
জামায়াতের নিবন্ধন ফিরে পাওয়ার খবর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে
দীর্ঘ এক যুগ পর বাংলাদেশে রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন পুনর্বহাল করেছে সুপ্রিম কোর্ট। এই রায়ের ফলে দলটি আবারও নির্বাচন কমিশনের অনুমোদিত রাজনৈতিক দল হিসেবে স্বীকৃতি পেল এবং জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ ফিরে পেল। রবিবার (১ জুন) দেশের সর্বোচ্চ আদালত জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলের ২০১৩ সালের হাইকোর্টের রায় বাতিল করে নির্বাচন কমিশনকে আইনি প্রক্রিয়া অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দেন। বিষয়টি দেশি-বিদেশি নানা সংবাদমাধ্যমে গুরুত্বের সঙ্গে প্রচারিত হয়েছে। তুরস্কের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম আনাদলু এজেন্সী সংবাদ শিরোনাম করেছে, ‘বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন পুনর্বহাল করল সর্বোচ্চ আদালত’। সংবাদমাধ্যমটি লিখেছে, এই রায় দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের সমাপ্তি ঘটিয়েছে এবং আগামী মাসগুলিতে নির্ধারিত দেশের ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামীকে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দিয়েছে। পাকিস্তানের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ডন তাদের সংবাদের শিরোনাম করেছে, ‘জামায়াতে ইসলামীকে পুনর্বহাল করল বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত’। খবরে বলা হয়, বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন ২০১৩ সালে হাইকোর্টের আদেশে বাতিল করা হয়। তবে সম্প্রতি শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর দলটি ওই আদেশের পুনর্বিবেচনার আবেদন করে এবং অবশেষে সুপ্রিম কোর্ট তাদের পক্ষে রায় দেয়। জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির মতিউর রহমান নিজামীর ছবি যুক্ত করে সামা টিভি শিরোনাম করেছে, ‘জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন পুনঃস্থাপনের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট’। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আরব নিউজের সংবাদ শিরোনামে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত বৃহত্তম ইসলামী দলকে ফিরিয়ে এনেছে’। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার আমলে জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করেছিল এবং এর নেতাদের উপর কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল। তবে ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের পতনের পর জামায়াতের ফেরার পথ সুগম হয়। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি লিখেছে, নিষিদ্ধ জামায়াত-ই-ইসলামির দল নিবন্ধন পুনর্বহাল করল বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট। তারা বলছে, বাংলাদেশ রোববার বৃহত্তম ইসলামী দলটির নিবন্ধন পুনঃস্থাপন করেছে, যা এক দশকেরও বেশি সময় ধরে নির্বাচনের বাইরে থাকা দলটির নির্বাচনে ফেরার সুযোগ তৈরি করেছে। ডনের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়ে, বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সম্প্রতি আওয়ামী লীগকেও সাময়িক নিষিদ্ধ করেছে এবং শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে বিচার শুরুর ঘোষণা দিয়েছে। ১ জুন সেই মামলার শুনানি সরাসরি বাংলাদেশ টেলিভিশনে (বিটিভি) সম্প্রচারিত হয়। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যা উসকানি, সহায়তা, ষড়যন্ত্র এবং প্রতিরোধে ব্যর্থতাসহ কমপক্ষে পাঁচটি অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গণহত্যা মামলায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। আজ রবিবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদার নেতৃত্বাধীন তিন সদস্য ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী। এ মামলায় কারাগারে থাকা আরেক আসামি, অভ্যুত্থানের সময় আইজিপির দায়িত্বে থাকা চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে ১৬ জুন ট্রাইব্যুনালে হাজির করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এদিন ১৩৪ পৃষ্ঠার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ ট্রাইব্যুনালে দাখিল করেন। এই বিচারকাজ সারা বিশ্বকে দেখাতে বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ট্রাইব্যুনালের শুনানি সরাসরি টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হয়। গত ১২ মে জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তারা। তদন্ত প্রতিবেদনে জুলাই গণহত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে শেখ হাসিনার নাম উঠে আসে। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত ২০ এপ্রিলের মধ্যে শেষ করতে নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। প্রসিকিউশনের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত চিফ প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম।

নিবন্ধন ফিরে পাওয়ার রায়ে যে প্রতিক্রিয়া জানালেন জামায়াত আমির
রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর বাতিল হওয়া নিবন্ধন ফিরিয়ে দিতে নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। নির্বাচন কমিশনকে অবিলম্বে এই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে। তবে দলটির প্রতীক দাঁড়িপাল্লার বিষয়ে কোনো আদেশ দেননি আদালত। আপিল বিভাগ প্রতীকের বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের ওপর ছেড়ে দিয়েছেন। রোববার (০১ জুন) সকালে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৪ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। এ সংক্রান্ত হাইকোর্টের রায় বাতিল করে দেশের সর্ব্বোচ আদালত এ রায় দেন। এদিকে এ রায়ের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজের অভিব্যক্তি জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। রোববার সকালে জামায়াত আমির তার ভেরিফাইয়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে লিখেছেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধনসংক্রান্ত হাইকোর্টের দেওয়া ন্যায়ভ্রষ্ট রায় আজ প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে চার সদস্যের বেঞ্চ বাতিল ঘোষণা করেছে। মহান রবের দরবারে নতশিরে শুকরিয়া আদায় করি—আলহামদুলিল্লাহ, সুম্মা আলহামদুলিল্লাহ। তিনি আরও লিখেছেন, পরবর্তী প্রক্রিয়া নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সম্পৃক্ত। মহান রবের সাহায্য চাই—আমরা যেন দ্রুতই আমাদের পূর্ণ অধিকার ফিরে পাই। আমিন। এর আগে ২০১৩ সালের ১ আগস্ট জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল ও অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন হাইকোর্ট। এরপর ২০১৮ সালের ৭ ডিসেম্বর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। পরে হাইকোর্টে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে জামায়াতে ইসলামী। তবে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিল শুনানিতে জামায়াতের মূল আইনজীবী উপস্থিত না থাকায় গত বছরের নভেম্বর তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল বিভাগ ‘ডিসমিস ফর ডিফল্ট’ বলে আপিল খারিজের আদেশ দেন। ফলে রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল থাকে। এরপর গত ১৪ মে রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর বাতিল হওয়া নিবন্ধন ও প্রতীক ফিরে পেতে আপিলের শুনানি শেষ হয়। এ বিষয়ে রায় ঘোষণার জন্য ১ জুন দিন ধার্য করা হয়েছিল।

নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিন: ছালাউদ্দিন ছালু
অন্তর্বর্তী সরকারকে দ্রুততম সময়ে প্রয়োজনীয় সংস্কার করে নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) চেয়ারম্যান শেখ ছালাউদ্দিন ছালু। এ সময় সংস্কারের জন্য আর কতদিন প্রয়োজন বলে সরকারের কাছে প্রশ্ন রাখেন তিনি। শনিবার (৩১ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবে এনপিপির প্রধান অঙ্গ-সংগঠন ন্যাশনাল পিপলস যুব পার্টির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে এ আহ্বান জানান তিনি। এনপিপির চেয়ারম্যান বলেন, বর্তমানে দেশে একটি রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্রান্তিকাল চলছে। প্রধান উপদেষ্টাকে বলতে চাই, জনগণ অনেক আশা ও প্রত্যাশা নিয়ে আপনার দিকে তাকিয়ে রয়েছে, দেশের জন্য আপনি নতুন কিছু করবেন। কিন্তু জনগণ এখন পর্যন্ত ক্রান্তিকাল অতিক্রম করার নতুন কিছু দেখতে পাচ্ছে না। জনগণের প্রত্যাশা, আপনি আপনার ক্যারিশম্যাটিক লিডারশিপ দিয়ে বৈষম্য দূর করবেন এবং মৌলিক অধিকার ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করবেন। ন্যাশনাল পিপলস্ যুব পার্টির আহ্বায়ক তারিকুল ইসলাম সুমনের সভাপতিত্বে এবং ন্যাশনাল পিপলস্ স্বেচ্ছাসেবক পার্টির সভাপতি এমাদুল হক রানার সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য রাখেন-এনপিপির যুগ্ম আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুল হাই মন্ডল, মো. ইদ্রিস চৌধুরী, শেখ আবুল কালাম, সৈয়দ মাহমুদুল হক আক্কাছ, মো. ইমরুল কায়েস, জাগপার সভাপতি এ কে এম মহিউদ্দিন আহাম্মেদ (বাবলু) প্রমুখ। সম্মেলন শেষে ন্যাশনাল পিপলস্ যুব পার্টির আহ্বায়ক তারিকুল ইসলাম সুমনকে সংগঠনের সভাপতি ঘোষণা করা হয়।

মানুষ চায় আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন: আমিনুল হক
বিএনপির ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আমরা বারবার আহ্বান জানাচ্ছি, দ্রুত সময়ে একটি নির্বাচন দিতে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় গত ১৭ বছর স্বৈরাচার সরকার নির্বাচন নিয়ে টালবাহানা করেছিল, অন্তর্বর্তী সরকারকেও দেখছি একই কাজ করতে। তিনি বলেন, বিএনপিসহ যুগপৎ আন্দোলনের সব রাজনৈতিক দল এবং মানুষ চায় আগামী ডিসেম্বরের ভেতরেই নির্বাচন। শনিবার (৩১ মে) দিনব্যাপী শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ঢাকা মহানগর উত্তরের পল্লবী ৩ নম্বর ওয়ার্ড, রূপনগর থানার ৭ নম্বর ওয়ার্ড, দুয়ারিপাড়াসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডে অসহায়দের মধ্যে খাবার ও বস্ত্র বিতরণকালে তিনি এসব কথা বলেন। আমিনুল হক বলেন, নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে। সেই সরকারই পারবে একমাত্র পরিপূর্ণভাবে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কার করতে। স্বৈরাচার শেখ হাসিনাসহ তার দোসরদের বিচার করতে। নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে আমিনুল হক বলেন, গত ১৭ বছর মানুষ ভোট দিতে পারে নাই। তারা ভোট দিতে চায়। মানুষ তার নাগরিক অধিকার, ভোটাধিকার ফিরে পেতে চায়। গত ১৭ বছর মানুষ আন্দোলন-সংগ্রাম করেছে একটি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য। সেই নির্বাচনের জন্য এখন অপেক্ষা করছে। অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কারের কথা বললেও কিন্তু সংস্কারের ধারের কাছেও নাই বলে দাবি করে আমিনুল বলেন, স্বৈরাচার শেখ হাসিনাসহ তার দোসরদের বিচারের কথা বলছেন। কিন্তু আপনাদের ভেতরে স্বৈরাচারের ষড়যন্ত্রকারীরা ঢুকে গেছে। আপনারা স্বৈরাচারের কথা শুনছেন কিন্তু জনগণের কথা শুনছেন না। বিএনপির এই নেতা বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানই বাংলাদেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বহু সংস্কার করেছিলেন। আজকের রাজনৈতিক কঠিন সময়ে আমাদের নেতা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা রূপরেখার কর্মপরিকল্পনা দিয়েছেন। সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমেই বাংলাদেশের মানুষ তার পরিপূর্ণ নাগরিক অধিকার ফিরে পাবে। এসময় আরও উপস্থিতি ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব মোস্তফা জামান, যুগ্ম আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান সেগুন, এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন প্রমুখ।

ছাত্রশিবিরের ওপর হামলাকারীরা গ্রেপ্তার না হলে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি
চট্টগ্রামে সরকারি কমার্স কলেজের সামনে ছাত্রশিবিরের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা ও বিচারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের চট্টগ্রাম দক্ষিণ শাখা। এসময় তারা জানান, ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের প্রবেশ সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে এবং হামলাকারীদের চিহ্নিত করে অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। অন্যথায় কঠোর কর্মসূচির ডাক দেওয়া হবে। শনিবার (৩১ মে) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে আব্দুল খালেক মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তারা এ দাবি জানায়। এ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ছাত্রশিবিরের চট্টগ্রাম দক্ষিণের সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন রনি। এর আগে দুপুর ১১টার দিকে কমার্স কলেজের সামনে তাদের ওপর হামলা চালায় ছাত্রদল। লিখিত বক্তব্যে ছাত্রশিবিরের চট্টগ্রাম দক্ষিণের সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন রনি বলেন, বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্রশিবির কমার্স কলেজ শাখা সকালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষাইচ্ছুকদের জন্য হেল্প ডেস্ক এবং অভিভাবক ছাউনি তৈরি করে। শিক্ষার্থীরা তাদের ব্যাগ ও অন্যান্য সামগ্রী হেল্প ডেস্কে রাখে। বেলা ১১টার দিকে ছাত্রদলের কর্মীরা সেখানে গিয়ে আমাদের ভাইদের ওপর হামলা চালায়। এসময় আমাদের চারজন ভাই আহত হয়েছেন। কেন হামলা চালিয়েছে জানতে চাইলে ইব্রাহিম হোসেন রনি বলেন, হামলাকারীরা বলছিল আমাদের কোনো কর্মসূচি নেই তোমাদেরও কোনো কর্মসূচি হবে না। এটাই তাদের মূল বক্তব্য ছিল। কিন্তু ইতোমধ্যে আমরা দেখেছি গতকাল শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকী ছিল। সেই উপলক্ষে কমার্স কলেজের ভেতরে তারা (ছাত্রদল) ছাত্রদের নিয়ে মিলাদ-মাহফিল করেছেন। আমরা যখন সেখানে কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য শিক্ষকদের কাছে অনুমতি চেয়েছি, আমরা পাইনি। শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ যেন থাকে এবং আমাদের সঙ্গে যেন কোনো সমস্যা না হয়, সেজন্য আমাদের আজকের কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে কলেজের বাইরে। রনির দাবি, শিবির বরাবরই ছাত্রবান্ধব এবং গঠনমূলক কাজ করে যাচ্ছে। আমরা কলেজের বাইরে আমাদের হেল্পডেস্ক ও অভিভাবক ছাউনি তৈরি করেছি। আমরা লক্ষ্য করেছি যে, দেশব্যাপী ক্যাম্পাসগুলোতে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বিনষ্ট এবং ছাত্রসংসদ নির্বাচন বিলম্ব করতে ইতোমধ্যে বাম সংগঠন-ছাত্রদল একত্রিত হয়ে নানামুখী অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় আজকে সরকারি কমার্স কলেজে সামনে ছাত্রদলের কর্মীরা মাথায় দলীয় টুপি পরে হামলা চালিয়েছে। হামলার নেপথ্যের কারণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, অচিহ্নিত কোনো ব্যক্তি বা ছাত্রদল অস্বীকার করতে পারতো তাদের কর্মী না। সেখানে তারা সুসজ্জিত হয়ে মাথায় তাদের দলীয় ক্যাপ পরে এসেছে। আমাদের দাবি হচ্ছে- ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের প্রবেশ সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে এবং হামলাকারীদের চিহ্নিত করে অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। অন্যথায় কঠোর কর্মসূচির ডাক দেওয়া হবে। হামলার ঘটনায় আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে ইব্রাহিম বলেন, গত বছরের ৫ আগস্টের পর আমাদের চট্টগ্রামে এই সর্বপ্রথম ছাত্রশিবিরের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। অবশ্যই আমরা বিশ্বাস করি, প্রতিটি নাগরিকের আইনি সহযোগিতা পাওয়া দরকার। এ ব্যাপারে আমরা আইনের দ্বারস্থ হবো, ইনশাআল্লাহ্। এরই মধ্যে আমাদের যারা আহত হয়েছেন, চারজনের মধ্যে একজন মোজাহেরুল ইসলাম ভাই। আমরা মনে করি, তাদের আইনের যে সহযোগিতা পাওয়া দরকার তা পাবেন। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ছাত্রশিবির চট্টগ্রাম মহানগর দক্ষিণ শাখার সেক্রেটারি মাইমুনুল ইসলাম মামুন, বায়তুলমাল সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম, সাহিত্য সম্পাদক বাহাউদ্দিন, শিবির মহানগর দক্ষিণ কলেজ শাখার সম্পাদক মোজাহেরুল ইসলাম ও অন্যান্য দায়িত্বশীল নেতাকর্মীরা।

নির্বাচন ডিসেম্বরের মধ্যে অবশ্যই হতে হবে: আমীর খসরু
জাতির মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি হোক বিএনপির কখনো এটা চায় না বলে মন্তব্য করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘জিয়াউর রহমান কখনোই বিভক্তির রাজনীতি চাননি। তারেক রহমানও ঐক্যের রাজনীতি চান।’ শনিবার (৩১ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে জিয়া পরিষদের আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন আমীর খসরু। হাতেগোনা কয়েকটি দল নির্বাচন চায় না উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘চার-পাঁচটি দল, যারা নিবন্ধিত নয়, দেশের মানুষের সঙ্গে যাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই, তারা নির্বাচন চায় না। ওয়ান-ইলেভেনের সময়ও এমন কিংস পার্টি হয়েছিল।’ আমীর খসরু বলেন, ‘নির্বাচন ডিসেম্বরের মধ্যে অবশ্যই হতে হবে। দেশে কেউ বিনিয়োগ করতে এলে তারা জিজ্ঞেস করে, নির্বাচন কবে, আমরা একটা নির্বাচিত সরকার দেখতে চাই, নির্বাচিত সংসদ দেখতে চাই।’ বিএনপি ক্ষমতায় গেলেও দেশকে স্বৈরাচারমুক্ত রাখবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বিরোধী দলে থাকার সময় বিএনপির নেতাকর্মীরা যেভাবে একটা স্বৈরাচার, ফ্যাসিস্ট সরকারকে বিতাড়িত করে নাগরিক অধিকার ফিরিয়ে দিতে যুদ্ধ করেছেন, ক্ষমতায় গেলেও সেটা সমুন্নত থাকবে। দেশকে ফ্যাসিস্টমুক্ত রাখবে।’ জিয়াউর রহমান প্রতিটি রাষ্ট্রীয় কর্মকাণ্ডে জনগণকে সম্পৃক্ত করেছেন উল্লেখ করে নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আমীর খসরু আরও বলেন, ‘দেশের মানুষ, নতুন প্রজন্ম ভবিষ্যৎ দেখতে চায়। তাদের স্বপ্ন দেখাতে হবে, তা বাস্তবায়ন করে দেখাতে হবে। জনগণের আস্থা অর্জন করত হবে।’ বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় বিএনপি চেয়ারপানসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন বলেছে, তারা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। তাহলে কেন বিলম্ব হচ্ছে? আমরা ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচন চাই।’ জিয়া পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো. শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন- জিয়া পরিষদের সভাপতি প্রফেসর ড. মো. শফিকুল ইসলাম, মহাসচিব ড. মো. এমতাজ হোসেন, মাহফুজুল রহমান ফরহাদ, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. আব্দুল লতিফ প্রমুখ।

জিয়াউর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকীর দ্বিতীয় দিনে ঢাকায় খাদ্য ও বস্ত্র বিতরণ
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীর উত্তমের ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকীর দ্বিতীয় দিনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের বিভিন্ন স্থানে গরীব-অসহায় মানুষের মধ্যে খাদ্য সামগ্রী ও বস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। শনিবার (৩১ মে) দিনব্যাপী ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি ও বিভিন্ন থানার উদ্যোগে দুঃস্থদের মাঝে এ খাদ্য সামগ্রী ও বস্ত্র বিতরণ করা হয়। এসময় দোয়া মাহফিলও করা হয়। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক (দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত) সাইদুর রহমান মিন্টু জানান, যাত্রাবাড়ী আইডিয়াল স্কুলের সামনে, যাত্রাবাড়ী শহীদ ফারুক সড়ক, বিক্রমপুর প্লাজার সামনে জুরাইন রেল গেইট, শ্যামপুর লাল মসজিদ সংলগ্ন বিএনপি আয়োজিত কর্মসূচিতে দুপুরে অংশগ্রহণ করেছেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। এসব কর্মসূচিতে আরও অংশ নেয় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আব্দুস সালাম আজাদ, বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক সালাহ উদ্দীন আহমেদ, নগর বিএনপির সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন, যাত্রাবাড়ী থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি নবী উল্লাহ নবী প্রমুখ। এছাড়াও শাহজাহানপুর থানা বিএনপির উদ্যোগে মির্জা আব্বাসের নিজ বাসভবনে দোয়া মাহফিল ও খাদ্যসামগ্রী বিতরণ কর্মসূচি পালিত হয়। এতে মির্জা আব্বাসের পাশাপাশি অংশ নেয় মহিলা দল সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস, নগর বিএনপির সদস্য ফজলে রুবাইয়াত পাপ্পুসহ প্রমুখ। মিন্টু জানান, দুপুরে কলাবাগান থানা বিএনপির উদ্যোগে বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন স্থানে জিয়াউর রহমানের মৃত্যু বাষির্কীর কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেনসহ স্থানীয় নেতারা। বিকেলে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বিডিআর ১নং গেট সংলগ্ন ভাগলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিপরীত পার্শ্বে হাজারীবাগ থানা বিএনপি আয়োজিত কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন। এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নাসির উদ্দীন অসীম, বিএনপি নেতা শেখ রবিউল আলম রবি, নগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুস সাত্তার প্রমুখ। এছাড়া ডেমরা থানার টিএসসি বালুর মাঠ, রানি মহল সংলগ্ন কালাম মার্কেট, ডেমরা বাজার সংলগ্ন, ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার হাজী নগর রোডে ডগাইর পশ্চিম পাড়ায় বিএনপির উদ্যোগে দোয়া মাহফিল ও দুঃস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ কর্মসূচি পালিত হয়। এতে অংশগ্রহণ করেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ড. আসাদুজ্জামান রিপন। নগর বিএনপির নেতা ইশরাক হোসেন। গেন্ডারিয়া থানা বিএনপির উদ্যোগে নুপুর কমিউনিটি সেন্টার ও গেন্ডারিয়া স্টেশনে দোয়া মাহফিল ও দুঃস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ কর্মসূচি পালিত হয়।

মামলার আলটিমেটাম দিয়ে বললেন ‘বুঝবেন জাতীয় পার্টি কী’
রংপুরে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের বাড়ি ‘দ্য স্কাইভিউতে’ হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা নিতে পুলিশকে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছেন দলটির কো-চেয়ারম্যান ও রংপুরের সাবেক মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা। এসময় তিনি বলেন, রংপুর কোতোয়ালির ওসি মামলা যদি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এন্ট্রি না করে তাহলে বুঝবেন- ‘জাতীয় পার্টি কী’। তখন আমরা থানা ঘেরাওসহ অন্যান্য কর্মসূচি দেব। শনিবার (৩১ মে) বিকেলে নগরীর পায়রা চত্বরে বিক্ষোভ মিছিল শেষে সমাবেশ থেকে তিনি এ ঘোষণা দেন। এর আগে জিএম কাদেরের বাড়িতে হামলার প্রতিবাদে বিকেল ৪টার দিকে সেন্ট্রাল রোডের দলীয় কার্যালয় থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে প্রেস ক্লাব ঘুরে টাউন হল প্রদক্ষিণ করে পায়রা চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। মিছিলে এনসিপি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, সারজিস আলম ও তার দলের স্থানীয় নেতাদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের স্লোগান দেন জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা। সমাবেশে জাপার কো-চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা প্রশাসনের নির্লিপ্ততায় অতর্কিতভাবে ওই বাড়িতে হামলা চালিয়েছে। সারাদেশের মতো রংপুরে প্রশাসন কোনো কাজ করছে না। আমাদের ট্যাক্সের টাকায় প্রশাসনের লোকজনদের বেতন হয় তাই আপনারা কারও দলদাসে পরিণত হয়েন না। তিনি বলেন, এনসিপির যদি ক্ষমতা থাকে, ডিক্লেয়ার (ঘোষণা) দিয়ে করতে চায় তাহলে জাতীয় পার্টি সবসময় প্রস্তুত আছে। আমরা দেখছি এখন- মব ভায়োলেশন, এখন মবের যুগ। এখন আমরা প্রশাসনকে বলবো আপনারা সরে দাঁড়ান। মব ভায়োলেন্সে জাতীয় পার্টি দুর্বল না। জাতীয় পার্টি আমরা যে কোনো মবের মোকাবিলা করতে পারি। রংপুরের সাবেক এ মেয়র বলেন, ১৬ জুলাই আবু সাইদ হত্যাকাণ্ডের পর রাজনৈতিক দল হিসেবে একমাত্র জাতীয় পার্টি ব্যানার ও লাঠিসোঁটা নিয়ে বৈষম্যবিরোধীদের পাশে ছিল। তাদের সব ধরনের সহযোগিতা করেছি, বলতে চাই না কী ধরনের সহযোগিতা করেছি। আজকে এনসিপির সেই কুলাঙ্গাররা জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে লেগেছে। আমরা চাই প্রশাসন সরে দাঁড়ান, মাঠ ফ্রি করেন। আমাদের শক্তিমত্তা আছে কিনা আমরা রংপুরের মাটিতে জানান দিতে চাই। তারা অ্যাকশন করলে আমরা দাঁত ভাঙা জবাব দেওয়ার জন্য প্রস্তুত আছি। জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য এসএম ইয়াসির বলেন, এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা জিএম কাদেরকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার বাড়িতে হামলা করেছে। এসময় তারা গান পাউডার দিয়ে সেখানে থাকা মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দিয়েছে। তারা ককটেল বিস্ফোরণ ও ফাঁকা গুলি ছুড়েছে। প্রশাসনের লোকজনদের সামনে এসব ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় মামলা করতে গেলেও মামলা না নিয়ে বিলম্ব করে ওসি সাহেব অভিযোগ নিয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মামলা গ্রহণ করতে হবে। এছাড়া হামলায় জড়িতদের অনতিবিলম্বে গ্রেপ্তার করা না হলে হরতালের মতো কর্মসূচি দিতে পারি। এসময় জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হাসানুজ্জামান নাজিম, মিলন চৌধুরী, সদস্য অ্যাডভোকেট মোকাম্মেল হক চৌধুরী, মহানগর সিনিয়র সহ-সভাপতি লোকমান হোসেন, সহসভাপতি জাহিদুল ইসলাম, ছাত্র সমাজের মহানগর আহ্বায়ক আমিরুল ইসলাম, জেলা কমিটির আহ্বায়ক আরিফুল ইসলামসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

আমরা জামায়াতকে নয়, ইসলামকে ক্ষমতায় আনতে চাই: ডা. শফিকুর রহমান
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ইখলাসের সঙ্গে দ্বীনের কাজ করতে হবে, অর্পিত সাংগঠনিক দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে হবে। আমরা জামায়াতকে নয়, ইসলামকে ক্ষমতায় আনতে চাই। ৩০ ও ৩১ মে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলের উদ্যোগে জেলা ও মহানগরী কর্মপরিষদ সদস্যদের দুইদিনব্যাপী অনুষ্ঠিত শিক্ষাশিবিরের সমাপনী দিনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ইসলামের আলোকে ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র কায়েম হলে মদিনার আদলে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবাই সমান নিরাপত্তা পাবে। শিক্ষিত মা হলে জাতি শিক্ষিত হবে। তবে সেই শিক্ষা হতে হবে রাব্বুল আল আমিনের নামে। তিনি বলেন, চোখের পানি ফেলে সিজদায় পড়ে আল্লাহর সাহায্য চাইতে হবে। আমরা আল্লাহরই সাহায্য চাই। আমাদের আকাঙ্ক্ষা হবে প্রত্যেক মানুষকে দ্বীনের ছায়াতলে নিয়ে আসা। জামায়াতের আমির আরও বলেন, মুমিনদের দায়িত্ব হলো প্রতিবেশীর হক আদায় করা। আমরা সবাই আল্লাহর গোলাম; এটাই আমাদের পরিচয়। তিনি দায়িত্বশীলদের উদ্দেশে বলেন, বুঝে-শুনে জনশক্তিকে পরিচালনা করতে হবে। সংগঠনের কেউ অপরাধ করলে অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী বিচার হবে। ব্যক্তি নিজেকে পাহারা দিবে, সংগঠন সবাইকে পাহারা দিবে। তিনি সব ইসলামী দল ও শক্তির সঙ্গে যোগাযোগ বৃদ্ধি ও সম্পর্ক সুদৃঢ় করার উপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, শহীদ নেতাদের রক্ত, মজলুমের চোখের পানি ও মুখলিছ নেতাকর্মীদের ত্যাগ কোরবানির কারণে আমাদের প্রতি জনগণের ভালোবাসা ও আস্থা বেড়েছে। তিনি সংগঠনের জনশক্তিদের কোরআন, হাদীসসহ বুদ্ধিবৃত্তিক সব বিষয়ে অধ্যয়ন বাড়াতে এবং পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক ও সময়দান বাড়ানোর নির্দেশনা প্রদান করেন। নীলফামারী জেলার সৈয়দপুরে আয়োজিত শিক্ষাশিবিরে বিষয়ভিত্তিক আলোচনা পেশ করেন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চল পরিচালক মাওলানা আবদুল হালিম এবং সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান। কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চল সহকারী পরিচালক অধ্যক্ষ মাওলানা মমতাজ উদ্দিনের পরিচালনায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও অঞ্চল টিম সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বেলাল, অঞ্চল টিম সদস্য মুহাম্মদ আব্দুর রশীদ এবং রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলের বর্তমান ও সাবেক জেলা আমিররা। মাওলানা আবদুল হালিম বলেন- আমাদের ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সাংগঠনিক ও সামাজিক জীবনে আচরণ সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন হতে হবে। উত্তম ব্যবহার দায়িত্বশীলদের সংগঠনের জনশক্তি ও সাধারণ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তোলে। মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান বলেন, সংগঠনের জনশক্তির সব কিছু আখিরাতমুখী হতে হবে। সংগঠনের মজবুতি অর্জনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ইউনিট সংগঠন। সাংগঠনিক মজবুতি অর্জন ও জনসমর্থন বৃদ্ধি করে সফলতা অর্জন করতে হবে।

প্রধান উপদেষ্টা নিজেই নির্বাচন চাচ্ছেন না: আসাদুল হাবিব দুলু
বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু বলেছেন, সারা দেশের মানুষ নির্বাচনের জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠেছে। শুধু অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস নিজে নির্বাচন চাচ্ছেন না। শনিবার (৩১ মে) লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী উপজেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। দুলু বলেন, তারেক রহমান ঘোষিত ডিসেম্বরে নির্বাচন ঘোষণা না দিলে অন্তর্বর্তী সরকার আর ফ্যাসিবাদ শেখ হাসিনা সরকারের মধ্যে কোনো পার্থক্য থাকবে না। শেখ হাসিনা সরকার যেভাবে পালিয়েছে ডিসেম্বরে নির্বাচন না দিলে এই সরকারের একই অবস্থা হবে। তিনি বলেন, কিছু ভুঁইফোড় রাজনৈতিক দলের কথা শুনে যদি নির্বাচন দিতে গড়িমসি করা হয়, তাহলে শেখ হাসিনার মতো অবস্থা আপনাদের হবে। আপনারা পোর্ট দেবেন, করিডোর দেবেন- এটা তো আপনাদের দায়িত্ব না। এটা নির্বাচিত সরকারের দায়িত্ব। জনগণ যাদের রাষ্ট্র ক্ষমতা চালানোর ম্যানডেট দেবে তারা রাষ্ট্র পরিচালনা করবে। উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল ইসলাম প্রধানের সভাপতিত্বে সম্মেলনের জেলা বিএনপির সহসভাপতি রোকন উদ্দিন বাবুল, সহসভাপতি রফিকুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মমিনুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন প্রমুখ বক্তব্য দেন।

অন্তর্বর্তী সরকার আমাদের সংস্কারের ‘কলা’ দেখাচ্ছে: সালাহউদ্দিন আহমদ
অন্তর্বর্তী সরকার আমাদের সংস্কারের ‘কলা’ দেখাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। আজ শনিবার (৩১ মে) দুপুরে রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে ‘বাংলাদেশের কৃষি বিপ্লবে জিয়াউর রহমানের অবদান’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী কৃষক দল। সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আগামী ২ তারিখে আমাদের আবার ডেকেছেন মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা। ভাবটা আমরা বুঝছি এ রকম, আনুষ্ঠানিকতা আর আলোচনার কোনো কমতি নেই। কিন্তু কাজের কাজের কোনো খবর নেই। আবার ডেকেছেন ২ তারিখে দ্বিতীয় পর্বের আলোচনার আবার শুভ উদ্বোধন হবে। কেন? উদ্বোধন কয়বার করতে হয়? সংস্কার নিয়ে আবার কতবার উদ্বোধন করবেন? প্রথম পর্যায়ে আলোচনার একবার উদ্বোধন করেছেন। দ্বিতীয় পর্যায়ে আবার উদ্বোধন করবেন, তৃতীয় পর্যায়ে গিয়ে আপনারা এবার আবার এটা একত্র করবেন। এভাবে আপনারা আমাদের সংস্কারের কলা দেখাচ্ছেন!’ প্রসঙ্গত, গত ২৬ মে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সরকারি বাসভবন যমুনায় তার সভাপতিত্বে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এক সভায় সিদ্ধান্ত হয়, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জুনের প্রথম সপ্তাহে সংস্কার কাজ নিয়ে দ্বিতীয় দফায় আলোচনা শুরু করবে ঐকমত্য কমিশন। এই আলোচনার উদ্বোধন করবেন প্রধান উপদেষ্টা। কৃষক দলের আলোচনা সভায় সালাহউদ্দিন আহমদ প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে বলেন, ‘মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা, সংস্কার কমিশনে আপনারা নিজেদের মতো করে যেসব সংস্কার সংবিধানে চান, সেই সংস্কারগুলো জাতিকে মেনে নিতে হবে, এই ইগো কেন আপনারা লালন করেন? আপনারা কেন মনে করেন যে জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিলকে (এনসিসি) সর্বোচ্চ ক্ষমতা দিয়ে রাষ্ট্রের সব অঙ্গকে বেকার করে দেবেন? সেটা আমাদের কেন মানতে বলেন?’ সংস্কার কমিশন আরও কিছু অভিনব সংস্কার প্রস্তাব নিজেরা দিয়েছে উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘মনে হয় যেন আমাদের বাধ্য হয়ে সেসব সংস্কার প্রস্তাবে একমত হতেই হবে। তাহলে তো এটা বাকশাল তৈরি হলো!’ তিনি বলেন, ‘আমরা লিখিতভাবে বলেছি, আলোচনা করেছি কী কী বিষয়ে আমরা কাছাকাছি এসেছি, আর কী কী বিষয়ে নীতিগতভাবে একমত; সেগুলো কম্পাইল করে আপনারা জাতির কাছে প্রকাশ করুন।’ তিনি বলেন, ‘সংস্কার হবে, সংস্কার আমাদের প্রধানতম এজেন্ডা। তার চেয়েও বেশি জরুরি মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িতদের বিচার। সবাইকে কাঠগড়ায় নিয়ে আসতে হবে।’ সালাহউদ্দিন আরও বলেন, ‘যারাই রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসবে, তারা সংস্কার ও বিচার চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। স্বাধীন বিচার বিভাগ তাদের মতো বিচারকার্য চালিয়ে যাবে। সংস্কার তো কখনো শেষ হয় না। দেশের চাহিদা অনুযায়ী সংস্কার হতেই থাকবে। এটা চলমান প্রক্রিয়া।’ প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘কেন আপনি ডিসেম্বরের বাইরে গিয়ে নির্বাচন দেবেন? এর পক্ষে একটিও যুক্তি নেই। শুধু বলেন ডিসেম্বর থেকে জুনের কথা। ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচন দিতে হবে, এটা বাংলাদেশের মানুষের দাবি, আমাদের দাবি।’ ডিসেম্বরের পরে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে একটি যুক্তিও যদি অন্তর্বর্তী সরকারের থাকে, সেটি সরকারকে প্রকাশের অনুরোধ জানান তিনি। জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম সভায় সভাপতিত্ব করেন। সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক ইউসুফ আলী মোল্লা ও প্রচার সম্পাদক শামসুর রহমানের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপি নেতা ও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি তাবিথ আউয়াল, কৃষক দলের সহসভাপতি কর্নেল (অব.) এস এম ফয়সাল, মামুনুর রশীদ খান, নাসির হায়দার, আবুল বাশার আকন্দ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক হাজী মো. কামাল হোসেন ও সদস্যসচিব মীর হাসান কামাল তাপস, মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আসজাদুল আরিশ ও সদস্যসচিব শফিকুর রহমান প্রমুখ।

সাম্য হত্যায় ডিএমপির ব্যাখ্যা বিভ্রান্তিকর: ছাত্রদল
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ছাত্র ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যাকাণ্ড নিয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ব্যাখ্যাকে ‘বিভ্রান্তিকর’ হিসেবে অভিহিত করেছে ছাত্রদল। তারা সাম্য হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত ঘটনা জাতির সামনে উন্মোচনের দাবি জানিয়েছে। শনিবার (৩১ মে) দুপুর সাড়ে ১২টায় ‘সাম্য হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার এবং সাম্প্রতিক রাজনৈতিক বিষয়াবলী’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন ঢাবি ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস। লিখিত বক্তব্যে সাহস বলেন, সাম্য হত্যাকাণ্ডের তদন্তে চরম ধীরতা লক্ষ্য করা গেছে। প্রায় ১৩ দিন পর ডিএমপি কমিশনারের নেতৃত্বে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে যে তথ্য তুলে ধরা হয়, তা ছিলো অত্যন্ত অস্পষ্ট ও বিভ্রান্তিকর। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সাম্যকে হত্যা করা হয়েছে হত্যাকারীদের কাছে থাকা একটি ছোট টেজার গানকে কেন্দ্র করে। তিনি বলেন, একজন পরিচিত ছাত্রনেতা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পরিচয় দেওয়ার পরও তাকে এমন তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ‘অতি পেশাদার উপায়ে’ হত্যা করার পেছনে অন্য কোনো ষড়যন্ত্র ছিল কি না, সে বিষয়ে ডিএমপি কর্তৃপক্ষ স্পষ্ট কোনো তথ্য দিতে ব্যর্থ হয়েছে। ঢাবি ছাত্রদল সভাপতি বলেন, হত্যার প্রকৃত রহস্য আজও উদ্ঘাটিত হয়নি। এর আগেই পুলিশ তদন্ত শেষ হয়েছে বলে দাবি করে সংবাদ সম্মেলনে নানা অসংলগ্ন তথ্য উপস্থাপন করেছে, যা জনগণকে বিভ্রান্ত করেছে। এমনকি শহীদ সাম্যের পরিবারও ওই সংবাদ সম্মেলনের অস্পষ্টতা ও বিভ্রান্তিকর বক্তব্য নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, আওয়ামী ফ্যাসিবাদী শাসনের পতনের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যে নিরাপদ ও মতপ্রকাশের স্বাধীন ক্যাম্পাসের দাবি বারবার জানিয়ে এসেছে, তা নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে। একের পর এক ন্যাক্কারজনক ঘটনা সত্ত্বেও প্রশাসনের নির্লিপ্ত আচরণ প্রমাণ করে, তারা নিরাপত্তা রক্ষায় সম্পূর্ণ অযোগ্য। সংবাদ সম্মেলনে ঢাবি ছাত্রদল উপাচার্য ও প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি নিরাপদ, গণতান্ত্রিক ও মুক্ত শিক্ষাঙ্গনে রূপান্তরের জন্য যোগ্যতর ব্যক্তিদের হাতে প্রশাসনিক দায়িত্ব হস্তান্তরের আহ্বান জানায়।

ডিসেম্বরেই নির্বাচন চায় বিএনপিসহ ১০ নিবন্ধিত দল
বিএনপিসহ ১০টি নিবন্ধিত দল আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন চায়। নির্বাচনের দিনক্ষণ স্পষ্ট করতে রোডম্যাপ চায় নিবন্ধিত চারটি দল। ছয়টি নিবন্ধিত ধর্মভিত্তিক দল সংস্কারকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ এবং চব্বিশের নির্বাচনে অংশ নেওয়া ১৮টি নিবন্ধিত দলের মধ্যে জাতীয় পার্টিসহ কয়েকটি দল দ্রুত নির্বাচন চায়। বাকি ১১ নিবন্ধিত দলের কার্যক্রম সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়নি। নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত দল ছিল ৫৫টি। এর মধ্যে জামায়াতে ইসলামীসহ পাঁচটির নিবন্ধন বাতিল হয়েছে। নিবন্ধন স্থগিত আছে আওয়ামী লীগের। ১২ দলীয় জোটসহ বিএনপির মিত্র আরও কয়েকটি অনিবন্ধিত দল ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চায়। তবে এসব দলের দাবিকে গুরুত্ব দিচ্ছে না অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া দলগুলো। সংস্কার এবং নির্বাচনের পৃথক রোডম্যাপ দাবি করা জামায়াত বলছে, ফেব্রুয়ারি বা এপ্রিলে নির্বাচন হোক। অভ্যুত্থানের ছাত্রনেতাদের গঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি বিচার-সংস্কার-নির্বাচনের রোডম্যাপ চাইছে। সংস্কার এবং বিচার দৃশ্যমান হওয়ার শর্তে গণপরিষদ নির্বাচন চায় দলটি। জাপান সফরে থাকা প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস গত বৃহস্পতিবার নিক্কেই ফোরামের বক্তৃতায় বলেন, একটি মাত্র দল ডিসেম্বরে নির্বাচন চায়। তিনি আবারও বলেন, ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে। আগামী বছরের জুনের পর এক দিনও থাকবে না এই সরকার। তাঁর বক্তব্যের জবাবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, এক দল নয়; সবাই নির্বাচন চায়। শুধু একজন ব্যক্তি নির্বাচন চান না। তিনি হলেন অধ্যাপক ইউনূস।প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হয় একাধিক উপদেষ্টার কাছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন উপদেষ্টা সমকালকে বলেছেন, ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে; এক দিনও দেরি হবে না। এ নিশ্চয়তার পরও শুধু বিএনপিই ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের চাপ দিচ্ছে। তারা সংস্কারের কথা বলে না। শুধু নির্বাচন চায়। অথচ সরকারের দায়িত্ব শুধু নির্বাচন নয়। সংস্কার এবং বিচারও। এই উপদেষ্টা বলেন, সংস্কার না করে একটি দলের হাতে ক্ষমতা তুলে দিতে চান না তারা। সব দলই নির্বাচনের আগে সংস্কারের কথা বলছে। শুধু বিএনপি নির্বাচন নিয়ে পড়ে আছে। ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চায় যারাঅন্তর্বর্তী সরকারের কাছে এতদিন নির্বাচনের রোডম্যাপ চেয়ে এসেছে বিএনপি। গত ২৪ মে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তৃতীয়বারের মতো সাক্ষাৎ করে রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানান নেতারা। এ ব্যাপারে আশ্বাস না পেয়ে প্রকাশ্যে অসন্তোষ জানান তারা। গত বুধবার ঢাকায় তারুণ্যের সমাবেশে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন হতে হবে। গত ২২ মে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ড. ইউনূসের পদত্যাগের আলোচনায় রাজনৈতিক উত্তেজনার পারদ চড়ে। বিএনপি নেতারা প্রকাশ্যেই বলতে শুরু করেন, ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে পদত্যাগের নাটক করা হচ্ছে। ২৪ এবং ২৫ মে ২২টি রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা। এসব বৈঠকের পরও সরকার, বিএনপি, জামায়াত, এনসিপিসহ দলগুলো যে যার আগের অবস্থানে রয়েছে। সরকারের উপদেষ্টাদের ভাষ্য, প্রশাসন কুক্ষিগত হয়ে গেছে। সরকার কাজ করতে পারছে না। আগে সরকারকে চাপে রাখলেও রোডম্যাপ নিয়ে এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে মেয়র পদে ইশরাক হোসেনকে শপথ নিতে না দেওয়ায় ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের দাবিতে অনড় অবস্থান নিয়েছে বিএনপি। ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চায় লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-বিজেপি, গণফোরাম, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন-এনডিএম, বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-বাংলাদেশ জাসদ, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, গণঅধিকার পরিষদ, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি। গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান সমকালকে বলেছেন, সরকার আর্থিক ব্যবস্থাপনা, আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। এনসিপিঘনিষ্ঠ কিছু উপদেষ্টার মধ্যে ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করার ইচ্ছা দেখা যাচ্ছে। দেশকে অনিশ্চয়তা থেকে রক্ষা এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণের জন্য সেপ্টেম্বরের মধ্যে তপশিল ও ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হতে হবে। বাম এবং অন্যরাও নির্বাচন চায়বাম গণতান্ত্রিক জোট ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের দাবিতে কয়েক দফা কর্মসূচি পালন করেছে। এই জোটে রয়েছে ছয়টি বামপন্থি দল। সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স সমকালকে বলেছেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচন নিয়ে গড়িমসি করছে। সিপিবি, বাম জোটসহ ৫০টিরও বেশি দল এ বছরের মধ্যে নির্বাচন চাইছে। বর্তমান সংকট সমাধানে আর বিলম্ব না করে এ বছরের মধ্যে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। নির্বাচন ব্যবস্থার আমূল সংস্কার করতে হবে।’ বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজের মতে, অন্তর্বর্তী সরকার চলতি বছরের মধ্যে সুষ্ঠু নির্বাচন দিয়ে নির্বাচিতদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করুক। বাংলাদেশ জাসদ সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া বলেছেন, ভালো নির্বাচনের জন্য যেটুকু সংস্কার দরকার, এ জন্য বেশি সময়ের প্রয়োজন নেই। নির্বাচন নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে কিংবা ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে হতে পারে। বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থান যথাযথভাবে ব্যক্ত হয়নি। বিপুল জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্বকারী অধিকাংশ রাজনৈতিক দলই সম্ভব স্বল্পতম সময়ে নির্বাচন চায়। এলডিপি ও গণফোরাম গতকাল শুক্রবার দেওয়া বিবৃতিতে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে। বিএনপির মিত্র ১২ দলীয় জোট গতকাল নির্বাচনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে। এ জোটে নিবন্ধিত দল নেই। অনিবন্ধিত ১১ দলের সমমনা জাতীয়তাবাদী জোটও এ বছরের মধ্যে নির্বাচন চায়। এ ছাড়া বামপন্থি সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টি, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এমএল), সমাজতান্ত্রিক মজদুর পার্টি এবং প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দলও (পিডিপি) নির্বাচন চায়। সুষ্ঠু নির্বাচনে জোর জামায়াতেরবিএনপির সাবেক মিত্র জামায়াত সংস্কার এবং সুষ্ঠু নির্বাচনে জোর দিচ্ছে। গত শনিবার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের পর দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান জানিয়েছিলেন, আগামী বছরের রমজানের আগে অর্থাৎ ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হতে পারে। কিংবা রোজার পর এপ্রিলেও ভোট হতে পারে। এর চেয়ে বেশি দেরি হলে প্রাকৃতিক কারণে নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হতে পারে। তবে জামায়াত আমির স্পষ্ট করেন, অর্থবহ নির্বাচনের জন্য অর্থবহ সংস্কার হতে হবে। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের পর গত শনিবার রাত ১১টা থেকে দেড় ঘণ্টা সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গে বৈঠক করেন জামায়াতের আমির। সঙ্গে ছিলেন নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। রাজনৈতিক সূত্রগুলোর খবর, সরকার এবং সেনাবাহিনীর মধ্যে দূরত্ব কমিয়ে আনার চেষ্টা করছে জামায়াত। দলটির নেতাদের ভাষ্য, ৫ আগস্টের পর পুলিশ এবং প্রশাসনে আওয়ামী লীগপন্থি কর্মকর্তাদের বদলে সর্বত্র বিএনপিপন্থিরা এসেছেন। এ পরিস্থিতিতে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না বলে মনে করে জামায়াত। সরকারেরও একই মনোভাব। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে জামায়াত সরকারকে সমর্থন অব্যাহত রাখার কথা জানিয়ে এসেছে। আওয়ামী লীগ ভোটের মাঠে না থাকায় বিএনপির প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে ওঠার চেষ্টায় থাকা জামায়াত নেতাদের সন্দেহ– বর্তমান নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু ভোট করতে পারবে কিনা! এনসিপির মতো এ দলটিও মনে করছে, বিএনপির প্রতি পক্ষপাত রয়েছে কমিশনের। সেনাপ্রধানের সঙ্গে বৈঠকের সত্যতা নিশ্চিত করে ডা. তাহের সমকালকে বলেছেন, উত্তেজনা প্রশমন করা এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে কথা হয়েছে। জামায়াত কবে নাগাদ নির্বাচন চায় প্রশ্নে ডা. তাহের বলেছেন, যত দ্রুত নির্বাচন হয়, ততই উত্তম। নির্বাচন বিলম্বিত হওয়া কারও জন্যই ভালো নয়। সংস্কারের মাধ্যমে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করা দরকার। এর জন্য লম্বা সময় নেওয়া উচিত হবে না।এনসিপির অগ্রাধিকারে সংস্কার, বিচারএখনও নিবন্ধন পায়নি এনসিপি। এ দলটি বারবারই বলছে, নির্বাচনের আগে সংস্কার ও জুলাই হত্যার বিচার হতে হবে। দলটি সংসদের আগে স্থানীয় সরকার এবং ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবি তুলেছে। ইসলামী ছাত্রশিবিরও আগে ছাত্র সংসদ নির্বাচন চায়। গঠনের পর প্রায় তিন মাস ঢাকায় কার্যক্রম সীমাবদ্ধ থাকলেও গত মঙ্গলবার থেকে তারা তৃণমূলে যেতে শুরু করেছে। নিবন্ধনের শর্ত পূরণে ২১ জেলায় কমিটি গঠন এবং কার্যালয় স্থাপনের কাজ করছে। দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, এগুলো নির্বাচনী প্রস্তুতিরই অংশ। এনসিপি নির্বাচনের বিরোধী নয়। এনসিপি নির্বাচন-বিচার-সংস্কারের সমন্বিত রোডম্যাপ চায়। এনসিপি নেতারা সমকালকে বলেন, সাংবিধানিক সংস্কারে জোর দিচ্ছেন তারা, যাতে ভবিষ্যতে কোনো সরকার আওয়ামী লীগের মতো কর্তৃত্ববাদী হতে না পারে। বিএনপি সরকারের সমালোচকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হলেও এনসিপি সরকারের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখার কথা জানিয়েছে। সংস্কারে জোর ইসলামী দলগুলোর পাঁচ নিবন্ধিত দল জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস এবং ইসলামী ঐক্যজোট নির্বাচনের আগে সংস্কার চায়। এই দলগুলো নির্বাচনী ঐক্য তৈরির চেষ্টা করছে। দলগুলোর নেতারা গত রোববার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাঁকে সমর্থন জানিয়েছে। এ দলগুলো আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন চায়। তারাও মৌলিক সংস্কার চায়। ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব ইউনূস আহমাদ বলেছেন, ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের যে সময়সীমা প্রধান উপদেষ্টা ঘোষণা করেছেন, এতে তাদের আস্থা রয়েছে। নিবন্ধিত ধর্মভিত্তিক দল খেলাফত আন্দোলন ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল। নেতৃত্ব বদলের মাধ্যমে এ দলটিকেও ইসলামী দলগুলোর ঐক্যে টানার প্রক্রিয়া চলছে। নির্বাচনের স্পষ্ট সময় চায় চার দলবিএনপির মিত্র গণতন্ত্র মঞ্চের তিন নিবন্ধিত দল জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি, নাগরিক ঐক্য এবং গণসংহতি আন্দোলন নির্বাচনের স্পষ্ট দিনক্ষণ বা রোডম্যাপ চায়। একই রকম বক্তব্য এবি পার্টির। এই দলগুলো ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের বিরোধী নয়। আবার ডিসেম্বরের পরে নির্বাচন হলেও আপত্তি নেই। জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন সমকালকে বলেন, তারা দ্রুত নির্বাচন চান। তবে তিনি সময়সীমা বেঁধে দেননি। গণসংহতির প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি সমকালকে বলেছেন, তারা সুর্নির্দিষ্ট রোডম্যাপ চান। আওয়ামী লীগঘনিষ্ঠরা চাপে, জাপা ছাড়া অন্যরা চুপশেখ হাসিনার সরকারকে সমর্থন করা দলগুলো ৫ আগস্টের পর রাজনীতি থেকে অনেকটা ছিটকে গেছে। গত চার নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতা করে অংশ নিয়ে, তিনবার প্রধান বিরোধী দল হয়ে স্বৈরাচারের দোসর তকমা পাওয়া জাতীয় পার্টি (জাপা) ছাড়া অন্যরা নীরব রয়েছে। সরকারের কড়া সমালোচকে পরিণত হওয়া জাপা দ্রুত নির্বাচন চায়। মামলা এবং ধরপাকড়ে পড়া অন্য দলগুলো নির্বাচন নিয়ে কথা বলছে না। একটি দলের নেতা সমকালকে বলেন, ‘আমাদের কি কেউ জিজ্ঞেস করে নির্বাচনের কথা? তাহলে মতামত দেব কেন? নিজের মতো করে টিকে আছি। ভোট নিয়ে কথা বলতে চাই না।’ নীরব থাকা নিবন্ধিত দলগুলো হলো জাতীয় পার্টি-জেপি, সাম্যবাদী দল (এমএল), কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, গণতন্ত্রী পার্টি, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, বিকল্পধারা বাংলাদেশ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ, জাকের পার্টি, তরীকত ফেডারেশন, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, কল্যাণ পার্টি, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট-বিএনএফ, তৃণমূল বিএনপি, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি), ইসলামিক ফ্রন্ট ও ইসলামী ফ্রন্ট। চুপচাপ রয়েছে– বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি, বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টি (বিএমজেপি), বাংলাদেশ ন্যাপ, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, বিএমএল, মুসলিম লীগ, এনপিপি, ইনসানিয়াত বিপ্লব, বাংলাদেশ কংগ্রেস, সাংস্কৃতিক মুক্তি জোট ও গণফ্রন্ট।

সংস্কার শেষে আগে স্থানীয় নির্বাচন ও পরে জাতীয় নির্বাচনের দাবি জামায়াতের
ইসলামি দলগুলো একসঙ্গে নির্বাচনে অংশগ্রহণের আশাবাদ ব্যক্ত করে প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে আগে স্থানীয় নির্বাচন ও পরে জাতীয় নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান। শনিবার (৩১ মে) দুপুরে গোপালগঞ্জে জামায়াতে ইসলামীর ইউনিট দায়িত্বশীল সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ দাবি জানান। এসময় তিনি বলেন, হাজার হাজার মানুষের রক্তের বিনিময়ে নতুন বাংলাদেশকে ঢেলে সাজানোর জন্য প্রধান উপদেষ্টা জুন মাসে নির্বাচনের যে ঘোষণা দিয়েছেন তার এক-দুই মাস এদিক-ওদিক হওয়া কোনো বড় ব্যাপার নয়। ব্যাপার হলো সুষ্ঠু নির্বাচন। আওয়ামী লীগ আমলের মতই যদি নির্বাচন হয় তাহলে বাংলাদেশের মানুষ কেন রক্ত দিয়েছে। একজনের পরিবর্তে আরেকজনকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য মানুষ জীবন দেয় নাই। মানুষ গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য জীবন দিয়েছে। এজন্য আমরা- প্রয়োজনীয় সংস্কার করে রোজার আগে অথবা পরে নির্বাচন দেওয়ার জন্য বলেছি। প্রতিবেশী দেশ ভারতকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, আপনারা বিবৃতি দিয়েছেন, সবাইকে নিয়ে ডিসেম্বরের ভেতরে নির্বাচনের। এ দেশে কখন নির্বাচন হবে এটা আপনাদের কোনো বিষয় নয়, কেন আপনারা কথা বলেন। আপনারা এ দেশের ওপর ছড়ি ঘুরিয়ে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র করেছেন বারবার। বাংলাদেশর মানুষ কোনো ষড়যন্ত্র এবং কোনো দেশের প্রভুত্ব মেনে নেবে না। তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিবাদী সরকারের আমলে বিগত ১৬ বছরে সবচেয়ে বেশি জুলম-নির্যাতনের শিকার হয়েছে জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা। হাজার হাজার নেতাকর্মীকে ক্রস ফায়ারের নামে হত্যা করা হয়েছে। গুম করে আয়নাঘরে নিয়ে খুন করা হয়েছে। তারা চেয়েছিল এ দেশ থেকে ইসলামকে নির্মূল করতে। রফিকুল ইসলাম বলেন, জুলাই বিপ্লাবে ছাত্র-জনতা, কৃষক-শ্রমিক, মেহনতি মানুষ, বাংলাদেশর সব শ্রেণিপেশার মানুষ, দল-মত, জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধের মুখে ফ্যাসিবাদী সরকারের নায়িকা শেখ হাসিনা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদ মুক্ত হয়েছে। দেশের মানুষ দ্বিতীয়বার স্বাধীনতা লাভ করেছে, নতুন বাংলাদেশ পেয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দাবি করে তিনি বলেন, অবিলম্বে শেখ হাসিনা সরকারের চালানো গণহত্যার বিচার করতে হবে। সরকারের ভেতরে ও বাইরে ফ্যাসিবাদের দোসর এখনও যারা আছে। তারা অন্তর্বর্তী সরকার এবং দেশকে অস্থিতিশীল করার সড়যন্ত্রে নিয়োজিত। এই ফ্যাসিবাদ দোসরদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারের মাধ্যমে বিচারের আওতায় আনতে হবে। এই ফ্যাসিবাদের দোসরদের অনেকেই আরেকটি দলের ঘাড়ে ভর করে এই ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। এটা প্রাশাসন ও সরকার জানে। তাদের চিহ্নিত ও গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাই। তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের প্রয়োজনে গণহত্যার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিচার করতে হবে। তাদের রায় কার্যকর করতে হবে। জাতিসংঘ জুলাই বিপ্লবের গণহত্যার ওপর যে তদন্ত করেছে সেই তদন্ত প্রতিবেদনে পরিষ্কারভাবে তারা বলেছেন, শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের উচ্চপর্যায়ের নেতারা এবং প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে এ গণহত্যা পরিচালিত হয়েছে। এ ছাড়াও তিনি বলেন, মিথ্যা মামলা সাজিয়ে জামায়াতের নেতাদের যারা ফাঁসির রায় দিয়ে হত্যা করেছে, এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত বিচারপতি, প্রসিকিউশন, মিথ্যা সাক্ষ্যদাতা সবাইকে গ্রেপ্তার করে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। কারণ- এরা খুনি। জামায়াতে ইসলামী থেকে হিন্দু প্রার্থী দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, জামায়াত বাংলাদেশের গণমানুষের দল। সুতরাং সবাই যদি জামায়াতের প্রার্থী হয় তাতে কোনো অসুবিধা নেই। প্রার্থী হিন্দু হোক আর মুসলিম হোক- তাকে অবশ্যই সৎ হতে হবে। জামায়েতের কোনো প্রার্থী দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকতে পারবে না। জামায়াতে ইসলামী গোপালগঞ্জ জেলা শাখার আমির অধ্যাপক রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে গোপালগঞ্জ শহরের বিসিক এলাকায় অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ফরিদপুর জেলা আমির মাওলানা বদরুদ্দীন, সাবেক গোপালগঞ্জ জেলা আমির অ্যাড. আজমল হোসেন সরদার। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাবেক জেলা আমির অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল হামীদ, জেলা নায়েবে আমির, অধ্যাপক আ. ওয়াহাব মোল্যা, পৌর আমির মাওলানা ইনামুল হক খান, প্রচার সম্পাদক কাজী ইজাহারুল ইসলাম, ফরিদপুরের পৌর আমির এহসানুল মাহাবুব রুবেল প্রমুখ। জামায়াতে ইসলামী গোপালগঞ্জ জেলা শাখার আয়োজনে অনুষ্ঠিত এ ইউনিট দায়িত্বশীল সম্মেলনে জেলার ৪৫৩টি ইউনিটের সভাপতি ও সেক্রেটারিরা যোগ দেন।

হাসিনার পতনের পর রাজধানীতে প্রথম বড় সমাবেশ করবে জামায়াত
স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতনের পর রাজধানী ঢাকায় প্রথম বড় সমাবেশ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। আগামী ২১ জুন রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা করার জন্য ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাছে আবেদন করেছে দলটি। শনিবার (৩১ মে) জামায়াতের কেন্দ্রীয় মিডিয়া ও প্রচার বিভাগের প্রধান এবং সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘আগামী ২১ জুন বেলা ২টায় রাজধানীতে আমরা জনসভা করবো। প্রাথমিকভাবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জন্য ডিএমপির কাছে আবেদন করা হয়েছে। সমাবেশে জামায়াতের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন। পাশাপাশি সমমনা রাজনৈতিক দলের নেতাদেরকে আমন্ত্রণ জানানো হবে।’ প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে দেশ ছেড়ে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন শেখ হাসিনা। এরপর রাজধানীতে একাধিক সমাবেশ করে বিএনপিসহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল। তবে জামায়াতের পক্ষ থেকে রাজধানীতে বড় কোন সমাবেশ করতে দেখা যায়নি। সম্প্রতি আপিল বিভাগের রায়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের সাজা থেকে খালাস পেয়ে মুক্তি পান দলটির সিনিয়র নেতা নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলাম। তাৎক্ষণিকভাবে শাহবাগ মোড়ে সমাবেশ করে এ নেতাকে সংবর্ধনা দেয় জামায়াত।
.jpeg)
শহীদদের প্রত্যাশিত বাংলাদেশ গড়ে তোলার প্রত্যাশা তারেক রহমানের
শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানসহ বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে জীবনদানকারী সকলের জন্য দোয়া চাইলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেছেন, আমরা যাতে সকল শহীদদের প্রত্যাশিত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারি সে জন্য সবাই দোয়া করবেন। শুক্রবার (৩০ মে) স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় পূর্ব লন্ডনের একটি হলে জিয়াউর রহামেনর শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক দোয়া মাহফিলে তিনি এ কথা বলেন। তারেক রহমান বলেন, সন্তান হিসেবে আমি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জন্য দোয়া চাই। তবে শুধু জিয়াউর রহমানই নয়, দেশের সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনের শহীদদের জন্য দোয়া চাই। তিনি বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান যেমন বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, ঠিক একইভাবে পরে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের গতিকে প্রতিরোধ করা হয়েছিল। দেশে গণতন্ত্র, মানুষের অধিকার, রাজনৈতিক অধিকার ও কথা বলার অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে গিয়ে বিএনপি ও এর বাইরেও বহু রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী এমনকি সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ শহীদ হয়েছেন। হাজারো মানুষ বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। পঙ্গুত্ববরণ করেছেন অনেকেই। তারেক রহমান বলেন, বিশেষ করে আমরা যদি জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের দিনগুলোর কথা মনে করি, তাহলে আমরা দেখব সেই পলাতক স্বৈরাচার ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য যে হারে মানুষকে হত্যা করেছে। বহু মানুষের দৃষ্টি কেড়ে নিয়েছে। জাতিসঙ্গের হিসাবে ৬৬ জন শিশুকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা এসব মানুষের জন্য দোয়া করব। তারেক রহমান অনুরোধ করে বলেন, আমরা আগামী দিনে যাতে যে মানুষগুলো আমাদেরকে ছেড়ে চলে গিয়েছেন তাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী যাতে আমরা দেশকে গতে তুলতে পারি সে জন্য দোয়া করবেন। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সন্তান হিসেবে সবার প্রতি আমার এই প্রার্থনা। বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও যুক্তরাজ্য বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কয়সর এম আহমেদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত দোয়া মাহফিলের সভাপতিত্ব করেন যুক্তরাজ্য বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি আবুল কালাম আজাদ।

বিএনপিকে যমুনায় ডেকেছেন প্রধান উপদেষ্টা
আলোচনার জন্য আগামী ২ জুন বিএনপিকে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় আমন্ত্রণ জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শনিবার (৩১ মে) দুপুরে রাজধানীতে কৃষকদলের আলোচনা সভায় এ তথ্য জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। যারা নির্বাচন চায় না, তারা বিএনপি নেতাদের দেশদ্রোহী ও অন্য দেশের এজেন্ট বলছে। ১৭ বছরের ত্যাগের প্রতিদান দিচ্ছে একটি মহল বলে আক্ষেপ প্রকাশ করেন সালাহউদ্দিন আহমদ। ফ্যাসিবাদের কুটচালে জাতির মধ্যে একটি গোষ্ঠী বিভেদ সৃষ্টি করছে বলেও অভিযোগ বিএনপির সিনিয়র এই নেতার। আগামী ২ জুন প্রধান উপদেষ্টা আলোচনার জন্য বিএনপিকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে জানিয়ে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আলোচনার জন্য আনুষ্ঠানিকতার কমতি নেই। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই নেই তাদের৷’ সংস্কারের নামে কলা ঝুলানো হচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচন দিতে হবে, এটা জনগণের দাবি। ডিসেম্বরের পর নির্বাচন দেওয়ার কোনো কারণ নাই।’ ডিসেম্বরের পর নির্বাচনের জন্য একটি যুক্তি থাকলেও তা যেন সরকার প্রকাশ করে, সেই দাবি জানিয়েছেন বিএনপির এই নেতা।

‘প্রধান উপদেষ্টার কথায় মনে হচ্ছে মানুষ চিনতে ভুল করেছে বিএনপি’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, জাপানে বসে প্রধান উপদেষ্টা যেভাবে বিএনপির বিরুদ্ধে কথা বলছে, তাতে মনে হচ্ছে বিএনপি মানুষ চিনতে ভুল করেছে। শনিবার ( ৩১ মে) শিশু একাডেমিতে জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক সংস্থা (জাসাস) আয়োজিত আলোকচিত্র ও হস্তলিপি প্রদর্শনী উদ্বোধন শেষে তিনি এসব কথা বলেন। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাৎবার্ষিকী উপলক্ষে এই আয়োজন করা হয়। গয়েশ্বর চন্দ্র আরও বলেন, ‘ছাত্র-জনতার বিজয় হয়েছিল গণতন্ত্র ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য। এবার গণতন্ত্রের বিজয় আদায় করতে হবে।’ সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও সার্বভৌমত্বের স্বার্থে গণমানুষের পাশে ছিলেন উল্লেখ করে গয়েশ্বর বলেন, ‘জিয়াউর রহমান প্রচারমুখী ছিলেন না, প্রচারই তার পিছু নিতো। জিয়াউর রহমানের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে গয়েশ্বর বলেন, ‘তিনি যা করতেন না, তা বলতেন না। অধিক সময় নিতেন না তার বক্তব্যে। স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের জন্য কী করতে হবে, কেন করতে হবে, তা নিয়েই তিনি কাজ করতেন।’ তিনি আরও বলেন, জাতির মধ্যে জিয়াউর রহমানের আগমনটাও অত্যন্ত আকস্মিক। তার সম্পর্কে অনেক স্মৃতি রয়েছে, সব বলা সম্ভব নয়। জিয়া মানেই জাতীয়তাবাদী, জিয়া মানেই দেশপ্রেমিক, জিয়া মানেই গণতন্ত্র। তার প্রত্যেকটা পদচারণার মধ্যে উদ্দেশ্য থাকতো জাতির জন্য। জাতি জিয়ার আদর্শকে বুঝতে পারলে আমাদের মধ্যে ভয় থাকবে না।

বিএনপির সঙ্গে আসন ভাগাভাগির সমঝোতার দাবি ভিত্তিহীন: হাসনাত আবদুল্লাহ
বিএনপি বা অন্য কোনো দলের সাথে আসন ভাগাভাগির সমঝোতার দাবি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ। তিনি বলেন, কোনো দলের সাথেই এনসিপি আসন ভাগাভাগিজনিত কোনো আলোচনায় যায়নি। শনিবার (৩১ মে) দুপুরে এক ফেসবুক স্টাটাসে তিনি এসব কথা বলেন। এনসিপির এই শীর্ষ নেতার ফেসবুক পোস্টটি ঢাকা মেইল পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো- সম্প্রতি আমরা লক্ষ্য করেছি, একটি দলের প্রধান এক অনলাইন টকশোতে মন্তব্য করেছেন, “এনসিপি কিন্তু পর্দার অন্তরালে বিএনপির সাথে সিট নেগোসিয়েশন করেছে। আমরা হাইপোথেটিকালি ধরে নিলাম, পর্দার অন্তরালে সিট নেগোসিয়েশন হয়ে গেল, একটা আন্ডারস্ট্যাডিং হয়ে গেল, তাহলে দেখবেন, ডিসেম্বর না, সবাই সেপ্টেম্বরে নির্বাচনের ব্যাপারে রাজি হয়ে যাবে।” আমরা উল্লেখিত রাজনীতিবিদের প্রতি আমাদের সম্মান ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে বলতে চাই, বিএনপি বা অন্য কোনো দলের সাথে আসন ভাগাভাগির সমঝোতার দাবি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। কোনো দলের সাথেই এনসিপি আসন ভাগাভাগিজনিত কোনো আলোচনায় যায়নি। কাজেই সম্মানিত ওই রাজনীতিবিদের বক্তব্য অসত্য ও বিভ্রান্তিকর। দল হিসেবে এনসিপি সারাদেশে সাংগঠনিক বিস্তৃতিকে প্রধান লক্ষ্য রেখে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা আরও লক্ষ্য করেছি, উল্লেখিত আলোচনায় এবং অন্যত্র এনসিপি সম্পর্কে ভিত্তিহীন এক ইম্প্রেশন তৈরির চেষ্টা হয় যে, দল গোছানোর স্বার্থে এনসিপি নির্বাচন পেছাতে চায়। আত্মপ্রকাশের পর থেকেই এনসিপি বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ চেয়ে আসছে। এনসিপি বলে এসেছে, যেহেতু আওয়ামী লীগ আমলের ভুয়া নির্বাচনগুলোতে জনগণের ভোটাধিকার বাস্তবায়ন হয়নি; কাজেই আসন্ন নির্বাচন হতে হবে অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন যাতে জনগণ ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে। একটি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে। প্রশাসনিক সংস্কারগুলো সম্পন্ন করতে হবে। এনসিপি মনে করে, প্রশাসনিক সংস্কারসহ অন্যান্য মৌলিক সংস্কার সম্পন্ন করে নির্ধারিত সময়েই নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব। তবে সংস্কার ব্যতীত আয়োজিত নির্বাচন একচেটিয়া ও একপেশে হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। জনগণের ভোটাধিকার আদায়ের লক্ষ্যে এ বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে জুলাই চার্টারের ভিত্তিতে সংস্কার কার্যক্রমের মধ্যে দিয়ে সুষ্ঠু গণপরিষদ ও আইনসভার নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। পাশাপাশি বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার কর্তৃক প্রতিশ্রুত জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করতে হবে। যেনতেন ও প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন যেন স্রেফ ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি না হয়; বরং মৌলিক সংস্কারের মাধ্যমে অর্থবহ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক উত্তরণ ঘটুক, এনসিপি সেই প্রত্যাশা করে। সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকে বিভ্রান্তি এড়িয়ে বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ প্রশ্নে এনসিপি ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানায়।

অসুস্থতার জন্য বিশ্রামে রাকিব, রোববার থেকে থাকবেন কর্মসূচিতে: ছাত্রদল
শারীরিক অসুস্থতার কারণে ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পূর্ণ বিশ্রামে আছেন। তাই তিনি গত দুদিন যাবত দলীয় কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারছেন না। রোববার থেকে তিনি কর্মসূচিতে অংশ নেবেন। শুক্রবার রাতে ছাত্রদলের দফতর সম্পাদক (সহসভাপতি মর্যাদা) জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে জাহাঙ্গীর বলেন, ‘আগামী রোববার থেকে তিনি দলীয় কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করবেন, ইনশাআল্লাহ। ছাত্রদলের নেতা-কর্মী ও সমর্থক সকলের কাছে ছাত্রদল সভাপতি শারীরিক সুস্থতার জন্য দোয়া প্রার্থনা করেছেন।’ ছাত্রদল সভাপতির শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে কোনো ধরনের বিভ্রান্তি না ছড়ানোর জন্য অনুরোধ জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘ছাত্রদলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের যেকোনো ধরনের গুজব হতে সতর্ক থাকার জন্য কেন্দ্রীয় সংসদের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হলো।’ উল্লেখ্য, ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিবকে ছাত্রদলের সভাপতি পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে সংগঠনটির সিনিয়র সহসভাপতি আবু আফসান মোহাম্মদ ইয়াহিয়াকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি করা হয়েছে বলে একটি গুজব ছড়িয়ে পড়ে। এমনকি কয়েকটি গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত সংবাদও প্রকাশিত হয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল গণমাধ্যমে এ বিজ্ঞপ্তি দিলো।

গণতন্ত্রের শহীদদের জন্য দোয়া চাইলেন তারেক রহমান
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘আমার পিতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান শুধু ব্যক্তি নন, তিনি ছিলেন গণতন্ত্রের প্রতীক। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে তিনি নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন। আজ তার শাহাদাৎবার্ষিকীর এই মাহফিলে আমরা শুধু তার জন্য নয়, গণতন্ত্রের জন্য যারা প্রাণ দিয়েছেন, সেই সব শহীদদের জন্যও দোয়া করছি।’ শুক্রবার (৩১ মে) পূর্ব লন্ডনের একটি হলে বাদ মাগরিব আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা, সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে যুক্তরাজ্য বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত খতমে কোরআন, মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন। তারেক রহমান বলেন, ‘খুব বেশি দিন আগের কথা নয়, মাত্র এক বছরেরও কম সময় আগে, গত জুলাই-আগস্টে পলাতক স্বৈরশাসক ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য যে দমন–পীড়ন চালিয়েছে, তা নজিরবিহীন। বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছে, অসংখ্য মানুষ আহত ও পঙ্গু হয়েছে। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, ওই সময়ে ৬৩ জন শিশুকে হত্যা করা হয়েছে।’ বাংলাদেশে আজ যারা গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করছেন, তাদের রক্ত ও আত্মত্যাগ বৃথা যাবে না উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, ‘ইতিহাস একদিন এই দমন-পীড়নের বিচার করবে, আর সেদিন জনগণের রায়ই হবে চূড়ান্ত।’ অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্য বিএনপির নেতাকর্মীসহ প্রবাসী বাংলাদেশিদের উপস্থিতি ছিল উল্লেখযোগ্য। দোয়া মাহফিলে শহীদ জিয়াউর রহমান, ৫ আগস্টের শহীদ, এবং গণতন্ত্রের জন্য জীবনদানকারী সব শহীদের রুহের মাগফিরাত কামনা করা হয়।

‘ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গেলে জনগণ রাস্তায় নেমে আসবে’ : খায়রুল
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও নরসিংদী জেলা বিএনপির সভাপতি খায়রুল কবির খোকন বলেছেন, জনগণ এই দেশের মালিক, অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে সসম্মানে বিদায় নেবেন। আশা করি তাদের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে, ডিসেম্বরের মধ্যে সুনির্দিষ্ট দিন, তারিখ ঘোষণা করলে দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। আর যতই প্রলম্বিত করবে, দেশের পরিস্থিতি ঘোলাটে হবে, দেশ সংঘাতের দিকে চলে যেতে পারে। জনগণের ধৈর্য, সংযম, সহনশীলতার বাঁধ ভেঙে গেলে তারা রাস্তায় নেমে আসবে। শুক্রবার (৩০ মে) সন্ধ্যায় নরসিংদীর শিশু একাডেমীর হল রুমে শহীদ জিয়াউর রহমান বীর উত্তম-এর ৪৪ তম শাহাদাৎবার্ষিকী উপলক্ষে নরসিংদী জেলা বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। খায়রুল কবির খোকন বলেন, জাপানে গিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন কেবল একটি দল নির্বাচন চায়। প্রকৃতপক্ষে দেশের আপামর জনতাসহ সকল দলই একটি সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচন প্রত্যাশা করছে। ছাত্র-জনতার পাশাপাশি বিএনপির দীর্ঘ সময়ে আন্দোলনের ফলে শেখ হাসিনার পতন হয়েছে। আমাদের পছন্দের নোবেলজয়ী ইউনূস দায়িত্বে আছেন। তাহলে নির্বাচন নিয়ে এত টালবাহানা কেন? কোনো কারণে যদি আবার স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ পুনর্বাসিত হয় তাহলে সেই দায় কিন্তু বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে নিতে হবে। তিনি বলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে দেশ ও জাতির সংকটে, ক্রান্তিকালে, বিপর্যয়ের সময় শহীদ জিয়াউর রহমান দুইবার নেতৃত্ব দেওয়ার গৌরব অর্জন করেছে। যা আমাদের গর্বের বিষয়। তার অল্প শাসনামলে তিনি বিশ্বের নেতা হয়েছিলেন। শহীদ জিয়াউর রহমান বিদেশে মানবসম্পদ রপ্তানির দিগন্ত উন্মোচিত করেছিলেন। জিয়াউর রহমান মুক্ত অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করেছিলেন। তিনি শাসনামলে দেশকে স্বনির্ভর করেছিলেন। তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বিএনপির এ নেতা বলেন, আগামী দিনে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত, জনগণের ভোটের অধিকার, আইনের শাসন, বিচার বিভাগের ন্যায়বিচার, মানবাধিকার, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে। এই আন্দোলনে বিজয় না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথ থেকে ঘরে ফিরে যাব না। এই আন্দোলনের মাধ্যমেই চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করবো। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনজুর এলাহীর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট বাছেদ ভূইয়া, ভিপি জলিল, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবু সালেহ চৌধুরী, শহর বিএনপির সভাপতি একেএম গোলাম কবির কামাল, ফারুক উদ্দীন ভূঁইয়া, রবিউল ইসলাম রবি, ইকবাল হোসেন, বিজি রশিদ নওশের, আমিনুল হক বাচ্চু, জেলা যুবদলের সভাপতি মহসিন হোসাইন বিদ্যুত, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি ভিপি নাসির, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান নাহিদ, জেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক স্বপ্না আহমেদ, হাজীপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জাহিদুল কবির ভূঁইয়াসহ বিএনপির অন্যান্য নেতাকর্মীবৃন্দ।

দেশের সমস্যার কথা বারবার বাইরে গিয়ে বলে লাভ নেই : আমীর খসরু
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে ইঙ্গিত করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, দেশের সমস্যার কথা বারবার বাইরে গিয়ে বলে লাভ নেই, এখানেই বলতে হবে, এখানেই সমাধান। শুক্রবার (৩০ মে) চট্টগ্রাম নগরীর মুরাদপুরস্থ এলজিইডি ভবন মিলনায়তনে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে মহানগর বিএনপির স্বরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। আমীর খসরু বলেন, আমরা নির্বাচনের অপেক্ষায় আছি। নির্বাচনের মাধ্যমে একটা নির্বাচিত সরকার না আসা পর্যন্ত কিছু বাস্তবায়ন করা সম্ভব না। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাংলাদেশে একটা নির্বাচিত সরকারের প্রয়োজন। এটা কোন দল চাই না চাই, এটা বড় কথা না। গণতন্ত্রের প্রত্যাশায় বাংলাদেশের মানুষ আছে।প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, আর কোনো কিছু কথা বললে দেশের মধ্যে বললে ভালো। দেশের বাইরে গিয়ে বেশি কথা না বলে দেশের ভেতরে বলেন, এটাতো বাংলাদেশের সমস্যা। এই সমস্যা বাইরে গিয়ে বলে তো কোনো লাভ নেই। আমরা যদি বারবার বাইরে গিয়ে এসব কথা বলতে থাকি, তাহলে বাংলাদেশের সমস্যার সমাধান হবে না। এইখানে বলতে হবে, এইখানে সমাধান।বাংলাদেশের মানুষই সমাধান।সব সমস্যার সমাধান বাংলাদেশের জনগণ উল্লেখ করে খসরু বলেন, দিন শেষে সংস্কার বলেন, বিচার বলেন,যত কিছু বলেন, সমাধান বাংলাদেশের মানুষ। সমাধান দেওয়ার দ্বিতীয় কোনো অস্ত্র নেই। একটাই মাত্র অস্ত্র বাংলাদেশের জনগণ। তিনি বলেন, বাংলাদেশকে সঠিকভাবে, সঠিক জায়গায়, দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার চিন্তায়, জিয়াউর রহমানের চিন্তায় গড়তে হলে নেতাকর্মীদের মধ্যে স্পিড থাকতে হবে। স্পিড চলে গেলে হবে না। নিজেদের মধ্যে ছোটখাটো দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ভুলে যেতে হবে। সামনের বড় চিত্র দেখতে হবে।চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক আলহাজ্ব এরশাদ উল্লাহর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব নাজিমুর রহমানের পরিচালনায় সভায় প্রধান আলোচক ছিলেন পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এস এম আবদুল আউয়াল। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম।