‘ড. ইউনূস-তারেকের বৈঠক গণঅভ্যুত্থানের সঙ্গে প্রতারণার শামিল’

লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠক একটি দলকে খুশি করার জন্য, যা গণঅভ্যুত্থানের সঙ্গে প্রতারণার শামিল’ বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্নয়ক নাসির উদ্দীন পাটোয়ারী। শুক্রবার (১৩ জুন) বিকেলে রাজধানীর বাংলামোটরে রাজনৈতিক কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকের প্রতিক্রিয়ায় তিনি এসব কথা বলেন। নাসির উদ্দীন অভিযোগ করে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার বিএনপির পক্ষে কাজ করছে। বৈঠকে বিচার, সংস্কার ও জুলাই সনদের কোনো বার্তা নেই। এই বৈঠক একটি দলকে খুশি করার জন্য, যা গণঅভ্যুত্থানের সঙ্গে প্রতারণার শামিল। বৈঠকে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। পাটোয়ারী বলেন, দেশের সিদ্ধান্ত দেশেই হবে, জনগণকে পাশ কাটিয়ে বিদেশের কোনো সিদ্ধান্তকে দেশের জনগণ মেনে নেবে না। বিচার, সংস্কার, জুলাই সনদ ও নির্বাচন কমিশনের পূর্ণগঠন না হলে নির্বাচনে যাবে না হুশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে যদি এই সরকার ব্যর্থ হয় তাহলে দ্বিতীয় অভ্যুত্থানের দিকে যাবে এনসিপি। এদিকে অপর একটি ব্রিফিংয়ে কথা বলেন এনসিপির যুগ্ম আহবায়ক সারোয়ার তুষার ও সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব আরিফুল ইসলাম আদিব। আরিফুল ইসলাম আদিব বলেন, জাতীয় নির্বাচনের ইস্যুতে সকল স্টেক হোল্ডার ও শহিদ পরিবারের সঙ্গে বসতে হবে। একটি দল বা একক ব্যক্তির সঙ্গে বসে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নেয়া একটি অশনিসংকেত। সারোয়ার তুষার বলেন, কি পদ্ধতিতে সংস্কার হবে তা ঠিক হয়নি। এর আগেই প্রধান উপদেষ্টার গণভোট খারিজ করার সিদ্ধান্ত ভালো কিছু না। ইসির নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ। এটা সংস্কার করা অন্যতম মৌলিক সংস্কার বলে মনে করি।

বিদেশের মাটিতে মিটিং দেশের জনগণের জন্য অপমানজনক: এনসিপি

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকের পর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি। দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিদেশের মাটিতে মিটিং ও ঘোষণা দেওয়া দেশের জনগণের জন্য অপমানজনক। শুক্রবার ১৩ জুন বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টা ১৫ মিনিটে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাথে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা। বৈঠকের পর এনসিপি মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, পুরনো বন্দোবস্তার দিকেই আগাচ্ছে সরকার। তিনি বলেন, একটি দলের আগ্রহে নির্বাচনী ট্রেনে তুলে দেওয়া হচ্ছে। জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদদের আত্মত্যাগের অবমাননা দেশের জনগণ মেনে নেবে না। তিনি আরও বলেন, জনগণের আকাঙ্ক্ষা পাশ কাটিয়ে মৌলিক সংস্কার ও জুলাই ঘোষণাপত্র ছাড়া নির্বাচন হলে গণতান্ত্রিক উত্তরণ হবে না।

লন্ডনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে দেশবাসীর প্রত্যাশা পূরণ হয়নি: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী

একটি রাজনৈতিক দলকে খুশি করার জন্য জাতীয় সংসদ নির্বাচন এগিয়ে আনা হচ্ছে, যা জুলাইয়ের শহীদদের সঙ্গে প্রতারণা বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। শুক্রবার (১৩ জুন) বিকেলে রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন। এদিকে, যুক্তরাজ্যের লন্ডনে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে দেশবাসীর প্রত্যাশা পূরণ হয়নি বলেও দাবি করেন এনসিপির এ নেতা। তার মতে, এ বৈঠকে দেশের মাটি ও মানুষের কোনো সংযোগ নেই। আজ বাংলাদেশ সময় দুপুর দুইটার দিকে লন্ডনে হোটেল ডরচেস্টারে প্রধান উপদেষ্টা ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের মধ্যে প্রায় দেড় ঘণ্টা মতো একান্ত বৈঠক চলে। আর এই বৈঠকের মধ্য দিয়ে অনিশ্চয়তা কেটে গেছে বলে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আগামী রোজার আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে বলেও বৈঠকের পর বিএনপিপন্থী সমর্থকরা জানাচ্ছেন। যদিও বৈঠকে ভোটের সময় নিয়ে আলাপের বিষয়ে সরকার ও বিএনপির যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রধান উপদেষ্টার কাছে আগামী রমজানের আগে নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রস্তাব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াও মনে করেন ওই সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে ভালো হয়, তা উল্লেখ করেন তারেক রহমান। জবাবে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, তিনি আগামী বছরের এপ্রিলের প্রথমার্ধের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দিয়েছেন। সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা গেলে ২০২৬ সালের রমজান শুরু হওয়ার আগের সপ্তাহেও নির্বাচন আয়োজন করা যেতে পারে। এই বিবৃতির ঘণ্টাখানেক পরই প্রেস ব্রিফিংয়ে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী আরও বলেন, সংস্কার আর বিচারকে পাশ কাটিয়ে সরকার যে নির্বাচনের দিকে যাচ্ছে, তা ১৮ কোটি মানুষের নির্বাচন হবে না। এমনভাবে নির্বাচনের দিকে গেলে আরেকটা ফ্যাসিবাদের জন্ম হবে। জনগণ আবারও গণঅভ্যুত্থানে যেতে বাধ্য হবে। তিনি আরও বলেছেন, বিদেশের মাটিতে বসে যখন সরকার বিশেষ দলের সাথে নির্বাচন নিয়ে বৈঠকে বসে তখন এটা হয়ে যায় গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার পরিপন্থী। সেখানে জুলাই ঘোষণার স্পষ্ট বার্তা দেখিনি। মৌলিক সংস্কার প্রশ্নেও বার্তা পাইনি। শুধু একটি দলকে খুশি করতে নির্বাচন নিয়ে বার্তা আসছে। বিচার ও সংস্কার না হলে তার দল এনসিপি নির্বাচনে অংশ নেবে না বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। এদিকে, দলটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব বলেছেন, শহীদ পরিবারের সঙ্গে আলাপ করে নির্বাচনের সময় দেয়া উচিত ছিল। এক দলের সঙ্গে আলাপ করে সিদ্ধান্ত নেয়া অশনি সংকেত। এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেছেন, কী পদ্ধতিতে সংস্কার হবে তা ঠিক হয়নি। এর আগেই প্রধান উপদেষ্টার গণভোট খারিজ করার সিদ্ধান্ত ভালো কিছু নয়।

প্রধান উপদেষ্টা ও তারেক রহমানের বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে: মির্জা ফখরুল

যুক্তরাজ্যের লন্ডনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রায় ২ ঘণ্টার বৈঠকটি ফলপ্রসূ হয়ে বলে জানিয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, বৈঠকটি সত্যিকার অর্থে টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে কাজ করেছে। এটি আমি আগেও বলেছিলাম। বৈঠকটি ফলপ্রসূ হয়েছে। বৈঠকের প্রধান ইস্যু ছিল নির্বাচন। সেক্ষেত্রে নির্বাচন ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে আয়োজন করার ক্ষেত্রে প্রধান উপদেষ্টা একমত হয়েছেন। আজকের বৈঠকটি আল্লাহর রহমতে সফল হয়েছে।’ শুক্রবার (১৩ জুন) প্রধান উপদেষ্টার ও তারেক রহমানের বৈঠক শেষে ঢাকায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘এর আগে প্রধান উপদেষ্টা আগামী নির্বাচন এপ্রিলে অনুষ্ঠিত হওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু সেটি নির্বাচনের জন্য উপযুক্ত সময় নয়, তাই আমরা সময়টি আরও এগিয়ে নিয়ে আসতে বলেছিলাম। অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, বিষয়টিতে প্রধান উপদেষ্টা সম্মত হয়েছেন এবং নির্বাচনের সময় ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে করার ঘোষণা দিয়েছেন।’ ফখরুল বলেন, ‘প্রথম একটি বৈঠকেই তারেক রহমান দেশনায়ক হিসেবে সফল হয়েছেন। এই বৈঠক নিয়ে পুরো দেশবাসী উদ্বিগ্ন ছিল। নির্বাচন নিয়ে পুরো জাতি একটি অনিশ্চয়তার মধ্যে ছিল। কিন্তু এই বৈঠকের মাধ্যমে জাতি আবার একটি নিশ্চয়তা পেয়েছে।’ বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘অতীতে বিভিন্ন ধরনের কথা হয়েছে। সেসব ভুলে ঐক্যবদ্ধ ভাবে আমাদের কাজ করতে হবে। ফ্যাসিস্ট আমলের ১৫ বছরের যে ধ্বংসতূপ, সেসব থেকে যেন আমরা একটা গণতান্ত্রিক কাঠামোর মধ্যে যেতে পারি এবং জাতীয় আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে পারি, সেটির জন্য কাজ করতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘বর্তমানে আমি স্মরণ করছি যাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে ফ্যাসিস্ট সরকার পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। চারদিকে অনিশ্চিয়তা ছিল কিন্তু এই দুই নেতা আবার প্রমাণ করলেন, বাংলাদেশের মানুষ প্রয়োজনে ঐক্যবদ্ধ হতে পারে, নেতারা নেতৃত্ব দিতে পারেন।’ ফখরুল বলেন, ‘বৈঠক শেষে তারেক রহমানের সঙ্গে টেলিফোনে কথা হয়েছে। তিনি ‍জুলাই আন্দোলনের শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেছেন এবং যেসব সাধারণ মানুষ আন্দোলনে শামিল হয়েছিলেন সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেছেন। এছাড়া দীর্ঘ সময়ে বিএনপির যেসব নেতাকর্মীরা লড়াই-সংগ্রাম করেছেন, তাদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।’ বিএনপি মহাসচিব আরও বলেণ, ‘গণতন্ত্র এক দিনের বিষয় নয়, এটি চর্চার বিষয়। সারাদিন সোশ্যাল মিডিয়ায় বকাবকি করে নয়, বরং আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে দেশকে পুনর্গঠনের জন্য সবার ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।’

দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত সময়মতো নেবেন তারেক রহমান: খসরু

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত সময়মতো নেবেন তারেক রহমান। শুক্রবার লন্ডন সফররত অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। তারেক রহমান দীর্ঘদিন যাবৎ এখানে (লন্ডনে) অবস্থান করছেন এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেছেন তার দেশে ফিরতে কোনো বাধা নেই। এই ব্যাপারে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না কিংবা তারেক রহমান কবে দেশে ফিরতে পারেন- এমন প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু বলেন, এ ব্যাপারে আলোচনার কোনো প্রয়োজনীয়তা আছে বলে আমি মনে করি না। তারেক রহমান সাহেব যখন ইচ্ছা দেশে ফিরে যেতে পারেন। তবে এটার সিদ্ধান্ত তিনি নেবেন, সময়মতো।

ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে আগামী নির্বাচনের সময়সীমা নির্ধারণ হয়েছে

লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকটি সত্যিকার অর্থে একটি টার্নিং পয়েন্টে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, এই বৈঠকে পর একটি যৌথ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। সেখানে পরিষ্কার করে বলা হয়েছে—দুই নেতার বৈঠকটি অত্যন্ত সৌহার্দপূর্ণ হয়েছে। শুক্রবার (১৩ জুন) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে উপস্থিতি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব। মির্জা ফখরুল বলেন, বৈঠকের আলোচনা বিষয়গুলোর মধ্যে প্রধান ছিল আগামী নির্বাচনের ইস্যু। সেখানে তারেক রহমানের প্রস্তাব ছিল, আগামী এপ্রিলে নির্বাচনের যে তারিখ ঘোষণা করা হয়েছিল, সেটা উপযুক্ত সময় নয় বিধায় এগিয়ে নিয়ে আসা। সেখানে জাতি অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে লক্ষ্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা সম্মত হয়েছেন, তারা ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে আগামী নির্বাচনের সময়সীমা নির্ধারণ করেছেন। বিস্তারিত আসছে...

ঐকমত্যের ভিত্তিতে সংস্কার ও জুলাই সনদ দুটোই হবে: আমীর খসরু

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠক নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেছেন, ‘বৈঠক নিয়ে আমরা (বিএনপি) সন্তুষ্ট।’ সব বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে আমীর খসরু বলেন, ‘আমরা তো নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে সামনের দিকে এগোচ্ছি। দেশ গড়ার যে প্রত্যয় আমরা নিয়েছি, আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে সবাই সেই কাজটা করব। শুধু নির্বাচনের আগে নয়, নির্বাচনের পরেও আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে এই কাজকে এগিয়ে নিয়ে যাব।’ আজ শুক্রবার লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠক শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। লন্ডনের ডরচেস্টার হোটেলে শুক্রবার স্থানীয় সময় সকাল ৯টায় (বাংলাদেশ সময় বেলা ২ টা) বৈঠকটি শুরু হয়, শেষ হয় সকাল সাড়ে ১০টায়। বৈঠক শেষ করেই বাসার উদ্দেশে রওনা হোন তারেক রহমান। আমীর খসরু বলেন, ‘আমাদের মধ্যে সিদ্ধান্ত আছে যে, ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই সনদ হবে। ঐকমত্যের ভিত্তিতে আমরা জুলাই সনদ এবং সংস্কার দুটাই করব।’ সংস্কার বিষয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সংস্কার বিষয়ে আমরা সবাই একই কথা বলেছি। যে বিষয়গুলোতে ঐকমত্য হবে, সে বিষয়গুলোতে সংস্কার হবে। সংস্কারের বিষয়টা তো চলমান প্রক্রিয়া। এমন না যে, সব সংস্কার এখনই শেষ করতে হবে। নির্বাচনের আগেও কিছু সংস্কার হবে, যেখানে ঐকমত্য হবে। আর নির্বাচনের পরেও এটা অব্যাহত থাকবে। আগে-পরে সংস্কার চলতে থাকবে।’ তারেক রহমানের দেশে ফেরা প্রসঙ্গে খসরু বলেন, ‘এটা নিয়ে আলোচনার প্রয়োজনীয়তা আছে বলে মনে করি না। তারেক রহমান যখন ইচ্ছা দেশে ফিরবেন। এটার সিদ্ধান্ত উনিই নেবেন।’

ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠকে সন্তুষ্ট বিএনপি

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠক নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। ১ ঘণ্টা ৩৫ মিনিটের তাদের এ বৈঠক অত্যন্ত সৌহার্দ্যমূলক পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে বলেও জানান তিনি। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ১ ঘণ্টা ৩৫ মিনিট বৈঠক করেছেন। এই বৈঠক নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। শুক্রবার (১৩ জুন) বৈঠক শেষে উভয় পক্ষের প্রতিনিধিদের যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন। আমীর খসরু বলেন, অত্যন্ত সৌহার্দ্যমূলক পরিবেশে তাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে তারেক রহমান প্রধান উপদেষ্টার কাছে আগামী বছরের রমজানের আগে নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রস্তাব করেন। ‌দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াও মনে করেন ওই সময় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে ভালো হয়। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তিনি আগামী বছরের এপ্রিলের প্রথমার্ধের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দিয়েছেন। সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা গেলে ২০২৬ সালের রমজান শুরু হওয়ার আগের সপ্তাহেও নির্বাচন আয়োজন করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে সেই সময়ের মধ্যে সংস্কার ও বিচারের বিষয়ে পর্যাপ্ত অগ্রগতি‌ অর্জন করা প্রয়োজন হবে। তারেক রহমান প্রধান উপদেষ্টার এই অবস্থানকে স্বাগত জানান এবং দলের পক্ষ থেকে তাকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। প্রধান উপদেষ্টাও তারেক রহমানকে ফলপ্রসূ আলোচনার জন্য ধন্যবাদ জানান।

লন্ডনে খলিলুর রহমান ও আমীর খসরুর সাক্ষাৎ

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর মধ্যে লন্ডনে সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (১৩ জুন) লন্ডনের স্থানীয় সময় দুপুরে সেখানকার একটি হোটেলে এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এ তথ্য জানান।

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তারেক রহমানের বৈঠক শুরু

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এর আগে লন্ডনের পার্ক লেনের হোটেল ডোরচেস্টারে পৌঁছান তারেক রহমান। লন্ডনের স্থানীয় সময় (১৩ জুন) সকাল ৯টায় (বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টা) পার্ক লেনের হোটেল ডোরচেস্টারে এ বৈঠক শুরু হয়। এর আগে বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির জানান, বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বাংলাদেশ সময় দুপুর ১ টায় বাসা থেকে রওয়ানা দেন। তার সঙ্গে আছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও চেয়ারপারসন ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যাডভাইজারি কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের আন্তর্জাতিকবিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবির। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের আলোচনার কেন্দ্রে থাকবে রাজনৈতিক সংকট ও নির্বাচন। তারেক রহমান ও ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠক শেষে লন্ডনে দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলবেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। বিএনপি মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল এ তথ্য জানিয়েছেন।

আম্মা আপনাকে সালাম জানিয়েছেন: তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে লন্ডনের দ্য ডোরচেস্টার হোটেলে বৈঠক করছেন। পূর্ব নির্ধারিত বৈঠকের পূর্বে প্রধান উপদেষ্টার শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন তিনি এবং বেগম খালেদা জিয়া প্রধান উপদেষ্টাকে সালাম জানিয়েছেন বলে জানান। তারেক রহমান হোটেল প্রাঙ্গণে পৌঁছানোর পর অন্তর্বর্তী সরকারের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান তাকে স্বাগত জানিয়ে হোটেল কক্ষে নিয়ে যান। প্রধান উপদেষ্টা কক্ষের সামনে থেকে তারেক রহমানকে এগিয়ে নিয়ে যান। এ সময় তারেক রহমান বিএনপির স্ট্যান্ডিং কমিটির মেম্বার আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ তার সঙ্গে আসা অন্যান্যদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। এ সময় প্রধান উপদেষ্টা ও তারেক রহমান হাসিমুখে করমর্দন করেন। প্রধান উপদেষ্টা তারেক রহমানকে বলেন খুব ভালো লাগছে, তারেক রহমানও বলেন, আমার কাছেও খুব ভালো লাগছে। আপনার শরীর কেমন? উত্তরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, চলছে, টাইনা টুইনা চলতে হয়। এ সময় তারেক রহমান বলেন,আম্মা (বেগম খালেদা জিয়া) সালাম জানিয়েছেন। এ সময় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।

আ.লীগের ভুলের কারণেই আজকের এই পরিণতি : আবদুল হামিদ

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট দেশ ছাড়েন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকেই রীতিমতো ভেঙে পড়তে থাকে দলটির সাংগঠনিক কাঠামো। নানা ঘটনা পরিক্রমায় অন্তর্বর্তী সরকার দেশের স্বাধীনতায় নেতৃত্ব দেওয়া সবচেয়ে পুরোনো ও ঐতিহ্যবাহী দলটির কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে। কিন্তু এমন বিপর্যয় কেন নেমে এলো দলটির? এনিয়ে দেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগের ভুল ছিল এবং এই ভুলেরই শাস্তি পাচ্ছে দলটি।’ সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের শ্যালক ডা. আনম নওশাদ খান গতকাল বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) দেশের একটি গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানান। ডা. আনম নওশাদ খান জানান, কাছের মানুষদের প্রায়ই আবদুল হামিদ বলেন, ‘গত ১৬ বছরে আমাদের অনেক ভুল ছিল। তা না হলে এমনটা কেন হলো? ভুল ছিল বলেই আজকের এই পরিণতি। আজকের অবস্থা হয়তো আমাদের ভুলেরই শাস্তি।’ সাবেক রাষ্ট্রপতি আক্ষেপ করে বলেন, ২০১২ সালে যখন স্পিকার ছিলাম তখনই বলেছি, সরকার স্বৈরাচারী হলে জনগণ বেশিদিন সায় দেবে না। বর্তমানে কার্যত নিষিদ্ধ দল আওয়ামী লীগকে আগামী দিনে রাজনীতি করতে হলে তাদের অতীতের ভুল শোধরাতে হবে বলেও মনে করেন সাবেক এই রাষ্ট্রপতি। গত ৭ মে রাতে চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডে যাওয়ার সময় সাবেক রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ছিলেন ডা. আনম নওশাদ খান। প্রায় এক মাস পর গত রোববার গভীর রাতে (রাত ১টা ২৫ মিনিটে) থাই এয়ারওয়েজের টিজি-৩৯৯ ফ্লাইটে তারা ফেরেন। ৮২ বছর বয়সি অসুস্থ ভগ্নীপতিকে কাছে থেকে দেখাশোনা করছেন তিনি। ডা. আনম নওশাদ খান জানান, তিনি (আবদুল হামিদ) পুরোপুরি পারিবারিক আবহেই আছেন। রাজনৈতিক কোনো যোগাযোগ এখন নেই। সেই ধরনের শারীরিক অবস্থাও তার নেই। আবদুল হামিদের বর্তমান শারীরিক অবস্থা খুব বেশি ভালো নয়। তিনি একা চলাফেরা করতে পারেন না। তার লাং ক্যানসার ‘থ্রি টু ফোর স্টেজ’-এর মাঝামাঝিতে রয়েছে। যেটাকে লাস্ট স্টেজ বলে জানান ডা. আনম নওশাদ খান। ডাক্তার তিন মাস অপেক্ষা করতে বলেছেন জানিয়ে ডা. আনম নওশাদ খান বলেন, এরপর আবার তাকে যেতে হবে। তার বিদেশ যাত্রা নিয়ে দেশে নানা ধরনের আলোচনা চললেও তিনি নিজে দেশে ফেরার বিষয়ে অনড় ছিলেন। নওশাদ খান বলেন, ‘অনেকেই তাকে বলেছেন, আপনি দেশে ফিরবেন না। কিন্তু তিনি বলেছেন, না, আমি দেশে ফিরবই। যা হওয়ার হবে। দেশে ফিরে দেশের মাটিতেই না হয় মারা গেলাম। দেশেই তো আমার আত্মীয়স্বজন সবাই আছে।’ হাওড় এলাকায় আবদুল হামিদের জন্ম। ছাত্রজীবন থেকেই জড়িত ছিলেন রাজনীতিতে। সাতবারের এমপি ছিলেন তিনি। জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ও স্পিকারের দায়িত্ব পালন করেছেন। এরপর রাষ্ট্রপতির দায়িত্বে ছিলেন ১০ বছর ৪১ দিন।

রংপুর-২ আসনে জামায়াতের প্রার্থী এ টি এম আজহারুল ইসলাম

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রংপুর-২ (বদরগঞ্জ-তারাগঞ্জ) আসন থেকে জামায়াতের প্রার্থী হিসেবে এ টি এম আজহারুল ইসলাম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে জানিয়েছেন দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম। বৃহস্পতিবার (১২ জুন) দুপুরে রংপুরের তারাগঞ্জে এ টি এম আজহারের কারামুক্তি উপলক্ষে উপজেলা জামায়াত আয়োজিত শোকরানা মাহফিলে তিনি একথা জানান। এ সময় মাওলানা আব্দুল হালিম বলেন, আগামী নির্বাচনে রংপুর-২ আসনে জামায়াতের প্রার্থী এটিএম আজহারুল ইসলাম। আমরা আপনাদের কাছে জানাতে চাই- আজহার ভাইকে এ পর্যন্ত নিয়ে আসার দায়িত্ব জামায়াতের আমির পালন করেছেন। বাকি- সংসদে নেওয়ার দায়িত্ব আপনাদের। তিনি বলেন, আগামী সংসদে গিয়ে আজহার ভাই বদরগঞ্জ-তারাগঞ্জ ও রংপুরসহ সারাদেশের মানুষের কথা জাতীয় সংসদে বলার মধ্য দিয়ে তিনি এই জাতির নেতৃত্ব দেবে আপনারা কি চান? এসময় উপস্থিত নেতাকর্মীরা হাত উঁচিয়ে তার কথায় সায় দেন। পরে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এটিএম আজহারুল ইসলাম উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আগামী সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন জানিয়ে ভোট চান।

ডিসেম্বরে নির্বাচন নিয়ে দ্বিমত নেই: সিপিবি সম্পাদক

আগামী বছরের এপ্রিলে নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণকে ‘অপ্রয়োজনীয় কালক্ষেপণ’ মন্তব্য করে সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেছেন, দেশের অন্য গণতান্ত্রিক দলগুলোর মতো আমরাও ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চাই। নির্বাচন বিলম্বিত হলে অপশক্তি মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার আশঙ্কা রয়েছে। বৃহস্পতিবার (১২ জুন) সকালে খুলনা প্রেস ক্লাবে ‘মিট দ্যা প্রেস’ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, নির্বাচন সংস্থার ও বিচারের বিষয়ে আমাদের দ্বিমত নেই। অবাধ গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য যে-সব সংস্থার প্রযোজনা তা করতে হবে। বিচার কার্যক্রমও দৃশ্যমান হতে হবে। আমরা মনে করি, এসব কাজ করেই ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন শেষ করা সম্ভব। নির্বাচন পিছিয়ে গেলে আধিপত্যবাদী শক্তি তাদের অনেক ইচ্ছা বাস্তবায়ন করতে পারে। নানা কারণে নির্বাচন আরও দূরে চলে যাবে। আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা প্রসঙ্গে সিপিবির সাধারণ সম্পাদক বলেন, নির্বাহী আদেশে কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ আমরা চাই না। কিন্তু তারা যে ধরনের গণহত্যা চালিয়েছে, এ নিয়ে তাদের কোনো অনুশোচনা নেই। দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে কথা বলার নৈতিক অধিকার তারা হারিয়েছে। দ্রুত নির্বাচন না হলে পতিত শক্তি সামনে আসার সুযোগ পাবে। লন্ডনে অনুষ্ঠাতব্য প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকে ইতিবাচক বলে মন্তব্য করেন তিনি বলেন, বল এখন সরকারের কোটে। করিডোর ও চট্টগ্রাম বন্দরের টার্মিনাল বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়ার প্রতিবাদে আগামী ২৭ ও ২৮ জুন ঢাকা-চট্টগ্রাম রোডমার্চ কর্মসূচির পরিকল্পনার কথা জানান তিনি। এ সময় সিপিবি নেতা এস এ রশীদ, খুলনা মহানগর সিপিবির সভাপতি এইচ এম শাহাদাত, সাধারণ সম্পাদক নিত্যানন্দ ঢালি, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বাবু উপস্থিত ছিলেন।

‘লন্ডনের বৈঠক গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিয়ে যেতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে’

লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠক আগামী নির্বাচন, সংস্কার ও গণতন্ত্রতে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। বৃহস্পতিবার (১২ জুন) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন। রিজভী বলেন, উন্নয়নের নামে আওয়ামী লীগ নেতাদের লুটপাটকৃত অর্থ বিদেশে পাচারের বিষয়টি আড়াল করতে বৈঠক নিয়ে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। যুক্তরাজ্যে আওয়ামী লীগ আমলের ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর সম্পদ জব্দ করার প্রসঙ্গ তুলে রিজভী বলেন, সাবেক ভূমিমন্ত্রীর সম্পদের বিষয়টি আড়াল করতে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। তিনি বলেন, টাকা পাচার করে যারা বিভিন্ন দেশে আরাম আয়েশে বসবাস করছে তাদের বিচার হওয়া উচিত। বিদেশি নাগরিকদের বাংলাদেশি বলে ভারত পুশইন করছে বলেও দাবি করেন রিজভী আহমেদ।

লন্ডনে ড. ইউনূস ও তারেকের বৈঠক কাল

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যে লন্ডনে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল শুক্রবার। শুক্রবার (১৩ জুন) লন্ডন সময় সকাল ৯টা থেকে বেলা ১১টার মধ্যে তাদের এই বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। এ প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, এই বৈঠকের কোনো ফরমেট নেই। যেহেতু তারেক রহমান বাংলাদেশের বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপির নেতা, তাই প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে মিটিংটি হবে। দুই জনের আলোচনায় বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, নির্বাচনের দিনক্ষণ, সংস্কার ও জুলাই চার্টারসহ যেকোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা হতে পারে। বৈঠকের বিষয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গণমাধ্যমকে জানান, প্রধান উপদেষ্টা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। তিনি (ড. ইউনূস) যে হোটেলে উঠেছেন সেখানেই বৈঠক হবে। উনাকে (তারেক রহমান) ফরমালি দাওয়াত করা হয়েছে মিটিংয়ের জন্য।

‘এখন অনেকেই আমাকে বিকাশ নূর বলে কটাক্ষ করে’

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, ‘এখন অনেকেই বিকাশ নুর বলে অনলাইনে কটাক্ষ করে গালি দেয়। আমরা যেহেতু রাজনীতি করেছি, আমাদের দল থেকে এখনো কেউ এমপি-মন্ত্রী হয়নি। আমাদের টাকাটা আমাদের শুভাকাঙ্ক্ষীরাই দিয়েছেন। বাস্তবে সেই সহযোগিতার বড় অংশটাই করেছেন বিএনপি-জামায়াতসহ বিরোধীদলের লোকেরা। কারণ তারা তখন চিপায় ছিল।’ বুধবার (১১ জুন) দুপুরে গলাচিপা অফিসার্স ক্লাবের উপজেলার ছাত্র অধিকার পরিষদের নবনির্বাচিত কমিটির পরিচিতি সভায় তিনি এসব কথা বলেন। নুরুল হক নুর বলেন, আজ ডাকসু না হলে, ’১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলন না হলে আজকে এই আসিফ, নাহিদ, এই উপদেষ্টা- এই ছাত্রনেতাদের অনেকেই তৈরি হতো না। এই গণঅভ্যুত্থানে যারা নেতৃত্ব দিয়েছেন তাদের বড় একটা অংশ যাদের নার্সিং করেছি, পৃষ্ঠপোষকতা করেছি। তিনি বলেন, যে ছাত্র সংগঠনের আমার রাজনৈতিক জন্ম হয়েছে। যেই সংগঠনের মাধ্যমে আজ আমি একটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সভাপতি হয়েছি। এইটুকু পরিচয়ের মধ্যে ছাত্র অধিকার পরিষদকে সীমাবদ্ধ করে রাখার সুযোগ নাই। এটা বলতে হবে, ছাত্র অধিকার পরিষদের যদি জন্ম না হতো বাংলাদেশে ’২৪-এর গণঅভ্যুত্থান হতো না। তিনি আরও বলেন, আমি একটা ছাত্র সংসদের ডাকসু ভিপি হিসেবে গণভবনে গেলেই কী- না গেলেই কী। বরঞ্চ আমরা যে কৌশলে রাজনীতি করেছি, তাতে আপস করিনি। নৈতিকতা বিসর্জন দেইনি। বিবেককে বিক্রি করিনি। ন্যূনতম যতটা সুযোগ আমরা পেয়েছি, দেশের মানুষের মুক্তির জন্য ব্যবহার করেছি। দেশের মানুষের কল্যাণের জন্য ব্যবহার করেছি। গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি বলেন, আমার ছাত্রদের জন্য যদি কিছু করতে হয় অবশ্যই তা আন্দোলন-সংগ্রামের পাশাপাশি আমার অন্য কৌশলে থাকতে হবে। আমরা গণভবনে গেছি সেই ভিডিও নিয়ে এখন ট্রল হয়। শেয়ার করে অনেকে লেখেন ‘দেখেন যা ভালো মনে করেন’। আরে ভাই এই অল্প বয়সে যে ভূমিকা রেখেছি তোমাদের চৌদ্দগোষ্ঠী- চৌদ্দ পুরুষের সেই ভূমিকা রাখে নাই। আজকে ভিপি নূরের জন্ম না হলে, ছাত্র অধিকার জন্ম না হলে, ডাকসু নির্বাচন না হলে আজকে ’২৪-এর গণঅভ্যুত্থান এই বাংলাদেশে হতো না। এসময় ছাত্র অধিকার পরিষদের গলাচিপা উপজেলা সভাপতি আরিফ বিল্লার সভাপতিত্বে জেলা-উপজেলা এবং কেন্দ্রীয় ছাত্র, যুব, শ্রমিক ও গণঅধিকার পরিষদের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

ক্রাউড ফান্ডিংয়ে কত টাকা অনুদান পেল এনসিপি

সদ্য শুরু হওয়া জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ক্রাউডফান্ডিং উদ্যোগ ‘আপনার অনুদানে আগামীর বাংলাদেশ’ ঈদের ছুটির মধ্যে বেশ সাড়া পেয়েছে। গত ৫ জুন আনুষ্ঠানিকভাবে এই কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকে দেশজুড়ে ৩ হাজার ২৬৫ জন নাগরিক মিলিতভাবে মোট ১৩ লাখ ৮১ হাজার ৮১০ টাকা অনুদান পাঠিয়েছেন। এমন তথ্য নিশ্চিত করেছেন দলটির যুগ্ম সদস্য সচিব (কোষাধ্যক্ষ) এস এম সাইফ মোস্তাফিজ। বুধবার (১০ জুন) সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকে নিজের আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এমন তথ্য জানান। কোষাধ্যক্ষের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সংগৃহীত অনুদানের মধ্যে ৭ লাখ ৬৬ হাজার টাকা এনসিপির ওয়েবসাইটের মাধ্যমে, ৪ লাখ ৯৮ হাজার ২১৪ টাকা সিটি ব্যাংকের মাধ্যমে এবং ১ লাখ ১৭ হাজার ৫৯৬ টাকা ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে জমা পড়েছে। সাইফ মোস্তাফিজ তার পোস্টে প্রবাসে বসবাসরত বাংলাদেশিদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন, যারা এই ক্রাউডফান্ডিংয়ে অনুদান দেওয়ার জন্য যোগাযোগ করছেন। তিনি জানিয়েছেন, খুব শিগগিরই নিবন্ধন এবং কিছু প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পর প্রবাসীরাও এনসিপির ওয়েবসাইটে (donate.ncpbd.org) অনুদান পাঠাতে পারবেন। পোস্টে অনুদানদাতাদের ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ভবিষ্যতে ওয়েবসাইট এবং অন্যান্য মাধ্যমগুলোতে আরও বেশি সমর্থন পাওয়া যাবে। এর আগে, গত বুধবার (৪ জুন) বিকেলে রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কার্যালয়ে আর্থিক নীতিমালা ঘোষণা ও ক্রাউডফান্ডিং কার্যক্রমের ঘোষণা দেন এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন। ৫ জুন আনুষ্ঠানিকভাবে এই কার্যক্রম শুরু হয়।

‘এখন আমরাই হচ্ছি বড় মাফিয়া’ বলা এনসিপি নেতাকে শোকজ

শেখ হাসিনার মতো মাফিয়াকে বিতাড়িত করে দিয়েছি, এখন আমরাই হচ্ছি বড় মাফিয়া এ বক্তব্য দেওয়ায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য জোবাইরুল আলম মানিককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে এনসিপি। মঙ্গলবার (১০ জুন) এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহ উদ্দিন সিফাত এই নোটিশ দেন। নোটিশে বলা হয়েছে, গতকাল ৯ই জুন, সোমবার চট্টগ্রাম জেলার আনোয়ার উপজেলায় জাতীয় নাগরিক পার্টির ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে আপনার একটি আপত্তিকর ও অসাংগঠনিক বক্তব্য কেন্দ্রীয় শৃঙ্খলা কমিটির নজরে এসেছে। আপনার এমন বক্তব্য জনপরিসরে এনসিপির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেছে এবং পার্টিকে নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করেছে। এ অবস্থায় সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও পার্টির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার দায়ে আপনার বিরুদ্ধে কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তার যথাযথ ব্যাখ্যা কেন্দ্রীয় শৃঙ্খলা কমিটির প্রধান জনাব আব্দুল্লাহ আল-আমিনের নিকট আগামী তিন দিনের মধ্যে লিখিত আকারে প্রেরণ করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হলো। গত ৯ জুন চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় এনসিপি আয়োজিত ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জুবাইরুল আলম মানিক বলেন, আমরা জুলাই অভ্যুত্থান সফল করেছি। বিগত ১৬-১৭ বছর কেউ এ নেতৃত্ব দিতে পারেনি। এটি একটি রাজনৈতিক বিপ্লব। কেউ যদি বলে যে শিক্ষার্থীরা তাদের কাজ শেষ করেছে, তারা ক্যাম্পাসে ফিরে যাক। আমরা বলব, ১৬ বছরের একজন মাফিয়াকে হটাতে পারছে। আমাদের বুঝ দিয়ে আবার যদি কেউ মাফিয়া হয়ে উঠতে চায়; আমরা তাদের বলব, এখন বাংলাদেশে যদি বড় মাফিয়া থাকে, আমরাই হচ্ছি বড় মাফিয়া। আমাদের চেয়ে বড় মাফিয়া নেই।

রাজধানীতে যৌথবাহিনীর অভিযানে বিএনপি নেতাসহ গ্রেপ্তার ৪

রাজধানীর শ্যামপুরের দয়াগঞ্জ এলাকা থেকে ইয়াবা, গাঁজা ও হেরোইনসহ থানা বিএনপির কার্যকরী সদস্য শুক্কুর আলীসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে যৌথবাহিনী (সেনাবাহিনী ও পুলিশ)। মঙ্গলবার (১০ জুন) রাতে কয়েক ঘণ্টা সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে মাদকদ্রব্যসহ তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। জানা গেছে, অভিযানে ১০ কেজি গাঁজা, ৩ হাজার পিস ইয়াবা, ৪টি দেশীয় অস্ত্র, ৮টি মোবাইল ও ৬০ হাজার নগদ টাকাসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে জব্দ মাদকসহ গ্রেপ্তারদের থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এদিকে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতা মুইন হাসান সাজিদকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। মঙ্গলবার (১০ জুন) রাত ১১টার দিকে বগুড়া জেলা পুলিশের মিডিয়া মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আতোয়ার রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে সোমবার (১০ জুন) দুপুরে বগুড়ার শাহজাহানপুর উপজেলার উত্তর ফুলদিঘী এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সাজিদ ওই এলাকার আনাম উদ্দিনের ছেলে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সূর্যসেন হল শাখা ছাত্রলীগের উপ-প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ঢাকার শাহবাগ থানায় দায়ের করা মামলার এজাহারভুক্ত পলাতক আসামি তিনি। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আতোয়ার রহমান বলেন, গত বছরের ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে সংঘটিত হামলায় অংশগ্রহণের অভিযোগ রয়েছে সাজিদের বিরুদ্ধে। তিনি ও দুর্বৃত্তরা মারাত্মক অস্ত্র ও বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা চালায় এবং বেশ কয়েকজনকে গুরুতর জখম করে। তিনি আরও বলেন, ওই ঘটনায় করা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৬০ জনকে আসামি করা হয়। ঘটনার পর থেকেই সাজিদ পলাতক ছিলেন।

জামায়াত ছাড়া অন্য দলে এত সৎ মানুষ নেই: আমীর হামজা

কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনের জামায়াতে ইসলামীর এমপি প্রার্থী ইসলামী বক্তা মুফতি আমীর হামজা বলেছেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ছাড়া অন্য কোনো দলে এত সৎ মানুষ নেই। এটা পরীক্ষিত হয়ে গেছে। রোববার (৮ জুন) দুপুরে কুষ্টিয়ার সদর উপজেলার পাটিকাবাড়ী ইউনিয়ন জামায়াতের উদ্যোগে ৫শ পরিবারের মাঝে কোরবানির মাংস বিতরণকালে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী সাহেব মন্ত্রিত্ব চালিয়ে ৩৬ টাকা ফেরত দিয়েছিলেন। পৃথিবীর ইতিহাসে এটাই প্রথম। সুতরাং, এই দলে যারা আছে, তাদের ওপর বাংলাদেশের মানুষের আস্থা আছে যে, এরা অন্তত মারিংকাটিং করবে না। নির্বাচন নিয়ে আমীর হামজা বলেন, অনেকে বলে- আপনাকে কেন ভোট দেবে? আমি বলি- ভোট দেবে না কেন! মানুষ তো ৫৪ বছর দেখেছে। এ দলে (জামায়াতে) যারা আছে, তাদের ওপর বাংলাদেশের মানুষের আস্থা আছে। আমরা তো দ্বীনের জন্য, আল্লাহর জন্য কাজ করব। মানুষ এমনিতেই সাড়া দেবে। নির্বাচন ঘিরে প্রাসঙ্গিক সংস্কারের দাবি তুলে ধরে মুফতি হামজা বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু তো হতেই হবে। অবশ্যই সুষ্ঠু হওয়া লাগবে। কিন্তু নির্বাচনের আগের কাজ হচ্ছে সংস্কার। সংস্কার না করে দেশে নির্বাচন দিলে আবার ওই দিনের ভোট রাতে হবে। আর এটা কেউ মানবে না। বিশেষ করে দেশকে যারা ভালোবাসে তারা কখনো মানবে না যে, সংস্কারের আগে নির্বাচন হোক। এর আগে কুষ্টিয়ায় নিজ গ্রামের বাড়িতে গরিব ও অসহায় মানুষের মাঝে ঈদের দ্বিতীয় দিন কোরবানির মাংস বিতরণ করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কুষ্টিয়া সদর আসনের এমপি প্রার্থী মুফতি আমির হামজা। মুফতি হামজা জানান, কুষ্টিয়া সদর উপজেলার পাটিকাবাড়ি ইউনিয়নের পক্ষ থেকে জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে মানবতার সেবায় যে কাজগুলো করা হচ্ছে, তা আগামীতেও অব্যাহত থাকবে ইনশাআল্লাহ। এবার ৫০০ পরিবারকে দিয়েছি, আগামীতে আমরা যদি বাড়াতে পারি আমরা আরও বাড়াব ইনশাআল্লাহ। গতকালও আমার গ্রামের বাড়ি ডাবিরাভিটা, পাটিকাবাড়ি ইউনিয়নে প্রায় সাড়ে পাঁচ মণের মতো ওজনের গরু ছিল, ওগুলো গরিবদের মাঝে দিয়েছি। এর পর ছাগল ছিল, একটা ভেড়া ছিল এগুলোও দেওয়া হয়েছে। আগামীতে আরও দেওয়া হবে ইনশাআল্লাহ। এ সময় কোরবানির মাংস বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানা জামায়াতের আমির মো. রফিকুল ইসলাম, সহকারী সেক্রেটারি ডা. ইব্রাহিম খলিল, পাটিকাবাড়ী ইউনিয়ন জামায়াতের আমির ইকবাল হোসেনসহ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় পাটিকাবাড়ী ইউনিয়ন জামায়াতের উদ্যোগে ৫শ পরিবারের মাঝে কোরবানির গরুর মাংস বিতরণ করা হয়।

‘জামায়াত নেতার হত্যাকারীদের বহিষ্কারের প্রতিশ্রুতি রাখেনি বিএনপি’

জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেছেন, জামায়াত নেতা কাউছার আহম্মদ মিলন হত্যা মামলাটি রাজনৈতিক নয়। সামাজিক একটি ঘটনায় জামায়াত নেতাকে হত্যা করা হয়েছে। আমাদের উভয়ের (বিএনপি-জামায়াত) কথা হয়েছিল হত্যাকারী যেই হোক, তাকে বহিষ্কার করা হবে। কিন্তু বিএনপি সেই প্রতিশ্রুতি রাখেনি। বরং জঘন্যতম কথা বলা হচ্ছে যে জামায়াত একটি স্বাভাবিক মৃত্যুকে নিয়ে রাজনীতি করছে। কাউছার আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন, তার ঘাড়ে ও মাথায় আঘাত ছিল। সেটি কীভাবে স্বাভাবিক মৃত্যু হয়? মঙ্গলবার (১০ জুন) দুপুরে লক্ষ্মীপুর প্রেসক্লাবে জেলা জামায়াতের ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সোমবার (৯ জুন) শহরের গোডাউন রোড এলাকার বশির ভিলা হলরুমে বিএনপির প্রেস ব্রিফিংয়ে নেতাদের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে জামায়াত এ আয়োজন করেন। জামায়াত নেতা রেজাউল করিম বলেন, বিএনপি থেকে বলা হচ্ছে কাউছার এর আগে স্ট্রোক করেছেন, অতএব এটি স্বাভাবিক মৃত্যু। এসব কথায় জাতি বিভ্রান্ত। ছেলেকে রক্ষা করতে গেলে তাকে আঘাত করা হয়েছে। আবার তিনি চিকিৎসা নিতে গেলে হাসপাতালে তাকে ভয়-ভীতি দেখানো হয়। এখন তার পুরো পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে। হত্যা নিয়ে রাজনীতিকরণ নিয়ে তিনি আরও বলেন, রাজনীতিকরণ কারা শুরু করেছে- সন্ত্রাসীরা তাকে আহত করেছে এবং তিনি মারা গেছেন। কিন্তু মামলার আসামিরা রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী। হামলার ঘটনার পর তারা বিরাট একটি মিছিল করেছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় তা আসছে। তাহলে রাজনীতিকরণের সূচনাটি কারা করলো? হত্যাকাণ্ডের পর ময়নাতদন্ত হয়, রিপোর্ট আসবে। কিন্তু রিপোর্ট আসার আগেই কেউ কেউ বিভ্রান্তি তৈরি করার চেষ্টা করছে। এজন্য আমরা শঙ্কিত। প্রকৃত হত্যাকাণ্ডের রিপোর্ট আসবে বলে আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও প্রশাসনের কাছে প্রত্যাশা করি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন - জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির এআর হাফিজ উল্যাহ, সেক্রেটারি ফারুক হোসাইন নুরনবী, সহ-সেক্রেটারি মহসিন কবির মুরাদ, লক্ষ্মীপুর শহর জামায়াতের আমির আবুল ফারাহ নিশান ও চন্দ্রগঞ্জ থানা জামায়াতের সেক্রেটারি রেজাউল ইসলাম সুমন খান প্রমুখ। থানা পুলিশ ও জামায়াত জানায়, জামায়াতের ওলামা বিভাগের নেতা কাউছারের মৃত্যুর ঘটনায় ৩২ জনের বিরুদ্ধে সদর মডেল থানায় তার স্ত্রী শিল্পী আক্তার রোববার (৮ জুন) মামলা করেছেন। এতে এজাহারভুক্তরা বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। কাউছার বৃহস্পতিবার (৫ জুন) দুপুরে হামলার শিকার হয়ে সন্ধ্যায় মারা যান। তিনি বাঙ্গাখাঁ ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড জামায়াতের ওলামা বিভাগের সভাপতি ছিলেন।

হাসনাতকে নিয়ে ট্রল, সাংবাদিক জুলকারনাইনের উদ্বেগ প্রকাশ

ঈদের সময় বৃষ্টিতে ভিজে নিজ এলাকা ও আশপাশের দরিদ্র পরিবারের মাঝে কোরবানির মাংস বিতরণ করেছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ। এমন ছবি ছড়িয়ে পড়লে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাকে নিয়ে ট্রল করা শুরু হয়। এবার সেই ট্রল নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ফেসবুকে পোস্ট দিলেন আল জাজিরার সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের। মঙ্গলবার (১০ জুন) বিকেলে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক আইডিতে তিনি লেখেন, এই হাসনাত আবদুল্লাহ ছেলেটার জন্ম ১৯৯৮ সালে, সেই হিসেবে বয়স দাঁড়ায় ২৭, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে অভিভাবকেরা এই বয়সী সন্তানদেরও নিজেদের ছায়ার তলে রাখতে চেষ্টা করেন। কিন্তু হাসনাতের বয়সী এমনকি ওর থেকে কম বয়সী ছেলেমেয়েরা সম্মিলিতভাবে দক্ষিণ এশিয়ার কঠোর এক স্বৈরশাসকে কেবল পদচ‍্যুতই করেনি বরং পুরো ক‍্যাবিনেটসহ দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে একপ্রকারের বাধ্য করেছে। তিনি আরও লেখেন, এই ছেলেটা কয়েকদিন আগে ঈদের সময় তার এলাকার কিছু পরিবারে সৎ উদ্দেশ্য নিয়েই কোরবানির মাংস বিতরণ করেছে। তার সামর্থ অনুযায়ী যতটুকু সম্ভব তাই সে করার চেষ্টা করেছে। আমি বেশ অবাক হয়ে দেখলাম আমার বয়সী এবং আরও বয়স্ক অনেকেই কিভাবে ওর বৃষ্টিতে ভিজে মাংসকে বিতরণের ছবিকে নিয়ে ট্রল করেছেন। বিষয়টাকে একটা ঠাট্টা-তামাশাতে পরিণত করার চেষ্টা করেছেন। আপনারা যদি কাউকে উৎসাহ দিতে নাই পারেন, তবে অন্তত নিরুৎসাহিত করা থেকে বিরত থাকেন। ওদের অনেক সমস্যা হয়তো আছে, পরামর্শ দিয়ে সেসব শোধরানোও অসম্ভব কিছু না। কিন্তু যখন পজিটিভ কিছু করছে বা করার চেষ্টা করছে, তখন অন্তত সেটাকেও বিতর্কিত করা বা ট্রল করা থেকে নিজেকে সংবরণ করুন।

এপ্রিলে নির্বাচন হলে খরচ দ্বিগুণ বেড়ে যাবে: মির্জা ফখরুল

আগামী এপ্রিল মাসে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হলে প্রার্থীদের নির্বাচনী খরচ দ্বিগুণ বেড়ে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মঙ্গলবার (১০ জুন) রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার যদি এপ্রিল মাসে নির্বাচন করার সিদ্ধান্তে অনড় থাকে তাহলে বিএনপির করণীয় কী হবে তা নিয়ে এখনও পার্টির ফোরামে আলোচনা হয়নি। আমরা আশা করছি সরকার বাস্তবতা বিবেচনা করবেন। আসলে এই সময়টা (এপ্রিল) নির্বাচনের জন্য উপযুক্ত না। তিনি আরও বলেন, এপ্রিলে নির্বাচন হলে সময়টা হবে ঈদের কয়েক দিন পর। তাহলে ভাবুন, পুরো রমজান মাস প্রার্থী ও রাজনৈতিক কর্মীদের কী অবস্থা হবে? আমি নিজেই এখন চিন্তিত যে প্রত্যেক দিন ইফতার পার্টি করতে হবে। এটা কোনও মজার বিষয় না। এতে নির্বাচনী খরচ দ্বিগুণ হয়ে যাবে। অথচ আমরা সবাই বলি নির্বাচনী খরচ কমাতে হবে। কিন্তু এতে আরও বাড়বে। মির্জা ফখরুল বলেন, দ্বিতীয়ত তখন প্রচণ্ড গরম থাকবে। ঝড়-বৃষ্টি হবে। বাংলাদেশের নির্বাচনী সংস্কৃতি হচ্ছে জনসভা করা। কিন্তু ঝড়-বৃষ্টি ও রোদের মধ্যে জনসভায় লোকজনের উপস্থিতি কষ্ট হবে। রোদের মধ্যে কে আসবে? রাতে গিয়ে মিটিং করতে হবে। বাংলাদেশে সব সময় ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসের মধ্যে নির্বাচন হয়েছে বলে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, দুই বার এর বাইরে গেছে । সেই নির্বাচনে ঝামেলা হয়েছে। এখানে অনেকে আমাকে ভুল বুঝবেন যে, আমরা সংস্কার চাই না, নির্বাচন চাই। এটা একটি প্রোপাগান্ডা। আমরা অনেক আগে সংস্কারের কথা বলেছি। বলেছি এই ব্যবস্থা চলবে না। সেই কারণে অনেকের সঙ্গে পরামর্শ করে ম্যাডামকে (খালেদা জিয়া) নিয়ে দিয়েছিলাম ভিশন ২০২৩। তারপর দিনের পর দিন আলোচনা করে ৩১ দফা দিয়েছি। বিএনপির মহাসচিব বলেন, আমরা বলেছি টানা দুই বারের বেশি কেউ প্রধানমন্ত্রী হতে পারবে না। তারপর একবার গ্যাপ দিয়ে আরেকবার প্রধানমন্ত্রী হতে পারবে। এরপর আর হতে পারবে না।