বাংলাদেশের অর্থনীতি ও আসন্ন এফবিসিসিআই নির্বাচন
- নিউজ ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০২:৪৯ পিএম, ১৩ আগস্ট ২০২৫

বাংলাদেশের অর্থনীতি কঠিন সময় পার করছে। বিগত ফ্যাসিষ্ট সরকারের সীমাহীন দুর্নীতি ও প্রায় ১৮ লক্ষ কোটি টাকা পাচারের কারণে অসংখ্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস হয়ে গেছে। সুদের হার অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। ক্ষুদ্র ও মাঝারী উদ্যোক্তাদের এত উচ্চ সুদ দিয়ে টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়ছে।
বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর অর্থনৈতিক সেক্টরে শৃংখলা ফিরিয়ে আনার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তার সুফল ও ইতিমধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। গত বছর জুলাইয়ে মুদ্রাস্ফীতি ছিল ১১.৬৬% এ বছর জুলাইয়ে ৮.৫৫% এ নেমে এসেছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ গতবছর জুলাইয়ে ছিল ২০.৪৮ বিলিয়ন ডলার এ বছর জুলাইয়ে ২০.৭৭ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে। সর্বপরি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিভিন্ন দেশে পাল্টা ট্যারিফ আরোপের ফলে গ্লোবাল বিজনেস অর্ডার নতুন রূপ ধারণ করবে। এটা নতুন নতুন চ্যালেন্জ এবং সম্ভাবনা তৈরি করবে। সম্ভাবনাকে আমরা কাজে লাগাতে পারবো কিনা সেটা নির্ভর করবে আমাদের নতুন নেতৃত্বের দক্ষতার উপর।
এছাড়া ২০২৬ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশের এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন হতে যাচ্ছে। বিগত সরকারের সময়ে এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। গত এক বছরে বাংলাদেশসহ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে রাজনীতি ও বাণিজ্যে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। এ পরিবর্তনের চিন্তা গ্র্যাজুয়েশন করার সিদ্ধান্ত নেয়ার সময়ে তৎকালীন সরকার করতে পারেনি। ফলে বাংলাদেশের সঙ্গে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি হয়েছে। ২০২৬ সালে গ্র্যাজুয়েশন করলে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা হারাবে বাংলাদেশ। এ অবস্থায় গ্র্যাজুয়েশন বিলম্ব করাই যৌক্তিক বলে ধারণা দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের সঙ্গে সঙ্গে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নীতি পরিবর্তন হবে। যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও জাপানের মতো দেশগুলো ট্যারিফ আরোপ করবে। যেসব দেশের সঙ্গে এখন বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য হচ্ছে, সেখানে সুবিধাগুলো আর পাবে না বাংলাদেশ। কারণ তখন এ দেশকেও গ্র্যাজুয়েট হিসেবে মূল্যায়ন করা হবে।
এ অবস্থায় চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় গ্র্যাজুয়েশনের সময় বিলম্বিত করা যেতে পারে বলে অভিমত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা ।বাংলাদেশ চাইলে এখানে জাতিসংঘের ডেভেলপমেন্ট পলিসি কমিটির মূল্যায়ন, অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদের অনুমোদন এবং সাধারণ পরিষদের চূড়ান্ত অনুমোদনের বিষয়ে সময় চাইতে পারে। পৃথিবীর অনেক দেশ তাদের গ্র্যাজুয়েশন বিলম্বিত করেছে।
এ সকল গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বিবেচনায় এনে এফবিসিসিআই নির্বাচনে অংশগ্রহণে ইচ্ছুক প্যানেল লীডারদের ও নেতৃবৃন্দকে একসাথে বসে নির্বাচনের যেসকল বাধা বিপত্তি আছে সেগুলো দূর করে দ্রুত নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করা জরুরি। কেননা দেশের ব্যবসা বাণিজ্য এগিয়ে নেয়ার জন্য নির্বাচিত ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দদের দায়িত্ব নেয়া প্রয়োজন, তা না হলে ব্যবসায়ী সমাজ সহ দেশের সার্বিক অর্থনীতি পিছিয়ে পড়বে।
লেখা—
আতিকুর রহমান
চেয়ারম্যান
ইয়াং বাংলা ম্যানুফ্যাকচারিং ইন্ডাস্ট্রিজ কোং লি.
জিবি সদস্য, এফবিসিসিআই (২০২৫–২০২৭)