
এক বিতর্কিত মন্তব্য ঘিরে ফের আলোচনার কেন্দ্রে ধর্মীয় বক্তা মুফতি আমির হামজা। ‘নবী (সা.) ছিলেন সংবাদবাহক, সেই অর্থে তিনিও সাংবাদিক ছিলেন’ - এমন মন্তব্যের জেরে তাকে ‘বেয়াদবিতে সেরা’ বলে আক্রমণ করলেন আরেক জনপ্রিয় বক্তা গিয়াস উদ্দিন তাহেরি।
বুধবার, ৮ অক্টোবর রাতে নিজের ফেসবুক পেজে দেওয়া একটি পোস্টে তাহেরি বলেন, “আগের দিন দেখলাম আমিরে জামায়াত বক্তব্যের ব্যাপারে সতর্ক করলেন। এক দিন পরই দেখলাম মিথ্যাবাদী আমির হামজা অবান্তর বেয়াদবিমূলক বক্তব্য দিল। সে আসলেই বেয়াদবিতে সেরা।”
এর আগেও এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে, সরাসরি নাম না করলেও আমির হামজার বক্তব্যকে ইঙ্গিত করে তাহেরি লেখেন, “আল্লাহর হাবীব (দ:) নাকি সাংবাদিক ছিলেন! নাউজুবিল্লাহ। মানসিক ভারসাম্যহীন বিকারগ্রস্ত মিথ্যাবাদী আমির হামজার বাণী অনুযায়ী তার সিট কোথায় বরাদ্দ করা যেতে পারে?”
এই মন্তব্যগুলো প্রকাশের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। অনেকেই তাহেরির অবস্থানকে সমর্থন জানিয়ে বলেন, ধর্মীয় অঙ্গনে এমন ‘বেয়াদবিমূলক’ মন্তব্য গ্রহণযোগ্য নয়। তবে অপরপক্ষে, কেউ কেউ পুরো ঘটনাটিকে ধর্মীয় বক্তাদের মধ্যকার পুরনো দ্বন্দ্বের নতুন বহিঃপ্রকাশ হিসেবেও দেখছেন।
উল্লেখ্য, ৮ অক্টোবর সকালে কুষ্টিয়ায় স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় আমির হামজা তার বিতর্কিত মন্তব্যটি করেন। বক্তব্যটি তাৎক্ষণিকভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই মন্তব্য কেবল ধর্মীয় বোধে আঘাতই করেনি, বরং ধর্মীয় নেতাদের দায়িত্ববোধ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে। তারা বলেন, ধর্মীয় মঞ্চ থেকে এমন অপ্রাসঙ্গিক ও উত্তেজক বক্তব্য সমাজে বিভ্রান্তি ছড়ানোর পাশাপাশি ধর্মীয় পরিবেশকেও বিষাক্ত করে তোলে।
বিষয়টি আরও জটিল হয়ে ওঠে কারণ ঘটনার একদিন আগেই জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে সব ধর্মীয় বক্তাদের উদ্দেশে সংযম ও সতর্কতার আহ্বান জানানো হয়েছিল। কিন্তু এর পরদিনই দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত একজন বক্তার এমন মন্তব্য সেই বার্তার সঙ্গে সাংঘর্ষিক অবস্থান তৈরি করে।
সামাজিক অঙ্গনে এই পরিস্থিতি ধর্মীয় নেতৃত্বের জবাবদিহিতা এবং মঞ্চের ব্যবহারে আরও দায়িত্বশীলতার প্রয়োজনীয়তাকেই সামনে নিয়ে আসছে।