ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে কড়া বার্তা দিয়ে বলেছেন, তেহরান কখনোই ওয়াশিংটনের অধীনস্থ হবে না। তিনি এটিকে ইরানি জাতির জন্য ‘চরম অপমান’ আখ্যা দিয়ে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
রোববার (২৪ আগস্ট) এক ধর্মীয় অনুষ্ঠানে খামেনি বলেন, তারা ইরানকে আমেরিকার অধীনস্ত করতে চায়। ইরানি জাতি তাদের বিরুদ্ধে সমস্ত শক্তি দিয়ে দাঁড়াবে, যাদের এমন ভ্রান্ত প্রত্যাশা রয়েছে। তিনি আরও বলেন, আমেরিকার সঙ্গে সরাসরি আলোচনার প্রস্তাব কোনো সমাধান নয় বরং সমস্যাকে আরও জটিল করে তোলে।
এ সময় তার মন্তব্য আসে ঠিক তখন, যখন শুক্রবার ইরান ও ইউরোপীয় শক্তিগুলো তেহরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণের জন্য পুনরায় আলোচনায় বসতে সম্মত হয়েছে। ফ্রান্স, ব্রিটেন ও জার্মানি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, ইরান যদি আলোচনায় না ফিরেন, তারা জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করতে পারে। আগামী মঙ্গলবার এ বিষয়ে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
এর আগে, গত জুনে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের যৌথ হামলায় ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেসময় শুরু হওয়া ১২ দিনের সংঘর্ষের কারণে আলোচনার প্রক্রিয়া স্থগিত হয়ে যায়।
খামেনি এই পরিস্থিতিকে ‘শত্রুর বিভেদ সৃষ্টির কৌশল’ হিসেবে উল্লেখ করে আমেরিকা ও ইসরায়েলের এজেন্টদের বিরুদ্ধে ইরানের ভেতরে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনেন। তিনি বলেন, দেশকে ঐক্যবদ্ধ থেকে এই চক্রান্ত মোকাবিলা করতে হবে।
তিনি আবার মনে করিয়ে দেন, পশ্চিমা দেশগুলো ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে অস্ত্র উন্নয়নের প্রচেষ্টা বলে অভিযোগ করছে, কিন্তু ইরান বারবার দাবি করেছে, এটি শুধুমাত্র শান্তিপূর্ণ বেসামরিক ব্যবহারের জন্য।
২০১৫ সালে ইরান যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলোর সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি স্বাক্ষর করলেও ২০১৮ সালে তখনকার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চুক্তি থেকে সরে এসে নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। ইসরায়েলও এর বিরোধিতা চালিয়ে আসছে।
উল্লেখ্য, ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পর থেকে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন রয়েছে।
তথ্যসূত্র: আল জাজিরা