
বাংলাদেশকে মার্কিন অর্থনৈতিক প্রভাবাধীন রাষ্ট্রে পরিণত করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যুক্তরাষ্ট্রের চাপের কাছে নতিস্বীকার করছে এমন অভিযোগ তুলে রাজধানীতে বিক্ষোভ করেছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন।
শনিবার (২৬ জুলাই) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়, যা ভিসি চত্বর ও মধুর ক্যান্টিন ঘুরে সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের সামনে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি তামজিদ হায়দার চঞ্চল, এবং সঞ্চালনায় ছিলেন সাধারণ সম্পাদক শিমুল কুম্ভকার।
সমাবেশে বক্তারা দুইটি প্রধান দাবি তুলে ধরেন:
১. যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পাদিত সব সামরিক ও বেসামরিক চুক্তি জনসমক্ষে প্রকাশ করতে হবে।
২. 'স্টেট সিক্রেটস অ্যাক্ট'-এ দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহার করে এনবিআরের বরখাস্ত হওয়া সচিব মুকিতুল হাসানকে তার পদে পুনর্বহাল করতে হবে।
বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রথীন্দ্র নাথ বাপ্পি বলেন, “গণ-অভ্যুত্থানের পর গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একের পর এক দেশবিরোধী চুক্তি করছে। নন-ডিসক্লোজার অ্যাগ্রিমেন্ট, বন্দর ইজারা, রাখাইন করিডর সব কিছুই যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থে। এতে স্পষ্ট যে সরকার দেশকে মার্কিন এজেন্ডা বাস্তবায়নের মাঠ বানাতে চায়।”
ঢাকা মহানগর ছাত্র ইউনিয়নের আহ্বায়ক আসিফ জামানও সরকারকে কঠোরভাবে সমালোচনা করে বলেন, “বিগত সময়ে ভারতের সঙ্গে যেমন অসম চুক্তি হয়েছিল, এখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারও ওয়াশিংটনের সঙ্গে একই রকম গোপন সমঝোতা করছে। জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতার ফল ভালো হয় না।”
ঢাবি ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মেঘমল্লার বসু ‘স্টেট সিক্রেটস অ্যাক্ট’-এর অপপ্রয়োগের বিষয়ে বলেন, “ঔপনিবেশিক ‘স্টেট সিক্রেটস অ্যাক্ট’-এর মাধ্যমে মুকিতুল হাসানকে বরখাস্ত করা বেআইনি। তিনি কোনো অপরাধ করেননি, বরং দেশপ্রেম দেখিয়েছেন।”
ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সভাপতি তামজিদ হায়দার চঞ্চল হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “এই সরকার যদি চুক্তি বাতিল না করে, তাহলে আমরা হরতাল-অবরোধসহ বৃহত্তর কর্মসূচিতে যাব।”
তিনি আরও বলেন,এই দেশে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে বহু সংগ্রামের ইতিহাস আছে। মতিউল ও কাদেরের রক্ত বৃথা যেতে দেওয়া হবে না। আমরা আগামীতেও রাজপথে থাকব।
সমাবেশজুড়ে বক্তারা সরকারের ‘গোপন চুক্তি ও দেশবিরোধী অবস্থান’ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে বলেন, রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ রক্ষায় তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।