
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় আসামের কার্বি-আংলং অঞ্চলে উপজাতীয়দের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সহিংসতায় দুইজন নিহত হয়েছেন। ঘটনার পর প্রশাসন রাত্রিকালীন কারফিউ জারি করেছে এবং মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা স্থগিত করেছে।
স্থানীয় উপজাতীয়রা অভিযোগ করেছেন, হিন্দিভাষী, বাঙালি ও নেপালিরা তাদের সংরক্ষিত এলাকা ‘দখল করে রেখেছে’। এই বহিরাগতদের উচ্ছেদ চেয়ে তারা ছয়ই ডিসেম্বর থেকে অনশন শুরু করেন। সোমবার পুলিশ অনশনকারীদের নেতাকে শারীরিক অবস্থার কারণে গুয়াহাটিতে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেলে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে।

আসাম পুলিশের মহাপরিচালক হরমিত সিং সংবাদ সংস্থা এএনআইকে বলেন, “অনশনকারীদের নেতাকে ডাক্তারদের পরামর্শে গুয়াহাটিতে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ভুয়া খবর ছড়িয়ে দেওয়া হয় যে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে, যা সহিংসতার সূত্রপাত করে।" তিনি আরও জানান, আন্দোলনকারীরা একটি সেতু দখল করার চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেয় এবং তখন তাদের পক্ষ থেকে পুলিশের ওপর বোমা নিক্ষেপ ও তীর ছোঁড়া হয়।
সহিংসতায় বহিরাগতদের দোকান ভাঙচুর করা হয় এবং পুলিশের সঙ্গে ইট-পাথর বিনিময় হয়। সামাজিক মাধ্যমে এসব ঘটনা ভিডিও আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, অন্তত ৪৮ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
কার্বি আংলং স্বায়ত্তশাসিত কাউন্সিল এলাকায় উপজাতীয়দের জমি ও অরণ্যের ওপর অধিকার সংরক্ষিত। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন যে দীর্ঘদিন ধরে বহিরাগতরা তাদের সংরক্ষিত এলাকায় দখল করছে। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে কাউন্সিল উচ্ছেদের নোটিশ দিয়েও আদালতের বাধার কারণে কার্যক্রম সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি।

রাজ্যের মন্ত্রী রনোজ পেগু বলেন, “২৬ ডিসেম্বর রাজ্য সরকার, কার্বি আংলং স্বায়ত্তশাসিত কাউন্সিল এবং আন্দোলনকারীদের মধ্যে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। আমরা কার্বি সমাজের জমি ও অন্যান্য সমস্যাগুলো গুরুত্বসহকারে দেখছি।”
পুলিশি পদক্ষেপে ১৬৩ ধারার অধীনে স্বাভাবিক চলাচল নিয়ন্ত্রণ জারি করা হয়েছে। কার্বি আংলং এলাকায় একসঙ্গে পাঁচজনের বেশি মানুষ একত্র হওয়া, বিকেল পাঁচটা থেকে ভোর ছটা পর্যন্ত যাতায়াত এবং মশাল মিছিল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবাও স্থগিত রয়েছে।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে পরিস্থিতির ওপর নজর রাখা হচ্ছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
সূত্র: বিবিসি