টায় অভিযুক্ত আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদ ও কাজী গৌরব অপু গুলশানের ৮৩ নম্বর রোডে শাম্মী আহমেদের বাসায় গিয়ে তাকে ৫০ লাখ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার দিতে বলেন। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগ তুলে পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয় এবং চাপ সৃষ্টি করতে থাকেন।
চাপে পড়ে সিদ্দিক আবু জাফর প্রথমে নিজের কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা ও পরে ভাইয়ের কাছ থেকে আরও পাঁচ লাখ টাকার ব্যবস্থা করে দেন বলে মামলায় দাবি করা হয়।
এই ঘটনার কয়েক দিন পর, ১৯ জুলাই রাত সাড়ে ১০টার দিকে রিয়াদ ও অপু আবার তার বাসায় গিয়ে দরজায় ধাক্কাধাক্কি শুরু করেন। গুলশান থানা পুলিশকে ফোনে জানালে অভিযুক্তরা সেখান থেকে সরে যায়।
এরপর ২৬ জুলাই বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে রিয়াদের নেতৃত্বে অভিযুক্তরা ফের বাসার সামনে গিয়ে বাদীকে খুঁজতে থাকেন। দারোয়ানের মাধ্যমে বিষয়টি জানার পর, বাদী পুলিশকে জানালে তারা দ্রুত গিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পাঁচজনকে হাতেনাতে আটক করে। তবে অভিযুক্ত কাজী গৌরব অপু ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান।