
এই মুহূর্তে চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে ভাবা জরুরি নয়: জোনায়েদ সাকি
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের এখন সবচেয়ে জরুরি বিষয় হওয়া উচিত ভূমিহীনদের নিয়ে চিন্তা করা। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে এখন না ভেবে পরেও ভাবা যাবে, অন্য কেউ সে দায়িত্ব নিতে পারে। কিন্তু ভূমিহীন মানুষের বিষয়টি যদি এখন আপনি না ভাবেন, তাহলে আর কেউ ভাববে না। রোববার (১৮ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ ভূমিহীন আন্দোলন ও রাষ্ট্র সংস্কার কৃষক আন্দোলনের উদ্যোগে আয়োজিত ভূমিহীন কৃষক সমাবেশে তিনি এসব মন্তব্য করেন। জোনায়েদ সাকি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা কোন নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাইছেন। যেখানে ভূমিহীনরা, দিনমজুরদের মাথা গোজার ঠাঁই নেই। এত এত সংস্কার করে কী হবে, যদি ভূমি সংস্কারই করতে না পারলেন। ভূমি সংস্কার ছাড়া কোনো সংস্কারেই কাজ হবে না। তাই এমন সংস্কার করুন, যেখানে ভূমিহীনরা থাকতে ও জীবন নিয়ে বাঁচতে পারে, চলতে পারে, নির্দ্বিধায় থাকতে পারে। তিনি আরও বলেন, জুলাই আন্দোলনে আমরা সবাই একই কাতারে রক্ত দিয়ে, জীবন দিয়ে ফ্যাসিস্ট বিদায় করেছি। এখানে ভূমিহীন, কৃষক, দিনমজুর সবাই আত্মত্যাগ দিয়েছে। ফলে দেশের নতুন যাত্রা শুরু হয়েছে। এত বড় অভ্যুত্থানের পর ওরা কী পেল? এই লোকেরা আজও ভূমিহীন, বাসস্থানহীন। সরকারের উদ্দেশে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাড. হাসনাত কাইয়ূম বলেন, দেশের সব খাস জমি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভূমিহীনদের লিজ দিতে হবে। তাদের সেখানে বাসস্থানের ব্যবস্থা করে দিতে হবে। তাদের অধিকার সম্পর্কে বুঝতে হবে। আমার বাংলাদেশ (এবি পার্টির) চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, ভূমিহীনরা নিজেদের অধিকার চায়। এই দেশে এক খণ্ড জমি চায়। কিন্তু সরকার তাদের এসব অধিকার দিতে পারছে না। আমরা বলে দিতে চাই ভূমিহীন কৃষকদের সব দাবি-দাওয়া মেনে নিন। আমরা তাদের সঙ্গে সব সময় আছি। প্রয়োজনে তাদের নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

গুলিস্তানে ঝটিকা মিছিলের সময় আ.লীগের ১১ নেতাকর্মী আটক
রাজধানীর গুলিস্তানে ঝটিকা মিছিলের সময় আওয়ামী লীগের ১১ নেতাকর্মীকে আটক করেছে ডিবি। তাৎক্ষণিকভাবে আটকদের নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি। রোববার সন্ধ্যায় ডিএমপির ডিসি (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

প্রায় দেড় ঘণ্টা অবরোধের পর শাহবাগ ছাড়ল ছাত্রদল
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যা মামলার তদন্তে অবহেলা এবং বিচারের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে সড়ক অবরোধ করে ছাত্রদল। প্রায় দেড় ঘণ্টা অবরোধের পর তারা সেখান থেকে সরে যায়, এতে এলাকাটির যান চলাচল কিছুটা স্বাভাবিক হয়। রোববার (১৮ মে) বিকেল ৪টার দিকে শাহবাগ মোড় অবরোধ শুরু করে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। বিকেল ৫টা ২৫ মিনিটে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম কর্মসূচি শেষ হওয়ার ঘোষণা দেন। এরপর নেতাকর্মীরা মিছিলসহ শাহবাগ ত্যাগ করলে ওই এলাকায় পুনরায় যান চলাচল শুরু হয়। এর আগে, দুপুর ১২টার দিকে শাহরিয়ার হত্যার ‘প্রকৃত’ আসামিদের গ্রেফতারের দাবিতে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে শাহবাগ থানা ঘেরাও করেন। এছাড়া সকালে সাম্য হত্যার বিচার দাবিতে রাজু ভাস্কর্যের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন সাম্যর সহপাঠী ও শিক্ষকরা। আল্টিমেটামের ৪৮ ঘণ্টা পার হলেও প্রধান আসামি গ্রেফতার না হওয়ায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান সহপাঠী ও পরিবারের সদস্যরা। সংহতি জানাতে উপস্থিত হন ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান। ন্যায়বিচারের জন্য সবাইকে এক হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। পরে মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা শাহবাগ সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। এছাড়া অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে সাম্য হত্যার বিচার দাবিতে মানববন্ধন করে জাতীয়তাবাদী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল। সাম্যকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তারা। এসময় শিক্ষকরা ডাকসু নির্বাচনের আগে ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান। সাম্য হত্যার ঘটনায় কালো পতাকা মিছিল করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল। এসময় হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দায়ী করেন ছাত্রদল নেতারা। আর শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান বিক্ষোভকারীরা। উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার রাতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্ত মঞ্চের পাশে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে ঢাবি শিক্ষার্থী শাহরিয়ার নিহত হন। তিনি স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন তিনি।

বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে সব অধিকার ভোগ করার জন্য প্রস্তুত রয়েছি: খলিলুর রহমান
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান বলেছেন, বাংলাদেশের একজন নাগরিক হিসেবে আমার যে অধিকার রয়েছে তা পূর্ণাঙ্গরূপে ভোগ করতে প্রস্তুত রয়েছি। সম্প্রতি বিএনপির এক শীর্ষস্থানীয় নেতা খলিলুর রহমানকে বিদেশি নাগরিক বলে অভিযোগ করার পর তিনি এমন মন্তব্য করেন। বিএনপি নেতার অভিযোগের জবাবে ড. খলিলুর রহমান আজ বাসসকে বলেন, ‘এই অভিযোগ প্রমাণের দায়ভার অভিযোগকারীর ওপর বর্তায় এবং প্রয়োজনে তা আদালতে প্রমাণ করতে হবে।’ জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা আরো বলেন, ‘আমি একজন বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে আমার পূর্ণাঙ্গ অধিকার ভোগ করার জন্য প্রস্তুত রয়েছি।’ সম্প্রতি বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমদ অভিযোগ করেন, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান একজন বিদেশি নাগরিক। সূত্রঃ বাসস

সন্ধ্যায় খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন অলি আহমদ
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সন্ধ্যায় সাক্ষাৎ করবেন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ। এলডিপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিন রাজ্জাক এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, অলি আহমদ রোববার (১৮ মে) সন্ধ্যায় গুলশানের বাসভবনে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। সেখানে রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও দেশের সাম্প্রতিক নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হতে পারে। অলি আহমদ ২০-দলীয় জোটের অন্যতম প্রবীণ নেতা। সাম্প্রতিক সময়ে নির্বাচনের দাবিতে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ঐক্য পুনরায় সক্রিয় হওয়ার প্রেক্ষাপটে এই সাক্ষাৎ গুরুত্বপূর্ণ ধরা হচ্ছে। খালেদা জিয়া বর্তমানে গুলশানের ‘ফিরোজা’ বাসভবনে রয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি দলীয় ও জোটের বাইরে কোনো রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে প্রকাশ্যে সাক্ষাৎ করেননি।

নির্বাচন বিলম্বিত হলে অস্থিরতা বাড়বে: খসরু
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, নির্বাচন যত বিলম্বিত হচ্ছে, দেশকে তত বেশি অস্থিরতার দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। জাতি এখন এক গভীর শঙ্কার মধ্যে রয়েছে। রোববার রাজধানীর বনানীতে দলীয় কার্যালয়ে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় তিনি চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানান। আমীর খসরু বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন এক অনিশ্চিত অবস্থার মধ্যে আছে। দেশ কোথায় যাচ্ছে, কেউ জানে না। সবাই মিলে স্বৈরাচারকে বিদায় করেছে। এরপর গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় দেশ পরিচালনার যে প্রত্যাশা ছিল, তা হয়নি।’ তিনি বলেন, সরকার এমনভাবে কাজ করছে যেন তারা একটি নির্বাচিত সরকার। অথচ এটি একটি অন্তর্বর্তী সরকার। তাদের দায়িত্ব ছিল একটি সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন করে ক্ষমতা নির্বাচিত সরকারের কাছে হস্তান্তর করা। সরকারের কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বিএনপির এই নেতা। বলেন, ‘করিডোর, বন্দর, বিনিয়োগ সম্মেলন—এসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। প্রশ্ন হলো, এই সরকারের এসব সিদ্ধান্ত নেওয়ার বৈধতা কোথায়?’ এ সময় ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র সংক্রান্ত একটি আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন না হওয়ার বিষয়েও অসন্তোষ জানান তিনি। বলেন, ‘যখন আদালতের আদেশ মানা হচ্ছে না, তখন আইনের শাসনের প্রশ্ন চলে আসে। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো কার স্বার্থে কাজ করছে, সেটাও এখন প্রশ্নবিদ্ধ।’ সংস্কারের বিষয়ে আমীর খসরু বলেন, ‘সরকার বলে সংস্কার হবে, ঐক্যমত্যে হবে। কিন্তু সেই ঐক্যমত্য কোথায় তৈরি হচ্ছে? কাদের সঙ্গে এই মতৈক্য?’

নানা জল্পনায় বিদেশ যেতে পারলেন আন্দালিব রহমান পার্থর স্ত্রী
অবশেষে বিদেশ গেলেন সাবেক সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থর স্ত্রী শেখ শাইরা শারমিন। সঙ্গে রয়েছেন তার ছোট মেয়ে মদিনা বিনতে আন্দালিব। রোববার দুপুরে টিজি-৩২২ ফ্লাইটে চিকিৎসার জন্য তিনি ব্যাংকক যান। এর আগে মঙ্গলবার ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ তার গতিরোধ করেছিল। তবে কী কারণে তাকে সেদিন যেতে দেয়া হয়নি তা এখনো স্পষ্ট নয়। ধারণা করা হচ্ছে, শেখ পরিবারের সদস্য শেখ হেলালের মেয়ে হওয়ার কারণেই হয়তো তাকে আটকে দেয়া হয়েছিল। এ ব্যাপারে আন্দালিব রহমান পার্থ বলেন, আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, এটা আগেও বলেছি। আইন মেনেই আমার পরিবারের সদস্যরা ব্যাংকক গেছে।

দ্রুত নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করুন, না হয় আন্দোলনে নামবো: ফারুক
দ্রুত নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা না হলে আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য জয়নুল আবদিন ফারুক। তিনি বলেন, এই সরকারকে ক্ষমতায় বসানো হয়েছে সুন্দর একটি নির্বাচন দেয়ার জন্য। দ্রুত সময়ে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করুন। সময় মতো নির্বাচন না হলে আন্দোলন নিয়ে মাঠে নামবো। রবিবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিতে এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। জয়নুল আবদিন ফারুক অভিযোগ করেন, যেসব আকাঙ্ক্ষা নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে জনগণ ক্ষমতায় বসিয়েছে, দীর্ঘ নয় মাসেও সেসব পরীক্ষায় সরকার উত্তীর্ণ হতে পারেনি। শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও বিভিন্ন মন্ত্রণালয় লুটপাট অব্যাহত রয়েছে বলেও অভিযোগ করেন জয়নুল আবদিন ফারুক। এছাড়া সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদকে পালিয়ে যেতে যারা সাহায্য করছেন অবিলম্বে তাদের নাম প্রকাশের দাবিও জানান তিনি।

আর কোনো স্বৈরাচার যেন জনগণের অধিকার কেড়ে নিতে না পারে : তারেক রহমান
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, ‘আগামী দিনে যাতে আর কোনো ফ্যাসিস্ট ও স্বৈরাচার জনগণের অধিকার কেড়ে নিতে না পারে, সেজন্য গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার প্রক্রিয়া, পদ্ধতি প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নের এখনই উপযুক্ত সময়।’ আজ শনিবার রাতে গুলশানে একটি হোটেলে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) ৮ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। তারেক রহমান আরও বলেন, যদিও গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকারের সদিচ্ছা কিংবা সামর্থ্য নিয়ে ইতোমধ্যে হয়ত জনমনে কিছুটা হতাশার সৃষ্টি হয়েছে। তবুও গণতন্ত্রের পক্ষের রাজনৈতিক দলগুলো জনগণের ভোটে, জনগণের কাছে জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠার স্বার্থে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি সমর্থন এখনো অব্যাহত রেখেছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেছেন, বিএনপিসহ বাংলাদেশের পক্ষের গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলো শুরু থেকেই অন্তর্বর্তী সরকারের কর্মপরিকল্পনার রোডম্যাপ ঘোষণার আহ্বান জানিয়ে আসছে। তিনি আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের চিন্তা এবং কর্মপরিকল্পনা সম্পর্কে জনগণ অন্ধকারে থাকায় দেশে রাজনৈতিক অঙ্গনে হয়তবা অস্থিরতা বাড়ছে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এনডিএমের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ। এ সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এনডিএম চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ বলেন, এনডিএম কোনো ড্রয়িং রুমে জন্মগ্রহণ করেনি, আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে এ সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেছি। ঘাম-সংগ্রাম ও বিশ্বাসের মধ্য দিয়ে গঠিত হয়েছি। জনসেবা করাই আমাদের লক্ষ্য। স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতনের আন্দোলনেও রাজপথে থেকে ভূমিকা রেখেছে দলের নেতাকর্মীরা। ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচার আর কখনো বাংলাদেশের মাটিতে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে না।

পরিবারসহ আখতারকে হত্যার হুমকি নিয়ে মুখ খুললেন জারা
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন ও তার পরিবারকে হত্যার হুমকি দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এবার এ বিষয়ে মুখ খুললেন দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারা। শনিবার (১৭ মে) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে আখতার হোসেনের স্ট্যাটাস শেয়ার করে এ বিষয়ে কথা বলেন তিনি। পোস্টে তাসনিম জারা লিখেন, আখতারের নামে হত্যার হুমকি এসেছে। পার্টি গঠনের পর থেকে গুজব, চোখ রাঙানি, চরিত্র হননের চেষ্টা একটার পর একটা চলছে। এসব ঘটনার মধ্যেই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে, আমাদের উপস্থিতি কতটা অস্বস্তিকর তাদের জন্য, যারা পুরোনো ব্যবস্থাকে আঁকড়ে ধরে রাখতে চায়। যারা পরিবর্তন চায় না। এর আগে, একইদিন হত্যার হুমকি নিয়ে ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্য সচিব আখতার হোসেন। পোস্টে তিনি লেখেন, ডাকযোগে আমার গ্রামের বাড়িতে চিঠি পাঠিয়ে আমাকে, আমার পরিবার-পরিজনকে খুন করার হুমকি দিয়েছে। চিঠির প্রেরকের ছদ্মনাম ‘বুলেট’। তিনি লেখেন, চিঠিটা ডাকপিওন গতকাল (শুক্রবার) বড় ভাইয়ের কাছে দেয়। চিঠি পড়ার পর থেকে বাড়ির মানুষেরা চিন্তিত হয়ে আছেন। যেখানে পাবে, সেখানে খুন করবে, ঝামেলায় ফেলবে এমন হুমকি। আখতার লেখেন, বোনাস লাইফ লিড করছি। মৃত্যু কয়েকবার কাছে এসে ফিরে গেছে। মরতে হতে পারে জেনেও প্রতিবাদে পিছপা হইনি, কখনো হবো না। ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ ভরসা। আখতার হোসেন বলেন, যে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই সংগ্রাম করেছি তারা এ চিঠি পাঠাতে পারে বলে প্রাথমিক ধারণা করছি। এটা নিয়ে আমি কোন চিন্তা করছি না। তবে পরিবার কিছুটা শঙ্কিত কারণ তারা রাজনীতি বোঝে না। এ বিষয়ে ওসির সঙ্গে কথা হয়েছে, পুলিশ যেন তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেবে। কাউনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ শাহ বলেন, হত্যার হুমকির চিঠি পাওয়ার বিষয়টি জানার পর তার পরিবারের নিরাপত্তার জন্য পুলিশি তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে।

বাংলাদেশের ইতিহাস হচ্ছে সংগ্রাম, দাসত্ব ও আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে লড়াই : মামুনুল হক
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন, বাংলাদেশের ইতিহাস হচ্ছে দাসত্ব ও আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রামের ইতিহাস। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ কখনও অন্য কোনো দেশের আধিপত্য মেনে নেয়নি এবং ২০২৪ সালে স্বাধীনতার দ্বিতীয় অধ্যায় শুরু হয়েছে। আজ শনিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জাতীয় বীর আবদুল কুদ্দুস মাখন পৌর মুক্তমঞ্চে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশ আয়োজিত এক গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাওলানা মামুনুল হক এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, আমরা দিল্লির দাসত্ব থেকে মুক্ত হয়েছি অন্য কোনো দেশের গোলামি করার জন্য নয়। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ মানবতাবাদী দেশ। যখনই প্রয়োজন, নিপীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি এবং আমাদের সংগ্রাম কখনও অন্য দেশের স্বার্থের পক্ষে নয়। এ সময় তিনি ২০২৪ সালের জুলাই গণহত্যা, শাপলা চত্বর গণহত্যাসহ অন্যান্য হত্যাকাণ্ডের বিচার এবং হেফাজতের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের এক ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। ২০২৪ সালে আমাদের সংগ্রাম নতুন এক দিগন্ত খুলছে, যেখানে দেশের স্বাধীনতা দ্বিতীয়বার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির মাওলানা রেজাউল করিম জালালী, মহাসচিব মাওলানা বেলাল উদ্দিন আহমেদ, যুগ্ম মহাসচিব আল্লামা আহসানুল্লাহ আমির প্রমুখ।
-682969b62c2d5.jpg)
চট্টগ্রাম বন্দর ও করিডর ইস্যুতে প্রয়োজনে রাজপথে নামার ঘোষণা নুরের
চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব বিদেশিদের দেওয়ার সিদ্ধান্ত, রাখাইনে মানবিক করিডর দেওয়ার কথা চিন্তা করছে অন্তর্বর্তী সরকার। তবে এ সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই মানতে নারাজ গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর। প্রয়োজনে রাজপথে লড়াই করার ঘোষণাও দিয়েছেন তিনি। শনিবার রাতে ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে এ কথা বলেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর। ফেসবুক পোস্টে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি বলেন, পরিষ্কার কথা; ১/ বাংলাদেশের অর্থনীতির হৃদপিণ্ড চট্টগ্রাম বন্দরকে বিদেশীদের হাতে কোনভাবেই তুলে দেয়া যাবে না। ২/ করিডরের নামে খাল কেটে কুমির আনা যাবে না। পোস্টের শেষ অংশে অন্তর্বর্তী সরকারকে সতর্ক করে দিয়ে তিনি বলেন, ‘দল নয়, মত নয়, সবার আগে বাংলাদেশ। দেশের স্বার্থে কোন ছাড় নয়, প্রয়োজনে রাজপথে নতুন লড়াই শুরু হবে।’ এর আগে, গত ১৪ মে চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শন করেন প্রধান উপদেষ্টা। পরে সেখানে দেওয়া ভাষণে তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দরকে আন্তর্জাতিক মানের বন্দরে উন্নীত করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিশ্বের খ্যাতিসম্পন্ন বন্দর ব্যবস্থাপনা সংস্থাগুলোকে আমন্ত্রণ জানিয়ে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। অধ্যাপক ইউনূস আরও বলেন, ‘এটি আমাদের জন্য একটি বড় সুযোগ। যদি সরকারের পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়িত হয়, তাহলে দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে এবং হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি হবে। বাংলাদেশের অর্থনীতি বদলাতে হলে চট্টগ্রাম বন্দরই আমাদের আশা। এটি ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। চট্টগ্রাম বন্দর বাংলাদেশের অর্থনীতির হৃৎপিণ্ড। কিন্তু যদি হৃৎপিণ্ড দুর্বল হয়, কোনো ডাক্তারই তা আর ভালো করতে পারে না। তাই একে বিশ্বমানের করতে হবে। বন্দর ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত বৈশ্বিক পর্যায়ের শীর্ষ সংস্থাগুলোকে আগেও ডাকা হয়েছিল, কিন্তু কার্যকর কোনো অগ্রগতি হয়নি।’ তিনি তখন আরও বলেন, ‘এই হৃৎপিণ্ডকে আমাদের প্রতিবেশীদের সঙ্গে সংযুক্ত করতে হবে। এজন্য আমি নেপাল ও ভারতের সাতটি উত্তর-পূর্ব রাজ্যের (সেভেন সিস্টার্স) কথা বলেছি। যদি তারা এতে যুক্ত হয়, তারা উপকৃত হবে, আমরাও হবো। যারা যুক্ত হবে না, তারা পিছিয়ে পড়বে।’

করিডর ও বন্দর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া অন্তর্বর্তী সরকারের কাজ নয়
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, গৃহযুদ্ধকবলিত মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের জন্য ‘মানবিক করিডর’ দেওয়া এবং চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার টার্মিনাল বিদেশি কোম্পানির হাতে দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া অন্তর্বর্তী সরকারের কাজ নয়। তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে করিডর প্রদান কিংবা বন্দর ব্যবস্থাপনা বিদেশির হাতে তুলে দেওয়াটাকেই বেশি প্রাধান্য বলে মনে হচ্ছে। আমরা আবারও স্পষ্ট করে জানিয়ে দিতে চাই, করিডর কিংবা বন্দর দেওয়া না–দেওয়ার সিদ্ধান্ত অন্তর্বর্তী সরকারের কাজ নয়, এই সিদ্ধান্ত নেবে জনগণের ভোটে নির্বাচিত জাতীয় সংসদ বা জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার।’ জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) অষ্টম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারেক রহমান এ কথাগুলো বলেন।শনিবার ঢাকার গুলশানে একটি হোটেলে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হন তারেক রহমান। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের চিন্তা ও কর্মপরিকল্পনা সম্পর্কে জনগণ অন্ধকারে থাকায় দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে হয়তো অস্থিরতা বাড়ছে। বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে প্রতিদিন বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ রাজপথে জড়ো হচ্ছেন। মাত্র ১০ মাসের মাথায় সরকারের ভেতরে ও বাইরে একধরনের অস্থিরতা দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে। সরকার জনগণের ভাষা, আশা–আকাঙ্ক্ষা উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হলে রাজনৈতিক অস্থিরতা বাড়তেই থাকবে।’ দেশে এভাবে অস্থিরতা বাড়লে সরকারের পক্ষে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কষ্টসাধ্য হয়ে পড়বে বলে মনে করেন তারেক রহমান। তিনি অন্তর্বর্তী সরকারকে তাদের সক্ষমতা সম্পর্কে আরও সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে ‘পরিস্থিতি অযথা ঘোলাটে না করে জাতীয় নির্বাচনের সুস্পষ্ট তারিখ ঘোষণার’ দাবি জানিয়েছেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘গণতন্ত্রের পক্ষের রাজনৈতিক দলগুলো, যারা দীর্ঘ দেড় দশক ধরে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন–সংগ্রামে একসঙ্গে আমরা রাজপথে ছিলাম, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সামর্থ্য ও সক্ষমতা সম্পর্কে আমরা এখনো নেতিবাচক মন্তব্য করিনি। আমাদের অবস্থান থেকে আমরা চুপ থাকলেও জনমনে এই সরকারের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন এরই মধ্যে উঠেছে। বহু মানুষ, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এরই মধ্যে কথা বলছেন।’ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চলমান সংকট নিয়েও কথা বলেন তারেক রহমান। তিনি বলেন, ‘সরকার এনবিআরের সংস্কার শুরু করেছে।এনবিআর সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে হয়তো কারও কোনো তেমন দ্বিমত নেই। কিন্তু সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ–আলোচনা, সুষ্ঠু পরিকল্পনা ও পরিণতি চিন্তা না করে তড়িঘড়ি করে সংস্কার শুরু করে দেওয়ায় পুরো বিষয়টি হিতে বিপরীত হয়েছে, যা এরই মধ্যে আমরা সংবাদপত্রের মাধ্যমে পরিষ্কারভাবে দেখতে পাচ্ছি।’ দেশের বিনিয়োগ পরিস্থিতিও আশাব্যঞ্জক নয় বলে মন্তব্য করেন তারেক রহমান। তিনি বলেন, ব্যাপক আয়োজনে বিনিয়োগ সম্মেলন করলেও কাঙ্ক্ষিত বিনিয়োগ কিন্তু আসেনি। দেশি কিংবা বিদেশি বিনিয়োগ পরিবেশের জন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং স্থিতিশীল একটি সরকার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গণতান্ত্রিক বিশ্বে শেষ পর্যন্ত রাজনীতিবিদেরাই রাষ্ট্র পরিচালনা করেন উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, ‘সরকার কিন্তু কোনো একটি এলিট ক্লাব কিংবা করপোরেট প্রতিষ্ঠান নয়। সরকার অবশ্যই একটি রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান। এই রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে দেশের প্রতিটি নাগরিকের সরাসরি অংশগ্রহণ নিশ্চিত থাকতে হবে।’ আগামী দিনে আর কোনো স্বৈরাচার যাতে দেশ ও জনগণের অধিকার কেড়ে নিতে না পারে, সে জন্য গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার প্রক্রিয়া ও পদ্ধতি প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নের এখনই উপযুক্ত সময়। যদিও গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকারের সদিচ্ছা কিংবা সামর্থ্য নিয়ে ইতিমধ্যে হয়তো জনগণের মধ্যে কিছুটা হতাশার সৃষ্টি হয়েছে। তবু গণতন্ত্রের পক্ষের দলগুলো জনগণের ভোটে, জনগণের কাছে জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠার স্বার্থে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি সমর্থন এখনো অব্যাহত রেখেছে। বিএনপিসহ বাংলাদেশের পক্ষের গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলো শুরু থেকেই অন্তর্বর্তী সরকারের কর্মপরিকল্পনার ঘোষণার আহ্বান জানিয়ে আসছে উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, ‘সকল কিছু বিবেচনা করলে আমরা দেখতে পাই, সরকার কিন্তু সেই আহ্বানে সেভাবে সাড়া দেয়নি। সরকার বরং জাতীয় নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট দিন–তারিখ ঘোষণাকে সুকৌশলে ‘‘অল্প সংস্কার’’, ‘‘বেশি সংস্কার’’—এ ধরনের এক অভিনব শর্তের বেড়াজালে বলা যায় আটকে দিয়েছে।’ গণ–অভ্যুত্থানে শহীদদের সংখ্যা ও তালিকা অন্তর্বর্তী সরকার ১০ মাসেও কেন চূড়ান্ত করতে পারল না, সে প্রশ্নও তুলেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, এটা সরকারের সক্ষমতার অভাব নাকি হতাহতদের ব্যাপারে উদাসীনতা; তা দেশের মানুষের একটা বড় জিজ্ঞাসা। এনডিএমের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন দলের মহাসচিব মোমিনুল আমিন, উচ্চ পরিষদ সদস্য পারভেজ খান প্রমুখ। এ ছাড়া বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খানসহ বিভিন্ন দলের নেতা এবং বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকেরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে জুলাই বিপ্লবের বীর যোদ্ধাদের সম্মাননা এবং শহীদ ও আহত যোদ্ধাদের জন্য দোয়ার আয়োজন করা হয়।

যে ভোটের জন্য এত রক্ত ঝরেছে, সে ভোট তো এখনো পেলাম না: রিজভী
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘যে ভোটের জন্য অনেক নেতা–কর্মী ক্রসফায়ারে জীবন দিয়েছেন, গুম হয়েছেন, যে ভোটের জন্য এত রক্ত ঝরেছে, সে ভোট তো আমরা এখনো পেলাম না। ভোটের জন্যই তো এত লড়াই, এত সংগ্রাম। জনগণ যাকে ইচ্ছা তাকে ভোট দেবে, যে দলকে ইচ্ছা সে দলকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করে সরকারে বসাবে। কিন্তু সেটা এখনো কেন ফিরে আসছে না, সেটা নিয়ে এত গড়িমসি কেন?’ আজ শনিবার বিকেলে নরসিংদীর মনোহরদীর ছাদত আলী আদর্শ উচ্চবিদ্যালয় মাঠে বিএনপি আয়োজিত আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনালের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিতে গত ১৫ বছর অসংখ্য মামলায় রিমান্ডে ও কারাগারে থেকেছেন বিএনপির নেতা–কর্মীরা। ওই ত্যাগ স্বীকারের মধ্যে যে ক্ষেত্র প্রস্তুত হয়েছে, তার ওপরই জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনাকে পালাতে হয়েছিল। অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে রুহুল কবির রিজভী আরও বলেন, ‘আপনারা সংস্কারের বিষয়ে বলছেন, আগে সংস্কার সম্পূর্ণ করবেন। কখন সম্পূর্ণ করবেন, কীভাবে সম্পূর্ণ করবেন। সংস্কার পদ্মার পানির মতো, বঙ্গোপসাগরের স্রোতের মতো চলমান। সময়ে সময়ে, যুগে যুগে যখন জনগণের প্রয়োজন, সে অনুযায়ী সংস্কারের স্রোত অব্যাহত থাকবে। সংস্কার একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নয়।’ তিনি আরও বলেন, দেশে নির্বাচিত সরকার থাকলে যে কাজগুলো করতে পারত, সে কাজগুলো আটকে আছে। শেয়ারবাজার অত্যন্ত নাজুক অবস্থায়, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। কোরবানির আগে মসলার দাম বেড়ে গেছে। জবাবদিহিমূলক সরকার এলে জনগণের এসব সমস্যা সমাধান করা সম্ভব হতো। বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক–বিষয়ক সহসম্পাদক আব্দুল কাদির ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও জেলা বিএনপির সভাপতি খায়রুল কবির খোকন, ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান ও ইকবাল হোসেন, জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন প্রমুখ। টুর্নামেন্টের ফাইনালে নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার সাতপাইকা ফুটবল একাদশ ও গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার আলফাজ উদ্দিন মুক্তার ফাউন্ডেশন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। খেলায় ২-০ গোলে সাতপাইকা ফুটবল একাদশ বিজয়ী হয়।
.jpg)
ছাত্রদলে পদ না পেয়ে উত্তাল কুমিল্লা, আগুন বিএনপি কার্যালয়ে
কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপি ও মহানগর কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রদলের সদ্যঘোষিত দক্ষিণ জেলা ও মহানগর কমিটির পদবঞ্চিতদের বিরুদ্ধে। শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে নগরীর কান্দিরপাড় এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করে ওই কার্যালয়ের সামনে স্লোগান দিয়ে আসবাবপত্র ভাঙচুর করে আগুন দেয় বলে অভিযোগ কমিটির একাংশের। পরে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের ব্যানারে শনিবার সন্ধ্যায় বিক্ষোভকারীরা কান্দিরপাড়ে মিছিল বের করে। পরে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে ‘অবৈধ কমিটি মানি না, মানবো না; জ্বালোরে জ্বালো, আগুন জ্বালো; অ্যাকশন টু অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’ স্লোগান দেয় পদবঞ্চিত ছাত্রনেতারা। এ সময় আসবাবপত্র ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয় তারা। বিক্ষোভে অংশ নেওয়া কয়েকজন জানান, বিগত ১৭ বছরে যারা আওয়ামী লীগের দ্বারা নির্যাতন ও হামলা-মামলার শিকার হয়েছে, তাদেরকে বাদ দিয়ে যে কমিটি করা হয়েছে তা আমরা মানি না। কমিটি বাতিল করে ত্যাগী নেতাদের সমন্বয় করে নতুন কমিটি দেওয়া হবে না, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে। ছাত্রদলের নেতারা বলেন, দীর্ঘ ৭ বছর পর গত বৃহস্পতিবার কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটিতে কাজী জোবায়ের আলম জিলানীকে সভাপতি ও এমদাদুল হক ধীমানকে সাধারণ সম্পাদক করে দক্ষিণ জেলা ছাত্রদল এবং নাহিদ রানাকে সভাপতি ও ফায়াজ রশিদ প্রিমুকে সাধারণ সম্পাদক করে মহানগর ছাত্রদলের আংশিক ওই দুটি কমিটি করা হয়। ওই রাতেই দুই কমিটিতে পদবঞ্চিতরা ক্ষোভে ফুঁসে উঠে এবং নগরীর কান্দিরপাড়ে কয়েক দফা বিক্ষোভ মিছিল করে। তারা পূবালী চত্বরে ঘণ্টাব্যাপী সড়ক অবরোধ করে। তারা সদ্যঘোষিত কমিটির বিলুপ্তির দাবিতে শনিবার সন্ধ্যায় ফের বিক্ষোভ মিছিল বের করে। কুমিল্লা মহানগর ছাত্রদলের সদ্যবিদায়ী সভাপতি ফখরুল ইসলাম মিঠু বলেন, কমিটি ঘোষণার পর থেকেই দক্ষিণ জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা গত তিন দিন ধরে দফায় দফায় বিক্ষোভ মিছিল করছে। এরই মাঝে পদপ্রাপ্ত এবং পদবঞ্চিতদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। তবে বিএনপি কার্যালয়ে কারা আগুন দিয়েছে তা আমার জানা নেই। কুমিল্লা মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ মোল্লা টিপু বলেন, কার্যালয়টি দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যক্ত ছিল। সম্প্রতি আমরা এ অফিস সংস্কারের উদ্যোগ নিয়ে ছিলাম। ভেতরে কারা আগুন দিয়েছে তা নিশ্চিত হতে পারিনি।কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মহিনুল ইসলাম বলেন, বিএনপি কার্যালয়ের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ এবং কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের বিষয়টি তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তারপরও বিষয়টি আমরা তদন্ত করছি। সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কে বা কারা আগুন দিয়েছে- তা জানা যায়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের ভিডিও ভাইরাল, সমন্বয়ক পদ থেকে বহিষ্কার
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন (বৈছাআ) চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির মুখপাত্র ফাতেমা খানম লিজাকে পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে দলটির মহানগর সংগঠক শাহরিয়ার সিকদারকে বহিষ্কার করা হয়েছে। শনিবার (১৭ মে) সংগঠনটির মহানগর কমিটির আহ্বায়ক আরিফ মঈনুদ্দিন ও সদস্য সচিব নিজাম উদ্দিনের সই করা পৃথক দুটি আদেশে এসব সিদ্ধান্ত জানানো হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির আহ্বায়ক আরিফ মঈনুদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। একটি আদেশে বলা হয়, সম্প্রতি ফাতেমা খানম লিজার মাদক সেবন ও অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের ছবি-ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের রক্ত ও ত্যাগের ভিত্তিতে গঠিত একটি সংগঠনের প্রতিনিধির এমন আচরণ জনমনে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। তাই সংগঠনের ভাবমূর্তি রক্ষার্থে তাকে মুখপাত্র পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলো। আরেকটি আদেশে বলা হয়, সম্প্রতি চাঁদাবাজির অভিযোগে ডবলমুরিং থানায় আটক হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে শাহরিয়ার সিকদারকে সংগঠক পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এসব ঘটনায় সংগঠনটির অভ্যন্তরে ও বিভিন্ন সামাজিক মহলে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। সংগঠনের নেতারা জানান, সংগঠনের ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ন রাখতে এবং মূল্যবোধ রক্ষায় এ ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।

আ.লীগ নেতাসহ ২ শতাধিক ব্যবসায়ীর এনসিপিতে যোগদান
মাদারীপুরের রাজৈরে আওয়ামী লীগ নেতা, সাবেক পৌর কাউন্সিলর ও মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির দুই শতাধিক সদস্য জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-তে যোগ দিয়েছেন। শনিবার (১৭ মে) দুপুরে রাজৈর উপজেলার টেকেরহাট বন্দরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তারা আনুষ্ঠানিকভাবে এনসিপিতে যোগদান করেন। এসময় খালিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও টেকেরহাট মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আমিনুল হাওলাদার, রাজৈর পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর রাহিম হাওলাদারসহ বহু সমিতি সদস্য এনসিপি নেতাদের হাতে ফুল তুলে দিয়ে দলে যোগ দেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন রাজৈর উপজেলা এনসিপি প্রতিনিধি মহাসিন ফকির, জাবের হাওলাদার, আজগর শেখ, তরিকুল ইসলাম, মৎস্য ব্যবসায়ী বাচ্চু বাঘা, স্থানীয় রাজিব বাঘা, মনির ফকিরসহ উপজেলা এনসিপির নেতাকর্মীরা। জাতীয় নাগরিক পার্টিতে (এনসিপি) সদ্য যোগদানকৃত খালিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও টেকেরহাট মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আমিনুল হাওলাদার বলেন, আমি ৫ আগস্টের আগেই আওয়ামী লীগ ত্যাগ করেছি। ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের লক্ষ্যে আমার ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে পড়ুয়া দুই ছেলে আন্দোলন করেছে। আমি তাতে সমর্থন করেছি। এনসিপি দল গঠনের পর থেকে দেখছি সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজসহ বিভিন্ন দুর্নীতি অপকর্মের বিরুদ্ধে তারা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। দেশকে ভালো একটা পর্যায়ে পৌঁছে দিতে তারা কাজ করে যাচ্ছে। তাদের এই আদর্শে আদর্শিত হয়ে আজকে এনসিপিতে যোগদান করলাম। আমাদের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির যত নেতাকর্মী ও সদস্য আছে সবাইকে নিয়ে এনসিপির একটা দুর্গ গড়ে তুলব এবং তাদের আমি সর্বোতভাবে সহযোগিতা করব। এনসিপি রাজৈর উপজেলার প্রতিনিধি মহাসিন ফকির বলেন, আমাদের সততা ও আদর্শ দেখে আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে আজ খালিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল হাওলাদার এবং রাজৈর পৌরসভার ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রাহিম হাওলাদারসহ টেকেরহাট মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সবাই এনসিপিতে যোগদান করেছেন। এনসিপি রাজৈর উপজেলার আরেক প্রতিনিধি জাবের হাওলাদার বলেন, ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হয়েছে ভারতের গোলামী করার জন্য না। এ দেশে আর যেন কোনো ফ্যাসিস্ট তৈরি না হয়, আর কেউ যেন এক নায়কতন্ত্র কায়েম করতে না পারে, জুলুম-নির্যাতন, সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজি করতে না পারে সেজন্য আমরা সকল ছাত্র-জনতা, আলেম-ওলামা ঐক্যবদ্ধ হয়ে সেটা প্রতিহত করব। আমরা নতুন রাজনৈতিক বন্দবস্ত গড়ে তুলতে চাই বাংলাদেশে।

করিডরের নামে আরেকটা ইসরায়েল তৈরি হতে দেওয়া যাবে না: ফজলুর রহমান
আন্তর্জাতিক করিডরের নামে সীমান্ত উন্মুক্ত করে দিয়ে দেশের ভৌগোলিক নিরাপত্তা হুমকির মুখে ফেলা হচ্ছে বলে আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট মো. ফজলুর রহমান। তিনি বলেন, এই করিডর শুধু বাণিজ্যের নয়, এটি একটি ষড়যন্ত্র। আরাকানদের করিডর দিয়ে আমাদের সীমানায় আরেকটা ইসরায়েল গড়ে তোলার সুযোগ তৈরি করা হচ্ছে। এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। শনিবার (১৭ মে) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে কিশোরগঞ্জ সাংবাদিক ফোরাম, ঢাকার দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে এসব কথা বলেন ফজলুর রহমান। তিনি বলেন, আজ সব বিষয়ে আলোচনা হয় কিন্তু নির্বাচন নিয়ে কোনো আলোচনা নেই। এটি সুস্থ রাজনীতির সংকটের ইঙ্গিত দেয়। অনির্বাচিত শাসন দীর্ঘমেয়াদে একটি জাতির জন্য ধ্বংস ডেকে আনে। আন্তর্জাতিক করিডরের বিরোধিতা করে বিএনপি চেয়ারপারসনের এ উপদেষ্টা বলেন, আমরা দেখছি সীমান্ত উন্মুক্ত করে দেওয়া হচ্ছে অথচ দেশের জনগণের নিরাপত্তা ও স্বার্থ উপেক্ষিত। করিডরের নামে বাস্তবে একটি ভিন্নধর্মী শক্তিকে স্থান দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। আরাকানদের প্রবেশের সুযোগ দিয়ে যেন সীমান্তবর্তী এলাকায় একটি নতুন ‘ইসরায়েল’ গড়ে তোলা হয়, এমন শঙ্কা জনগণের মধ্যে রয়েছে। এটা দেশের সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে স্পষ্ট ষড়যন্ত্র। পর্যটন খাতে সরকারের ব্যর্থতা তুলে ধরে ফজলুর রহমান বলেন, সেন্টমার্টিনে সাধারণ মানুষ যেতে পারছে না। ফেরি ও স্টিমার অকার্যকর হয়ে পড়ে আছে। স্থানীয়রা হাজার কোটি টাকার ব্যবসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এটি শুধু অব্যবস্থা নয়, বরং একটি পরিকল্পিত বঞ্চনার অংশ, যা রাষ্ট্রীয় অবহেলার ফল। জাতীয় ঐক্যের ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে জাতীয় ঐক্য ছাড়া বিকল্প নেই। বিভাজনের রাজনীতি যদি বন্ধ না হয় এবং স্বচ্ছ নির্বাচন ও সমঅধিকারের পরিবেশ নিশ্চিত না করা হয়, তাহলে রাষ্ট্র কাঠামো ভেঙে পড়বে। এসময় ভৌগোলিক নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুস সালাম বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে আমি জমি কিনতে পারব না কেন? এটা তো আমারই দেশ। অথচ ভারতের স্বার্থে করিডর দেওয়া হচ্ছে। লাখো মানুষ পানির সংকটে ভুগছে, সেগুলো নিয়ে সরকারের কোনো চিন্তা নেই। তিনি সতর্ক করে বলেন, আমরা চাই না এই দেশটা গাজায় রূপান্তরিত হোক। আবার এটাও চাই না, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী গিয়ে যেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। আমাদের জাতীয়তাবাদী চেতনায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে এগিয়ে যেতে হবে। এসময় আরও বক্তব্য দেন কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেল, সাবেক স্বাস্থ্য সচিব আব্দুল মান্নানসহ আরও অনেকে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কিশোরগঞ্জ সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি রাজেন্দ্র চন্দ্র দেব মন্টু। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সম্মেলন আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক হামিদ মোহাম্মদ জসিম এবং ফোরাম সেক্রেটারি এরফানুল হক নাহিদ।

গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার একমাত্র উপায় দ্রুত জাতীয় নির্বাচন: ড. আব্দুল মঈন খান
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেছেন, ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের একমাত্র উপায় হলো দ্রুত ও সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচন। কারণ, গণতন্ত্রের জন্যই আমরা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছি।’ শনিবার (১৭ মে) বেলা ১১টায় শেরেবাংলা নগরে জাতীয়তাবাদী বাউল দলের ১৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে সারা দেশ থেকে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী অংশ নেন। ড. মঈন খান বলেন, ‘১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জনের পর একটি দল গণতন্ত্র ধ্বংস করে একদলীয় বাকশাল কায়েম করেছিল। তারা সব সময় জনগণের মতামত উপেক্ষা করেছে। ফলে ২০২৪ সালে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে তাদের পতন ঘটে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপি প্রতিহিংসার রাজনীতি চায় না। বিএনপি সব গণতন্ত্রকামী মানুষকে সঙ্গে নিয়ে দেশ গঠন করতে চায়।’ জিয়াউর রহমান সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘শহীদ জিয়া বঙ্গভবনে বসে রাজনীতি করেননি; তিনি তৃণমূলে ছুটে গেছেন এবং দলকে সংগঠিত করেছেন। তিনি ছিলেন একজন অনন্য প্রতিভার অধিকারী। শিল্প ও সাহিত্যকে পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন। গ্রামীণ শিল্প, গান ও প্রতিভাকে কাজে লাগাতে গ্রাম থেকে শিল্পী এনেছেন এবং বিদেশ সফরে বাউলদের সঙ্গে নিয়েছেন। তিনি শহরের নয়, গ্রামের আদর্শ লালন করতেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘জিয়াউর রহমান ২৬ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেন এবং নিজের জীবনের পরোয়া না করে নেতৃত্ব দেন।’ অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয়তাবাদী বাউল দলের সভাপতি রফিকুল ইসলাম তুহিন, মেহেদী হাসান তুহিন এবং জাতীয়তাবাদী তাঁতী দলের যুগ্ম মহাসচিব ড. কাজী মনিরসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।

বিএনপির রাজনীতি চলে আওয়ামী লীগের টাকায়: হাসনাত আব্দুল্লাহ
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, আওয়ামী লীগের কার্যক্রম আমরা নিষিদ্ধ করতে পেরেছি। কিন্তু আওয়ামী লীগের অর্থ ব্যবস্থা এখনও ধরা-ছোঁয়ার বাইরে রয়েছে। কুমিল্লায় অনেক উপজেলার আওয়ামী লীগের রাজনীতি যেমন আওয়ামী লীগের টাকায় চলে, তেমনি বিএনপির রাজনীতিও আওয়ামী লীগের টাকায় চলে। এখানে যারা বিএনপির নেতা রয়েছেন আপনারা আমাদেরকে শত্রু মনে করবেন না। এটা আপনাদের ভালোর জন্য বলছি। কুমিল্লায় অনেক উপজেলা আছে যেখানে সব দলের রাজনীতি এখন আওয়ামী লীগের টাকার কাছে বিক্রি হয়ে গিয়েছে। শুক্রবার (১৬ মে) সন্ধ্যায় জুলাইয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে কুমিল্লায় আহত, শহীদ ও বীর সন্তানদের সম্মানে জুলাই সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। হাসনাত আব্দুল্লাহ আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের উদ্দেশ্যে বলেন, যারা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত রয়েছে তারা যখন কোর্টে যায় কোন বিচারক জামিন দেয়? সেগুলোর পিছনে কাদের ইন্ধন রয়েছে সেগুলো আপনি আমাদের সামনে প্রকাশ করুন। আপনি বারবার বলছেন, আপনাকে ভিলেন বানানো হচ্ছে, আপনাকে যদি কেউ কাজ করতে না দেয় কেউ বাধা দেয় কেউ যদি কোন ধরণের প্রেশারে রাখে সেটা আপনি জাতির সামনে উপস্থাপন করুন। হাসনাত আইন উপদেষ্টাকে উদ্দেশ্যে করে আরও বলেন, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যারা জড়িত তারা জামিনে বের হয়ে শহীদদের বাড়ির সামনে ঘোরাফেরা করছে- এটা যেমন আমাদের ব্যর্থতা তেমনি আসিফ নজরুল স্যারেরও ব্যর্থতা। আমরা আপনার কাছে জানতে চাই, কথা ছিল জানুয়ারি মাসেই দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হবে। এখন মে মাস, এখন পর্যন্ত কেন ট্রাইব্যুনাল গঠন হয় নাই। খুনিদের বিচার হচ্ছে এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান ও প্রথম সংস্কার। হাসনাত আরও বলেন, আমরা সংস্কার ও নির্বাচন দুটাই চাই, তবে বিচার হবে সংস্কারও হবে। এই সংস্কার প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আমাদের নির্বাচন হবে। মানবিক করিডর নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করার দাবি জানিয়ে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে মানবিক করিডোর বিষয় অবস্থান সুস্পষ্ট করতে হবে। আমরা কোন ধোঁয়াশার মধ্যে থাকতে চাই না। আমরা আমাদের দেশের সার্বভৌমত্ব কোন পরাশক্তির কাছে বন্ধক দিব না। এখানে ভারতের আধিপত্য থাকবে না, পিণ্ডির আধিপত্য থাকবে না। এখানে কোন মার্কিন আধিপত্য থাকবে না। বাংলাদেশকে কোন পরাশক্তির আধিপত্যে আমরা থাকতে দিব না। আওয়ামী লীগের সহযোগী ১৪ দলের বিষয়েও অন্তর্বর্তী সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করার দাবি জানিয়েছেন হাসনাত আব্দুল্লাহ। ১৪ দলের বিষয়ে এ সরকারের কি চিন্তা সেটি স্পষ্ট করতে হবে। আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সহযোগিতা করতে চাই। কিন্তু আমরা আশাহত। অনেক কাজে আমরা এখনো বিচার দেখছি না, আহতদের এখনো পর্যন্ত পুনর্বাসন হয়নি, কর্মসংস্থান হয়নি, এখনো পর্যন্ত বিচারের কোন অগ্রগতি হচ্ছে না। আমরা যতক্ষণ পর্যন্ত না রাস্তায় নেমে এসেছি ততক্ষণ পর্যন্ত আপনাদের কোন পদক্ষেপ দেখি নি।

‘মুলা না বোতল’, জবির আন্দোলনে অংশ নিয়ে দীপ্তির স্লোগান
আবাসন সংকট নিরসনসহ চার দফা দাবিতে টানা তৃতীয় দিনের মতো রাজপথে নেমেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার (১৬ মে) বিকাল থেকে রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে গণঅনশন শুরু করেছেন তারা। তাদের এ কর্মসূচিতে জবির নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী এবং আলোচিত টিভি উপস্থাপিকা দীপ্তি চৌধুরীর দেখা মিলেছে। সেখানে বিভিন্ন প্রতিবাদী স্লোগান দিতে দেখা গেছে তাকে। এর মধ্যে তার একটি স্লোগান সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সে স্লোগানটি হচ্ছে-’মুলা না বোতল’। সামাজিক মাধ্যমে তার এই স্লোগানের মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কেউ স্লোগানের ভিডিও ক্লিপের নিচে ‘বোতল, বোতল’ কমেন্ট করেছেন। আবার কেউ বলেছেন, ‘বেশি বাড়াবাড়ি করা ভালো না’। এদিকে জবি শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি সংহতি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. রইস উদ্দীন ঘোষণা দিয়েছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সব অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের চার দফা হলো- আবাসন সুবিধা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে আবাসন বৃত্তি কার্যকর করতে হবে। এছাড়া ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কোনোরকম কাটছাঁট ছাড়াই অনুমোদন করতে হবে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের প্রকল্প পরবর্তী একনেক সভায় অনুমোদন করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করতে হবে। শিক্ষক নিপীড়নে জড়িত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে বিচারের আওতায় আনতে হবে।

হুসাইনকে বাসায় দাওয়াত দিলেন তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ
পানির বোতল ছুঁড়ে মারা শিক্ষার্থীকে বাসায় আমন্ত্রণ জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম। শুক্রবার বিকেলে বোতল নিক্ষেপের ঘটনায় শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। এরপর ডিবি অফিসে শিক্ষার্থী ও তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন তথ্য উপদেষ্টা। আন্দোলন শেষে তিনি হুসাইনকে বাসায় আসার দাওয়াত দেন। এর আগে দুপুরে তিনি হুসাইনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে অভিভাবকদের জিম্মায় হস্তান্তরের অনুরোধ জানিয়েছিলেন। শুক্রবার সন্ধ্যার পর তথ্য উপদেষ্টার ফেসবুক পেজে মোহাম্মদ হুসাইন এবং তার মায়ের সঙ্গে দাঁড়ানো ছবি শেয়ার করে এসব তথ্য জানানো হয়। ওই ফেসবুক পোস্টে তথ্য উপদেষ্টা বলেন, শিক্ষা উপদেষ্টা জানিয়েছেন আর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যার সমাধান নিয়ে সরকারের স্পষ্ট রোডম্যাপ জানানো হবে। জবির শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট দ্রুতই সমাধান হোক। উল্লেখ্য, কয়েকটি দাবিতে আন্দোলনরত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে গত বুধবার রাত ১০টার পর কাকরাইল মসজিদের সামনে যান তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। সেখানে তিনি কথা বলার একপর্যায়ে একটি প্লাস্টিকের পানির বোতল উড়ে এসে তাঁর মাথায় পড়ে। এরপর আর কথা না বলে সেখান থেকে চলে যান মাহফুজ আলম।

জুলাই ঘোষণাপত্রের সময়সীমা স্মরণ করিয়ে দিলেন হাসনাত সরকারকে
ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে তরুণদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দাবি হয়ে ওঠে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ প্রকাশ। তবে ৯ মাস পার হলেও এখনো সেই প্রতীক্ষিত ঘোষণাপত্র প্রকাশ করতে পারেনি সরকার। সবশেষ গত ১০ মে ছাত্র-জনতার গণদাবির মুখে পতিত আওয়ামী লীগের সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে অন্তর্বর্তী সরকার। একইসঙ্গে তারা জানায়, আগামী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ প্রকাশ করা হবে। সেই ঘোষণার চার দিন পার হয়েছে ইতোমধ্যে। বিষয়টি মনে করিয়ে দিয়েছেন শেখ হাসিনার পতনের সময় সক্রিয় ভূমিকা রাখা জাতীয় নাগরিক পার্টির শীর্ষ নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ। শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ‘জুলাই বিপ্লব’-এর সময়কার একটি ভিডিও শেয়ার করেন হাসনাত। ভিডিওতে একজন বক্তা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দমন-পীড়নের চিত্র তুলে ধরেন। পোস্টের ক্যাপশনে হাসনাত লেখেন— ‘জুলাই ঘোষণাপত্র দেওয়ার আর বাকি ২৬ কর্মদিবস।’ এর আগে ঘোষণাপত্র প্রকাশের তারিখ একাধিকবার পিছিয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের প্রায় পাঁচ মাস পর, গত ৩১ ডিসেম্বর শহীদ মিনারে ছাত্ররা একটি আনুষ্ঠানিক ঘোষণাপত্র প্রকাশ করতে উদ্যোগ নেয়। কিন্তু তার আগের দিন রাতে সরকারের জরুরি প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, সরকার নিজেই ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ প্রকাশ করবে। সে সময় ছাত্র-জনতা কর্মসূচি স্থগিত করলেও ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দেয়। কিন্তু প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ হয় সরকার। এবার ফের আন্দোলনের মুখে ৩০ কার্যদিবসের সময় ঘোষণা করেছে সরকার। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সময়ের মধ্যেই ঘোষণাপত্র না এলে নতুন করে ছাত্র-জনতার রাস্তায় নামার সম্ভাবনা রয়েছে।
.png)
লাইসেন্স বাতিলে অনড় ফরহাদ মজহার, বিটিআরসি ঘেরাওয়ের আল্টিমেটাম
এক সপ্তাহের মধ্যে ফ্যাসিবাদের সহযোগীদের লাইসেন্স বাতিল না করা হলে বিটিআরসি ঘেরাও করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহার। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের শিথিলতা দেশের জন্য এক ভয়ানক সংকট ডেকে এনেছে। বিটিআরসি ও সংশ্লিষ্ট অনেক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন ধরে তথ্যপ্রযুক্তির অপব্যবহারের মাধ্যমে জনগণের ওপর নজরদারি চালিয়ে এসেছে, যা ফ্যাসিস্ট ক্ষমতার প্রত্যক্ষ সহযোগিতা। রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে শুক্রবার (১৬ মে) ‘ফ্যাসিস্টবিরোধী জুলাই নেটওয়ার্ক’ আয়োজিত এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমনটা বলেন তিনি। বিটিআরসিকে আওয়ামী স্বৈরাচার মুক্ত করতে এদিন প্রতিবাদ সমাবেশ আয়োজন করে সংগঠনটি। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ফ্যাসিবাদী সহযোগীদের বিচারে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) এক সপ্তাহ সময় দিয়েছেন কবি ও বুদ্ধিজীবী ফরহাদ মজহার। তিনি বলেন, নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে ব্যবস্থা না নিলে বিটিআরসিকে ঘিরে কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। ফ্যাসিস্টের সহযোগীদের লাইসেন্স বাতিল না করলে বিটিআরসি ঘেরাওয়ের হুমকিপানিদূষণ রোধ করবে ঢাবি অধ্যাপকের নতুন প্রযুক্তিফরহাদ মজহার বলেন, যে ফ্যাসিস্ট শাসন আমরা অতিক্রম করেছি, তার প্রযুক্তিগত অবকাঠামো ও নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা এখনো বহাল রয়েছে। ব্যবসা, যোগাযোগ এবং প্রযুক্তির প্রতিটি স্তরে সেই কর্তৃত্ববাদী ছায়া স্পষ্টভাবে বিদ্যমান। এটি মেনে নেওয়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, যদি আওয়ামী লীগকে ফ্যাসিস্ট শক্তি হিসেবে চিহ্নিত করে নিষিদ্ধ করা হয়ে থাকে, তাহলে তাদের সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলো, বিশেষ করে যেগুলো বিটিআরসির অনুমোদনে পরিচালিত, সেগুলোর লাইসেন্সও বাতিল করতে হবে। অন্যথায় জনগণ সরকারের সদিচ্ছা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করবে। হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে ফরহাদ মজহার বলেন, আমরা অপেক্ষা করব মাত্র সাত দিন। এর মধ্যে যদি কোনো দৃশ্যমান ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে আমরা বিটিআরসির সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করব এবং তখন লিখিত আদেশ হাতে নিয়েই মাঠ ছাড়ব। সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন কবি ও চলচ্চিত্র নির্মাতা মোহাম্মদ রোমেল, লেখক জাহিদ জগৎ, মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভুইয়া, গণআকাঙ্ক্ষা মঞ্চের প্রতিনিধি আব্দুল মজিদ অন্তর, জুলাই নেটওয়ার্কের আহ্বায়ক মো. আবুল কাশেম, লেখক উদয় হাসান, সফটওয়্যার প্রকৌশলী জাহিদুল ইসলাম নাহিদ এবং রাজনৈতিক কর্মী দেলোয়ার হোসেন।