ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্মদিন আজ


ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্মদিন আজ

বাংলা গদ্যের প্রথম সার্থক রূপকার, সমাজ সংস্কারক ও শিক্ষাবিদ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্মদিন আজ। ১৮২০ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর তিনি জন্মগ্রহণ করেন কলকাতার মেদিনীপুর জেলার বীরসিংহ গ্রামে। আজ তার ২০৫তম জন্মবার্ষিকী। এক দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্ম নেওয়া সত্ত্বেও দারিদ্রতা তার শিক্ষার প্রতি আগ্রহকে থামাতে পারেনি।

রাতে ঘরে আলো জ্বালানোর সামর্থ্য না থাকায়, তিনি রাস্তার লাইটের নিচে বসে পড়ালেখা চালিয়ে গেছেন। শিক্ষার প্রতি এমন দৃঢ় মনোভাবই তাকে বাংলা ভাষা-সাহিত্য, বেদান্ত, তর্ক, জ্যোতির্বিজ্ঞান ও নন্দনতত্ত্বে একজন দ্যুতিময় চিন্তক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

গ্রামের পাঠশালায় প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে বাবা থকুরদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কলকাতায় পাড়ি জমান। সেখানেও বিভিন্ন ভাষায় শিক্ষা অর্জনে মনোনিবেশ করেন। ১৮৩৯ সালে সংস্কৃত কলেজ থেকে বাংলা, সংস্কৃত ও ইংরেজি ভাষায় অগাধ পাণ্ডিত্যের জন্য তিনি 'বিদ্যাসাগর' উপাধিতে ভূষিত হন।

শুধু শিক্ষার ক্ষেত্রেই নয়, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর সমাজ সংস্কারেও রেখেছেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। তার প্রচেষ্টাতেই হিন্দু নারীরা অধিকার পেতে শুরু করেন, বিধবা বিবাহের বৈধতা লাভ করে, আর সতীদাহ প্রথা রোধে আইনি অগ্রগতি ঘটে। বাংলা ব্যাকরণ ও লিপি সংস্কারেও তার অবদান উল্লেখযোগ্য।

তিনি হোমিওপ্যাথি শাস্ত্রে ছিলেন পাণ্ডিত্যপূর্ণ, পাশাপাশি ছিলেন একজন বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক। বাংলায় প্রথমবারের মতো যতিচিহ্নের ব্যবহার শুরু করেন তিনিই। শিক্ষার প্রকৃত মানে যে ‘জ্ঞানলাভ’, তা সমাজকে শিখিয়েছেন বিদ্যাসাগর।

বিবিসি বাংলার 'সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি কে?' জরিপে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর শ্রোতাদের মনোনীত শীর্ষ বিশজন বাঙালির তালিকায় অষ্টম স্থানে স্থান পান।

১৮৯১ সালে এই মহান সংস্কারকের মৃত্যু হলেও তার বহুমুখী অবদান আজও তাকে স্মরণীয় করে রেখেছে। শতাব্দী পার হলেও ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের শিক্ষা, মানবতা ও সংস্কারের আলো আজও প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ছড়িয়ে যাচ্ছে।

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×