
রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে বৈঠকে বসেছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। বহুল আলোচিত জুলাই সনদ ও গণভোট নিয়ে সিদ্ধান্ত আসতে পারে এ বৈঠক থেকে।
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে এই বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকের পর দুপুরে প্রধান উপদেষ্টা জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন। এই ভাষণ সরাসরি সম্প্রচার হবে বাংলাদেশ টেলিভিশন, বিটিভি নিউজ ও বিটিভি ওয়ার্ল্ডে।
উপদেষ্টা পরিষদের এই বৈঠককে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখছেন। কারণ বৈঠকে আলোচনা হবে জুলাই জাতীয় সনদ বা সংশোধনী প্রস্তাব বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে। বৈঠকের সিদ্ধান্তের প্রভাব স্পষ্টভাবে প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে প্রতিফলিত হওয়ার আশা করা হচ্ছে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গত ২৮ অক্টোবর অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দুইটি বিকল্প সুপারিশ জমা দেয়। এর একটিতে বলা হয়েছে, সংবিধান-সম্পর্কিত সংস্কার প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নের জন্য বিশেষ আদেশ জারি হবে, যার ভিত্তিতে গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। যদি গণভোটে প্রস্তাব অনুমোদিত হয়, তবে আগামী সংসদ ২৭০ দিনের মধ্যে সংবিধান সংশোধন করবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সংসদ এটি করতে ব্যর্থ হলে সংশোধনী প্রস্তাব স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হবে। অন্য বিকল্প সুপারিশটিও প্রায় একই, তবে এতে ২৭০ দিনের মধ্যে সংস্কার সম্পন্ন না হলে পরবর্তী পদক্ষেপ স্পষ্ট নয়।
তবে, গণভোটের তারিখ ঠিক করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব সরকারকেই দেওয়া হয়েছে। জুলাই সনদ বা সংশোধনী প্রস্তাব বাস্তবায়নের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আগেও মতপার্থক্য ছিল। কিন্তু জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ জমা দেওয়ার পর এই মতপার্থক্য আরও তীব্র হয়ে উঠে।
রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের মধ্যে আলোচনায় বসতে ব্যর্থ হওয়ায় অন্তর্বর্তী সরকার তাদের আহ্বান জানায়, যেন তারা দ্রুত ঐক্যবদ্ধ দিকনির্দেশনা তৈরি করে সরকারের কাছে উপস্থাপন করে। তবে এখন পর্যন্ত রাজনৈতিক দলগুলো একমত হতে পারেনি। ফলস্বরূপ, সনদ ও সংশোধনী প্রস্তাব বাস্তবায়ন নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হচ্ছে।