
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) দীর্ঘ আন্দোলনের মাঝে দুইশো শিক্ষক কর্মকর্তা অবরুদ্ধ থাকাকালীন বহিরাগতরা হামলা চালায়। এতে সাংবাদিক ও শিক্ষার্থীসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়। ঘটনার পর সাধারণ শিক্ষার্থীরা ভিসির বাসভবন ঘেরাও করে বিক্ষোভ চালাচ্ছেন।
ভেটেরিনারি অনুষদ ও পশুপালন অনুষদের শিক্ষার্থীরা প্রায় এক মাস ধরে কম্বাইন্ড ডিগ্রির দাবি জানিয়ে আন্দোলন করছেন। তারা চাইছেন, দুই অনুষদের ডিগ্রি একীভূত করে একটি কম্বাইন্ড ডিগ্রি প্রদান করা হোক।
সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ বিষয়ে ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হলেও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনও নেওয়া হয়নি।
রোববার (৩১ আগস্ট) একাডেমিক কাউন্সিলের মিটিংয়ে সমস্যার সমাধান না হওয়ায় দুপুর একটার দিকে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তনে ভিসিসহ প্রায় দুইশো শিক্ষক কর্মকর্তাকে আটকে রাখেন শিক্ষার্থীরা।
জেলা প্রশাসক মফিদুল আলম ও জেলা পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলমসহ অন্যান্য প্রশাসনিক কর্মকর্তারা পরিস্থিতি সামলাতে ছুটে যান। তবে শিক্ষার্থীরা তাদের দাবিতে অনড় অবস্থান নেন।
পরবর্তীতে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে ২৫০-৩০০ জন বহিরাগত দেশীয় অস্ত্র নিয়ে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করলে শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়েন। বহিরাগতরা তালা ভেঙে অবরুদ্ধ শিক্ষক-কর্মকর্তাদের বের করে। হামলায় সাংবাদিক শিক্ষার্থীসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হন।
হামলায় আহত রিপোর্টার আনিসুর রহমান ফারুক বলেন, সন্ধ্যার পর জেলা প্রশাসক এবং পুলিশ সুপার শিক্ষার্থীদের বোঝাচ্ছিলেন, ঠিক তখনই বহিরাগতরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাদের ধাওয়া করে। আমি রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিলাম, এক ব্যক্তি আমার ওপর আঘাত করলে রক্তাক্ত জখম হই।
আহত সাংবাদিক সালমান সাদিক শাওন জানান, হঠাৎ হামলা হলো, আমি কোনো প্রস্তুতি নিতে পারিনি। লাঠি দিয়ে আঘাত করা হয়েছে।
ভেটেরিনারি অনুষদের অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম বলেন, কিছু ছাত্র এসে তালা ভেঙে দিলে আমরা বের হয়ে যাই। তবে এটি কোনো সমাধান নয়। আমরা চাই বিষয়টি সুষ্ঠুভাবে সমাধান হোক। বেশিরভাগ শিক্ষক কম্বাইন্ড ডিগ্রির পক্ষপাতী, কিন্তু কয়েকজন শিক্ষকের কারণে এই অবস্থা তৈরি হয়েছে।
কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ শিবিরুল ইসলাম জানান, শিক্ষার্থীরা তাদের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। আজ দুপুর থেকে শিক্ষকরা অবরুদ্ধ ছিলেন। এক পর্যায়ে কিছু লোক শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দিয়ে তাদের উদ্ধার করে। ক্যাম্পাসে উত্তেজনা বিরাজ করছে। আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছি।