
বাংলাদেশ-মিয়ানমার জলসীমা ঘেঁষা সেন্ট মার্টিনের কাছাকাছি বঙ্গোপসাগর থেকে আরও একবার দেশি জেলেদের ধরে নিয়ে গেছে মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। এবার অস্ত্রের মুখে অন্তত পাঁচটি মাছ ধরার ট্রলারসহ প্রায় ৪০ জেলেকে অপহরণ করেছে তারা।
ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৫টার দিকে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ পৌর বোট মালিক সমিতির সভাপতি সাজেদ আহমেদ। তিনি জানান, দ্বীপের দক্ষিণ-পূর্ব দিকে সাগরে মাছ ধরার সময় জেলেরা এ হামলার শিকার হন।
আরাকান আর্মির নিজস্ব ওয়েবসাইটে ইতোমধ্যে বাংলাদেশের এসব জেলেদের ছবি প্রকাশ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
সাজেদ আহমেদ বলেন, “অপহৃত ট্রলারগুলোর মধ্যে তিনটি টেকনাফ পৌর এলাকার এবং বাকি দুটি শাহপরীরদ্বীপের মালিকানাধীন। তবে এখনো জেলেদের নাম ও পরিচয় পাওয়া যায়নি।”
ঘটনার সময় আশপাশে থাকা অন্যান্য ট্রলারে অবস্থানরত জেলেদের উদ্ধৃতি দিয়ে সাজেদ আরও জানান, বিকেলে প্রায় ২০ থেকে ৩০টি ট্রলারে করে জেলেরা মাছ ধরছিলেন। ঠিক সে সময় দুটি স্পিডবোটে করে আসা আরাকান আর্মির সশস্ত্র সদস্যরা পাঁচটি ট্রলার ঘিরে ফেলে এবং জেলেদের জিম্মি করে নিজেদের সঙ্গে নিয়ে যায়।
বোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম বলেন, “ঘটনার খবর পেয়েই আমরা বিজিবি, কোস্ট গার্ডসহ প্রশাসনের বিভিন্ন সংস্থাকে অবহিত করেছি। তবে ঠিক কতজন জেলে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।”
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, “স্থানীয়দের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরেছি। ঘটনার বিস্তারিত জানতে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।”
এটি নতুন কোনো ঘটনা নয়। এর আগে চলতি বছরের ৫ আগস্ট থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সময়ের মধ্যে ১৩টি ট্রলারসহ ৮১ জন জেলেকে ধরে নিয়ে যায় আরাকান আর্মি। তাদের বিষয়ে এখনো কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি, এবং পরিবারগুলোর মধ্যে চলছে উৎকণ্ঠা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, ২০২৪ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৫ সালের ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ের মধ্যে নাফ নদী ও বঙ্গোপসাগরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে আরাকান আর্মি মোট ৩২৫ জন বাংলাদেশি জেলেকে অপহরণ করেছে। এর মধ্যে সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর (বিজিবি) উদ্যোগে কয়েক ধাপে ১৮৯ জন জেলে এবং ২৭টি মাছ ধরার নৌযান দেশে ফেরত আনা সম্ভব হয়েছে।