
ড. মোশাররফের নেতৃত্বে যমুনায় যাবে বিএনপির প্রতিনিধি দল
রাজনৈতিক অস্থিরতায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগের গুঞ্জনের মধ্যে তাঁর সঙ্গে বৈঠকের শিডিউল পেয়েছে বিএনপি। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল আজ শনিবার (২৪ মে) সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় যাবে। সকালে বিএনপির পক্ষ থেকে এই তথ্য জানানো হয়েছে। এর আগে শুক্রবার রাতে বৈঠকের আমন্ত্রণ পাওয়ার বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। বিএনপি মহাসচিব চিকিৎসার জন্য বর্তমানে থাইল্যান্ডে রয়েছেন। এজন্য দলের স্থায়ী কমিটির জ্যেষ্ঠ সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন। প্রতিনিধি দলে আমীর খসরু মাহমুদ, মির্জা আব্বাস, সালাহউদ্দিন আহমেদসহ কয়েকজন থাকতে পারেন বলে জানা গেছে। রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে গত বৃহস্পতিবার ড. মুহাম্মদ ইউনূস পদত্যাগ করবেন বলে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। এর মধ্যেই বিএনপি একাধিকবার সরকারপ্রধানের সাক্ষাৎ চেয়ে পায়নি বলে খবর বের হয়। এর মধ্যেই শুক্রবার রাতে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে বৈঠকের শিডিউল ঠিক করে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। আজ সন্ধ্যায় দুই দলের সঙ্গে পৃথক বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।

বাংলাদেশে আর কোনো এক-এগারো হবে না : রাশেদ খান
বাংলাদেশে আর কোনো এক-এগারো হবে না বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান। শনিবার (২৪ মে) সকালে ফেসবুকে এক পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন। পোস্টে রাশেদ খান লেখেন, ‘বাংলাদেশে আর কোনো ১/১১ হবে না। এসব গুজব ছড়িয়ে মূলত জনগণকে বিভ্রান্ত ও আতঙ্কিত করা হচ্ছে। এসব কথা যারা বলছে, তারাই মূলত ১/১১ চায় কি না, সেটি নিয়ে সন্দেহ। কারণ তাদের আষ্টেপৃষ্ঠে আছে ১/১১ এর কুশীলবরা। তাদের পরামর্শেই এসব আতঙ্ক ছড়ানো হচ্ছে কি না, সেটি নিয়ে সন্দেহ সংশয় থেকে যায়।’ তিনি আরও লেখেন, ‘বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক পথে যাত্রা কেউ থামাতে পারবে না, ইনশাআল্লাহ। আমাদের সবার প্রত্যাশা ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বেই ঐক্যমতের ভিত্তিতে রাষ্ট্র সংস্কার প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পথে যাত্রা শুরু করবে এবং নতুন ইতিহাস রচনা করবে। আর সেজন্য রাজনৈতিক সহনশীলতা ও ঐক্য অত্যন্ত জরুরি।’

১৮ কোটি মানুষের গর্বের প্রতীক আপনি, প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ চাইনা : ফারুক
প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক বলেছেন, প্রফেসর ড. ইউনূস, আপনি শুধু একজন ব্যক্তি নন, আপনি বাংলাদেশের গর্বের প্রতীক। আপনি ১৮ কোটি মানুষের প্রতিনিধিত্ব করেন। আমরা আপনার পদত্যাগ চাই না। আপনি নির্বাচন প্রক্রিয়ায় এগিয়ে যান। বিএনপি আপনার সরকারের প্রতি আস্থাশীল। আজ শুক্রবার (২৩ মে) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘অপরাজেয় বাংলাদেশের’ আয়োজনে ‘জাতীয় নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র রুখে দাঁড়াও দেশবাসী’ শীর্ষক প্রতিবাদ সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি। জয়নাল আবেদীন ফারুক বলেন, স্বৈরাচারকে হটিয়ে ড. ইউনূসকে আমরাই এনে ক্ষমতায় বসিয়েছি। তিনি শুধু দেশের নয়, বিশ্বের সম্মানিত ব্যক্তি। তাকে নিয়ে আমরা গর্ব করি। তাকে অবমূল্যায়ন করা উচিত নয়। যিনি গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন, তিনি বাংলাদেশের গর্ব। আমরা তার প্রতি আস্থা ও সমর্থন অব্যাহত রাখব। তিনি বলেন, ড. ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত সরকারের ভেতরে যারা ষড়যন্ত্র করছে তাদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। কারণ এ সরকার ব্যর্থ হলে দেশের মানুষকেই চরম ভোগান্তিতে পড়তে হবে। বিতাড়িত স্বৈরাচার মাথাচাড়া দিয়ে দাড়াঁবে। তিনি বলেন, বিএনপি নির্বাচন চায় দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আনতে। প্রধান উপদেষ্টার কথায় বুঝেছি তিনিও আন্তরিক। কিন্তু বিভিন্ন অজুহাতে কারা নির্বাচন বিলম্বিত করতে চান তাদের চিহ্নিত করা প্রয়োজন। ফারুক বলেন, একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আপনাদের দায়িত্ব দিয়েছিলাম। ৯ মাস হয়ে গেল। এখনো রোড় ম্যাপ পেলামনা। নিবার্চনের রোডম্যাপ দেওয়া হচ্ছে না। এখনো নির্বাচনের তপশিল ঘোষণা করা হয়নি। আশা করি বিবেচনায় নেবেন। আমরা এই প্রশ্নগুলো অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মতো মহান ব্যক্তির কাছেই রাখলাম।

শিগগির জাতীয় নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতার পদত্যাগ
অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা তুলে ধরে ও শিগগির জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সদস্য আবু হুরায়রা তানজিম পদত্যাগ করেছেন। শুক্রবার (২৩ মে) তার ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে স্ট্যাটাস দিয়ে পদত্যাগের বিষয়টি জানান। আবু হুরায়রা তানজিম নিকোশিয়া ফিলিপস বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী। পদত্যাগের ঘোষণা দিয়ে তিনি তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘আমি দ্রুত জাতীয় নির্বাচনকে দেশের জন্য কল্যাণকর ভেবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, নারায়ণগঞ্জ জেলা সংগঠক কমিটির সদস্যপদ থেকে পদত্যাগ করছি।’ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কমিটি নিয়ে সমালোচনা করে তিনি লেখেন, ‘আমরা জুলাই অভ্যুত্থানে সরাসরি জড়িত ছিলাম। সকল শ্রেণি-পেশার, রাজনৈতিক দল, অরাজনৈতিক ব্যক্তি, ছাত্র-জনতার সমন্বয়ে হাসিনার পতন হয়েছে। কিন্তু বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কমিটি হয়েছিল কিছু পছন্দের মুষ্টিমেয় মানুষের সমন্বয়ে। হাসিনাবিরোধী আন্দোলনে যেমন প্রতিটা শ্রেণির লোক ছিল, হাসিনার পতনের ওপর গড়ে ওঠা এই সংগঠনে সকলে ছিল না।’ দেশের অর্থনীতির ভঙ্গুর অবস্থার কথা উল্লেখ করে তিনি লেখেন, ‘দেশের অর্থনীতির এমনিতেই ভঙ্গুর অবস্থা। তার উপর আবার বিগত মাসগুলোতে বড় কোনো বৈদেশিক সংস্থাকে এ দেশে বিনিয়োগ করতে না দেখে আমরা অত্যন্ত হতাশ! হাসিনার পতনের পর সবার মুখে একটাই কথা, “সংস্কার”। একটা দেশ সংস্কারের পূর্বশর্ত হচ্ছে সেই দেশের অর্থনীতি ঠিক করা। আর অর্থনীতি ঠিক করতে হলে আপনার বিদেশি বিনিয়োগ লাগবে, বিভিন্ন প্রজেক্টকে সংসদের মাধ্যমে বিল পাস করিয়ে নিতে হবে। যেগুলো একটা নির্বাচিত সরকার ছাড়া অসম্ভব। দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন প্রকল্প কখনোই অস্থায়ী সরকার করতে পারবে না।’ অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতার কথা উল্লেখ করে তিনি লেখেন, অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের দীর্ঘ ৯ মাস হলেও দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখনও স্বাভাবিক হওয়া তো দূরের কথা, তার ধারেকাছেও যেতে পারেনি। অথচ অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করাটা এই সরকারের অন্যতম মূল উদ্দেশ্য হওয়ার কথা ছিল। এ ছাড়া সরকার আওয়ামী লীগের বিচার করতে পারেনি, আহতদের পুনর্বাসন করতে পারেনি। এককথায়, একটা অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে দেশের জনগণ হাজারো জীবন দানের পর যেই আশা-ভরসা নিয়ে তাদের ক্ষমতায় বসিয়েছিল তার এক ভাগও এই সরকার পূরণ করতে পারেনি। মানতে কষ্ট হলেও এটাই বাস্তব।’ শিগগিরই জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি লেখেন, ‘প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস সাহেব তার সম্মান অক্ষুণ্ন রেখে, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে দ্রুত একটি স্বচ্ছ জাতীয় নির্বাচন জাতিকে উপহার দেবেন। এর মাধ্যমে দেশের জনগণ তার হারানো ভোটাধিকার ফিরে পারে। দেশে চলমান সব সংকট সমাধানের একমাত্র পথ এটাই। এটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য।’ বিষয়টি নিশ্চিত করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পদত্যাগকারী নেতা আবু হুরায়রা তানজিম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অনেক বিষয় নিয়ে আপত্তি রয়েছে। সে বিষয়ে আমি বিস্তারিত স্ট্যাটাসে লিখেছি। আর দেশের যে অবস্থা এই অবস্থায় দ্রুত জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেওয়া দরকার। আমরা দেশের শান্তি-শৃঙ্খলার জন্য আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। কিন্তু এরূপ পরিস্থিতি দেখার জন্য জুলাই বিপ্লব করিনি। এসব নানা কারণে পদত্যাগ করেছি।’ এ বিষয়ে জানতে চাইলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সদস্যসচিব জাভেদ আলম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমি বা আমাদের সংগঠনের কাছে এখনও তিনি অফিসিয়ালি পদত্যাগের কাগজপত্র দেননি। তিনি বর্তমানে দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। তবে তার পদত্যাগের স্ট্যাটাস আমি দেখেছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবের সময়ে তিনি আমাদের সঙ্গে আন্দোলন করেছেন। পরে তিনি বিদেশে পড়াশোনার কাজে চলে যাওয়ার সংগঠনের কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারেননি। তবে তার মান-অভিমানের সঠিক কারণ আমার জানা নেই। তবে তিনি আমাদের সংগঠনের বিষয়ে যেসব অভিযোগ তুলেছেন তা সত্য নয়।’

নাবালক উপদেষ্টারা জুলাই ঐক্য নষ্ট করেছে : নুর
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেছেন, বর্তমানে উপদেষ্টা পরিষদকে বিতর্কিত করছে ও জুলাই ঐক্য নষ্ট করেছে নাবালক উপদেষ্টারা। এদের এখনই সরান না হলে ভয়াবহ সংকটে পড়বে দেশ। এখনই যদি অভিজ্ঞদের নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদকে ঢেলে সাজান না হয় যা হবার তাই হবে। শুক্রবার (২৩ মে) বিকাল তিনটায় নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার ভুলতা গোলচত্বর এলাকায় গণঅধিকার পরিষদের সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন। সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান। নুর বলেন, বিএনপির এক নেতা নাকি আমাদের সমাবেশে যারা আসবে তাদের মামলা দেওয়া হবে বলে সমাবেশে আসতে বাধা দিয়েছেন। আমি তাদের হুঁশিয়ারি করে বলতে চাই, গণঅধিকার পরিষদ আওয়ামী লীগের কুতুবদের হিসাব করে কথা বলেনি আপনাদেরও হিসাব রাখব না- বাধ্য করলে। বিএনপির হাইকমান্ডকে বলবো তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন। এ এলাকায় চাঁদাবাজি-দখলবাজি কারা করছে এর সব খবর মানুষ জানেন। তিনি বলেন, ৫ তারিখের পর গণঅধিকার পরিষদ একটি টাকাও চাঁদাবাজি করেনি, দখলবাজি করেনি। আপনারা যারা এসব করছেন আপনারা সঠিক পথে আসুন। এদিকে গণঅধিকার পরিষদের সমাবেশকে ঘিরে বৃহস্পতিবার (২২ মে) রাত থেকেই রূপগঞ্জ উপজেলার ভুলতা গোলচত্বর এলাকার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে চেয়ার ও স্টেজের মালামাল এনে রাখা হয়। শুক্রবার ভোর থেকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক বন্ধ করে সড়কের মাঝখানে স্টেজ তৈরি করা হয়। এতে করে সড়কের উভয় দিকে সকাল থেকেই যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রী সাধারণ থেকে পথচারীরাও। এতে করে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় ভুলতা গাউছিয়া মার্কেট, তাঁত বাজার, হাজী শপিং কমপ্লেক্স, রেদওয়ান টাওয়ারসহ হাট-বাজারের ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসী। মহাসড়কের একপাশ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অন্য পাশ দিয়ে উল্টো পথে যানবাহন চলাচল করে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।নাবালক উপদেষ্টারা জুলাই ঐক্য নষ্ট করেছে : নুর স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, সমাবেশ করার জন্য রূপগঞ্জে অনেক মাঠ রয়েছে৷ ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক দেশের অন্যতম একটি ব্যস্ততম মহাসড়ক। এ সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার যানবাহন চলাচল করে। এমন ব্যস্ততম একটি মহাসড়ক এভাবে দখল করে সমাবেশের আয়োজনের বিষয়টি নিন্দনীয়। মহাসড়ক দখল করে সমাবেশের আয়োজন করায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। এতে আমরা সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে পড়ছি। এ সমাবেশের ব্যাপারে আমরা উপজেলা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। রূপগঞ্জ উপজেলা গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি কাউসার আহমেদ বলেন, আমরা স্থানীয় প্রশাসনকে চিঠি দিয়ে অনুমতি নিয়েছি। সড়কে স্টেজ করলেও আমরা বিকল্প হিসেবে যানবাহন চলাচলের ব্যবস্থা রেখেছি। এতে কোনো সমস্যা হবে না। রূপগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনিক কর্মকর্তা আশিকুর রহমানন বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। ইউএনওর সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি দেখছি। নারায়ণগঞ্জ জেলা সহকারী পুলিশ সুপার সি সার্কেল মেহেদী ইসলাম বলেন, গণঅধিকার পরিষদের পক্ষ থেকে একটি সমাবেশ করবে বলে আমাদের কাছে একটি চিঠি দিয়েছে। তবে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক বন্ধ করে স্টেজ করে সেখানে সমাবেশ করবে সেটা তো সম্পূর্ণ বেআইনি। বিষয়টি আমরা দেখছি।
.png)
প্রধান উপদেষ্টার সাথে সাক্ষাতের সময় চেয়েছে জামায়াত
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে সাক্ষাৎ করার জন্য সময় চেয়েছে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ। মৌখিকভাবে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের পক্ষ থেকে আগামীকাল সন্ধ্যা ছয়টায় দলটিকে সাক্ষাতের সময় দেয়া হয়েছে। জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, চলমান বিষয় নিয়ে আলাপচারিতার জন্য তারা প্রধান উপদেষ্টার সাথে দেখা করতে চাচ্ছেন। দলটি মনে করে প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ কোনো সমাধান না। তার চায় অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বেই আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। এর আগে, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সর্বদলীয় রাজনৈতিক বৈঠকের আহ্বান জানিয়েছেন জামায়াতের আমীর ডা. শফিকুর রহমান। তার পক্ষ থেকে জামায়াতে ইসলামীর ফেসবুক পেজে দেয়া এক পোস্টে এ আহ্বান জানানো হয়।

আরেকটা এক-এগারোর পাঁয়তারা চলছে: নাহিদ ইসলাম
বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে দেশে আরেকটা এক-এগারো করার পাঁয়তারা চলছে বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার পর থেকে আবারো দিল্লী থেকে ছক আকা হচ্ছে দেশে অস্থিতিশীলতা তৈরি করার, দেশকে বিভাজিত করার। গণতান্ত্রিক রূপান্তরকে বাধাগ্রস্ত করে আরেকটা এক-এগারোর বন্দোবস্ত করার পাঁয়তারা চলছে।’ শুক্রবার (২৩ মে) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে নিজের অভিমত ব্যক্ত করেছেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম অগ্রণী ব্যক্তিত্ব নাহিদ ইসলাম। পাশাপাশি সরকারের কাছে তিনি ‘ঘোষিত টাইম ফ্রেমের মধ্যেই নির্বাচন’ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। নাহিদ ইসলাম লিখেছেন, বাংলাদেশের রাজনীতিকে সকল প্রকার আধিপত্যবাদ থেকে মুক্ত করে স্বাধীন ও সার্বভৌমভাবে পরিচালনা করাই আমাদের লক্ষ্য। বাংলাদেশকে বারবার বিভাজিত করা হয়েছে, জাতীয় ঐক্য বিনষ্ট করা হয়েছে, বাংলাদেশেকে দুর্বল করে রাখার লক্ষ্যে। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার পর থেকে আবারো দিল্লী থেকে ছক আকা হচ্ছে দেশে অস্থিতিশীলতা তৈরি করার, দেশকে বিভাজিত করার। গণতান্ত্রিক রূপান্তরকে বাধাগ্রস্ত করে আরেকটা এক-এগারোর বন্দোবস্ত করার পাঁয়তারা চলছে।’ তিনি আরও লিখেছেন, ‘ফ্যাসিবাদ ও আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে দেশপ্রেমিক, বাংলাদেশপন্থী ও ধর্মপ্রাণ ছাত্র-জনতাকে সার্বভৌমত্ব, সংস্কার ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। দেশপ্রেমিক সেনা অফিসার ও সৈনিকদের সার্বভৌমত্ব ও বাংলাদেশ রক্ষায় প্রস্তুত থাকতে হবে।’ ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘ড. ইউনূসকে জনগণকে দেওয়া সংস্কার, বিচার ও ভোটাধিকারের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে হবে। উনাকে দায়িত্বে থেকেই রাজনৈতিকভাবে সকল সমস্যার সমাধান করতে হবে।’ তিনি আরও বলেছেন, ‘জুলাই ঘোষণাপত্র নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই দিতে হবে। ঘোষিত টাইম ফ্রেমের মধ্যেই নির্বাচন হবে। নির্বাচনের আগে মৌলিক সংস্কারের জুলাই সনদ রচিত হবে। নির্বাচনের আগে জুলাই গণহত্যার বিচার দৃশ্যমান হবে এবং বিচারের রোডম্যাপ আসতে হবে। নতুন সংবিধানের জন্য গণপরিষদ ও আইনসভার নির্বাচন একইসাথে দিতে হবে।’

জুনের মধ্যে নির্বাচন, এদিক-সেদিক হওয়ার সুযোগ নেই: পরিবেশ উপদেষ্টা
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানিয়েছেন, আগামী ডিসেম্বর থেকে পরবর্তী বছরের জুনের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তিনি আরও বলেন, এই সময়সীমার এক দিনও এদিক-সেদিক হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তবে তিনি স্পষ্ট করেছেন, নির্বাচন আয়োজনই একমাত্র উদ্দেশ্য নয় বরং এই সরকারের দায়িত্ব আরও বিস্তৃত। শুক্রবার (২৩ মে) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে বাংলাদেশ প্রাণিবিজ্ঞান সমিতির ২৪তম জাতীয় সম্মেলন ও বার্ষিক সাধারণ সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন মহল তাদের নানা দাবিদাওয়া নিয়ে রাস্তায় অবস্থান করছেন, ফলে রাজধানীর স্বাভাবিক যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য সরকার এখনো কার্যকরভাবে কিছু করতে পারছে না। জনগণের সম্মিলিত সহযোগিতা ছাড়া তাদের দায়িত্বপালন কঠিন হয়ে পড়ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। নির্বাচন বিষয়ে তিনি জোর দিয়ে বলেন, প্রধান উপদেষ্টা এরইমধ্যে সময়সূচি নির্ধারণ করেছেন- ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে। এই সময়সূচি নিয়ে কোনো বিভ্রান্তির সুযোগ নেই এবং এটি নিয়ে অনর্থক বিতর্ক বা আশঙ্কা তৈরির প্রয়োজন নেই। সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, তাদের দায়িত্ব পালনে জনগণের সহযোগিতা অপরিহার্য। তা না হলে এই দায়িত্ব পালন সম্ভব হবে না, এবং তখন তাদের ব্যক্তিগত কাজেই ফিরে যেতে হবে। সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান পরিবেশ সংরক্ষণে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ তুলে ধরে বলেন, এরমধ্যেই পরিবেশ সংরক্ষণ ও দূষণ রোধে সচেতনতা বৃদ্ধি, ক্ষতিকর বৃক্ষ নিধন, পরিবেশ বান্ধব বৃক্ষরোপণ, বেদখল হওয়া বনাঞ্চল ও নদী উদ্ধারসহ বেশ কিছু কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়েছে। ঢাকার চারটি নদী দূষণমুক্ত করতে বিশেষ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে হারিয়ে যাওয়া অনেক নদী উদ্ধারে বিশেষ পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, আমাদের আশার একটি বড় জায়গা হলো তরুণ প্রজন্ম। সমাজের সবাইকে সংগঠিত করে পরিবেশ সংরক্ষণ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় তরুণ প্রজন্মকে এগিয়ে আসার আহ্বান করছি।

ড. ইউনূস থাকতে না চাইলে বিকল্প বেছে নেবে জনগণ: সালাহউদ্দিন আহমেদ
বিএনপি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগ চায় না বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। তবে প্রধান উপদেষ্টার পদে তিনি থাকতে না চাইলে জনগণ বিকল্প বেছে নেবে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। শুক্রবার (২৩ মে) গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে এমনটা জানান তিনি। সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ড. ইউনূসের পদত্যাগ চায় না বিএনপি। তবে তিনি থাকতে না চাইলে বিকল্প বেছে নেবে জনগণ। এ সময় নির্বাচন, করিডোর ও দেশের পরিস্থিতি নিয়ে সেনাপ্রধানের বক্তব্যকে স্বাগত জানান তিনি। বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য অভিযোগ করেন, সম্প্রতি কয়েক দফায় ড. ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ চেয়েও সময় পায়নি বিএনপি। নির্বাচনী রোডম্যাপের জন্য আর কয়েকদিন অপেক্ষা করে তারপর সরকারকে সহযোগিতা নিয়ে প্রশ্নে করণীয় চূড়ান্ত করবে বিএনপি।

এনসিপি কিছু কিছু বিষয়ে অহেতুক বিবাদে লিপ্ত হয়েছে: এবি পার্টি
পদত্যাগ নয়, আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সকল পক্ষ সমঝোতামূলক সমাধানে আসার আহ্বান জানিয়েছেন আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু। তিনি বলেছেন, গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী ছাত্র সমাজকে ঐক্যবদ্ধ রাখার জন্য সরকারের উপদেষ্টারা কোনও উদ্যোগ নেননি। কোনও কোনও উপদেষ্টার তৎপরতা ও কর্মকাণ্ডে রাজনৈতিক দলগুলোর পরস্পর সংহতি ও জাতীয় ঐক্য বিনষ্ট হয়েছে। ছাত্রদের সমন্বয়ে গঠিত নতুন রাজনৈতিক দল এনসিপি কিছু কিছু বিষয়ে অহেতুক বিবাদে লিপ্ত হয়ে নিজেদের ইমেজ ও গ্রহণযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন।’ শুক্রবার (২৩ মে) বিকালে রাজধানীর বিজয়নগরে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ডাকা জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগের আগ্রহ প্রকাশকে কেন্দ্র করে জাতির মধ্যে যে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা, অনিশ্চয়তা ও জটিল পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে তার প্রেক্ষিতে এই জরুরি সংবাদ সম্মেলন আহ্বান করা হয়। তিনি রাষ্ট্রের সম্ভাব্য রাজনৈতিক সংকট ও জটিল পরিস্থিতিতে ড. ইউনূসের পদত্যাগ নয় বরং আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সকল পক্ষকে সমঝোতামূলক সমাধানে পৌঁছার আহ্বান জানান। সংবাদ সম্মেলনে সিনিয়র নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ভাইস চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কাসেম, লে. কর্নেল (অব.) হেলাল উদ্দিন, লে. কর্নেল (অব.) দিদারুল আলম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার নাসরিন সুলতানা মিলি, আমিনুল ইসলাম এফসিএ, শাহাদাতুল্লাহ টুটুল, সাংগঠনিক সম্পাদক (রাজশাহী) সাইয়েদ নোমান, সাংগঠনিক সম্পাদক (বরিশাল) গাজী নাসির এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ লোকমান। মঞ্জু বলেন, গত কয়েক মাস ধরে দেশে যে পরিস্থিতি ঘুরপাক খাচ্ছিল এবং সরকারের সাথে বিভিন্ন পক্ষের যে দূরত্ব দৃশ্যমান হচ্ছিল তাতে আমরা উদ্বিগ্ন ছিলাম। আমরা বলেছিলাম, এটা বন্ধ না হলে ক্রমশ জটিলতা ও সংকট দেখা দেবে। প্রশাসনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারের কর্তৃত্ব ও নিয়ন্ত্রণ নেই বলেও আমরা দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলাম।’ ‘গত কয়েকদিনে বিএনপি ও এনসিপি’র পাল্টাপাল্টি বক্তব্য, ৬ জন উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবি, যমুনা অবরোধ করে গত কয়েকমাসের নানা দাবি-দাওয়া-আন্দোলন এবং সর্বশেষ সোশ্যাল মিডিয়া ও কিছু সংবাদপত্রে সেনাপ্রধানের অফিসার্স অ্যাড্রেসে প্রদত্ত বক্তব্যের প্রচার ব্যাপক ধুম্রজাল তৈরি করেছে। স্পষ্টত সরকারের সাথে বিএনপি ও এনসিপি’র সম্পর্কের অবনতি লক্ষ্য করা গেছে। সেনাপ্রধানের নামে প্রচারিত বক্তব্য থেকে বোঝা গেছে সরকারের সাথে সেনাবাহিনীর সমন্বয়গত ঘাটতি রয়েছে।’ ‘বিএনপিসহ বড় কয়েকটি রাজনৈতিক দল সংস্কার, বিচার, নির্বাচন এবং আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক তৎপরতা নিষিদ্ধকরণ প্রসঙ্গে একেকবার একেক রকম বক্তব্য দিয়েছেন। বড় দুটি দল নিজেদের ক্ষমতাকেন্দ্রিক বিভেদে লিপ্ত হয়ে প্রশাসনকে অকার্যকর ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিঘ্ন ঘটিয়েছেন। এসকল বিষয়ে সরকারের অবস্থান ছিল অস্পষ্ট ও দুর্বল।’ ‘নির্বাচনের রোডম্যাপ নিয়ে কোনও সুনির্দিষ্ট ঘোষণা না আসায় এবং সরকার অনির্দিষ্ট মেয়াদে দীর্ঘকাল ক্ষমতায় থাকতে চান এরকম একটি সন্দেহ সংশয় কোনও কোনও রাজনৈতিক দলের মধ্যে প্রকটভাবে দেখা দিয়েছ। এসব বিষয়ে আমরা বার বার অনুরোধ জানানো সত্ত্বেও বিবদমান পক্ষগুলো বসে ভুল বোঝাবুঝি দূর করার কোনও পদক্ষেপ নেননি।’ সেনাবাহিনী প্রধানের সর্বশেষ বক্তব্য প্রসঙ্গে মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, উনার বক্তব্যটা আমরা সোশ্যাল মিডিয়া ও সংবাদপত্রের মাধ্যমে জেনেছি। কোনও সরকারি তথ্যসূত্র বা সংস্থার অফিসিয়াল বক্তব্য আকারে পাইনি। বিস্তারিত বক্তব্যটা আইএসপিআর বা সরকারি তথ্যসূত্রের আলোকে এলে ভালো হতো। তিনি বলেন, গতকাল এনসিপি প্রধান নাহিদ ইসলামের বরাত দিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগের আগ্রহ সংক্রান্ত যে সংবাদ প্রচারিত হয়েছে তা নিয়ে দেশবাসী ভীষণরকম উদ্বিগ্ন। সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনও সুস্পষ্ট বক্তব্য আমরা পাইনি। আমরা মনে করি, দেশের একটি বিশেষ পরিস্থিতিতে সকলেরই নানা ভুল-ভ্রান্তি ও অস্বস্তিকর আচরণ আজকের জটিল পরিস্থিতির জন্য দায়ী। প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগের কোনও সমাধান নয় বরং তা ভয়াবহ অনিশ্চয়তার জন্ম দেবে।

দেশে ফিরেই বিমানবন্দরে গ্রেপ্তার আ. লীগের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান
যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফেরার পথে ঢাকা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও মিরসরাই উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. গিয়াস উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করেছে বিমানবন্দর থানা পুলিশ। শুক্রবার (২৩ মে) ভোর ৫ টায় আমেরিকা থেকে স্ত্রীসহ ফেরার পথে মিরসরাই থানার করা একটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানা গেছে। আওয়ামী লীগ নেতা গিয়াস উদ্দিনের স্ত্রী তাহমিনা গিয়াস জানান, প্রায় ১ বছর আমেরিকায় থাকার পর ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর হয়ে শুক্রবার ভোরে তারা দেশে ফিরছিলেন। বিমান থেকে নামার পরে ইমিগ্রেশন পুলিশ গিয়াস উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করেন। সেখান থেকে পুলিশ তাকে নিয়ে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। মিরসরাই থানার ডিউটি অফিসার এসআই রাজিয়া আক্তার বলেন, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা গিয়াস উদ্দিনকে বিমানবন্দরে গ্রেপ্তারের বিষয়ে কোনো তথ্য আমি পাইনি। খবর নিয়ে দেখছি।
.png)
‘প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগ করবেন না’ লেখা সরিয়ে নতুন পোস্ট দিলেন ফয়েজ তৈয়্যব
‘প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস পদত্যাগ করবেন না। তার ক্ষমতা প্রয়োজন নেই। কিন্তু একটি শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য ড. ইউনূসকে দরকার আছে।’ শুক্রবার দুপুরে এ কথা লিখে ফেসবুকে পোস্ট দেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। এ নিয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। তবে বিকেল পৌনে ৪টার দিকে পোস্টটি ডিলিট করে আরেকটি পোস্ট দেন তিনি। বিকেলের পোস্টে ফয়েজ তৈয়্যব লেখেন, ‘ডিসক্লেইমার। মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা স্যারের বিষয়ে দেওয়া স্ট্যাটাসটি আমার ব্যক্তিগত মতামত। এটাকে নিউজ না করার অনুরোধ জানানো যাচ্ছে। ধন্যবাদসহ।’ দুপুরের পোস্টে তিনি লিখেছিলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগ করবেন না। অধ্যাপক ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূসের ক্ষমতা প্রয়োজন নেই, কিন্তু বাংলাদেশের জন্য, বাংলাদেশের শান্তিপূর্ণ ডেমোক্রেটিক ট্রানজিশনের জন্য ড. ইউনূস স্যারের দরকার আছে। বরং ক্যাবিনেটকে আরও গতিশীল হতে হবে। সরকারকে আরও বেশি ফাংশনাল হতে হবে, উপদেষ্টাদের আরও বেশি কাজ করতে হবে, দৃশ্যমান অগ্রগতি জনতার সামনে উপস্থাপন করতে হবে—এ ব্যাপারে কোনো দ্বিমত থাকতে পারে না। আমাদের দেখাতে হবে যে, গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তীতে জনতার সম্মতিতে ক্ষমতায় এসে প্রফেসর সাফল্য দেখিয়েছেন। বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সম্মান আছে, এটা রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব।’ ফয়েজ তৈয়্যব লেখেন, ‘আমি মনে করি, সরকারকে এখন থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আরও নিবিড়ভাবে আলোচনায় বসতে হবে, নিয়মিত বসে এবং বিভিন্ন বিষয়ে তাদের মতামত চাইতে হবে। কোনো ধরনের বিচ্ছিন্নতা কাম্য নয়। পাশাপাশি সেনাবাহিনীও রাজনীতিতে নাক গলাতে পারবে না। আজকের দুনিয়ায় কোনো সভ্য দেশের সেনাবাহিনী রাজনীতি করে না। তাই ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের বক্তব্যে সেনাপ্রধান জুরিশডিকশনাল কারেক্টনেস রক্ষা করতে পারেননি। তবে সেনাবাহিনীকে প্রাপ্য সম্মান দেখাতে হবে, আস্থায় রাখতে হবে। সেনাবাহিনী প্রশ্নে হুট করে কিছু করা যাবে না, হঠকারী কিছু করা যাবে না। তেমনি, ইনক্লুসিভনেসের নাম করে আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনও চাওয়া যাবে না। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আমাদের গর্ব এবং আস্থার জায়গা, সেটা কেউ ভঙ্গ করবে না।’ নির্বাচনের বিষয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব লেখেন, ‘সকল দরকারি প্রস্তুতি শেষ করে নির্বাচন এপ্রিল-মের মধ্যেই অনুষ্ঠিত হবে বলেই আশা করি। এ সময়ে সকল যৌক্তিক সংস্কার সম্পন্ন করতে হবে, করতে হবে জুলাই সনদ।’

পলক, সুমন, শিরিন শারমীনসহ ২৪ রাজনীতিবিদ সেনানিবাসে আশ্রয় নিয়েছিলেন
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর দেশের সহিংসতা ও রাজনৈতিক অস্থিরতা চরমে পৌঁছায়। এ সময় প্রাণ রক্ষায় সাবেক স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, সংসদ সদস্য, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও রাজনৈতিক ব্যক্তিসহ ৬২৬ জনকে দেশের বিভিন্ন সেনানিবাসে আশ্রয় দেওয়া হয়। তাদের মধ্যে ২৪ জন ছিলেন রাজনীতিবিদ। বৃহস্পতিবার (২২ মে ) রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে এ তথ্য জানায় আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)। আইএসপিআর জানায়, প্রাণনাশের আশঙ্কায় যেসব ব্যক্তি সেনানিবাসে আশ্রয় নিয়েছিলেন, তাদের মধ্যে ছিলেন ২৪ জন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, ৫ জন বিচারক, ১৯ জন বেসামরিক প্রশাসনের কর্মকর্তা, ৫১৫ জন পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্য, বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারী এবং ৫১ জন পরিবার-পরিজন (স্ত্রী ও শিশু)। সব মিলিয়ে মোট ৬২৬ জনকে দেশের বিভিন্ন সেনানিবাসে আশ্রয় দেওয়া হয়। সংস্থাটি জানায়, ওই সময়ে শুধুমাত্র মানবিক দায়বদ্ধতা থেকেই এই আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। আইন বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ঝুঁকিতে থাকা এসব মানুষের প্রাণ রক্ষা করাই ছিল সেনাবাহিনীর মূল উদ্দেশ্য। আইএসপিআর আরও জানায়, পরিস্থিতি উন্নয়ন সাপেক্ষে, আশ্রয় গ্রহণকারীদের বেশিরভাগই এক দুই দিনের মধ্যেই সেনানিবাস ত্যাগ করেন এবং এর মধ্যে ৫ জনের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ-মামলার ভিত্তিতে, যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়। আইএসপিআরের বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, সেনানিবাসে অবস্থানকারী ও আশ্রয় প্রার্থীদের ব্যাপারে ২০২৪ সালের ১৮ আগস্ট আইএসপিআর আনুষ্ঠানিক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। একই দিন ১৯৩ জন ব্যক্তির একটি তালিকা (৪৩২ জন সাধারণ পুলিশ সদস্য ও ১ জন এনএসআই সদস্য ব্যতীত) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। যা ছিল একটি মীমাংসিত বিষয়। সেনানিবাসে আশ্রয়প্রাপ্ত উল্লেখযোগ্য রাজনীতিকরা হলেন- ১. জুনায়েদ আহমেদ পলক – সাবেক আইসিটি মন্ত্রী ২. সায়েদুল হক সুমন – তৎকালীন সংসদ সদস্য ৩. শিরীন শারমিন চৌধুরী – সাবেক স্পিকার ৪. নাজমা আকতার – তৎকালীন সংসদ সদস্য ৫. সামসুল হক টুকু – সাবেক ডেপুটি স্পিকার ৬. ছোট মনির – তৎকালীন সংসদ সদস্য ৭. ইকবালুর রহিম – তৎকালীন সংসদ সদস্য ৮. শাজাহান খান – সাবেক সংসদ সদস্য ৯. রাগিবুল আহসান রিপু – তৎকালীন এমপি, বগুড়া-৬ ১০. এ কে এম রেজাউল করিম তানসেন – তৎকালীন এমপি, বগুড়া-৪ ১১. এমএ লতিফ – তৎকালীন সংসদ সদস্য ১২. কাজী নাবিল আহমেদ – সাবেক সংসদ সদস্য ১৩. তালুকদার আবদুল খালেক – তৎকালীন মেয়র, খুলনা সিটি করপোরেশন ১৪. হাবিবুন নাহার – তৎকালীন এমপি, বাগেরহাট-৪ ১৫. মো. ইকরামুল হক টিটু – তৎকালীন মেয়র ১৬. মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী – তৎকালীন মেয়র, সিলেট সিটি করপোরেশন ১৭. মো. আবু জাহির – তৎকালীন এমপি, হবিগঞ্জ-৩ ১৮. জিয়াউর রহমান বিপ্লব – কাউন্সিলর, বরিশাল সিটি করপোরেশন ১৯. এসএম রফিউদ্দিন আহমেদ – ওয়ার্ড কাউন্সিলর ২০. এসএম ফয়সাল আহমেদ রানা – ওয়ার্ড কাউন্সিলর ২১. শরিফ কামাল – তৎকালীন চেয়ারম্যান, মিঠামইন উপজেলা ২২. মো. মাহবুব আলম – তৎকালীন ইউপি চেয়ারম্যান, মাদারগঞ্জ ২৩. সুজন সাত্তার – পিএস টু এমপি ২৪. জাকির হাসান – তৎকালীন এসপি, বগুড়া (যদিও প্রশাসনিক পদে ছিলেন, রাজনৈতিকভাবে সংশ্লিষ্ট হিসেবে তালিকাভুক্ত)

নন্দিত লোকটি নিন্দিত হয়ে বিদায় নিলে মনে কষ্ট পাবো: ফারুক
দেশে বর্তমানে অস্থিরতা চলছে মন্তব্য করে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক বলেছেন, এই অস্থিরতার কারণে নন্দিত লোকটি (ড. মুহাম্মদ ইউনূস) নিন্দিত হয়ে বিদায় নিলে আমরা (বিএনপি) মনে কষ্ট পাবো। শুক্রবার (২৩ মে) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘অপরাজেয় বাংলাদেশ’ আয়োজিত ‘জাতীয় নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র রুখে দাঁড়াও দেশবাসী’ শীর্ষক প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ফারুক বলেন, গত পরশু দেখলাম, শ-দুয়েক লোক নিয়ে এনসিপি নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগ এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে। আবার গত কয়েকদিন ধরে ঢাকা দক্ষিণের জনগণ তাদের প্রিয় নেতা ইশরাককে আদালতের রায় অনুসারে শপথ বাক্য পাঠ করানোর জন্য ডিএসসিসি ভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছেন। তার কয়েকদিন আগেই সবচেয়ে পবিত্র স্থান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সাম্য নৃশংসভাবে খুন হয়েছেন। ছাত্রদল প্রতিবাদ করেই যাচ্ছে। প্রতিনিয়ত এই প্রেসক্লাবের সামনে হাসিনা ফ্যাসিস্টের বিরুদ্ধে অনেক ছোটখাটো রাজনৈতিক দল ও পেশাজীবী সংগঠন ইউনূস সরকারের কাছে তাদের দাবিগুলো পেশ করছে। কিন্তু সমসাময়িক রাজনীতিতে গতকাল আমাকে বিস্মিত করেছে, আপ্লুত করেছে। একজন স্বাধীনতা যোদ্ধা হিসেবে গতকাল আমি সবচেয়ে বেশি মনে কষ্ট পেয়েছি। তিনি আরও বলেন, এই কথা শুনে আমার মনটা খুব খারাপ হয়েছে। আপনাকে (ইউনূস) কেন বসিয়েছিলাম? নয় মাস আপনি কি সেই পথে এগোতে পেরেছেন? পারেননি। না পারার কারণ আমরা জানতে চাই। গতকাল আমাদের দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মোশাররফ হোসেন কী দুঃখে তিন উপদেষ্টার পদত্যাগ চেয়েছেন? আমরা তো চাইনি আপনাদের পদত্যাগ। আমরা তো আপনাদের বসিয়েছিলাম, বাংলাদেশের মানুষ যে জন্য আন্দোলন করেছে-একটি নির্বাচনের জন্য। নয় মাস অতিবাহিত হলো, কেন এখনো নির্বাচনের রোডম্যাপ দেওয়া হচ্ছে না? আজকে কাদের পরামর্শে, কাদের কথায় এখনো নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়নি? তাই আমাদের দল বলেছে, আপনাদের তিনজনের আগে পদত্যাগ করতে হবে। তিনি আরও বলেন, দেশে একটি অস্থিরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এই অস্থিরতার মূল হোতা কারা? কারা এই অস্থিরতা সৃষ্টি করছেন? কারা নির্বাচন বিলম্বিত করতে চাচ্ছেন? এই বিষয়গুলো আমরা জানতে চেয়েছি। আপনি নাকি বলেছেন, জুলাইতে নির্বাচন হবে। জুলাই হবে না ডিসেম্বরে হবে-রোডম্যাপটা দিলেই তো আমরা যারা আন্দোলনে ছিলাম তারা আপনার সঙ্গে বসতে পারতাম। কিন্তু এখন পর্যন্ত নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করলেন না। তাই আমরা মনে করি, এই অস্থিরতার কারণ যদি আপনার সৃষ্টি হয়ে থাকে, তাহলে বিএনপি এই অস্থিরতা কোনোদিন গ্রহণ করবে না। এই দোষ আমাদের ঘাড়ে দিতে পারবেন না। কারণ আমরা তো আপনার কাছে নির্বাচন চাই। সংস্কার করুন, কিন্তু এমন সংস্কার করবেন না, যাতে করে করিডোর হবে, চট্টগ্রামের বন্দর অন্যের হাতে চলে যাবে, ষড়যন্ত্রকারীরা নির্বাচন বিলম্বিত করে আপনাকে অস্থির করে তুলবে। তাই অস্থিরতা কাটাতে হলে আপনাকে আজ, কাল বা পরশুর মধ্যে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে হবে। তিনি বলেন, আপনি যদি এই অস্থিরতার কারণে এই নন্দিত লোকটি নিন্দিত হয়ে বিদায় নেন, তাহলে আমরা মনে কষ্ট পাবো। ইতিহাসে আপনার নামটি স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকুক। আপনি সাহাবুদ্দিনের মতো একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিন। দিনের ভোট দিনে হোক। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন অপরাজেয় বাংলাদেশের সহ-সভাপতি এম এ আজাদ চয়ন এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক ইসমাঈল হোসেন সিরাজী। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সফু ও জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ।

‘দেশ কোনো ধরনের রাজনৈতিক ঐক্যের পথে নাই’
দেশ কোনো ধরনের রাজনৈতিক ঐক্যের পথে নাই বলে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা। বৃহস্পতিবার (২৩ মে) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টে এ কথা বলেন তিনি। পোস্টে উমামা ফাতেমা বলেন, দেশ কোনো ধরনের রাজনৈতিক ঐক্যের পথে নাই। এই ঐক্য ভেঙে গেছে গত সেপ্টেম্বর, অক্টোবরের দিকেই। খোলসটা ছিল একরকমভাবে। বর্তমানে খোলসটাও খুলে পড়ছে তাই অনেকে অবাক হচ্ছে। সব পক্ষ যদি কিছুটা পরিপক্কতা দেখাতো, শহীদদের জীবনের কথা ভেবে কিছুটা ছাড় দিত তাহলে অন্তত ইলেকশনের আগ পর্যন্ত দেশটা স্ট্যাবল থাকত। দেশটা স্ট্যাবল না হতে দেওয়ার জন্য অনেক ধরনের ফোর্স ভিতরে সক্রিয় আছে। আর জুলাই এর সকল লড়াকু শক্তিই ক্ষমতা প্রশ্নে অস্থির হয়ে গেছে। যেন গোটা দেশটাই একটা খেলামাত্র। তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, ধৈর্য ও টেবিলে ঐকমত্যের রাজনীতিই দেশকে একটা গণতান্ত্রিক উত্তরণের দিকে নিতে পারে। কিন্তু হায়! এখন প্রতিটি শক্তিই পরস্পরকে বেইমান, গাদ্দার মনে করে। আর এখন এসে ড. ইউনূসের জন্য হা-হুতাশ একটু হালকা লাগে বৈকি। যখন ঐকমত্যের রাজনীতি করতে হয় ঐ সময় ভাঙনের রাজনীতি করছেন। আর এখন এসে হা-হুতাশ দেখতে হাস্যকর লাগে।

জুলাই বিদ্রোহের পর গত রাতটি ছিল অন্যতম কঠিন: তাসনিম জারা
জুলাইয়ের বিদ্রোহের পর গত রাতটি অন্যতম কঠিন রাত ছিল বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা। শুক্রবার সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে এ কথা বলেন তিনি। তাসনিম জারা লিখেছেন, রাজনৈতিক শক্তিগুলোর ক্ষুদ্র স্বার্থের দ্বন্দ্ব ও পারস্পরিক অবিশ্বাস আমাদের গণতান্ত্রিক রূপান্তরকে চরম ঝুঁকির মুখে ফেলছে। স্বল্পমেয়াদি হিসাব-নিকাশের জন্য এমন এক জাতির আশাকে আমরা ধ্বংস হতে দিতে পারি না, যে জাতি স্বাধীনতার জন্য রক্ত দিয়েছে। পোস্টে জারা লেখেন, গত রাত (বৃহস্পতিবার) ছিল জুলাই অভ্যুত্থানের পর থেকে অন্যতম কঠিন রাত। একটি ভাবনা যা আমাকে সারারাত জাগিয়ে রেখেছে, সেটিই আপনাদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে চাই। এটা দোষারোপের সময় নয়। এটা আত্মসমালোচনার সময়। এনসিপির এই জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব আরও লেখেন, ইতিহাস আমাদের শেখায় যারা পরিবর্তনকে ভয় পায়, তারা প্রায়ই বিভাজন ও মেরুকরণকে ব্যবহার করে পুরানো শাসনব্যবস্থাকে নতুন মুখোশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করে। আমরা যেন সেটা এখানে ঘটতে না দিই। আমাদেরকে দলাদলির ঊর্ধ্বে উঠতে হবে। এই বিপ্লব ছিল জনগণের। আর সেই জনগণের প্রতিই আমাদের দায়িত্ব সংযম দেখানো, সংলাপে এগিয়ে আসা এবং ঐক্য ধরে রাখা। তিনি আরও লেখেন, এই মুহূর্তটি যেন বিভেদের নয়, বরং ঐক্যের দিকে একটি মোড়বদলের প্রেরণা হয়ে ওঠে।

জনতার মেয়র হিসেবে ঈদে পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের সঙ্গে আমিও থাকব: ইশরাক
বিএনপির চেয়ারপারসনের আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক সহায়ক কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন বলেছেন, আমি ঢাকাবাসীকে নিশ্চিত করছি উত্তরে মেয়র না আসা পর্যন্ত সেখানকার প্রশাসন ও পরিচ্ছন্ন কর্মীদের দায়িত্ব পালনে সহযোগিতা করব। জনতার মেয়র হিসেবে কোরবানির ঈদে পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের সঙ্গে আমি নিজেও থাকব। শুক্রবার সকালে ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড পেজে দেওয়া এক পোস্টে এসব কথা বলেন তিনি। তিনি লেখেন, শপথ কেবল একটা ফরমালিটি। জনতার মেয়র হিসেবে আমার দায়িত্ব বর্তায় আগামী কোরবানির ঈদের আগে যাতে বর্জ ব্যবস্থাপনার পর্যাপ্ত প্রস্তুতি থাকে। আমি ঢাকাবাসীকে নিশ্চিত করছি, উত্তরে মেয়র না আসা পর্যন্ত সেখানকার প্রশাসন ও পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের দায়িত্ব পালনে সহযোগিতা করব। তিনি আরও লেখেন, দক্ষিণের সাবেক কাউন্সিলর ও বিগত নির্বাচনের প্রার্থীদের সঙ্গে সমন্বয় করে একটি জোনভিত্তিক মনিটরিং টিমের অনুমোদন দেব। বিকেলের মধ্যে (১৬ ঘন্টায়)! একটা স্বস্তিদায়ক পরিবেশ তৈরি করার উদ্যোগ গ্রহণ করব। দক্ষিণ পরিচ্ছন্নকর্মীদের সঙ্গে আমি নিজেও থাকব।

প্রধান উপদেষ্টাকে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার আহ্বান জামায়াত আমিরের
জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান, দেশের উদ্ভূত পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মাদ ইউনূসকে একটি সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার আহ্বান জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২২ মে) বিকেলে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের এক জরুরি বৈঠক থেকে জামায়াত আমির এ আহ্বান জানান। রাজধানীর মগবাজারে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন দলটির আমির শফিকুর রহমান। বৈঠকে কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে বিশদ আলোচনা করা হয়।

পদত্যাগ করার পরেই জনগণ ক্ষমার চিন্তা করবে: রাশেদ খাঁন
উপদেষ্টা মাহফুজ আলমকে ইঙ্গিত করে গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খাঁন বলেছেন, ‘ক্ষমা নয়, আগে পদত্যাগ করুন’। বৃহস্পতিবার (২২ মে) সন্ধ্যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেয়া এক পোস্টে তিনি এ কথা বলেন। রাশেদ লেখেন, দেশের ঐক্যের বারোটা বাজিয়ে এখন ক্ষমা চাও কেন? গণ-অভ্যুত্থানের সব স্টেকহোল্ডারকে মাইনাস করে মাস্টারমাইন্ড ও উপদেষ্টা হওয়ার মধ্যেই যে সব সুখ নেই, তা নিশ্চয়ই তুমি এখন বুঝতে পারছ। তিনি আরও লেখেন, নতুন বাংলাদেশের সম্ভাবনাকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছ। তুমি নাকি বলেছিলে, কাউকে দেশ চালাতে দেবে না, কাউকে রাজনীতি করতেও দেবে না! তোমার অহংকার ও ঔদ্ধত্য শুধু তোমাকেই নয়, তোমার তৈরি ফাঁদে যারা পড়েছে, তাদেরও পতনের কারণ হবে। রাশেদ বলেন, গণ-অভ্যুত্থানের পরে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ না রেখে অনৈক্য সৃষ্টি করে ভেবেছিলে একলাই হিরো হয়ে যাবা, আজীবন ক্ষমতা ভোগ করবা! কিন্তু এই দেশের মানুষ যেমন কাউকে মাথায় তুলে নিতে পারে, তেমনি প্রয়োজন হলে ধপাস করে নামাতেও জানে। এর আগে বিকেল ৫টায় ফেসবুক পোস্টে মাহফুজ আলম বলেন, দেশপ্রেমিক শক্তির ঐক্য অনিবার্য। আগেকার যেকোনো বক্তব্য ও শব্দচয়ন, যা বিভাজনমূলক ছিল- সেগুলোর জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। ‘সরকারে আর একদিনও থাকলে অভ্যুত্থানের সব শক্তির প্রতি সম্মান ও সংবেদনশীলতা রেখে কাজ করতে চাই। পুরাতন বন্দোবস্তের বিভেদকামী স্লোগান ও তকমাবাজি, যা বৃহত্তর জনগোষ্ঠীকে হত্যাযোগ্য করে তোলে, সেগুলো পরিহার করলেই আশা করি ভবিষ্যৎ রাষ্ট্র গণতান্ত্রিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক হবে।’

জুলাইয়ের গাদ্দারদের বলতে চাই ইতিহাস তোমাদের ক্ষমা করবে না: সাদিক কায়েম
ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রকাশনা সম্পাদক সাদিক কায়েম বলেছেন, ‘জুলাইয়ের গাদ্দারদের বলতে চাই, ইতিহাস তোমাদের ক্ষমা করবে না।’ বৃহস্পতিবার (২২ মে) রাতে এক ফেসবুক পোস্টে তিনি এ কথা বলেন। তিনি লিখেছেন, ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী সব পক্ষের প্রতি আহ্বান—সব ধরনের মান, অভিমান ও ক্ষোভ পাশ কাটিয়ে, জাতীয় স্বার্থে এখনই দূরদর্শী ও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করুন।’ তিনি বলেন, ‘জুলাইয়ের গাদ্দারদের বলতে চাই—ইতিহাস তোমাদের ক্ষমা করবে না। জুলাইয়ের প্রধান শক্তিগুলোর বিভাজন সৃষ্টির দায় তোমাদেরই। জুলাই বিপ্লবের শক্তিগুলোর পিঠে ছুরি মেরে তোমরা মূলত দেশকে ছুরিকাঘাতে আহত ও রক্তাক্ত করেছো।’ এই ছাত্রনেতা আরও বলেন, ‘এই মুহূর্তে বলবো, সবাই যার যার অবস্থান থেকে সর্বোচ্চ দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করুন। দ্বিধা নয়—এই লড়াই দেশ ও জনগণের জন্য। আল্লাহ যেন এই জাতিকে সাহায্য করেন এবং সব ধরনের ক্ষতি ও ষড়যন্ত্র থেকে রক্ষা করেন। আমিন।’

আসিফ-মাহফুজদের ন্যূনতম নৈতিকতা থাকলে পদত্যাগ করতো: নুর
ন্যূনতম নৈতিকতা আর দেশপ্রেম থাকলে দল গঠনের পরপরই উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলম সরকার থেকে পদত্যাগ করতেন বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর। বৃহস্পতিবার (২২ মে) রাতে নিজের ফেসবুক পেজে এক পোস্টে তিনি এমন মন্তব্য করেন। নুর লিখেছেন, ‘আসিফ-মাহফুজদের ক্ষমতার মোহ আর লোভ না থেকে ন্যূনতম নৈতিকতা আর দেশপ্রেম থাকলে দল গঠনের পরপরই তারা সরকার থেকে পদত্যাগ করতো। যা হতে পারতো এক নতুন দৃষ্টান্ত। কিন্তু তারা করেনি।’ ‘এমনকি সরকারের নিরপেক্ষতা নিশ্চিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও ব্যক্তির পক্ষ থেকে আসিফ-মাহফুজদের পদত্যাগের দাবি জানানো হলেও তারা পূর্বের নির্লজ্জ-বেহায়া রাজনীতিবিদদের মতই চেয়ার ধরে রাখলেন।’ ডাকসুর সাবেক এই ভিপি বলেন, ‘এই বয়সেই যদি ক্ষমতা দখল ও ভোগে এত কূটকৌশলের আশ্রয় নিতে পারে, ভবিষ্যতে এরা কী করবে?’

দেশের স্বার্থে বিভাজন মিটিয়ে ফেলতে হবে : হাসনাত
বিরাজমান পরিস্থিতে আবারও ঐক্যের ডাক দিলে জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ। বৃহস্পতিবার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে হাসনাত বলেন, ‘জুলাইয়ের ফ্যাসিবাদবিরোধী সব শক্তির প্রতি আহ্বান—যে বিভাজনটা অপ্রত্যাশিতভাবে আমাদের মধ্যে এসেছিল, সেই বিভাজনকে দেশ ও জাতির স্বার্থে মিটিয়ে ফেলতে হবে। এ দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য এবং পতিত ফ্যাসিবাদের নগ্ন দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র থেকে মুক্তির জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘মনে রাখবেন, আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পতনে দেশে-বিদেশে অনেকে নাখোশ হয়ে আছে। এই নাখোশ বান্দারা আমাদের বিভাজনের সুযোগ নিতে নিতে আজকের এই অস্থিতিশীল দিন এনেছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমরা সবাই এক হয়েছিলাম বলে দীর্ঘ দেড় যুগের শক্তিশালী ফ্যাসিবাদকে তছনছ করতে পেরেছিলাম। আমরা খণ্ড-বিখণ্ড হলে পতিত ফ্যাসিবাদ ও তার দেশি-বিদেশি দোসররা আমাদের তছনছ করার হীন পাঁয়তারা করবে।’ হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘দেশ ও জাতির প্রতি দায় এবং দরদ আছে বলেই আমরা এক হয়ে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়েছিলাম।দেশ ও জাতির জন্যই এবার আমাদের এক হয়ে আমাদের স্বদেশকে বিনির্মাণ করতে হবে। কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর স্বার্থের জন্য এই ঐক্য নয়, বরং আমাদের দেশের জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকার কোনো বিকল্প নেই।’

করিডরের নামে দেশকে যুদ্ধের দিকে ঠেলে দেবেন না : দুদু
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে উদ্দেশ করে বলেছেন, ‘আমাদের বাংলাদেশ একটি শান্তিপূর্ণ দেশ। সেই দেশটাকে মানবিক করিডরের নামে যুদ্ধের মধ্যে নিয়ে যাওয়া এটি বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। আমি আপনাকে অনুরোধ করব, এদিকে না এগিয়ে আপনি বরং বাংলাদেশের মানুষকে কিভাবে রক্ষা করা যায়, যুদ্ধমুক্ত রাখা যায়, গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ব্যবস্থা করা যায়, সেটা করুন।’ বৃহস্পতিবার (২২ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘রাখাইনে মানবিক করিডর ও চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশিদের দেওয়ার ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদ’ শীর্ষক নাগরিক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। সমাবেশের আয়োজন করে ‘দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও’ আন্দোলন নামের একটি সংগঠন।প্রধান অতিথির বক্তব্যে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘আমরা ১৫-১৬ বছর ধরে যে নির্বাচন পাইনি, কিন্তু নির্বাচন গেছে। আজকের যে প্রজন্ম, যাদের বয়স ২৫-৩০ বছর, তারা একটা নির্বাচনেও ভোট দিতে পারেনি। সেই ভোটের ব্যবস্থা করেন। মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেন। আপনারা কোনো রেগুলার ও নির্বাচিত সরকার নন। অনেক উপদেষ্টা বলেছিলেন, তারা নির্বাচিত। আত্মপ্রতারণা করা ঠিক হবে না।দেশের জনগণ আপনাকে (প্রধান উপদেষ্টা) সম্মানের সাথে বসিয়েছে। সম্মান রক্ষা করে জনগণের মনোভাব অনুধাবন করে, নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা দিয়ে যাবেন। এ দেশের খেটে খাওয়া মানুষ, কামার-কুমার, রিকশাচালক, কুলি-মজদুর, কৃষক-শ্রমিকদের অবহেলা করা উচিত নয়। তাদের রক্তে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সেই বাংলাদেশে যুদ্ধের সময় ভদ্রলোকের সংখ্যা ছিল কম। গ্রামের কৃষক-শ্রমিক, খেটে খাওয়া মানুষ, তরুণ-শিক্ষার্থীরা যুদ্ধ করেছিল।’ ছাত্রদল থেকে উঠে আসা বিএনপির এই কেন্দ্রীয় নেতা আরো বলেন, ‘আমাদের প্রতিবেশী দেশের যে ঘৃণ্য কৌশল, তাদের যে বিরোধিতা, ফ্যাসিস্টকে আশ্রয় দেওয়া, তাদের সম্পর্কে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আমাদের দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী, প্রতিটি রাজনৈতিক দল, খেটে খাওয়া মানুষ সবাই, ঐক্যবদ্ধভাবে দেশকে রক্ষা করবে। এগিয়ে নিয়ে যাবে।’ সমাবেশে আরো উপস্থিত ছিলেন আয়োজক সংগঠনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন, সাবেক সংসদ সদস্য মো. শামিম কায়সার লিংকন, কৃষক দলের পাঠাগার বিষয়ক সম্পাদক রাজি, সাবেক দপ্তর সম্পাদক এস কে সাদি প্রমুখ।
.png)
এতো আলোচনা- সমালোচনার মধ্যে ড. ইউনূসের সঙ্গে নাহিদের সাক্ষাৎ
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। আজ বৃহস্পতিবার (২২ মে) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনায় এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয় বলে একটি সূত্রে জানা গেছে। সূত্রটি জানায়, প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ নিয়ে আজ বিকেল থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে পড়ে, যা নিয়ে অনেকই অনেক কথা লিখছেন। বিষয়টি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলতে আজ সন্ধ্যায় যমুনায় আসেন নাহিদ ইসলাম। সূত্রটি বলছে, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে সাড়ে ৭টা পর্যন্ত প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলেন নাহিদ ইসলাম। এ সময় তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ও স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া উপস্থিত ছিলেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়া একটি গুজব জনমনে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। দাবি করা হয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস পদত্যাগ করেছেন। এই দাবি ঘিরে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভুয়া চিঠি ও ২০১১ সালের একটি পুরনো সংবাদ পুনরায় শেয়ার করা হয়েছে। তবে অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে, এই দুটি উপাদানই বাস্তবতার সঙ্গে মেলে না এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে জনমনে বিভ্রান্তি ছড়াতে ব্যবহৃত হয়েছে। ২০১১ সালের ১৩ মে দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকায় একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়, যার শিরোনাম ছিল "Prof Yunus resigns"। এতে বলা হয়েছিল, ড. ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। এটি ছিল সেই সময়ের বাস্তবতা। কিন্তু সেই পুরনো প্রতিবেদনটি ২০২৫ সালের বর্তমান প্রেক্ষাপটে আবার শেয়ার করা হচ্ছে এ ধরনের ইঙ্গিত দিয়ে যে, তিনি নাকি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব থেকেও পদত্যাগ করেছেন। দ্য ডেইলি স্টার স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, এটি একটি বিভ্রান্তিকর প্রচার—একটি পুরনো রিপোর্টকে পুনরায় পোস্ট করে তা মিথ্যা প্রেক্ষাপটে উপস্থাপন করা হয়েছে। এমনতর ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলেই মনে করছে অনেকে।