
প্রত্যেক বাহিনীকেই গুমের কাজে ব্যবহার করেছে আ’লীগ
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ভিন্নমতাবলম্বীদের গুম করতে প্রত্যেক বাহিনীকেই ব্যবহার করা হয়েছে। এর মধ্যে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব), ডিবি ও সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা ছাড়াও রয়েছে অন্যান্য বাহিনী। বিশেষ করে বিএনপি-জামায়াতের অনুসারী নেতাকর্মীরা সবচেয়ে বেশি গুমের শিকার হয়েছেন। গতকাল বুধবার প্রধান উপদেষ্টার কাছে গুম কমিশনের দেওয়া দ্বিতীয় পর্বের প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। এ পর্যন্ত পড়া ১ হাজার ৮৫০টি অভিযোগের মধ্যে ১ হাজার ৩৫০টি অভিযোগ যাচাই-বাছাই করে এ মতামত দিয়েছে কমিশন। ২০২ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে প্রতিটি বাহিনী কীভাবে গুমের সঙ্গে জড়িত ছিল তার বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাহিনীর সদস্যরা তাদের ধরে নিয়ে নির্যাতন এবং পরে ক্রসফায়ারে দিয়েছে। যেসব সংস্থা গুমের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল তারা বেশির ভাগই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন। পুলিশ, র্যাব, এনএসআই, সিআইডি, ডিবি, কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের মতো বাহিনীগুলো এ কাজ করেছে। র্যাবের বিষয়ে বলা হয়েছে, তাদের ১৫টি ব্যাটালিয়ান সারাদেশে কাজ করেছে। এদের প্রত্যেকটি ব্যাটালিয়নের মাধ্যমেই গুমের ঘটনা ঘটেছে। এসব গুমের বিষয়ে র্যাবের ডিজি, এডিজিসহ শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তরা অবগত থাকতেন। গত ৫ আগস্ট পর্যন্ত গুমের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল সংস্থাটি। ডিবির নির্যাতনের শিকার ভুক্তভোগীরা তদন্ত কমিটিকে জানিয়েছেন, তারা ধরে নিয়ে যখন-তখন নির্যাতন করত। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটাত। সামরিক গোয়েন্দা সংস্থাকে (ডিজিএফআই) বিগত আওয়ামী লীগ সরকার দলীয় কাজে ব্যবহার করেছে। জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থার (এনএসআই) যেখানে দেশের জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়ে গোয়েন্দা তথ্য প্রদানের কথা, সেখানে এই সংস্থাটিকেও বিরোধী মত দমনপীড়নে ব্যবহার করা হয়েছে। সীমান্ত রক্ষাবাহিনী বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডও (বিজিবি) গুমের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে পড়েছিল। কখনও গুমের শিকার ব্যক্তিকে ভিন্ন দেশে বিশেষ করে ভারত ও মিয়ানমারে পাঠিয়ে দিয়েছে। উদাহরণ হিসেবে বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদ, মেহেদী হাসান ডলার ও রহমতুল্লাহর নাম উল্লেখ করা হয়।যারা গুম বা অপহরণের শিকার হয়েছে কখনও ভুক্তভোগীর পরিবার থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে গেলেও নেওয়া হয়নি। প্রতিবেদনে বছরওয়ারি কতজন গুম হয়েছেন যাদের কোনো হদিস মেলেনি, তার একটি গ্রাফও তুলে ধরা হয়েছে। ২০১৭ সালে ৫১ জন গুম হয়েছেন। এ ছাড়া প্রত্যেক বছরই বিভিন্ন সংখ্যক মানুষ গুমের শিকার হয়েছেন বলে বলা হয়েছে প্রতিবেদনে।

সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ : আইন উপদেষ্টাকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন
সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারির পরিপ্রেক্ষিতে সৃষ্ট উদ্ভূত পরিস্থিতি পর্যালোচনা এবং আন্দোলনরত সংগঠনগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে শীঘ্রই সুচিন্তিত সুপারিশ প্রণয়নে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। এতে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুলকে কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে বুধবার রাতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ খালেদ হাসান স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এবং মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদ। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, গঠিত কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা প্রদান করবেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব। প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, কমিটি প্রয়োজনে এক বা একাধিক সদস্য নিতে পারবে। এটি অবিলম্বে কার্যকর হবে।
.png)
পাচারের অর্থ ফেরাতে প্রাধান্য দিয়ে ড. ইউনূসের যুক্তরাজ্য সফর
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের যুক্তরাজ্য সফরে বিগত সরকারের আমলে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার বিষয়টি সর্বোচ্চ প্রাধান্য দেবে বাংলাদেশ। এ সফর চলমান গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে প্রত্যাশা ঢাকার। প্রধান উপদেষ্টার যুক্তরাজ্য সফর নিয়ে বুধবার (৪ জুন) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব রুহুল আলম সিদ্দিকী। চার দিনের সফরে আগামী ৯ জুন লন্ডন যাচ্ছেন অধ্যাপক ইউনূস। লন্ডন সফরে তিনি যুক্তরাজ্যের রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। আর প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের কথা রয়েছে।পররাষ্ট্রসচিব বলেন, পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার বিষয়ে সব দেশের সঙ্গে কাজ চলছে। সেই ধারাবাহিকতায় প্রধান উপদেষ্টার সফরে পাচার হওয়া অর্থ পুনরুদ্ধারে আলোচনা হবে ও যুক্তরাজ্যের কাছে সহায়তা চাওয়া হবে। সফরে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে বাংলাদেশি কোনো রাজনৈতিক দলের যুক্তরাজ্য শাখার নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত সচিব কিছু জানাতে পারেননি। তবে যুক্তরাজ্যের প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক হতে পারে বলে জানান তিনি। এ সময় এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তারেক রহমান কোন স্ট্যাটাসে যুক্তরাজ্য আছেন তা জানা নেই।’ তিনি আরো বলেন, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে সমর্থন করে যুক্তরাজ্য, তাই এখনকার বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে সফরটি গুরুত্ব বহন করে। এ ছাড়া সামনে রোহিঙ্গা নিয়ে জটিলতার সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা আছে। অনেকেই রোহিঙ্গা ইস্যুতে ফান্ড কমিয়ে দিচ্ছে। সফরে এ বিষয়েও যুক্তেরাজ্যের সহায়তা চাইবেন প্রধান উপদেষ্টা।

জোরপূর্বক গুমের ক্ষেত্রে র্যাবের গোয়েন্দা শাখা হত্যাকারী বাহিনী হিসেবে কাজ করেছে: প্রেস সচিব
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) গোয়েন্দা শাখা জোরপূর্বক গুমের ঘটনাগুলোতে একটি হত্যাকারী বাহিনী হিসেবে কাজ করেছে। বুধবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন মন্তব্য করেন তিনি। গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের দ্বিতীয় ইন্টেরিম রিপোর্টের বিষয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। কমিশনের পক্ষ থেকে আজ প্রতিবেদনটি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দেওয়া হয়। খবর বাসসের শফিকুল আলম বলেন, প্রতিবেদনে দেখানো হয়েছে কীভাবে মানুষকে গুম করা হয়েছে এবং শেখ হাসিনা সরকারের শাসনামলে গুম হওয়া ব্যক্তিদের কতজনকে হত্যা করা হয়েছে। গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশন এ পর্যন্ত প্রায় ১,৩৫০টি গুমের ঘটনা চিহ্নিত করেছে এবং প্রতিদিনই নতুন নতুন ঘটনা তারা খুঁজে পাচ্ছেন বলে জানান তিনি। প্রেস সচিব আরও জানান, কমিশন ১,৩৫০টি গুমের মামলা পর্যালোচনা করেছে। সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার ও সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদ উপস্থিত ছিলেন।

বাজেটে সাধারণ মানুষের জন্য সুখবর আছে : অর্থ উপদেষ্টা
আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হচ্ছে ঈদুল আজহার ছুটি। টানা ১০ দিন ছুটি থাকবে দেশের সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। তবে এই ১০ দিনের ছুটিতে অর্থনীতিতে কোনো প্রভাব পড়বে না বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। আজ বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, স্থবির হওয়ার কোনো সুযোগ নেই, ব্যবসায়ীরা তাদের মতো করে ব্যবসা করবেন। বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে কোন কোন দিন কোন কোন স্থানে ব্যাংক খোলা থাকবে। গরুর হাটে কীভাবে থাকবে। আগামী ২২ জুন বাজেট পাস হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ঈদের পর বাজেটের ওপর কার কী মন্তব্য, সাজেশেন থাকবে সেটা নেবো। ১৯ জুন পর্যন্ত মতামত দিতে পারবে বাজেটের বিষয়ে। ২২ তারিখ কেবিনেট বৈঠকে বাজেট অনুমোদন হবে।প্রস্তাবিত বাজেটে সাধারণ মানুষের জন্য সুখবর আছে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, সুখবর আছে, বাজেটে স্বস্তি আছে। ২ জুন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট প্রস্তাব উত্থাপন করেন অর্থ উপদেষ্টা। যার আকার ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। এটি দেশের ৫৪তম, অন্তবর্তীকালীন সরকার ও অর্থ উপদেষ্টার প্রথম বাজেট।

আওয়ামী লীগ না থাকলেও ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক’ নির্বাচন হতে পারে
বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ না থাকলেও জনগণের অংশগ্রহণ সঠিকভাবে হলে নির্বাচন ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক’ হতে পারে বলে মনে করছেন জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস। বুধবার (৪ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ডিক্যাব) আয়োজিত ‘ডিক্যাব টক’ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ না থাকলে সেটি অঅন্তর্ভুক্তিমূলক হবে কিনা জানতে চাইলে গোয়েন লুইস বলেন, আওয়ামী লীগ না থাকলেও জনগণের অংশগ্রহণ সঠিকভাবে হলে আগামী নির্বাচন অন্তর্ভুক্তিমূলক হতে পারে। জাতিসংঘের কাছে অন্তর্ভুক্তি মানে হচ্ছে, প্রত্যেক বাংলাদেশি যেন মতামত দেওয়ার সুযোগ পায়। আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি আওয়ামী লীগ বা বিএনপির রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে কোনো মন্তব্য করছি না। আমি বুঝাতে চাইছি, জাতিসংঘ রাজনীতিতে সম্পৃক্ত নয়। এই প্রশ্ন করতে হবে সরকার এবং রাজনৈতিক দলগুলোকে। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে আরেক প্রশ্নে গোয়েন লুইস বলেন, সব দলের অংশগ্রহণ ও অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে মেরুকরণ এবং সম্ভাব্য সংঘাত এড়ানো যায়। তবে, আমি মনে করি, পারিপার্শ্বিক অবস্থার দিকে তাকাতে এবং দেশের প্রেক্ষাপটে সরকারের সিদ্ধান্তের দিকে তাকাতে হবে। এ বিষয়ে আমার এর বেশি কিছু বলার নেই। এটা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত, সরকারের সিদ্ধান্ত। তিনি বলেন, আমরা অবশ্যই নির্বাচন কমিশনকে প্রযুক্তিগত সহায়তা করতে পারি। নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে জাতিসংঘ কোনো ভূমিকা পালন করতে পারে না। নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়টি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। বাংলাদেশের জনগণ এবং রাজনৈতিক দলগুলো সিদ্ধান্ত নেবে কখন নির্বাচন হবে। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ডিক্যাব সভাপতি এ কে এম মঈনুদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক মো. আরিফুজ্জামান মামুন।

মহাখালী বাস টার্মিনাল পরিদর্শনে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
রাজধানীর মহাখালী বাস টার্মিনাল পরিদর্শন করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। বুধবার (৪ জুন) বিকেলে ৩টা ১৫ মিনিটে মহাখালী বাস টার্মিনাল পরিদর্শন করেন তিনি। এসময় টার্মিনালের বিভিন্ন দূরপাল্লার বাস ঘুরে ঘুরে দেখে তিনি। এছাড়াও যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়ে খোঁজ-খবর নেন এবং যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেন। একই সঙ্গে পরিবহন যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় না করা ও যাত্রীদের কোনো ধরনের হয়রানি না করতে শ্রমিকদের আহ্বান জানান তিনি। এর আগে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন পরিদর্শন ও উত্তর শাহজাহানপুর মৈত্রী সংঘ ক্লাবের খালি জায়গায় স্থাপিত কোরবানির পশুর হাট পরিদর্শন করেন তিনি।

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই বাজেট দিয়েছে সরকার: বিএনপি
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা না করেই অন্তর্বর্তী সরকার ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব করেছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। একইসঙ্গে গতানুগতিক বাজেট প্রক্রিয়া সংস্কার করারও দাবি জানিয়েছে দলটি। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে বিএনপির আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়ায় এই অভিযোগ করেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। বুধবার (৪ জুন) দুপুরে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বাজেট নিয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায় দলটি। আমীর খসরু বলেন, দেশে এখন যেহেতু সংসদ বা গণতান্ত্রিক কোনো সরকার নেই, তাই তারা আশা করেছিলেন, অন্তর্বর্তী সরকার ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে থাকা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে ন্যূনতম জাতীয় ঐকমত্য স্থাপনের মাধ্যমে বাজেট প্রণয়ন করবে। সরকার চাইলে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মতামত নিতে পারত। বিশেষজ্ঞ, নাগরিক সমাজ, ব্যবসায়ী ও তরুণ প্রতিনিধিরাও অংশ নিতে পারতেন। কিন্তু সেটি করা হয়নি। রাজনৈতিক দল ও জনগণের মতামত নিলে বাজেট প্রণয়ন একমুখী, অংশগ্রহণহীন ও গতানুগতিক ধারার হতো না বলে মন্তব্য করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য। আমীর খসরু বলেন, বর্তমানে মূল্যস্ফীতি প্রায় ‘ডবল ডিজিট’। তা কমিয়ে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ করার কথা বলা হচ্ছে, যা বাস্তবসম্মত মনে হয় না। দারিদ্র বৃদ্ধির হারে লাগাম টানা যেত। বিশ্বব্যাংকের তথ্য বলছে, অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে ২৭ লাখের বেশি মানুষ আগের চেয়ে বেশি দরিদ্র হয়ে পড়েছে। বিএনপির এই নেতা বলেন, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসেবমতে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ছিল ৩ দশমিক ৯৭ শতাংশ। সেটা এবারের বাজেটে ধরা হয়েছে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ, যা আগের সরকারের মতোই অবান্তর ও কাগুজে প্রবৃদ্ধি। খাদ্য নিরাপত্তা হুমকির মুখে। অপর্যাপ্ত, ত্রুটিপূর্ণ, দুর্নীতিগ্রস্ত সামাজিক সুরক্ষা খাতে পেনশন ও কৃষি ভর্তুকি অন্তর্ভুক্ত করে বরাদ্দ বাড়ানোর চেষ্টা হিসেবে দেখানো হয়েছে। কিন্তু সামাজিক সুরক্ষার জন্য সরকারি বরাদ্দ অপর্যাপ্ত থেকে যাচ্ছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষির মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতে বরাদ্দ কমানো উদ্বেগজনক বলে উল্লেখ করেন আমীর খসরু। তিনি বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ, কলেজ ও স্কুলগুলোকে পূর্ণাঙ্গ কর মওকুফের আওতায় আনা যেত। ভবিষ্যতে বিএনপি ক্ষমতা এলে শিক্ষার এসব ক্ষেত্রকে পূর্ণাঙ্গ কর মওকুফের আওতায় আনা হবে। অর্থনৈতিক কাঠামোর দুর্বলতা সমাধানে বাজেটে সুস্পষ্ট রূপরেখার প্রয়োজন ছিল বলে উল্লেখ করেন আমীর খসরু। তিনি বলেন, প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত ছিল, বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধির পথনকশা উপস্থাপন। অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে শিল্পকারখানা স্থাপন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষিতে অগ্রাধিকার দেওয়ার দরকার ছিল। জরুরি ছিল ক্ষুদ্র, কুটির ও মাঝারি বিভিন্ন খাতে সহায়তার মাধ্যমে আরও নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি। বিশাল সুদের হারের সঙ্গে অতিরিক্ত কর ও শুল্ক শিল্পে বড় চাপ সৃষ্টি করবে। বিশেষ করে উৎপাদনশীল খাতগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হবে। অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যেতে পারে। কর্মসংস্থানও কমতে পারে। মধ্য ও নিম্নবিত্ত শ্রেণির ওপর আর্থিক চাপ বাড়লে অর্থনৈতিক অস্থিরতা বাড়তে পারে। দারিদ্র্য বিমোচনের অগ্রগতিও থমকে যেতে পারে। ব্যবসা পরিচালনার ব্যয় কমানো, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা কমানো ও ‘কস্ট অব ডুয়িং বিজনেস’ কমানোর কোনো নির্দিষ্ট পরিকল্পনা বাজেটে নেই বলে উল্লেখ করেন আমীর খসরু। তিনি বলেন, এগুলো না থাকায় উদ্যোক্তারা অনিশ্চিত ও প্রতিকূল পরিবেশের মুখোমুখি হবেন। অনলাইন ব্যবসার ওপর শুল্ক বাড়ানোয় ডিজিটাল উদ্যোক্তারা চাপে পড়বেন বলে উল্লেখ করেন আমীর খসরু। তিনি বলেন, এতে তরুণ উদ্যোক্তাদের হতাশা বাড়বে। উদ্ভাবনও নিরুৎসাহিত হবে। আমীর খসরু বলেন, ব্যাংকের আর্থিক অবস্থা নাজুক। খেলাপি ঋণ আদায়, পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনা ও করজাল সম্প্রসারণের মতো পদক্ষেপ নিলে রাজস্ব আহরণে নতুন ভিত্তি তৈরি হতো। সরকার ব্যাংক খাতের ওপর বেশি নির্ভরশীল। ‘ঋণ করে ঋণ শোধ’ দীর্ঘ মেয়াদে আর্থিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি। কালো টাকা সাদা করার সুযোগ কর ফাঁকি প্রদানকারীদের পুরস্কৃত করছে। নিয়মিত করদাতাদের প্রতি এটি অবিচার। এতে করব্যবস্থার প্রতি আস্থা কমতে পারে। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ, মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান ও চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার।

‘জাতীয় পরিবেশ পদক’ পাচ্ছেন ৬ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান
পরিবেশ সংরক্ষণ, শিক্ষা ও গবেষণায় উল্লেখযোগ্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘জাতীয় পরিবেশ পদক ২০২৪’ পাচ্ছেন তিনজন ব্যক্তি ও তিনটি প্রতিষ্ঠান। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে এই মনোনয়ন চূড়ান্ত করা হয়েছে। সোমবার (২ জুন) মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব সাবরীনা রহমান স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে পদকের জন্য মনোনীতদের নাম প্রকাশ করা হয়। প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, পরিবেশ সংরক্ষণ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ বিভাগে অবদানের জন্য ব্যক্তি পর্যায়ে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার আজিজনগর এলাকার বাসিন্দা মো. মাহমুদুল ইসলাম এবং প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে ‘স্নোটেক্স আউটারওয়্যার লিমিটেড’ পদক পাচ্ছে। পরিবেশ বিষয়ক শিক্ষা ও প্রচার ক্যাটাগরিতে ব্যক্তি পর্যায়ে মনোনয়ন পেয়েছেন চট্টগ্রামের সিডিএ আবাসিক এলাকার মোহাম্মদ মুনীর চৌধুরী। একই ক্যাটাগরিতে প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে নির্বাচিত হয়েছে পরিবেশবান্ধব সংগঠন ‘ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডাব্লিউবিবি) ট্রাস্ট’। এ ছাড়া পরিবেশ বিষয়ক গবেষণা ও প্রযুক্তি উদ্ভাবনে অবদানের জন্য ব্যক্তি পর্যায়ে পদক পাচ্ছেন প্রফেসর ড. এম. ফিরোজ আহমেদ। প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে মনোনীত হয়েছে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি)। প্রত্যেক বিজয়ীকে জাতীয় পরিবেশ দিবসের অনুষ্ঠানে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মাননা দেওয়া হবে। এ সময় তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হবে ২২ ক্যারেট মানের দুই ভরি ওজনের স্বর্ণালংকারের সমমূল্যের আর্থিক পুরস্কার, ৫০ হাজার টাকার চেক, ক্রেস্ট ও সম্মাননাপত্র। জাতীয় পর্যায়ে পরিবেশ রক্ষায় অবদান রাখায় এ ধরনের পদক প্রদানের মাধ্যমে সরকার পরিবেশবান্ধব উদ্যোগকে উৎসাহ দিয়ে আসছে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।

মাঝপথে মাইক্রোবাস বা অনুরূপ যানবাহনে না চড়তে পুলিশের আহ্বান
রাস্তার মাঝখান থেকে মাইক্রোবাস বা অনুরূপ যানবাহনে না চড়ার জন্য জনগণকে আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ। দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতারকরা বিভিন্ন কৌশলে মাইক্রোবাসে যাত্রীদের সাথে প্রতারণা করছে বলে খবর প্রকাশের প্রেক্ষিতে আজ এক বিবৃতিতে পুলিশ সদর দপ্তর এই আহ্বান জানায়। বিবৃতি বলা হয়, অপরাধীরা যাত্রীদের নির্জন এলাকায় নিয়ে গিয়ে ডাকাতি করছে। কিছু ক্ষেত্রে, তারা বন্দুকের মুখে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস (এমএফএস) এর মাধ্যমে যাত্রীদের পরিবারের সদস্যদের ফোন করতে এবং মুক্তিপণ দাবি করতে বাধ্য করছে। পুলিশ সদর দপ্তর যাত্রীদের এই ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সতর্ক ও সচেতন থাকার অনুরোধ করেছে। পুলিশ সদর দপ্তর ভ্রমণের সময় যাত্রীদের অপরিচিত ব্যক্তির কাছ থেকে খাবার বা পানীয় গ্রহণ না করার এবং ‘অজ্ঞান পার্টি’ (ডোপ গ্যাং) এবং ‘মলম পার্টি’ (ভুক্তভোগীদের অক্ষম করার জন্য মলম ব্যবহারকারী দল) সহ প্রতারকদের সম্পর্কে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘একা ভ্রমণের সময় সতর্ক থাকুন এবং আপনার পরিবারের সদস্য বা আত্মীয়স্বজনদের আপনার অবস্থান এবং গন্তব্য সম্পর্কে অবহিত করুন।’ এতে আরো বলা হয়, ‘আপনার আশেপাশের যাত্রীদের ওপর সজাগ নজর রাখুন। যদি আপনি কাউকে সন্দেহ করেন বা কোনও সন্দেহজনক যানবাহন বা পরিস্থিতি লক্ষ্য করেন, তাহলে অবিলম্বে নিকটতম পুলিশ স্টেশনে অবহিত করুন অথবা জাতীয় জরুরি পরিষেবা ৯৯৯ এ কল করুন।’ বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশ পুলিশ সারাদেশে সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্র এবং প্রতারকদের বিরুদ্ধে তাদের অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

জাতীয় নেতাদের মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি বাতিলের খবর ভিত্তিহীন: প্রেস উইং
জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) আইন-২০২২ সংশোধন করে আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিভাগ থেকে অধ্যাদেশ জারির পর থেকে মহান মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদসহ ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বিজয়ী রাজনীতিবিদের (এমএনএ/এমপিএ) ‘বীর মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি’ থেকে বাদ দেওয়ার খবর প্রকাশ হয়েছে। তবে এসব খবরকে ‘সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, মিথ্যা এবং বিভ্রান্তিকর’ বলে উল্লেখ করেছে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস উইং। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ‘সিএ প্রেস উইং ফ্যাক্টস’ পেজে দেওয়া এক পোস্টে বলা হয়েছে, ‘মুজিবনগর সরকারের রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান, অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ এবং দুই মন্ত্রী মো. মনসুর আলী ও এ এইচ এম কামরুজ্জামানসহ শতাধিক নেতার মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি বাতিল বলে কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে যে খবর প্রকাশিত হয়েছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, মিথ্যা এবং বিভ্রান্তিকর।’ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজমের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, মুজিবনগর সরকারে যারা ছিলেন, তারাও মুক্তিযোদ্ধা। যারা সশস্ত্রভাবে মুক্তিযুদ্ধ করেছে; যারা পরিচালনা করেছে, তারাও মুক্তিযোদ্ধা। তবে ওই সরকারের কর্মকর্তা, কর্মচারীরা সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা।’ উপদেষ্টা আরও জানান, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) অধ্যাদেশ অনুযায়ী স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রসহ কূটনীতিকরা সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা। সহযোগী মানে এই নয়, যে তাদের সম্মান ক্ষুণ্ন করা হয়েছে। ১৯৭২ সালে মুক্তিযোদ্ধার যে সংজ্ঞা ছিল সেটাই বাস্তবায়ন করা হয়েছে। ২০১৮ ও ২০২২ সালে এটা পরিবর্তন করা হয়। মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী দুইয়েরই সম্মান, মর্যাদা, সুযোগ-সুবিধা একই থাকবে।

ঈদের দীর্ঘ ছুটিতে দেশের অর্থনীতি স্থবির হবে না : অর্থ উপদেষ্টা
ঈদে টানা ১০ দিনের দীর্ঘ ছুটিতে দেশের অর্থনীতিতে কোনো প্রভাব পড়বে না বা স্থবির হবে না বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। বুধবার (৪ জুন) সচিবালয়ে দুপুরে মন্ত্রীপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। ঈদে টানা ১০ দিনের ছুটি এ সময় দেশের অর্থনীতিতে কোনো প্রভাব পড়বে কিনা বা স্থবির হবে কিনা জানতে চাইলে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, স্থবির হওয়ার কোনো সুযোগ নেই, ব্যবসায়ীরা তাদের মতো করে ব্যবসা করবেন। বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে কোন কোন দিন, কোন কোন স্থানে ব্যাংক খোলা থাকবে। গরুর হাটে কীভাবে থাকবে। তিনি বলেন, এরকম হলিডে পৃথিবীর অন্যান্য দেশে আরও বেশি থাকে। বড়দিনে ২০ থেকে ২৫ দিন ছুটি থাকে। নেপালে দুর্গাপূজা সময় ৩০ দিন ছুটি থাকে। তখন তাদের দেশ চলে না?। সুতরাং দেশ চলবে। কোনো রকম বিরূপ কিছু...৷ ইতোমধ্যে আমরা বাজেট দিয়ে দিয়েছি। বাজেটে মোটামুটি কর্মপন্থা কী হবে সে অনুযায়ী কাজ হবে। ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ঈদের পর বাজেটের ওপর কার কী মন্তব্য, সাজেশেন থাকবে সেটা নেব। ১৯ জুন পর্যন্ত মতামত দিতে পারবে বাজেটের বিষয়ে। ২২ তারিখ কেবিনেট বৈঠকে বাজেট অনুমোদন হবে। তিন দিনে কী এটা করা সম্ভব হবে কিনা জানতে চাইলে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আমরা আগে থেকেই বলেছি মতামত প্রতিনিয়তই আসতে থাকবে। একদিনে সব মতামত আসবে না। ইতোমধ্যেই মতামত দেওয়া শুরু হয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেটে দরিদ্র মানুষের জন্য কোনো সুখবর দেখছি না এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে তিনি বলেন, সুখবর আছে, আপনারা বাজেটের কোথায় কোথায় পরিবর্তন হয়েছে সেটা একটু দেখেন। এতে সাধারণ মানুষের মনে স্বস্তি ফিরবে বলে মনে করেন? এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, বাজেটে স্বস্তি আছে।

নতুন অধ্যাদেশ অনুযায়ী ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ কারা
একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’র সংজ্ঞায় পরিবর্তন এনে ‘জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইন-২০২২’ সংশোধন করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। মঙ্গলবার (৩ জুন) রাতে এ সংক্রান্ত একটি অধ্যাদেশ জারি করেছে আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিভাগ। অধ্যাদেশ অনুযায়ী, ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’র সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ অর্থ যাহারা ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরে গ্রামে-গঞ্জে যুদ্ধের প্রস্তুতি ও অভ্যন্তরীণ প্রশিক্ষণ নিয়েছেন এবং যে সব ব্যক্তি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য বাংলাদেশের সীমানা অতিক্রম করে ভারতের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে নাম অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন এবং বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা অর্জনের জন্য পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে হানাদার ও দখলদার পাকিস্তানি সশস্ত্র বাহিনী এবং তাদের এই দেশীয় সহযোগী রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস্, তৎকালীন মুসলিম লীগ, জামায়াতে ইসলামী, নেজামে ইসলাম এবং দালাল ও শান্তি কমিটির বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছেন— এইরূপ সব বেসামরিক নাগরিক উক্ত সময়ে যাদের বয়স সরকার কর্তৃক নির্ধারিত সর্বনিম্ন বয়সের মধ্যে; এবং সশস্ত্র বাহিনী, ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস (ই.পি.আর), পুলিশ বাহিনী, মুক্তি বাহিনী, প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার (মুজিবনগর সরকার) ও উক্ত সরকার কর্তৃক স্বীকৃত অন্যান্য বাহিনী, নৌ কমান্ডো, কিলো ফোর্স, আনসার সদস্য এবং বাংলাদেশের নিম্নবর্ণিত নাগরিকরাও বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে অন্তর্ভুক্ত হবেন, যথা- ১। হানাদার ও দখলদার পাকিস্তানি বাহিনী ও তাহাদের সহযোগী কর্তৃক নির্যাতিত সব নারী (বীরাঙ্গনা)।২। মুক্তিযুদ্ধকালে আহত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসাসেবা প্রদানকারী ফিল্ড হাসপাতালের সব ডাক্তার, নার্স ও চিকিৎসা-সহকারী।

শেখ মুজিব ও জাতীয় চার নেতাসহ মুজিবনগর সরকারের সকলেই মুক্তিযোদ্ধা: ফারুক ই আজম
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমেদ, মো. মনসুর আলী ও এএইচএম কামরুজ্জামান মুক্তিযোদ্ধা বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম। বুধবার (৪ জুন) বেসরকারি এক টেলিভিশনকে এ তথ্য জানিয়েছেন তিনি। উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বলেন, আর মুজিবনগর সরকারে যারা ছিলেন তারাও মুক্তিযোদ্ধা। তবে ওই সরকারে কর্মকর্তা, কর্মচারীরা সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বিবেচিত হবেন। তিনি আরও বলেন, প্রঙ্গাপণে বিষয়টি স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকলেও এটি নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করা হচ্ছে। এরআগে, প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়- প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার বা মুজিব নগর সরকার এবং সেই সরকারের স্বীকৃত বাহিনী মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে অন্তর্ভূক্ত হবে। গতকাল রাত ১১টার দিকে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল অধ্যাদেশ গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়।

রূপপুরে উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে ডিসেম্বরে সরবরাহ সম্ভব : আসিফ মাহমুদ
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, চলতি বছরের ডিসেম্বরে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা সম্ভব হবে। উপদেষ্টা আসিফ তার ভেরিফাইড ফেসবুকের এক পোস্টে বলেন, ‘রূপপুরে ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াটের পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে।’ উপদেষ্টা আরো বলেন, ‘বিদ্যুৎ খাতের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতের লক্ষ্যে ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানি দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০’ বাতিল করা হয়েছে।’ উপদেষ্টা আসিফের দিকনির্দেশনায় কেবল স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকেই চলতি অর্থবছরে ২ হাজার ৮৯ কোটি টাকা ব্যয় হ্রাস করা হয়েছে। প্রকল্পের যৌক্তিকতা ও উদ্দেশ্য বিবেচনায় বাতিলের প্রক্রিয়াধীন ৫টি প্রকল্প, যার প্রাক্কলিত ব্যয় ৪৭৬ কোটি টাকা। বিগত সরকারের আমলে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে গ্রহণ করা প্রকল্পসহ স্থানীয় সরকার বিভাগের যাবতীয় প্রকল্প জনবান্ধব কিনা তা যাচাই-বাছাই করে প্রকল্পের পুনঃমূল্যায়ন, সংশোধন ও ব্যয় হ্রাস বা অভিযোজন চলমান বলে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের ভেরিফাইড ফেসবুক পোস্টে উল্লেখ করা হয়েছে।

ঈদের দিন মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ থাকবে
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে আগামী ৭ জুন দিনব্যাপী মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। মঙ্গলবার (৩ জুন) ডিএমটিসিএলের পরিচালক (প্রশাসন) এ কে এম. খায়রুল আলমের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ঈদের পরদিন ৮ জুন রবিবার থেকে সকাল ৮টা থেকে প্রতি ৩০ মিনিট পরপর ট্রেন চলবে (হেডওয়ে অনুযায়ী) এবং পরবর্তী দিন অর্থাৎ ৯ জুন সোমবার থেকে মেট্রোরেল সরকারি ছুটির দিনের সময়সূচি অনুযায়ী চলাচল করবে।

ঈদে ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে সিএনজি ফিলিং স্টেশন
ঈদুল আজহা উপলক্ষে সারাদেশের সিএনজি ফিলিং স্টেশনগুলো ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে। ঈদের দিনসহ ঈদের আগের ও পরের দিনগুলোতেও এই ব্যবস্থা কার্যকর থাকবে। বুধবার (৪ জুন) বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঈদুল আজহার সময় যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে এবং যাত্রীদের যাতায়াতে জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে ফিলিং স্টেশনগুলো সার্বক্ষণিক চালু রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর আগে, ১২ মে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ আয়োজিত এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বিভাগের সিনিয়র সচিব। বৈঠকে বলা হয়, ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে সিএনজি ফিলিং স্টেশনগুলো বন্ধ রাখা যাবে না। এই সিদ্ধান্তের আলোকে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ থেকে অফিস আদেশ জারি করা হয়েছে। আদেশে বলা হয়, ঈদের দিনসহ আগে ও পরে মোট ৫ দিন দেশের সব ফিলিং স্টেশন সার্বক্ষণিক খোলা রাখতে হবে। এতে যানবাহনের চলাচল সহজ হবে এবং ঈদযাত্রায় ভোগান্তি কমবে।

রোহিঙ্গাদের জন্য টেকসই সংহতি ও বর্ধিত আর্থিক সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে টেকসই সংহতি এবং বর্ধিত সহায়তার জরুরি প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেছেন, এমন সহায়তার প্রয়োজন যাতে আর্থিক সংকট লাঘব করা যায় এবং বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য বাংলাদেশের সহায়তা আরো জোরদার করা যায়। আজ মঙ্গলবার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক গোয়েন লুইস প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এই আহ্বান জানান। সাক্ষাৎকালে তাঁরা রোহিঙ্গা সংকট এবং রোহিঙ্গাদের জন্য আর্থিক সহায়তার চলমান চ্যালেঞ্জ নিয়ে গুরুত্ব সহকারে আলোচনা করেন। তাঁরা উভয়ে অর্থায়নের ব্যাপক কাটছাঁটে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন, যা ইতোমধ্যে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোর শিক্ষা ও অন্যান্য জরুরি কার্যক্রমে মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। আবাসিক সমন্বয়ক গোয়েন লুইস অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে দৃঢ় সহযোগিতার প্রশংসা করেন এবং উভয় নেতা বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রগতির বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। তাঁরা সরকারের উচ্চাকাঙ্ক্ষী সংস্কার কার্যক্রম শক্তিশালী করতে জাতিসংঘ কীভাবে ব্যাপক সহায়তা দিতে পারে, তা নিয়ে আলোচনা করেন। আবাসিক সমন্বয়ক বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উত্তরণের জন্য একটি নির্বিঘ্ন রূপান্তর নিশ্চিত করতে গৃহীত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপের কথাও তুলে ধরেন। তিনি বাংলাদেশের সংস্কার ও রূপান্তর প্রক্রিয়ার প্রতি তাঁর অটল সংহতি পুনর্ব্যক্ত করেন এবং জাতিসংঘের পক্ষ থেকে দেশের টেকসই উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে সহায়তার প্রতিশ্রুতি পুনরায় নিশ্চিত করেন।

‘বিভিন্ন দেশের ভিসা বন্ধ হওয়ার জন্য দেশের মানুষ ও ব্যবসায়ীরাই দায়ী’
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেছেন, বিভিন্ন দেশের ভিসা বন্ধ হয়ে যাওয়ার জন্য আমাদের দেশের মানুষ ও ব্যবসায়ীরাই দায়ী। এ ক্ষেত্রে সবার আগে আমাদের ঘর সামলাতে হবে। যেভাবে নিয়ম মেনে-না মেনে লোকজন যাচ্ছে, তাতে সমস্যা তৈরি হচ্ছে। মঙ্গলবার (৩ জুন) বিকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সমসাময়িক ইস্যুতে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন। বিভিন্ন দেশের ভিসা বন্ধ হয়ে যাওয়ার বিষয়ে নিজেদের সংশোধন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তৌহিদ হোসেন। এ সময় মার্কিনদের স্টুডেন্ট ভিসা দেওয়ার বিষয়ে সরকারের কিছু করার নেই বলে মন্তব্য করেন তৌহিদ হোসেন। ব্রিফিংয়ে ভারত দিয়ে ট্রান্সশিপমেন্ট বন্ধ হওয়ার বিষয়টিকে শাপেবর বলে উল্লেখ করে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলের কারণে বাংলাদেশের কোনো সমস্যা হচ্ছে না। আমরা বিকল্প তৈরি করেছি, এতে আমাদের শাপেবর হয়েছে। নির্বাচন নিয়ে বিদেশি বন্ধুরাষ্ট্রগুলোর জানতে চাওয়া নিয়ে তৌহিদ হোসেন বলেন, নির্বাচনের বিষয়ে বিদেশি বন্ধুরা জানতে চাইলে সরকারের সিদ্ধান্তই তাদের জানানো হয়। নির্বাচন নিয়ে সরকারের সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন আশা করা যায় বলে জানান তিনি।

মুন্নী সাহাসহ ২০ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধান চলমান থাকায় সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, তার স্ত্রী সৈয়দা মোনালিসা ইসলাম, সাংবাদিক মুন্নী সাহাসহ ২০ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার আদেশ দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (৩ জুন) দুদকের আবেদন মঞ্জুর করে ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন গালিবের আদালত এ আদেশ দেন। দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত অন্য আসামিরা হলেন- সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, তার স্ত্রী সৈয়দা মোনালিসা ইসলাম, সাবেক মন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অব.) এ বি তাজুল ইসলাম, তার স্ত্রী হাসু ইসলাম, তাদের সন্তান ধানাদ ইসলাম দীপ্ত, ফারাহ ইসলাম প্রভা ও শামা ইসলাম, ফেনী-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী (৬৭), যশোর-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মো. শাহীন চাকলাদার, নির্বাচন কমিশনের সাবেক সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ, সাংবাদিক মুন্নী সাহার স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি মো. কবির হোসেন, আপেল রানী সাহা, তপন কুমার সাহা ও প্রণব কুমার সাহা অপু, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের কর্মকর্তা ও এস আলমের গ্রুপের ঘনিষ্ঠ সৈয়দ ওয়াসেক মো. আলী, মো. আলমগীর হোসেন, মোহাম্মদ মোস্তফা খায়ের, আব্দুল আজিজ এবং মো. মাসুদুর রহমান শাহ। নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত প্রত্যেকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও বিদেশে অর্থপাচারের অভিযোগ অনুসন্ধানাধীন রয়েছে। এজন্য সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে দুর্নীতি দমন কমিশন পৃথক সাতটি আবেদনে তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করে। আবেদনের ওপর শুনানি শেষে তা মঞ্জুর করেন আদালত।

অর্থ উপদেষ্টার বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলন শুরু
নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের জিজ্ঞাসার জবাব দিতে সংবাদ সম্মেলনে এসেছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। মঙ্গলবার (৩ জুন) বিকাল ৩টায় ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন শুরু হয়। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ; বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান; অর্থ সচিব খায়রুজ্জামান মজুমদার; মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশীদ; বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর প্রমুখ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত রয়েছেন। এর আগে গতকাল সোমবার (২ জুন) টেলিভিশনে ধারণকৃত ভিডিওর মাধ্যমে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। উল্লেখ্য, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৮৯ হাজার ৯৯৯ কোটি টাকা— যা চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের মূল বাজেটের তুলনায় ৭ হাজার কোটি টাকা কম। প্রস্তাবিত বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ। বাজেট ঘাটতি ২ লাখ ৬৬ হাজার কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ৩ দশমিক ৬ শতাংশ। মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫ শতাংশ এবং এডিপি ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে। এটি বর্তমান সরকারের দৃষ্টিতে সংকোচনমূলক বাজেট।

ঈদযাত্রায় ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলতে দেওয়া হবে না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
এবার ঈদযাত্রায় কোনও অবস্থাতেই ফিটনেসবিহীন গাড়ি রাস্তায় চলতে দেওয়া হবে না। অনভিজ্ঞ কোনও চালক রাখা যাবে না। তাছাড়া চালকদের যথাযথ বিশ্রাম নিশ্চিত করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। ভাড়া যথাযথভাবে নেওয়া হচ্ছে কি না, তা তদারকির জন্য একটি কমিটি গঠন করা হবে। মঙ্গলবার (৩ জুন) দুপুরে সচিবালয়ে নিরাপদ ঈদযাত্রা নিয়ে এক বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এ কথা বলেন। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ঈদযাত্রায় বাসভাড়া সরকার নির্ধারিত ভাড়ার বাইরে নেওয়া যাবে না। এ বিষয়ে মালিকরাও একমত হয়েছেন। তিনি বলেন, ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে মালিক-শ্রমিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। গতবার যাত্রা নির্বিঘ্ন ছিল, আশা করছি এবারও তেমন হবে। তিনি আরও বলেন, অনভিজ্ঞ ড্রাইভার দিয়ে যাতে গাড়ি চালানো না হয়, সে বিষয়ে নিষেধ করা হয়েছে। মালিকপক্ষ জানিয়েছে, তারা এ নির্দেশনা মেনে চলবেন। একইসঙ্গে, যাত্রী ছদ্মবেশে ডাকাত ওঠা ঠেকাতে বাসে উঠলে সবার ছবি নেওয়া হবে। প্রতি বাসে তিনজন নিয়োজিত থাকবেন, যাদের কাছে প্রশাসনের ফোন নম্বর থাকবে। যাত্রাপথে কোনও ঝামেলা হলে তারা তাৎক্ষণিকভাবে মালিকপক্ষ ও প্রশাসনকে জানাবেন। রাজধানীর নিরাপত্তা বিষয়ে তিনি বলেন, এবার ঈদের বড় ছুটি ৫ জুন থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত। রাজধানীসহ সারা দেশ যেন নিরাপদ থাকে, সে বিষয়ে সবাই সজাগ রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে। তবে জরুরি ছুটি দেওয়া হবে।

ঈদে পুলিশের ছুটি বাতিল ঘোষণা
ঈদুল আজহায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় বিশেষ ব্যবস্থা হিসেবে পুলিশের ছুটি বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ তথ্য জানান। উপদেষ্টা বলেন, ঈদের ১০ দিনের ছুটি সামনে রেখে রাজধানীর আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার। তিনি বলেন, ঈদ যাত্রায় চাঁদাবাজি বন্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে সরকার। চাঁদাবাজি যে-ই করুক, তার দলীয় পরিচয় বিবেচনায় না নিয়েই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঈদের সময় ফিটনেসবিহীন যানবাহন চলাচল বা অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করলে আইনানুগ কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, গত ঈদের মতো এবারও আসন্ন ঈদুল আজহায় যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। যাত্রীদের যাওয়া-আসার সময় নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি না নেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।এছাড়াও ভাড়া যথাযথভাবে নেয়া হচ্ছে কিনা সেটির তদারকিতে একটি কমিটি হবে। এতে মালিকপক্ষ সম্মতি দিয়েছেন। যাত্রী ছদ্মবেশে ডাকাত ঠেকাতে বাসে ওঠার সময় সবার ছবি নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

জুলাইয়ের মধ্যেই জাতীয় সনদ তৈরি করতে চাই: আলী রীয়াজ
সময় স্বল্পতার কারণে ‘ন্যূনতম ঐক্যমত্যের’ ভিত্তিতে আগামী মাসেই ‘জাতীয় সনদ’ প্রণয়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ। তিনি বলেছেন, “আমাদের এই আলোচনার মাধ্যমে একটা জায়গায় আসতে হবে। একধরনের উপসংহার টানতে হবে, কারণ সময়ের স্বল্পতার বিবেচনায় আমরা জুলাই মাসের মধ্যে যেই সনদ তৈরি করতে চাচ্ছি, সেই সনদে কোনটা অন্তর্ভুক্ত থাকবে- কোনটা থাকবে না; সেটা আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। “আলোচনায় যেগুলো থাকবে না, যেগুলোতে ঐক্যমত হবে না, সেগুলো লিখিত থাকবে যে- এগুলো আলোচিত হয়েছে, কিন্তু একমত হওয়া যায়নি। সেই কাঠামোর দিক থেকে আমাদের আজকের আলোচনা। আমরা আশা করছি, আমাদের অভিষ্ট জাতীয় সনদ, সেই সনদ তৈরির ক্ষেত্রে অগ্রসর হতে পারব।” মঙ্গলবার সকালে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। আলী রীয়াজ বলেন, “আজকের বৈঠকে যে বিষয়গুলো আমরা নির্ধারণ করেছি, সেটা হলো যে- সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ, নিম্ন কক্ষের নারী আসন, স্থায়ী কমিটিসমূহ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ক্ষেত্রে তার মেয়াদ এবং তার কার্য্করী পরিধির একটি অংশ-এগুলো নিয়ে আমরা কথা বলব। “এসব বিষয়ে কাঠামোগত দিক থেকে হচ্ছে যে, মূল প্রস্তাবটা কী ছিল। সংবিধান সংস্কার কমিশন বা নির্বাচন সংস্কার কমিশনের পক্ষ থেকে একটা মূল প্রস্তাব ছিল; কিন্তু আলোচনার মধ্য দিয়ে পরিবর্তিত হয়েছে, সেটাও আমরা অবহিত হব এবং পরিবর্তনগুলো কী দাঁড়িয়েছে এবং তার ভিত্তিতে আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারব। “আমাদের মনে রাখতে হবে যে, কোনো জায়গায় ন্যূনতম একমত হচ্ছি…সব বিষয়ে একেবারে সবটাতে আমরা একমত হব না, কিছু জায়গায় হয়ত আমরা একমত হব।” সকাল সাড়ে ১১টায় বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল মাল্টিপাস হলের ৩০টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠকে বসেছে জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের সদস্যরা। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক আলী রীয়াজের সভাপতিত্ব বৈঠক রয়েছেন কমিশনের সদস্য বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, বদিউল আলম মজুমদার, আইয়ুর মিয়া, ইফতেখারুজ্জামান, সফর রাজ হোসেন ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ঐকমত্য) মনির হায়দার। বৈঠকে বিএনপির ইসমাইল জবিহউল্লাহ, জাতীয় গণফ্রন্টের টিপু বিশ্বাস, খেলাফত মজলিসের আহমদ আবদুল কাদের, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি, জেএসডির শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, এবি পার্টির মজিবুর রহমান মঞ্জু, বাংলাদেশ ন্যাশনাল রিপাবলিক পার্টির সারবিস আলম, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান, এলডিপির চৌধুরী হাসান সোরওয়ার্দী, বিএলডিপির সাহাদাত হোসেন সেলিম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আশরাফ আলী আকনসহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের নেতারা রয়েছেন। আলী রীয়াজ জানান, দ্বিতীয় পর্বের এই সংলাপের আর কোনো সভা ঈদের আগে হবে না। ঈদের ছুটির পর আবার আলোচনা শুরু হবে। সোমবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রধান উপদেষ্টা এবং জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুস দ্বিতীয় পর্বের এ সংলাপ উদ্বোধন করেন।