
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের অধিগৃহীত জমি পুনর্বাসনের পরিবর্তে প্রভাবশালী ব্যক্তি ও সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ফ্ল্যাট বরাদ্দের অভিযোগে সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে মামলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) দুদক প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত নিয়মিত মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এই তথ্য নিশ্চিত করেন সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন।
তিনি জানান, দুদকের সহকারী পরিচালক খোরশেদ আলম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করবেন। কমিশন ইতোমধ্যে মামলার অনুমোদন দিয়েছে।
সাবেক সেতুমন্ত্রী কাদের ছাড়াও যাদের বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে তারা হলেন—
সেতু বিভাগের সাবেক সিনিয়র সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সাবেক সচিব মো. নজরুল ইসলাম, জননিরাপত্তা বিভাগের সাবেক সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দীন, বিদ্যুৎ বিভাগের সাবেক সচিব ড. আহমদ কায়কাউস, ভূমি মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মো. আব্দুল জলিল, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব ড. জাফর আহমেদ খান, সাবেক অর্থ সচিব ও সাবেক সিএজি মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সাবেক সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ শহিদুল হক, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও পরিকল্পনা কমিশনের সাবেক সদস্য (সচিব) মিজ জুয়েনা আজিজ, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মো. মোফাজ্জেল হোসেন, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রাক্তন সিনিয়র সচিব কাজী শফিকুল আযম, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব আখতার হোসেন ভূইয়া এবং এনবিআর-এর সাবেক চেয়ারম্যান ও সাবেক সচিব ড. আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম।
দুদকের নথি অনুযায়ী, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে পিপিপি প্রকল্পে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের জন্য ৪০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। তবে পরবর্তীতে সে জমি বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ ও সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্মচারীদের জন্য ৯৯ বছরের লিজে আবাসন নির্মাণে ব্যবহার করা হয়েছে। নথিতে বলা হয়, ভূমি অধিগ্রহণ আইন-২০১৭ এর ১৯(১) ধারা অনুযায়ী ভূমি মন্ত্রণালয়ের পূর্বানুমোদন ছাড়া এ ধরনের কার্যক্রম করা আইনবহির্ভূত।
এ ছাড়া সেতু কর্তৃপক্ষ আইন-২০১৬ অনুযায়ী শুধু অস্থায়ী ইজারা দেওয়ার বিধান থাকা সত্ত্বেও কর্তৃপক্ষের ১০৬ ও ১০৭তম বোর্ড সভায় “দীর্ঘমেয়াদী লিজ প্রদান সংক্রান্ত নীতিমালা-২০১৮” অনুমোদন করা হয়। দুদক বলছে, এই নীতিমালার গেজেট প্রকাশের বাধ্যবাধকতাও উপেক্ষিত হয়েছে।
নথিতে আরও উল্লেখ রয়েছে, আসামিরা পরস্পরের সহযোগিতায় আইনবহির্ভূত নীতিমালা প্রণয়ন করে দণ্ডবিধির ৪০৯, ৪২০ ও ১০৯ ধারা এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আত্মগোপনে চলে যান। পরে তিনি ভারতে গিয়ে সেখানে অবস্থান করছেন।