
জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের সময় রামপুরায় ২৮ জনের মৃত্যুর ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় বিজিবির লেফটেন্যান্ট কর্নেল রেদোয়ানুল ইসলামসহ চারজনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের শুনানি আগামী ৪ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। একইসঙ্গে পলাতক দুই আসামির পক্ষে স্টেট ডিফেন্স নিয়োগের বিষয়ও চূড়ান্ত করা হয়েছে।
সোমবার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদের নেতৃত্বে দুই সদস্যের প্যানেল এই দিন ধার্য করেন। অন্য সদস্য ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি পরিচালনা করেন মিজানুল ইসলাম। সঙ্গে ছিলেন মঈনুল করিম ও তারেক আবদুল্লাহ। আসামিপক্ষে আইনজীবী মাসুদ সালাহউদ্দিন ছিলেন। তিনি পরবর্তী শুনানি ভার্চুয়ালি করার আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল একই দিনে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সিদ্ধান্ত দেন।
সোমবার সকাল পৌনে ১০টায় ঢাকার সেনানিবাসের বিশেষ কারাগার থেকে বাংলাদেশ জেল-প্রিজন ভ্যানে করে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে দুই সেনা কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। রেদোয়ানুল ইসলামের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বিজিবির সাবেক কর্মকর্তা মেজর মো. রাফাত বিন আলম। পলাতক আসামিরা হলেন ডিএমপির খিলগাঁও অঞ্চলের সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. রাশেদুল ইসলাম ও রামপুরা থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মশিউর রহমান।
এর আগে ২২ অক্টোবর রেদোয়ানুল ও রাফাতকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছিল। শুনানি শেষে তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। একই সঙ্গে পলাতকদের হাজিরে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়। ৫ নভেম্বরের জন্য শুনানি নির্ধারণ করা হলেও প্রসিকিউশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাইব্যুনাল ২৪ নভেম্বরের দিন ধার্য করেন।
দুই সেনা কর্মকর্তাকে হাজির করার জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। হাইকোর্টের প্রবেশপথসহ ট্রাইব্যুনালের মূল ফটকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নিয়েছেন। অতিরিক্ত পুলিশের সঙ্গে র্যাব ও বিজিবিও মোতায়েন করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট এলাকা জুড়েও সেনাবাহিনীর টহল চলছিল।
উল্লেখ্য, জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় দেশজুড়ে নিহত হয়েছেন বহু মানুষ। রামপুরায় নিহত হয়েছেন ২৮ জন এবং আরও অনেকে আহত হয়েছেন। এই এলাকায় বিজিবির রেদোয়ানুলকে আন্দোলনকারীদের উপর সরাসরি গুলি চালাতে দেখা যায়। অন্যান্যরা এ হত্যাযজ্ঞে নেতৃত্ব দেন। ঘটনার পর ট্রাইব্যুনালে চারজনের বিরুদ্ধে আলাদা আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয় এবং তদন্ত সংস্থা তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন জমা দেয়।