
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেছেন, আসন্ন নির্বাচনে আওয়ামী লীগসহ জাতীয় পার্টির অংশগ্রহণ অনুমোদিত হবে না। তিনি বলেন, “কারণ, বিগত দিনে তারা আওয়ামী লীগের সহযোগী হিসেবে ভূমিকা রেখেছে। তাদের কারণেই ফ্যাসিবাদ দীর্ঘায়িত হয়েছে। এখনো তারা বড় বড় কথা বলছে। খুনিদের পক্ষে সাফাই গাইছে। তাই এ দুটি দলকেই নির্বাচনের বাইরে রাখতে হবে। কারণ তারা আবার ক্ষমতায় আসলে দেশকে ভারতের করদরাজ্যে পরিণত করবে।”
শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৮টায় রাজধানীর শাহবাগে শহীদ আবু সাইদ ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে দলের ঢাকা জেলা ও দুই মহানগর শাখার সমন্বয় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সভায় ঢাকা জেলা ও দুই মহানগরের থানা সমন্বয়কারীরা নিজেদের বিভিন্ন সমস্যা ও সম্ভাবনার দিক তুলে ধরেন।
আখতার হোসেন উল্লেখ করেন, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দেওয়ার প্রক্রিয়াটি সরকারের টেবিলেই সম্পন্ন করতে হবে। তিনি বলেন, “জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর দাবি সত্ত্বেও সরকার কথা না শুনে স্বাক্ষর অনুষ্ঠান করেছে। এতদিন পরও সরকার এ বিষয়টি এখনো খোলাসা করেনি। আমরা মনে করি সেদিন আমরা স্বাক্ষর করলে সনদের অপমৃত্যু হতো। তাই অতি দ্রুত এটি বাস্তবায়ন করতে হবে। টেবিলেই এর সমাধান করতে হবে। নব্বইয়ের মতো কাগুজে সিদ্ধান্ত হলে আমরা আবার রাজপথে নামব।”
তিনি আরও বলেন, অনেকে শুধু নির্বাচনী রাজনীতির বিষয়টিকে সামনে আনতে চেয়েছিলেন। অথচ আমরা সংস্কার প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়েছি। “শুধু আমাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতেই ঐকমত্য কমিশন সংস্কার প্রক্রিয়াকে এ পর্যন্ত নিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছে।”
এনসিপির সদস্য সচিব বলেন, কোনো একটি দলের সিদ্ধান্তের কারণে আরপিও সংশোধন করতে চাইলে তিনি মনে করবেন যে এর সাথে প্রধান উপদেষ্টার লন্ডনে বৈঠকের যোগসূত্র রয়েছে। অতীতের মতো এবার তারা ডিজিএফআইর নির্বাচন চায় না।
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে আখতার হোসেন বলেন, “এখনও মানুষের মানবিক মর্যাদা নির্ধারণ করা যায় না। দিনমজুর ও খেটে খাওয়া মানুষের অধিকার ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। আমরা দলবাজির রাজনীতি চাই না। মানুষের জন্য রাজনীতি করতে চাই। এজন্য ব্যক্তিগত কার্যক্রমে দলকে সম্পৃক্ত না করাই ভালো। অনেক সময় নেতিবাচক খবর আমাদের দুঃখ দেয়।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, “একজন ইমামকে গুম করা হলো। আমরা গুমের ঘটনা দেখতে চাই না। এনসিপি দেশের সব মানুষের পক্ষে কাজ করবে। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করবে। নতুন বাংলাদেশের রাজনীতি বিনির্মাণ করতে হলে সংখ্যাকে প্রাধান্য না দিয়ে যোগ্যতার দিকে মনোযোগ দিতে হবে।”
সমন্বয় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, উত্তরাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব নাহিদা সারওয়ার নিভা। তবে সভায় দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম প্রধান অতিথি থাকলেও তিনি উপস্থিত ছিলেন না।